আমিনবাজারে ছয় ছাত্র হত্যা-৬০ জন অভিযুক্ত
আমিনবাজারে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় ৬০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে র্যাব। গতকাল রবিবার র্যাবের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরিফউদ্দিন আহমেদ এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
পাশাপাশি তিনি একই ঘটনায় জীবিত আল আমিন এবং পিটিয়ে হত্যা করা ছয় ছাত্রকে ডাকাত উল্লেখ করে দায়ের করা মামলারও চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনটি গ্রহণ করে আদালত মিথ্যা ডাকাতি মামলা দায়েরের জন্য বাদী আব্দুল মালেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। আব্দুল মালেক হত্যা মামলার আসামি।
ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র ও প্রতিবেদনটি দাখিল করা হয়। অভিযোগপত্র গ্রহণের বিষয়ে আগামী ১৬ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পিপি আনোয়ারুল কবির বাবুল।
হত্যা মামলায় দাখিল করা অভিযোগপত্রে আব্দুল মালেককে ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন সাঈদ মেম্বার, আবদুর রশিদ, ইসমাইল হোসেন রেফু, নিহর ওরফে জমসের আলী, মীর হোসেন, মজিবুর রহমান, কবির হোসেন, আনোয়ার হোসেন, রজুর আলী সোহাগ, আলম, রানা, আবদুল হালিম, আলমাস মিয়া, শাহীন আহমেদ, ফরিদ খান, রাজীব হোসেন, রহিম ওরফে হাতকাটা রহিম, ওয়াসিম, সেলিম ওরফে সেইল্যা, সানোয়ার হোসেন, শামসুল হক ওরফে শামসু মেম্বার, রাশেদ, সাইফুল, আবদুস সাত্তার, সেলিম, মনির, ছাবি্বর আহমেদ, আলমগীর, আনোয়ার হোসেন আনু, মোবারক হোসেন, অখিল খন্দকার, বশির, রুবেল, নুরুল ইসলাম, আনিস, সালেহ আহমেদ, শাহাদাৎ হোসেন জুয়েল, টুটল, অখিল, মাসুদ, নিজামুদ্দিন, মোখলেছ, ফালান, আফজাল, বাদশা মিয়া, তোতন, সাইফুল (২), রহিম (২), শাহজাহান, সুলতান, সোহাগ, লেমন, সায়মন, এনায়েত, হায়দার, আবদুল খালেক, ইমান আলী, দুলাল ও আলম।
আসামিদের মধ্যে ১০ জন কারাগারে, ১৪ জন জামিনে এবং ৩৬ জন পলাতক। গ্রেপ্তারকৃত ২৪ জনের মধ্যে ১৪ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
দণ্ডবিধির ৩২৩/৩০৭/৩০২/২০১/৩৪ ধারায় দাখিল করা অভিযোগপত্রে ৯২ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ১৭ জুলাই শবেবরাতের রাতে আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামসংলগ্ন কেবলার চরে ডাকাত সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয় মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের তিন শিক্ষার্থীসহ ছয় কলেজছাত্রকে।
নিহতরা হলেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ম্যাপল লিফের এ লেভেলের ছাত্র শামস রহিম শামাম (১৮), মিরপুর বাঙলা কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তৌহিদুর রহমান পলাশ (২০), একই কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ইব্রাহিম খলিল (২১) ও উচ্চমাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র কামরুজ্জামান কান্ত (১৬), তেজগাঁও কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র টিপু সুলতান (১৯) ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সিতাব জাবির মুনিব (২০)। তাঁরা পরস্পরের বন্ধু ছিলেন বলে জানা যায়। নিহতদের সঙ্গে থাকা আরেক বন্ধু আল আমিন গুরুতর আহত অবস্থায় প্রাণে বেঁচে যান।
ঘটনার পর কথিত ডাকাতির অভিযোগে বেঁচে যাওয়া আল আমিনসহ নিহতদের বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা করেন স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক। পরে পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচ-ছয় শ গ্রামবাসীকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করে।
এ হত্যার ঘটনায় সাভার থানার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি। একই সঙ্গে থানার পুলিশের ভূমিকা তদন্তে চার সদস্যের কমিটি করে পুলিশ সদর দপ্তর। এ কমিটি তথ্যানুসন্ধানের পর ওই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা ছিল 'অপেশাদার ও দায়িত্বহীন' বলে মত প্রকাশ করে।
প্রসঙ্গত, ওই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে মানবাধিকার সংগঠন ন্যাশনাল ফোরাম ফর প্রটেকশন অব হিউম্যান রাইটসের মহাসচিব আইনজীবী তাজুল ইসলাম গত বছরের জুলাইয়ে একটি রিট আবেদন করেন। ওই রিটের চূড়ান্ত শুনানির পর হাইকোর্ট বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। বিচার বিভাগীয় তদন্তে নিহতরা ডাকাত নন বলে প্রতিবেদন দেওয়া হলে সাভার থানার পুলিশ থেকে তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি। কিন্তু সিআইডির তদন্তও সন্তোষজনক না হওয়ায় গত ৭ আগস্ট মামলার তদন্তভার র্যাবকে দিয়ে তদন্ত শেষ করতে চার মাস সময় বেঁধে দেন হাইকোর্ট।
