চালচিত্র-রাজনীতির অঙ্গনে অস্থিরতার আশঙ্কা by শুভ রহমান
দেশ ক্রান্তিলগ্নে। দ্রুত সময় উবে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহাজোট সরকারের চার বছর পূর্তিতে স্বাভাবিকভাবে সব ক্ষেত্রে তাঁর সাফল্যের বয়ান করেছেন। প্রচলিত রীতি সেটাই। তবে এতে সময়ের চাহিদা পূরণ হলো কি না, বিশ্লেষকদের মতে, সেটা ভেবে দেখার বিষয়।
অনেকেই বলছেন, সময় আরো বেশি কিছু দাবি করছে। প্রধানমন্ত্রীর যেমন এটা নির্বাচনী বছর, ক্ষমতার ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য যেমন তিনি প্রিয় দেশবাসীর কাছে সুযোগ প্রার্থনা করেছেন; এর বিপরীতে ক্ষমতাপ্রত্যাশী প্রধান বিরোধী দল ও তার ১৮ দলীয় জোটের জন্য এটাই মরিয়া হয়ে শেষ চেষ্টা চালানোর বছর। এ দুই বিপরীতমুখী চাহিদার মধ্যে একটা সমীকরণ অবশ্যই দেশের গণতন্ত্র রক্ষার জন্য অপরিহার্য।
এর মধ্যেই নিহিত রয়েছে দুই পক্ষের অগ্নিপরীক্ষা, দেশপ্রেম এবং জনগণের প্রতি সর্বোচ্চ দায়িত্ববোধের। সাধারণ গণমানুষ কখনোই চাইবে না রক্তপাত-সংঘাতের মধ্য দিয়ে কোনো নিষ্পত্তি হোক। সাধারণ মানুষ শান্তিই চায়। প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বিরোধী দলের প্রতি সংঘাতের পথ পরিহার করার আহ্বান জানিয়ে প্রকারান্তরে জনগণের প্রত্যাশাকেই সমুন্নত রেখেছেন। জনগণ দেখতে চায়, একই উপলব্ধিতে আসছে বিরোধী জোটও। এটা অনস্বীকার্য যে দুই পক্ষেরই টানাপড়েন আছে বহিঃশক্তির। তবে অতীতের সব সংকটের মতো এবারও এ সংকটে জয়ী হবে চূড়ান্তভাবে জনগণই। গণতান্ত্রিক সংগ্রামের সর্বস্তরে চূড়ান্ত ও নির্ধারক শক্তি হচ্ছে জনগণ। জনগণের উদ্যমই জাতীয় ঐক্যকে সম্ভব করে তোলে।
জনগণকে বিপথগামী করার, ভিন্ন পথে চালিত করার কোনো কর্মসূচি চূড়ান্তভাবে সফল হতে পারে না। ইতিমধ্যে একাধিকবারই প্রমাণিত হয়েছে, জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুরের অবরোধ-হরতাল জনগণ প্রত্যাখ্যানই করে। বিপরীতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদই জনগণ সমর্থন করে।
এখন পর্যন্ত সাধারণ মানুষই সবচেয়ে অসংগঠিত রয়ে গেছে। কিন্তু অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে তারা চূড়ান্তভাবে এ উপলব্ধিতেই আসতে বাধ্য হবে যে তাদের জোট বাঁধা ও সংগঠিতভাবে মাথা তুলে দাঁড়ানো ছাড়া কিছুতেই জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হবে না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোন ধরনের সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে, তা চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করতে হলে জাতীয় ঐক্যের (ন্যাশনাল কনসেনশাস) বিকল্প নেই।
জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার বিবরণ দিয়েছেন, মহাজোট সরকারের আমলে কারচুপিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনেক দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন; তার পরও কিন্তু শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনকেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বিরোধী দলকে যথেষ্ট বলে মানানো সম্ভব হবে না। সংলাপ ছাড়া, জাতীয় ঐক্য ও সমঝোতা ছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাঠামো ও ধরন সম্পর্কে কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব হবে না। এটাই বর্তমানের সুকঠিন বাস্তবতা। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নয়ন ও জনকল্যাণের যে বিবরণ তুলে ধরেছেন, সে ব্যাপারে দ্বিমতের কোনো অবকাশ নেই। কিন্তু সেই সঙ্গে এটাও মানতে হবে, যেকোনো মূল্যে সেই উন্নয়ন ও জনকল্যাণ ধরে রাখতে হবে এবং সে জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সংগঠিত জনসমর্থন ও সুদৃঢ় জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য।
