চাকরিচ্যুত হচ্ছেন সেই মাযহারুল ও কোহিনুর মিয়া- হাওয়া ভবন ঘনিষ্ঠ কনস্টেবল রুহুল আমিন টিআই প্যারেডে আটক by গাফফার খান চৌধুরী
বহুল আলোচিত পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মাযহারম্নল ইসলাম ও এসপি কোহিনুর মিয়া চাকরিচ্যুত হচ্ছেন। এ দু'কর্মকর্তার চাকরিচ্যুতির গেজেট তৈরির কাজ চলছে।
বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে আওয়ামী লীগের মহিলা কর্মী শানত্মা মাসির ওপর অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় এসপি কোহিনুর মিয়ার সহযোগী বহুল আলোচিত সেই কনস্টেবল রুহুল আমিনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দারা। এ মামলায় মাযহারম্নল ইসলাম ও কোহিনুর মিয়া পলাতক রয়েছেন। অন্যদিকে ময়মনসিংহের নান্দাইল পৌরসভা নির্বাচনে এসপি কোহিনুর মিয়ার গুলি চালানো এবং গুলিতে দু'জনের মৃতু্যবরণ করার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাটির তদনত্ম নতুন গতি পাচ্ছে। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী নির্যাতনকারী ও হাওয়া ভবনের আশীর্বাদপুষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা হিসাবে পরিচিতি লাভ করে অতিরিক্ত ডিআইজি মাযহারম্নল ইসলাম ও এসপি কোহিনুর মিয়া। বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সাবের হোসেন চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগের বহু সিনিয়র নেতাকে রাজপথে বুটের তলায় পিষ্ট করে পুলিশ। এছাড়া আওয়ামী লীগকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা ছিল তার নেশার মতো। তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোটের সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও হাওয়া ভবনের আশীর্বাদে বেপরোয়া হয়ে ওঠে এসপি কোহিনুর মিয়া। আওয়ামী লীগকে রাজপথে দমন পীড়নে এসপি কোহিনুর মিয়াকে নানাভাবে কাজে লাগায় বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। এ রকম বহু চাঞ্চল্যকর ঘটনার জন্ম দিয়ে রাতারাতি হাওয়া ভবনের কাছে হিরো বনে যায় এসপি কোহিনুর মিয়া। ব্যাপক আলোচনার ঝড়ও তোলেন তিনি। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও হাওয়া ভবনের আশীর্বাদে কোহিনুর মিয়ার টিকিও ছুঁতে পারেনি কেউ।গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালে বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ধানম-ি ২৭ নম্বরে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মসূচী চলাকালে এসপি কোহিনুর মিয়ার নির্দেশে পুলিশ শানত্মা মাসি নামে আওয়ামী লীগের এক মহিলা কর্মীর ওপর নির্মম নির্যাতন চালায়। কোহিনুর মিয়ার নির্দেশে কনস্টেবল রম্নহুল আমিন রাসত্মায় ফেলে অমানবিক নির্যাতন করে। এ ব্যাপারে মামলা হলে চলতি বছর ২৯ সেপ্টেম্বর আদালত অতিরিক্ত ডিআইজি মাযহারম্নল ইসলাম, এসপি কোহিনুর মিয়া ও কনস্টেবল রম্নহুল আমিনের বিরম্নদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হয় । এরপর থেকেই মাযহারম্নল ইসলাম ও এসপি কহিনুর মিয়া পলাতক। গত ২৭ জানুয়ারি ওই সময় পুলিশ বিভাগে রম্নহুল আমিন নামের সব কনস্টেবলকে রাজারবাগ মাঠে ডেকে পাঠানো হয়। রাজারবাগে রম্নহুল আমিন নামের ৬ জন কনস্টেবল হাজির হয়। মামলার বাদী ৬ রম্নহুল আমিনের মধ্য থেকে নির্যাতনকারী রম্নহুল আমিনকে শনাক্ত করেন। পরে শুক্রবার রম্নহুল আমিনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। অপর দু'পুলিশ কর্মকর্তা মাযহারম্নল ইসলাম ও কোহিনুর মিয়া পলাতক রয়েছেন। এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের দৰিণ জোনের ডিসি মনিরম্নল ইসলাম জানান, কোন অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা ৬০ দিন কর্মৰেত্রে অনুপস্থিত থাকলে তাঁকে চাকরিচু্যত করার বিধান রয়েছে। এমনি এ দু'কর্মকর্তার বিরম্নদ্ধে ইতোপূর্বে আনীত অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয়েছে। এ দু'কর্মকর্তাকে বিধি মোতাবেক চাকরিচু্যত করা হতে পারে বলেও তিনি জানান।
এছাড়া ২০০৪ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল পৌরসভার নির্বাচনে তৎকালীন ময়মনসিংহের এসপি কোহিনুর মিয়া গুলিবষর্ণের ঘটনাটির তদনত্ম চলছে জোরেসোরে। গুলিতে সুজন ও তাহের নামে দু'জন মারা যাওয়ার ঘটনাটি সিআইডি পুলিশ তদনত্ম করছে। সম্প্রতি তদনত্ম নতুন গতি পেয়েছে। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, বিধি মোতাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি মাযহারম্নল ইসলাম ও এসপি কোহিনুর মিয়া চাকরিচু্যত হচ্ছেন। এ ব্যাপারে গেজেট প্রস্তুতির কাজ চলছে।
No comments