র্যাবের আগে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মো. সিরাজুল হক মামলাটির তদন্ত করেন। এর আগে তদন্ত করেন সাভার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মতিয়ার রহমান মিয়া।
ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র ও প্রতিবেদনটি দাখিল করা হয়। অভিযোগপত্র গ্রহণের বিষয়ে আগামী ১৬ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পিপি আনোয়ারুল কবির বাবুল।
হত্যা মামলায় দাখিল করা অভিযোগপত্রে আব্দুল মালেককে ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন সাঈদ মেম্বার, আবদুর রশিদ, ইসমাইল হোসেন রেফু, নিহর ওরফে জমসের আলী, মীর হোসেন, মজিবুর রহমান, কবির হোসেন, আনোয়ার হোসেন, রজুর আলী সোহাগ, আলম, রানা, আবদুল হালিম, আলমাস মিয়া, শাহীন আহমেদ, ফরিদ খান, রাজীব হোসেন, রহিম ওরফে হাতকাটা রহিম, ওয়াসিম, সেলিম ওরফে সেইল্যা, সানোয়ার হোসেন, শামসুল হক ওরফে শামসু মেম্বার, রাশেদ, সাইফুল, আবদুস সাত্তার, সেলিম, মনির, ছাবি্বর আহমেদ, আলমগীর, আনোয়ার হোসেন আনু, মোবারক হোসেন, অখিল খন্দকার, বশির, রুবেল, নুরুল ইসলাম, আনিস, সালেহ আহমেদ, শাহাদাৎ হোসেন জুয়েল, টুটল, অখিল, মাসুদ, নিজামুদ্দিন, মোখলেছ, ফালান, আফজাল, বাদশা মিয়া, তোতন, সাইফুল (২), রহিম (২), শাহজাহান, সুলতান, সোহাগ, লেমন, সায়মন, এনায়েত, হায়দার, আবদুল খালেক, ইমান আলী, দুলাল ও আলম।
আসামিদের মধ্যে ১০ জন কারাগারে, ১৪ জন জামিনে এবং ৩৬ জন পলাতক। গ্রেপ্তারকৃত ২৪ জনের মধ্যে ১৪ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
দণ্ডবিধির ৩২৩/৩০৭/৩০২/২০১/৩৪ ধারায় দাখিল করা অভিযোগপত্রে ৯২ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ১৭ জুলাই শবেবরাতের রাতে আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামসংলগ্ন কেবলার চরে ডাকাত সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয় মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের তিন শিক্ষার্থীসহ ছয় কলেজছাত্রকে।
নিহতরা হলেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ম্যাপল লিফের এ লেভেলের ছাত্র শামস রহিম শামাম (১৮), মিরপুর বাঙলা কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তৌহিদুর রহমান পলাশ (২০), একই কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ইব্রাহিম খলিল (২১) ও উচ্চমাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র কামরুজ্জামান কান্ত (১৬), তেজগাঁও কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র টিপু সুলতান (১৯) ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সিতাব জাবির মুনিব (২০)। তাঁরা পরস্পরের বন্ধু ছিলেন বলে জানা যায়। নিহতদের সঙ্গে থাকা আরেক বন্ধু আল আমিন গুরুতর আহত অবস্থায় প্রাণে বেঁচে যান।
ঘটনার পর কথিত ডাকাতির অভিযোগে বেঁচে যাওয়া আল আমিনসহ নিহতদের বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা করেন স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক। পরে পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচ-ছয় শ গ্রামবাসীকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করে।
এ হত্যার ঘটনায় সাভার থানার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি। একই সঙ্গে থানার পুলিশের ভূমিকা তদন্তে চার সদস্যের কমিটি করে পুলিশ সদর দপ্তর। এ কমিটি তথ্যানুসন্ধানের পর ওই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা ছিল 'অপেশাদার ও দায়িত্বহীন' বলে মত প্রকাশ করে।
প্রসঙ্গত, ওই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে মানবাধিকার সংগঠন ন্যাশনাল ফোরাম ফর প্রটেকশন অব হিউম্যান রাইটসের মহাসচিব আইনজীবী তাজুল ইসলাম গত বছরের জুলাইয়ে একটি রিট আবেদন করেন। ওই রিটের চূড়ান্ত শুনানির পর হাইকোর্ট বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। বিচার বিভাগীয় তদন্তে নিহতরা ডাকাত নন বলে প্রতিবেদন দেওয়া হলে সাভার থানার পুলিশ থেকে তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি। কিন্তু সিআইডির তদন্তও সন্তোষজনক না হওয়ায় গত ৭ আগস্ট মামলার তদন্তভার র্যাবকে দিয়ে তদন্ত শেষ করতে চার মাস সময় বেঁধে দেন হাইকোর্ট।
র্যাবের আগে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মো. সিরাজুল হক মামলাটির তদন্ত করেন। এর আগে তদন্ত করেন সাভার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মতিয়ার রহমান মিয়া।
No comments