ওয়ানডে সিরিজ- পেসারদের পর থিরিমান্নে
ম্যাচের শেষ দিকে তুমুল উত্তেজনা। জয়ের জন্য শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন ৩ রান। একে একে চারটি বল ঠেকালেন অভিষিক্ত উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান কুশল পেরেরা। অ্যাডিলেড ওভালের গুটিকয় লঙ্কান সমর্থকের সে কী উল্লাস! অন্য প্রান্তের ব্যাটসম্যান তখন যে অপরাজিত ৯৮ রানে!
টান টান উত্তেজনার আনন্দময় সমাপ্তি পরের ওভারের প্রথম বলেই। একই শটে নিজের সেঞ্চুরি আর দলের জয়। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে কাট করে ৪ মেরে ডানা মেলে দিলেন লাহিরু থিরিমান্নে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তো সেঞ্চুরি ছিলই না, ঘরোয়া ওয়ানডেতেও সর্বোচ্চ ছিল মাত্র ৭৯। সেই থিরিমান্নেই কাল ঠান্ডা মাথায় দারুণ এক ইনিংস খেলে দলকে জেতালেন ৮ উইকেটে। দলের দৃষ্টিকোণ থেকে যে জয় শুধু অমূল্যই নয়, সম্মান বাঁচানোরও। প্রথম ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার ‘বি’ দলের কাছে উড়ে যাওয়া লঙ্কানদের অহংবোধে আঘাত না করে পারেই না। ৫৯ বল বাকি থাকতেই ৮ উইকেটের জয়ে সেই ক্ষতে ভালোই প্রলেপ পড়ল।অপরাজিত সেঞ্চুরিতে থিরিমান্নে ম্যাচসেরা হলেও জয়ের ক্ষেত্রটা তৈরি করে দিয়েছেন লঙ্কান বোলাররা। প্রথম ম্যাচে তিন অভিষিক্তের পর ‘গিনিপিগ’ সিরিজে কাল অস্ট্রেলিয়া ওয়ানডে ক্যাপ দিয়েছে দুই পেসারকে—বেন কাটিং ও কেন রিচার্ডসন। তবে বোলারদের লড়াই করার মতো পুঁজি এনে দিতে পারেননি ব্যাটসম্যানরা। আগের রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ৭-৮ ঘণ্টার গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে ম্যাচ শুরু হয় আধঘণ্টা দেরিতে। অনুকূল পরিবেশটা ভালোই কাজে লাগিয়েছেন লঙ্কান সিমাররা। নতুন বলে নিখুঁত লাইন-লেংথ ও ছোট ছোট সুইংয়ে অস্ট্রেলিয়ান টপ-অর্ডারের নাভিশ্বাস তুলে ছাড়েন কুলাসেকারা ও ম্যাথুস। গতিবৈচিত্র্য আর বাউন্সে পরে উইকেট তুলে নিতে থাকেন মালিঙ্গা ও পেরেরা।
দুই ওপেনারকে হারিয়ে প্রথম ১০ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার রান ছিল ২১। তৃতীয় উইকেটে বেইলি ও ডেভিড হাসির জুটি (৩৯ রান) বিপজ্জনক হয়ে ওঠার মুখেই ভেঙে দেন মালিঙ্গা। বলার মতো জুটি হয়েছে একটিই—সপ্তম উইকেটে অভিষিক্ত কাটিংয়ের সঙ্গে হাডিনের ৫৭। নড়বড়ে শুরুর পর হাডিনের ফিফটিই অস্ট্রেলিয়াকে এনে দেয় ১৭০। অভিষেকে চার ক্যাচ নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চাডউইক ওয়াল্টনের বিশ্ব রেকর্ড ছুঁয়েছেন উইকেটকিপার কুশল পেরেরা।
প্রথম ওভারে থারাঙ্গাকে হারিয়ে শ্রীলঙ্কার শুরুটাও ছিল নড়বড়ে। তবে কন্ডিশন আর পরিস্থিতি বুঝে স্বভাবসুলভ স্ট্রোক প্লে বাদ দিয়ে সতর্ক ব্যাটিংয়ের পথ বেছে নেন দিলশান-থিরিমান্নে। দ্বিতীয় উইকেটে দুজনের ১৩৭ রানের জুটিতেই ম্যাচ কার্যত শেষ। শেষ টেস্টে ‘এসওএস’ পেয়ে দেশ থেকে উড়ে এসে অল্পের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেছিলেন থিরিমান্নে। কাল ছিল তাঁর সব পাওয়ার ম্যাচ! ওয়েবসাইট।
No comments