পবিত্র কোরআনের আলো-মানুষের প্রকৃত পরিচয় তার কর্মের মাধ্যমে, পিতৃপরিচয়ের মাধ্যমে নয়
৪৪. ওয়া ক্বীলা ইয়া-আরদুব্লা'য়ী মা-আকি ওয়া ইয়া ছামা-উ আক্বলি'য়ী ওয়া গীদ্বাল মা-উ ওয়া ক্বুদ্বিইয়াল আমরু ওয়াছ্তাওয়াত আ'লাল জূদিয়্যি ওয়া ক্বীলা বু'দ্বান লিলক্বাওমিয্ য্যা-লিমীন।
৪৫. ওয়া না-দা নূহুর্ রাব্বাহূ ফাক্বা-লা রাবি্ব ইন্নাব্নী মিন আহ্লী; ওয়া ইন্না ওয়া'দাকাল হ্বাক্কু ওয়া আনতা আহ্বকামুল হ্বা-কিমীন।
৪৬. ক্বা-লা ইয়া-নূহু ইন্নাহূ লাইছা মিন্ আহ্লিকা; ইন্নাহূ আ'মালুন গাইরু ছ্বা-লিহি্বন ফালা তাছ্আল্নি মা লাইছা লাকা বিহী ই'লমুন; ইন্নী আয়ি'য্বুকা আন তাকূনা মিনাল জা-হিলীন। [সুরা : হুদ, আয়াত : ৪৪-৪৬]
অনুবাদ
৪৪. এবং (এরপর আল্লাহর তরফ থেকে) বলা হলো, হে জমিন, তুমি নিজের পানি গ্রাস করে নাও, আর হে আকাশ তুমি শান্ত হও। সুতরাং পানি নেমে গেল এবং প্লাবনের সমাপ্তি ঘটল। আর নৌকা জুদী পাহাড়ে এসে থামল। (আল্লাহর পক্ষ থেকে) বলে দেওয়া হলো, অত্যাচারী একটি সম্প্রদায়কে ধ্বংস করে দেওয়া হলো।
৪৫. আর নুহ তাঁর প্রতিপালককে ডাক দিয়ে বললেন, হে আমার প্রতিপালক, আমার পুত্র তো আমার পরিবারেরই একজন। নিশ্চয়ই তোমার ওয়াদা সত্য (অর্থাৎ তুমি বলেছ, আমার পরিবারকে তুমি রক্ষা করবে) এবং তুমি সব বিচারকের ওপর শ্রেষ্ঠ বিচারক।
৪৬. আল্লাহ বললেন, হে নুহ, তুমি নিশ্চিত জেনে রেখো, সে তোমার পরিবারবর্গের অন্তর্ভুক্ত নয়, সে তো অসৎ কর্মে লিপ্ত। সুতরাং তুমি আমার কাছে এমন জিনিস চেয়ো না, যা সম্পর্কে তোমার কোনো জ্ঞান নেই। আমি তোমাকে সতর্ক হওয়ার উপদেশ দিচ্ছি, যেন তুমি মূর্খদের দলভুক্ত না হয়ে যাও।
ব্যাখ্যা
৪৪ নম্বর আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে, দীর্ঘ প্লাবনের পর একসময় প্লাবনের সমাপ্তি ঘটল। অর্থাৎ আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ হলো এবং জমিন পানি শুষে নিল। আর এই প্লাবনের মধ্য দিয়ে নুহ (আ.)-এর কওমের অবাধ্য অত্যাচারী সম্প্রদায় সমূলে বিনাশ হয়ে গেল। আল্লাহর অবাধ্যতার পরিণতি হিসেবে একটা জাতিকে প্লাবনের পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করা হলো।
৪৫ ও ৪৬ নম্বর আয়াতে নুহ (আ.)-এর সেই অবাধ্য পুত্র 'কিনআনের' প্রসঙ্গটা আবার এসেছে এবং 'কিনআন' ও নুহের অবস্থানের বিষয়টা আরো স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। হজরত নুহ (আ.) আল্লাহর কাছে আরজি জানিয়েছিলেন, তাঁর পুত্র কিনআনকে রক্ষা করার। আরজি জানানোর ভিত্তি ছিল এই যে আল্লাহ তাঁর পরিবারকে রক্ষা করার সুস্পষ্ট আশ্বাস দিয়ে রেখেছেন। কিন্তু নুহ (আ.) জানতেন না যে তাঁর পুত্র কিনআন ইমানদার নয় এবং চরম ধৃষ্টতার কারণে ইমান তার ভাগ্যেই নেই। নুহ যদিও পিতৃত্বের আবেগে তাঁর এই অবাধ্য পুত্রকেও তাঁর পরিবারের একজন বলছেন, তবু আল্লাহ বলছেন যে সে তাঁর পরিবারের কেউ নয়। কারণ সে ইমানদার নয় এবং অসৎ কর্মে লিপ্ত। সে আসলে কাফিরদের দলভুক্ত, এটাই তার পরিচয়। মানুষের প্রকৃত পরিচয় তার কর্মের মাধ্যমে, পিতৃপরিচয়ের মাধ্যমে নয়। এটাই আল্লাহর ন্যায়বিচারের মানদণ্ড। কিনআনের প্রসঙ্গ ধরেই আল্লাহ তায়ালা তাঁর নবীকে এমন কিছু চাইতে নিষেধ করেছেন, যে ব্যাপারে তাঁর কোনো জ্ঞান নেই। এ ব্যাপারে নবীকে কঠোরভাবে সতর্কও করা হয়েছে। কারণ এটা সর্বকালের জন্য অত্যন্ত মৌলিক নীতিগত অবস্থান। সত্য ও ন্যায়ের প্রতি অনুগতরা এবং অবাধ্যরা সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটি সম্প্রদায়।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
