স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি- ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা চাই
একটি চাঞ্চল্যকর ডাকাতি ও লুটতরাজের ঘটনা
দেশবাসীকে স্তম্ভিত করে দিয়েছে। রোববারের সংবাদপত্রে যে বর্ণনা প্রকাশিত
হয়েছে তাতে যে কেউ একে দুর্ধর্ষ ও ভয়াবহ বলে অভিহিত করবেন। ঘটনাস্থল,
নারায়ণগঞ্জের জুয়েলারি ব্যবসা কেন্দ্র মিনাবাজার।
শনিবার
সন্ধ্যাতেই একদল ডাকাত স্বর্ণালঙ্কারের দোকানে ঢুকে অস্ত্রের মুখে লুট করে
নিয়ে যায় দুই হাজার ৫শ' ভরি সোনার অলঙ্কার ও দোকানে গচ্ছিত নগদ টাকা।
সন্ধ্যা বলে এলাকায় লোকসমাগম ছিল, উপস্থিত জনতা ও আশপাশের স্বর্ণ
ব্যবসায়ীরা ডাকাতদের বাধা দেওয়ার চেষ্টাও করে। বাধা পাবে এমন আশঙ্কা থেকে
ডাকাতরা প্রস্তুতি নিয়েই এসেছিল। তারা বোমা ফাটিয়ে জনসমাগমকে ছত্রভঙ্গ করে
পালিয়ে যায়। ডাকাতের হামলায় আহত হয় ২৩ জন। নিরস্ত্র মানুষ যেভাবে ডাকাতদের
বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে তা প্রশংসনীয়। কিন্তু সশস্ত্র ডাকাতদের
মোকাবেলা করা সহজ নয়, আর তা সম্ভবও হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে,
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কী করছিল? স্পর্শকাতর বাণিজ্যকেন্দ্রগুলোতে
নিয়মিত পুলিশি টহল থাকার কথা। এ ক্ষেত্রে যে তেমন টহল ছিল না তা স্পষ্ট।
টহল না থাকলেও পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পেঁৗছাতে পারত। কেননা, নারায়ণগঞ্জ
মডেল থানা ও শীতলক্ষ্যা পুলিশ ফাঁড়ির দূরত্ব ঘটনাস্থল থেকে মাত্র কয়েকশ' গজ
দূরে। যথাসময়ে পুলিশ যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পারেনি_ এ কথা যেমন সত্য, তেমনি
এও সত্য, আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থায় গুরুতর কোনো গলদ থাকায় লোকসমাগমের ভেতর ভরা
বাজারে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটতে পেরেছে। আমরা আশা করব, ঘটনার পর যেন
দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এ ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের শনাক্ত করে
গ্রেফতার করার পর্যাপ্ত উদ্যোগ নিতে হবে। এ ডাকাতির ঘটনা স্বাভাবিকভাবে
ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি করবে। জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন
ইতিমধ্যে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ডেকেছে। পুলিশের দায়িত্ব হবে, উপযুক্ত
ব্যবস্থা নিয়ে ব্যবসায়ীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা। পাশাপাশি, ব্যবসা
কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্ত জোরদার করার উদ্যোগও আসতে হবে। যা ঘটেছে তা দুঃখজনক।
এমন ঘটনার জন্ম দিয়েও যদি ডাকাতরা পার পেয়ে যায়, তবে তা হবে আরও
বেদনাদায়ক। তাই এদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।
No comments