আজ এই ক্রান্তিলগ্নে অত্যন্ত ধীরস্থিরভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, কোনো রকম 'ইগো' দ্বারা চালিত হলে চলবে না; ক্ষমতার রাজনীতি, ক্ষমতার মোহ থেকে মুক্ত হয়ে সর্বোচ্চ জনকল্যাণের স্বার্থে ও সর্বোচ্চ দেশপ্রেমের পরিচয় দিয়ে সর্বতোভাবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অক্ষুণ্ন রাখতে হবে; অটুট রাখতে হবে জনগণের ঐক্য ও আস্থা এবং সর্বতোভাবে গ্রহণযোগ্য অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই নির্বাচন করতে হবে। সে নির্বাচনই হবে অর্থবহ, গণতান্ত্রিক ও সর্বতোভাবে গ্রহণযোগ্য।
তার আগে শুধু পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, সংঘাত ও সহিংসতার প্রসার দেশের কষ্টার্জিত স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে ক্রমাগত ধ্বংসের মুখেই নিয়ে যাবে।
আজ সময় এসেছে সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষের মুখর ও সোচ্চার হওয়ার; কোনোভাবেই কোনো সংকীর্ণ দলীয় বা জোট বা ব্যক্তিস্বার্থ নয়, দেশ ও জনগণের সর্বোচ্চ স্বার্থই সুপ্রতিষ্ঠিত করার পক্ষে।
একাত্তরে দেশের ধুলো-কাদামাখা নগ্নপদ-নগ্নগাত্র অগণিত কৃষক, শ্রমজীবী সাধারণ নারী-পুরুষের প্রায় নিরস্ত্রভাবে শত্রুর বীরত্বপূর্ণ মোকাবিলা করাই নিশ্চিত করে দেয় মুক্তিযুদ্ধের বিজয়কে। সাধারণ মানুষের সেই ভূমিকাই সব জাতীয় সংকট নিরসনের জন্য অপরিহার্য।
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, ক্ষুদ্র, দলীয়, ব্যক্তি বা গোষ্ঠীস্বার্থ নিয়ে বিরোধ-বিসংবাদে দীর্ণ সব সমাজেই একটা পর্যায়ে এমন একটা চরম উপলব্ধির মুহূর্ত আসে, যখন চিরকাল নিষ্পেষিত, নিপীড়িত, উপেক্ষিত মানুষই সবেগে ঐক্যবদ্ধভাবে মাথা তুলে দাঁড়ায় এবং নিঃস্বার্থভাবে প্রতিষ্ঠা করে চিরন্তন সত্যকে। এ দেশের স্বাধীনতার জন্য রক্তদান সত্য বলেই একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের, মানবতাবিরোধী অপরাধকারীদের বিচার ও শাস্তি হবে অনিবার্য।
এ দেশে, এ সমাজে সত্য একাত্তরের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। সত্য ত্রিশ লাখ শহীদের রক্ত ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা। সত্য স্বৈরশাসন উৎখাত করে নব্বইয়ে সুপ্রতিষ্ঠিত সংসদীয় গণতন্ত্র। নিঃশেষে প্রাণ বিসর্জন দিয়ে সমাজের সাধারণ মানুষই এসব সত্যের প্রতিষ্ঠাতা। তারা অক্ষয়, অজর, অমর। তাদের ভৈরব উত্থানের মধ্য দিয়েই হবে সত্যের অভিষেক। এ সমাজে শোষণ-বঞ্চনা আছে, দুর্বৃত্তায়ন আছে, সম্পদের কেন্দ্রীভবন ও নিঃস্বায়ন আছে; গণশক্তির উত্থান ছাড়া এসবের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি, সত্যের প্রতিষ্ঠা হতে পারে না। নব্বইয়ে ছাত্র-জনতার নির্ধারক শক্তি হয়ে আত্মপ্রকাশই ঐতিহাসিক তিন জোটের রূপরেখা তথা সংসদীয় গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত করে স্বৈরতন্ত্রের কবর রচনা নিশ্চিত করেছিল। জনগণ নির্ধারক শক্তি হলেই মাত্র সমাজটা যুদ্ধাপরাধসহ সব রকম অপরাধ ও দুর্নীতিমুক্ত হওয়ার নিশ্চয়তা সৃষ্টি হতে পারে।
তখনই মাত্র সমস্ত মিথ্যাচার ধ্বংসের শক্তি, নাশকতার শক্তি, বিনাশের শক্তি পরাভূত হবে চিরতরে। সৃষ্টির শক্তি, দেশ গড়ার শক্তি, জনগণের শক্তিরই হবে চূড়ান্ত বিজয়।
১৩.০১.২০১৩
এর মধ্যেই নিহিত রয়েছে দুই পক্ষের অগ্নিপরীক্ষা, দেশপ্রেম এবং জনগণের প্রতি সর্বোচ্চ দায়িত্ববোধের। সাধারণ গণমানুষ কখনোই চাইবে না রক্তপাত-সংঘাতের মধ্য দিয়ে কোনো নিষ্পত্তি হোক। সাধারণ মানুষ শান্তিই চায়। প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বিরোধী দলের প্রতি সংঘাতের পথ পরিহার করার আহ্বান জানিয়ে প্রকারান্তরে জনগণের প্রত্যাশাকেই সমুন্নত রেখেছেন। জনগণ দেখতে চায়, একই উপলব্ধিতে আসছে বিরোধী জোটও। এটা অনস্বীকার্য যে দুই পক্ষেরই টানাপড়েন আছে বহিঃশক্তির। তবে অতীতের সব সংকটের মতো এবারও এ সংকটে জয়ী হবে চূড়ান্তভাবে জনগণই। গণতান্ত্রিক সংগ্রামের সর্বস্তরে চূড়ান্ত ও নির্ধারক শক্তি হচ্ছে জনগণ। জনগণের উদ্যমই জাতীয় ঐক্যকে সম্ভব করে তোলে।
জনগণকে বিপথগামী করার, ভিন্ন পথে চালিত করার কোনো কর্মসূচি চূড়ান্তভাবে সফল হতে পারে না। ইতিমধ্যে একাধিকবারই প্রমাণিত হয়েছে, জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুরের অবরোধ-হরতাল জনগণ প্রত্যাখ্যানই করে। বিপরীতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদই জনগণ সমর্থন করে।
এখন পর্যন্ত সাধারণ মানুষই সবচেয়ে অসংগঠিত রয়ে গেছে। কিন্তু অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে তারা চূড়ান্তভাবে এ উপলব্ধিতেই আসতে বাধ্য হবে যে তাদের জোট বাঁধা ও সংগঠিতভাবে মাথা তুলে দাঁড়ানো ছাড়া কিছুতেই জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হবে না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোন ধরনের সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে, তা চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করতে হলে জাতীয় ঐক্যের (ন্যাশনাল কনসেনশাস) বিকল্প নেই।
জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার বিবরণ দিয়েছেন, মহাজোট সরকারের আমলে কারচুপিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনেক দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন; তার পরও কিন্তু শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনকেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বিরোধী দলকে যথেষ্ট বলে মানানো সম্ভব হবে না। সংলাপ ছাড়া, জাতীয় ঐক্য ও সমঝোতা ছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাঠামো ও ধরন সম্পর্কে কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব হবে না। এটাই বর্তমানের সুকঠিন বাস্তবতা। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নয়ন ও জনকল্যাণের যে বিবরণ তুলে ধরেছেন, সে ব্যাপারে দ্বিমতের কোনো অবকাশ নেই। কিন্তু সেই সঙ্গে এটাও মানতে হবে, যেকোনো মূল্যে সেই উন্নয়ন ও জনকল্যাণ ধরে রাখতে হবে এবং সে জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সংগঠিত জনসমর্থন ও সুদৃঢ় জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য।