৪৬. ক্বা-লা ইয়া-নূহু ইন্নাহূ লাইছা মিন্ আহ্লিকা; ইন্নাহূ আ'মালুন গাইরু ছ্বা-লিহি্বন ফালা তাছ্আল্নি মা লাইছা লাকা বিহী ই'লমুন; ইন্নী আয়ি'য্বুকা আন তাকূনা মিনাল জা-হিলীন। [সুরা : হুদ, আয়াত : ৪৪-৪৬]
অনুবাদ
৪৪. এবং (এরপর আল্লাহর তরফ থেকে) বলা হলো, হে জমিন, তুমি নিজের পানি গ্রাস করে নাও, আর হে আকাশ তুমি শান্ত হও। সুতরাং পানি নেমে গেল এবং প্লাবনের সমাপ্তি ঘটল। আর নৌকা জুদী পাহাড়ে এসে থামল। (আল্লাহর পক্ষ থেকে) বলে দেওয়া হলো, অত্যাচারী একটি সম্প্রদায়কে ধ্বংস করে দেওয়া হলো।
৪৫. আর নুহ তাঁর প্রতিপালককে ডাক দিয়ে বললেন, হে আমার প্রতিপালক, আমার পুত্র তো আমার পরিবারেরই একজন। নিশ্চয়ই তোমার ওয়াদা সত্য (অর্থাৎ তুমি বলেছ, আমার পরিবারকে তুমি রক্ষা করবে) এবং তুমি সব বিচারকের ওপর শ্রেষ্ঠ বিচারক।
৪৬. আল্লাহ বললেন, হে নুহ, তুমি নিশ্চিত জেনে রেখো, সে তোমার পরিবারবর্গের অন্তর্ভুক্ত নয়, সে তো অসৎ কর্মে লিপ্ত। সুতরাং তুমি আমার কাছে এমন জিনিস চেয়ো না, যা সম্পর্কে তোমার কোনো জ্ঞান নেই। আমি তোমাকে সতর্ক হওয়ার উপদেশ দিচ্ছি, যেন তুমি মূর্খদের দলভুক্ত না হয়ে যাও।
ব্যাখ্যা
৪৪ নম্বর আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে, দীর্ঘ প্লাবনের পর একসময় প্লাবনের সমাপ্তি ঘটল। অর্থাৎ আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ হলো এবং জমিন পানি শুষে নিল। আর এই প্লাবনের মধ্য দিয়ে নুহ (আ.)-এর কওমের অবাধ্য অত্যাচারী সম্প্রদায় সমূলে বিনাশ হয়ে গেল। আল্লাহর অবাধ্যতার পরিণতি হিসেবে একটা জাতিকে প্লাবনের পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করা হলো।
৪৫ ও ৪৬ নম্বর আয়াতে নুহ (আ.)-এর সেই অবাধ্য পুত্র 'কিনআনের' প্রসঙ্গটা আবার এসেছে এবং 'কিনআন' ও নুহের অবস্থানের বিষয়টা আরো স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। হজরত নুহ (আ.) আল্লাহর কাছে আরজি জানিয়েছিলেন, তাঁর পুত্র কিনআনকে রক্ষা করার। আরজি জানানোর ভিত্তি ছিল এই যে আল্লাহ তাঁর পরিবারকে রক্ষা করার সুস্পষ্ট আশ্বাস দিয়ে রেখেছেন। কিন্তু নুহ (আ.) জানতেন না যে তাঁর পুত্র কিনআন ইমানদার নয় এবং চরম ধৃষ্টতার কারণে ইমান তার ভাগ্যেই নেই। নুহ যদিও পিতৃত্বের আবেগে তাঁর এই অবাধ্য পুত্রকেও তাঁর পরিবারের একজন বলছেন, তবু আল্লাহ বলছেন যে সে তাঁর পরিবারের কেউ নয়। কারণ সে ইমানদার নয় এবং অসৎ কর্মে লিপ্ত। সে আসলে কাফিরদের দলভুক্ত, এটাই তার পরিচয়। মানুষের প্রকৃত পরিচয় তার কর্মের মাধ্যমে, পিতৃপরিচয়ের মাধ্যমে নয়। এটাই আল্লাহর ন্যায়বিচারের মানদণ্ড। কিনআনের প্রসঙ্গ ধরেই আল্লাহ তায়ালা তাঁর নবীকে এমন কিছু চাইতে নিষেধ করেছেন, যে ব্যাপারে তাঁর কোনো জ্ঞান নেই। এ ব্যাপারে নবীকে কঠোরভাবে সতর্কও করা হয়েছে। কারণ এটা সর্বকালের জন্য অত্যন্ত মৌলিক নীতিগত অবস্থান। সত্য ও ন্যায়ের প্রতি অনুগতরা এবং অবাধ্যরা সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটি সম্প্রদায়।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments