কুয়াশার চাদরে মোড়ানো ক্যাম্পাস- সুজন ঘোষ
ড়ির কাঁটা দুপুর পেরিয়েছে, সময়ের যাত্রা এখন শেষ বিকেলের দিকে। অথচ আকাশে দেখা নেই সূর্যি মামার। সারা দিনে একবারের জন্যও উঁকি দেননি তিনি। কুয়াশার চাদর ঢেকে দিয়েছে চরাচর। সূর্যি মামার আড়াল প্রকৃতিকেই করে তুলেছে রহস্যময়।
জমাটবদ্ধ কুয়াশা। একটু যেন থমকে গেছে জীবনের গতি। এ অবস্থা ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও। প্রকৃতির বিরূপতা এখানেও।পাহাড় ঘেরা অপরূপ পরিবেশে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। পাহাড়ের কোলের এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতেও শীতের তীব্রতা অন্য স্থানের মতোই অনুভূত। জমাট কুয়াশায় তারম্নণ্যের উচ্ছলতায়ও কিছুটা ভাটা পরেছে। তবে একেবারে থমকে নেই কিছুই। শীতের তীব্রতা কাটিয়ে ওঠার প্রচেষ্টাও থেমে নেই।
চবি ক্যাম্পাসের মিলনকেন্দ্র কলা অনুষদ ঝুপড়ি। আড্ডাপ্রিয় ছাত্র-ছাত্রীরা একবারের জন্য হলেও এখানে ঢুঁ মারবেই। অন্য সময়ে শিার্থীদের আড্ডায় সকাল থেকেই মুখর হয়ে উঠে এ ঝুপড়ি। তবে চলতি মৌসুমে শীতের প্রকোপ বেশি। তাই কিছুটা ছন্দপতন ঘটেছে এ দৃশ্যের। দুপুর গড়িয়ে বিকেল, তারপরও ঠিক ভাবে জমে ওঠে না আড্ডা। শীতের জড়তাতার মধ্যে চলে আড্ডা। গ্রাম বাংলার পৌষ পার্বনের পিঠার সেই আমেজ শহরে পাওয়া না গেলেও ক্যাম্পাসে সেই আমেজ কিছুটা হলেও পাত্তয়া যায়।
এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে গত ১৮ জানুয়ারি ঝুপড়ির খোলা প্রাঙ্গনে ফায়ার ক্যাম্পের আয়োজন করে একদল ছাত্রছা্ত্রী। কাছে গিয়ে দেখা গেল, অধিকাংশই সদ্য ভর্তি হওয়া প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রী। তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিল চবি উদীচীর সাধারণ সম্পাদক আয়াচ মাবুদ। আগুন জ্বালাতে ব্যসত্ম এ নবীন প্রাণগুলো কেউ ব্যসত্ম কাঠ সংগ্রহে, আবার কেউবা খড়কুটো। আর তাদের সম্মিলিত প্রয়াসে একসময় দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে আগুন। কিছুণের জন্য হলেও ঝুপড়ি থেকে বিদায় নেয় শীত। নাট্যকলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র মামুন বলেন, তীব্র শীতে দেশের লাখ লাখ মানুষ প্রচ- কষ্ট পাচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকেই শীত তাড়ায় সামান্য খড়কুটো জ্বালিয়ে। তাই এদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আমাদের এ আয়োজন। এছাড়া শীতের দিনে ক্যাম্পাসের অন্য আড্ডাস্থলের মুখরতা নেই বললেই চলে। তারপরও থেমে নেই ব্যসত্মতা। অনেকেই ব্যসত্ম কাস নিয়ে, কেউবা টিউটোরিয়াল আবার কারও ব্যসত্মতা চলমান পরীা নিয়ে। তারপরও যে যার মতো করে ক্যাম্পাসে উদ্্যাপন করছে শীতের দিনগুলো।
গাই মানবতার জয়গান
অন্যান্য বারের তুলনায় এবার শীতের মাত্রা অনেক বেশি। এতে দেশের বিভিন্ন প্রানত্মের মানুষের কষ্টের সীমা নেই। তাদের এ দুভের্াগ লাঘব করার জন্য এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিাথর্ীরা। চবির
সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রপদ শীতবস্ত্র সংগ্রহে ক্যাম্পাসে ব্যাপক তৎপরতা চালায়। এজন্য চাকসু'র নিচতলায় অফিসও চালু করে প্রপদের কর্মীরা। তাদের এ কার্যক্রমে সাধারণ শিার্থীরা ব্যাপক সাড়া দেয়। শীত বস্ত্র সংগ্রহ প্রসঙ্গে প্রপদের সুমী চক্রবর্ত্তী ও রোকন জনকণ্ঠকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিার্থী
হিসেবে মানুষ ও সমাজের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। শীতার্ত মানুষদের যন্ত্রণা দূর করার জন্য এ ুদ্র প্রয়াস। এদিকে চারম্নকলা বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা চট্টগ্রামের বটতলী স্টেশনে শীতার্তদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করে। তারা এ সময় আড়াই শতাধিক মানুষের হাতে গরম কাপড় তুলে দেন। চারম্নকলার রাজীব দত্ত, সুমিত, রিয়াদ,
মাহবুব,রাশেদসহ অন্য ছাত্র-ছাত্রীরা জানান, একজনও যদি এ তীব্র শীত নিবারণ করতে পারে তাহলে আমাদের এ উদ্যোগে সফল হবে।
No comments