প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ প্রত্যাখ্যান করে সংলাপের আহ্বান বিএনপির
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি বলেছে, দেশে যে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে, তা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে কোনো কথা নেই। ভাষণে জনগণের অধিকার, গণতন্ত্র ও জনমতের প্রতি চরম পরিহাস করা হয়েছে।
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি মানা না হলে গণ-অভ্যুত্থানে রাজপথেই এর ফয়সালা হবে।
গতকাল রবিবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম বিএনপির এ প্রতিক্রিয়া তুলে ধরে বলেন, 'অনতিবিলম্বে জাতীয় নির্বাচনকালে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রবর্তনের উদ্দেশে বিরোধী দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার (সংলাপ) উদ্যোগ নিন, না হলে রাজপথে এই সংকটের সমাধান হবে।'
সরকারের চার বছরপূর্তি উপলক্ষে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। বিএনপি দুই দিন পর এই ভাষণের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাল।
তরিকুল ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এক দুর্জয় গণঅভ্যুত্থান রচনায় সারা দেশ উন্মুখ হয়ে আছে। এই পরিস্থিতি এড়াতে তিনি সরকারের প্রতি সংলাপের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরও আলোচনার পথ খোলা আছে কি না- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে তরিকুল বলেন, যুদ্ধের সময়ও আলোচনা হয়। মাও সে তুং ও চিয়াং কাইসেকের মধ্যে যুদ্ধের সময়ও আলোচনা হয়েছিল। 'আইনমন্ত্রী বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারে যাওয়ার আর সুযোগ নেই' সাংবাদিকরা এ কথা জানালে তিনি বলেন, 'যেভাবেই যিনি বলুন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার হতেই হবে। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মানুষের জন্য উচ্চ আদালত। আদালতের জন্য মানুষ নয়।
তরিকুল ইসলাম বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ দেশবাসীকে হতাশ করেছে। মানুষের জন্য আশার কোনো কথা নেই। ভাষণে ক্ষমতার দম্ভ ছিল, পরিহাস করা হয়েছে জনগণের অধিকার, গণতন্ত্র ও জনমতের প্রতি। আমরা প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ প্রত্যাখ্যান করছি।' তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী আবারও তাদের শাসন অব্যাহত রাখতে খায়েশ ব্যক্ত করে জনগণের সহানুভূতি ও সমর্থন চেয়েছেন। আমরা বলতে চাই, মানুষের প্রতি সামান্যতম দরদ ও সহানুভূতি থাকলে প্রধানমন্ত্রীর উচিত ছিল সব ব্যর্থতা ও অত্যাচারের জন্য ক্ষমা চেয়ে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানো।
তরিকুল বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর চার বছরের তাঁর সরকারের যে ফিরিস্তি দিয়েছেন, সেগুলো শুধু ভিত্তিহীন নয়, চরম হাস্যকরও বটে। ভাষণে এত অসত্য তথ্য দেওয়া হয়েছে, যার সব কিছুর জবাব দেওয়া আমরা প্রয়োজন মনে করছি না। দেশের মানুষ তাদের নিত্যকার জীবনযাপনের অভিজ্ঞতায় বুঝতে পারছে, একদলীয় বাকশালী স্বৈরশাসন অবসানের পর এই ধরনের অযোগ্য, ব্যর্থ, ধাপ্পাবাজ ও সন্ত্রাসী সরকার আর কখনো দেশের ক্ষমতায় বসেনি।' তিনি বলেন, সরকারের চার বছরের সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাট অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। নাগরিকরা আজ উৎপীড়ন ও লাঞ্ছনার শিকার। উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের লাঞ্ছিত করছে। সমাজের সন্মানিত ব্যক্তিদের এখন নানাভাবে হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আশাবাদকেও অলীক অভিহিত করেন তিনি।
তবে ভাষণ দীর্ঘ না করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে সাধুবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্য খুব একটা দীর্ঘ করেননি। এতে জনগণ মিথ্যার পীড়ন থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পেয়েছে বলে আমরা মনে করি।'
যুদ্ধাপরাধীর বিচার প্রসঙ্গে তরিকুল বলেন, 'বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের দল। সুতরাং যুদ্ধাপরাধের বিচারের আমরা কখনোই বিরোধী নই। আমরা বারবার জোর দিয়ে বলেছি, বিচার হতে হবে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন। সদ্য স্বাধীন দেশের তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ত্রিদেশীয় চুক্তি সই করে স্বীকৃত ১৯৫ জন পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীকে বিনা বিচারে ছেড়ে দিয়েছিল।
আওয়ামী লীগের বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, তোফায়েল আহমেদ, মোহাম্মদ নাসিম প্রমুখ সম্পর্কে তিনি বলেন, তাঁরা তত্ত্বাবধায়কবিরোধী কথা বলেন। তাঁরা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা। তাঁদের সম্পর্কে কিছু বলতে চাই না। তবে তাঁদেরও দায়িত্ব আছে, দেশ যাতে খারাপের দিকে না যায় তা লক্ষ রাখার।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'আমরা চাপাবাজিতে যেমন আওয়ামী লীগের সঙ্গে পারি না। তেমনি মিডিয়াও আমাদের ফেভার করে না।'
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ রায়, সাদেক হোসেন খোকা, শামসুজ্জামান দুদু, আমানউল্লাহ আমান, বরকত উল্লাহ বুলু, সালাহউদ্দিন আহমেদ, রুহুল কবীর রিজভী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা : গতকাল বিকেলে দলের যৌথ সভায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৭৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দুই দিনের কর্মসূচি নেওয়া হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১৯ জানুয়ারি সকাল ১১টায় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা জিয়ার কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করবে, ২০ জানুয়ারি মহানগর নাট্যমঞ্চে আলোচনা সভা হবে। সভাশেষে তরিকুল এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সভায় মঙ্গলবার ঢাকাসহ সারা দেশে ১৮ দলীয় জোটের এক ঘণ্টার মানবপ্রাচীর কর্মসূচি সফল করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
গতকাল রবিবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম বিএনপির এ প্রতিক্রিয়া তুলে ধরে বলেন, 'অনতিবিলম্বে জাতীয় নির্বাচনকালে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রবর্তনের উদ্দেশে বিরোধী দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার (সংলাপ) উদ্যোগ নিন, না হলে রাজপথে এই সংকটের সমাধান হবে।'
সরকারের চার বছরপূর্তি উপলক্ষে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। বিএনপি দুই দিন পর এই ভাষণের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাল।
তরিকুল ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এক দুর্জয় গণঅভ্যুত্থান রচনায় সারা দেশ উন্মুখ হয়ে আছে। এই পরিস্থিতি এড়াতে তিনি সরকারের প্রতি সংলাপের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরও আলোচনার পথ খোলা আছে কি না- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে তরিকুল বলেন, যুদ্ধের সময়ও আলোচনা হয়। মাও সে তুং ও চিয়াং কাইসেকের মধ্যে যুদ্ধের সময়ও আলোচনা হয়েছিল। 'আইনমন্ত্রী বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারে যাওয়ার আর সুযোগ নেই' সাংবাদিকরা এ কথা জানালে তিনি বলেন, 'যেভাবেই যিনি বলুন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার হতেই হবে। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মানুষের জন্য উচ্চ আদালত। আদালতের জন্য মানুষ নয়।