আজ এই ক্রান্তিলগ্নে অত্যন্ত ধীরস্থিরভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, কোনো রকম 'ইগো' দ্বারা চালিত হলে চলবে না; ক্ষমতার রাজনীতি, ক্ষমতার মোহ থেকে মুক্ত হয়ে সর্বোচ্চ জনকল্যাণের স্বার্থে ও সর্বোচ্চ দেশপ্রেমের পরিচয় দিয়ে সর্বতোভাবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অক্ষুণ্ন রাখতে হবে; অটুট রাখতে হবে জনগণের ঐক্য ও আস্থা এবং সর্বতোভাবে গ্রহণযোগ্য অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই নির্বাচন করতে হবে। সে নির্বাচনই হবে অর্থবহ, গণতান্ত্রিক ও সর্বতোভাবে গ্রহণযোগ্য।
তার আগে শুধু পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, সংঘাত ও সহিংসতার প্রসার দেশের কষ্টার্জিত স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে ক্রমাগত ধ্বংসের মুখেই নিয়ে যাবে।
আজ সময় এসেছে সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষের মুখর ও সোচ্চার হওয়ার; কোনোভাবেই কোনো সংকীর্ণ দলীয় বা জোট বা ব্যক্তিস্বার্থ নয়, দেশ ও জনগণের সর্বোচ্চ স্বার্থই সুপ্রতিষ্ঠিত করার পক্ষে।
একাত্তরে দেশের ধুলো-কাদামাখা নগ্নপদ-নগ্নগাত্র অগণিত কৃষক, শ্রমজীবী সাধারণ নারী-পুরুষের প্রায় নিরস্ত্রভাবে শত্রুর বীরত্বপূর্ণ মোকাবিলা করাই নিশ্চিত করে দেয় মুক্তিযুদ্ধের বিজয়কে। সাধারণ মানুষের সেই ভূমিকাই সব জাতীয় সংকট নিরসনের জন্য অপরিহার্য।
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, ক্ষুদ্র, দলীয়, ব্যক্তি বা গোষ্ঠীস্বার্থ নিয়ে বিরোধ-বিসংবাদে দীর্ণ সব সমাজেই একটা পর্যায়ে এমন একটা চরম উপলব্ধির মুহূর্ত আসে, যখন চিরকাল নিষ্পেষিত, নিপীড়িত, উপেক্ষিত মানুষই সবেগে ঐক্যবদ্ধভাবে মাথা তুলে দাঁড়ায় এবং নিঃস্বার্থভাবে প্রতিষ্ঠা করে চিরন্তন সত্যকে। এ দেশের স্বাধীনতার জন্য রক্তদান সত্য বলেই একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের, মানবতাবিরোধী অপরাধকারীদের বিচার ও শাস্তি হবে অনিবার্য।
এ দেশে, এ সমাজে সত্য একাত্তরের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। সত্য ত্রিশ লাখ শহীদের রক্ত ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা। সত্য স্বৈরশাসন উৎখাত করে নব্বইয়ে সুপ্রতিষ্ঠিত সংসদীয় গণতন্ত্র। নিঃশেষে প্রাণ বিসর্জন দিয়ে সমাজের সাধারণ মানুষই এসব সত্যের প্রতিষ্ঠাতা। তারা অক্ষয়, অজর, অমর। তাদের ভৈরব উত্থানের মধ্য দিয়েই হবে সত্যের অভিষেক। এ সমাজে শোষণ-বঞ্চনা আছে, দুর্বৃত্তায়ন আছে, সম্পদের কেন্দ্রীভবন ও নিঃস্বায়ন আছে; গণশক্তির উত্থান ছাড়া এসবের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি, সত্যের প্রতিষ্ঠা হতে পারে না। নব্বইয়ে ছাত্র-জনতার নির্ধারক শক্তি হয়ে আত্মপ্রকাশই ঐতিহাসিক তিন জোটের রূপরেখা তথা সংসদীয় গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত করে স্বৈরতন্ত্রের কবর রচনা নিশ্চিত করেছিল। জনগণ নির্ধারক শক্তি হলেই মাত্র সমাজটা যুদ্ধাপরাধসহ সব রকম অপরাধ ও দুর্নীতিমুক্ত হওয়ার নিশ্চয়তা সৃষ্টি হতে পারে।
তখনই মাত্র সমস্ত মিথ্যাচার ধ্বংসের শক্তি, নাশকতার শক্তি, বিনাশের শক্তি পরাভূত হবে চিরতরে। সৃষ্টির শক্তি, দেশ গড়ার শক্তি, জনগণের শক্তিরই হবে চূড়ান্ত বিজয়।
১৩.০১.২০১৩
No comments