তরিকুল ইসলাম বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ দেশবাসীকে হতাশ করেছে। মানুষের জন্য আশার কোনো কথা নেই। ভাষণে ক্ষমতার দম্ভ ছিল, পরিহাস করা হয়েছে জনগণের অধিকার, গণতন্ত্র ও জনমতের প্রতি। আমরা প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ প্রত্যাখ্যান করছি।' তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী আবারও তাদের শাসন অব্যাহত রাখতে খায়েশ ব্যক্ত করে জনগণের সহানুভূতি ও সমর্থন চেয়েছেন। আমরা বলতে চাই, মানুষের প্রতি সামান্যতম দরদ ও সহানুভূতি থাকলে প্রধানমন্ত্রীর উচিত ছিল সব ব্যর্থতা ও অত্যাচারের জন্য ক্ষমা চেয়ে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানো।
তরিকুল বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর চার বছরের তাঁর সরকারের যে ফিরিস্তি দিয়েছেন, সেগুলো শুধু ভিত্তিহীন নয়, চরম হাস্যকরও বটে। ভাষণে এত অসত্য তথ্য দেওয়া হয়েছে, যার সব কিছুর জবাব দেওয়া আমরা প্রয়োজন মনে করছি না। দেশের মানুষ তাদের নিত্যকার জীবনযাপনের অভিজ্ঞতায় বুঝতে পারছে, একদলীয় বাকশালী স্বৈরশাসন অবসানের পর এই ধরনের অযোগ্য, ব্যর্থ, ধাপ্পাবাজ ও সন্ত্রাসী সরকার আর কখনো দেশের ক্ষমতায় বসেনি।' তিনি বলেন, সরকারের চার বছরের সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাট অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। নাগরিকরা আজ উৎপীড়ন ও লাঞ্ছনার শিকার। উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের লাঞ্ছিত করছে। সমাজের সন্মানিত ব্যক্তিদের এখন নানাভাবে হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আশাবাদকেও অলীক অভিহিত করেন তিনি।
তবে ভাষণ দীর্ঘ না করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে সাধুবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্য খুব একটা দীর্ঘ করেননি। এতে জনগণ মিথ্যার পীড়ন থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পেয়েছে বলে আমরা মনে করি।'
যুদ্ধাপরাধীর বিচার প্রসঙ্গে তরিকুল বলেন, 'বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের দল। সুতরাং যুদ্ধাপরাধের বিচারের আমরা কখনোই বিরোধী নই। আমরা বারবার জোর দিয়ে বলেছি, বিচার হতে হবে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন। সদ্য স্বাধীন দেশের তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ত্রিদেশীয় চুক্তি সই করে স্বীকৃত ১৯৫ জন পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীকে বিনা বিচারে ছেড়ে দিয়েছিল।
আওয়ামী লীগের বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, তোফায়েল আহমেদ, মোহাম্মদ নাসিম প্রমুখ সম্পর্কে তিনি বলেন, তাঁরা তত্ত্বাবধায়কবিরোধী কথা বলেন। তাঁরা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা। তাঁদের সম্পর্কে কিছু বলতে চাই না। তবে তাঁদেরও দায়িত্ব আছে, দেশ যাতে খারাপের দিকে না যায় তা লক্ষ রাখার।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'আমরা চাপাবাজিতে যেমন আওয়ামী লীগের সঙ্গে পারি না। তেমনি মিডিয়াও আমাদের ফেভার করে না।'
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ রায়, সাদেক হোসেন খোকা, শামসুজ্জামান দুদু, আমানউল্লাহ আমান, বরকত উল্লাহ বুলু, সালাহউদ্দিন আহমেদ, রুহুল কবীর রিজভী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা : গতকাল বিকেলে দলের যৌথ সভায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৭৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দুই দিনের কর্মসূচি নেওয়া হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১৯ জানুয়ারি সকাল ১১টায় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা জিয়ার কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করবে, ২০ জানুয়ারি মহানগর নাট্যমঞ্চে আলোচনা সভা হবে। সভাশেষে তরিকুল এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সভায় মঙ্গলবার ঢাকাসহ সারা দেশে ১৮ দলীয় জোটের এক ঘণ্টার মানবপ্রাচীর কর্মসূচি সফল করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
No comments