২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা-'হামলার আগে এনএসআই ডিজি হাওয়া ভবনে যান'
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার কয়েক দিন আগে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম হাওয়া ভবনে গিয়েছিলেন।
এনএসআইয়ের তৎকালীন মাঠ কর্মকর্তা বর্তমানে সহকারী পরিচালক ইউসুফ হোসেন গতকাল রবিবার আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় এ কথা বলেন।
গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের দুটি মামলায় ৬৬তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন এই এনএসআই কর্মকর্তা। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক শাহেদ নুর উদ্দিন সাক্ষীর জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন।
ইউসুফ হোসেন আদালতকে জানান, ১৯৯৮ সালে তিনি সরাসরি ফিল্ড অফিসার হিসেবে এনএসআইয়ে যোগ দেন। ২০০৪ সালে ডিজি শাখায় কর্মরত ছিলেন। তখন এনএসআইয়ের ডিজি (মহাপরিচালক) ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম।
ইউসুফ হোসেন আরো জানান, ২০০৪ সালের আগস্টের প্রথম দিকে ডিজি পাইলসের চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যান। চিকিৎসা শেষে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং ১২ আগস্ট সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি হন। ২৫ আগস্ট পর্যন্ত তিনি সিএমএইচে ভর্তি ছিলেন। ওই সময় মেজর শাহ আলম তাঁর পিএস ছিলেন। পিএসের নির্দেশে ফিল্ড অফিসার লুৎফুর রহমান, কনস্টেবল মনোয়ার এবং তিনি সিএমএইচে পালাক্রমে ডিজির দেখাশোনা করেন। তিনজনই ওয়্যারলেস সেটসহ ডিউটি করেন। ডিজি সিএমএইচে থাকার সময় স্বাভাবিকভাবেই চলাফেরা করতেন এবং বারান্দায় ও লনে পায়চারি করতেন। দোতলায় ভিআইপি কেবিনে থাকতেন তিনি। যাঁরা তাঁর দেখাশোনা করতেন তাঁরা পাশের কেবিনে থাকতেন।
সাক্ষী বলেন, ডিজি সিএমএইচে থাকাকালে একদিন দুপুর ১২টার দিকে সিএমএইচ থেকে বের হয়ে সরকারি জিপে করে বাইরে যান। দেড় ঘণ্টা পর তিনি ফেরেন। সাক্ষী ডিজির গাড়িচালককে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, ডিজি মহোদয় হাওয়া ভবনে গিয়েছিলেন।
ইউসুফ হোসেন বলেন, ২১ আগস্ট দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সিএমএইচে তাঁর ডিউটি ছিল। ওই দিন বিকেল সাড়ে ৪টার পর ডিজি কেবিন থেকে বের হয়ে প্রথমে বারান্দায়, পরে লনে কিছুটা বিচলিত অবস্থায় পায়চারি করছিলেন। দোতলা থেকে নামার সময় হঠাৎ করে ডিজি তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, 'তোমার ওয়্যারলেস ঠিক আছে তো?' উত্তরে ইউসুফ বলেন, 'স্যার, ঠিক আছে।' লনে পায়চারি করার সময় হঠাৎ তিনি (সাক্ষী) শুনতে পান, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় বোমা হামলা হয়েছে এবং অনেক লোক মারা গেছে।
ইউসুফ হোসেন আদালতকে বলেন, তিনি তখন তাড়াতাড়ি ডিজি রহিমকে এ সংবাদ জানান। ডিজি তখন কে কে মারা গেছে জানতে চান। তিনি জানান, আইভি রহমান, শেখ সেলিমসহ অনেক নেতা মারা গেছেন। ডিজি তখন জানতে চান, আর কোনো লিডার মারা গেছেন কি? এ কথা বলেই তিনি ওয়্যারলেস সেট নিয়ে তাঁর কেবিনে চলে যান।
ডিজি কেবিনে যাওয়ার পর সাক্ষী ইউসুফ হোসেন কোনো খবর না পেয়ে মুঠোফোনে এনএসআইয়ের বরখাস্ত কর্মকর্তা মাসুদের কাছে বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার অবস্থা জানতে চান। মাসুদ জানান, শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন। তবে অনেক নেতা-কর্মী মারা গেছেন।
সাক্ষী আরো জানান, ওই দিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে দুজন সাংবাদিক ডিজির কক্ষে প্রবেশ করেন। ওই সময় সেখানে ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক রেজ্জাকুল হায়দার উপস্থিত ছিলেন। আনুমানিক ১৫ মিনিট পর ওই দুই সাংবাদিক ডিজির কক্ষ থেকে বের হয়ে নিচে নামার সময় বলছিলেন, শেখ হাসিনা ও শেখ সেলিমের দ্বন্দ্বের কারণে এই বোমা হামলা হয়েছে- এ ধরনের সংবাদ পাবলিক খাবে না। এ কথা বলতে বলতে তাঁরা চলে যান। ঘণ্টাখানেক পর রেজ্জাকুল হায়দারও চলে যান।
ইউসুফ হোসেন বলেন, ডিউটি শেষে তিনি ডিজির কাছে বিদায় নিতে গেলে তিনি ওয়্যারলেস সেটটি ফেরত দেন। এর পরও কয়েক দিন সিএমএইচে ডিজিকে দেখাশোনা করার জন্য যান তিনি।
জবানবন্দি দেওয়া শেষ হলে আসামিপক্ষ সাক্ষীকে জেরা করে। আজ সোমবার আবার এই সাক্ষীর জেরার জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। শেখ হাসিনাসহ আহত হন শতাধিক। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার বিচার চলছে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এ। মামলায় এ পর্যন্ত ৬৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের দুটি মামলায় ৬৬তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন এই এনএসআই কর্মকর্তা। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক শাহেদ নুর উদ্দিন সাক্ষীর জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন।
ইউসুফ হোসেন আদালতকে জানান, ১৯৯৮ সালে তিনি সরাসরি ফিল্ড অফিসার হিসেবে এনএসআইয়ে যোগ দেন। ২০০৪ সালে ডিজি শাখায় কর্মরত ছিলেন। তখন এনএসআইয়ের ডিজি (মহাপরিচালক) ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম।
ইউসুফ হোসেন আরো জানান, ২০০৪ সালের আগস্টের প্রথম দিকে ডিজি পাইলসের চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যান। চিকিৎসা শেষে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং ১২ আগস্ট সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি হন। ২৫ আগস্ট পর্যন্ত তিনি সিএমএইচে ভর্তি ছিলেন। ওই সময় মেজর শাহ আলম তাঁর পিএস ছিলেন। পিএসের নির্দেশে ফিল্ড অফিসার লুৎফুর রহমান, কনস্টেবল মনোয়ার এবং তিনি সিএমএইচে পালাক্রমে ডিজির দেখাশোনা করেন। তিনজনই ওয়্যারলেস সেটসহ ডিউটি করেন। ডিজি সিএমএইচে থাকার সময় স্বাভাবিকভাবেই চলাফেরা করতেন এবং বারান্দায় ও লনে পায়চারি করতেন। দোতলায় ভিআইপি কেবিনে থাকতেন তিনি। যাঁরা তাঁর দেখাশোনা করতেন তাঁরা পাশের কেবিনে থাকতেন।
সাক্ষী বলেন, ডিজি সিএমএইচে থাকাকালে একদিন দুপুর ১২টার দিকে সিএমএইচ থেকে বের হয়ে সরকারি জিপে করে বাইরে যান। দেড় ঘণ্টা পর তিনি ফেরেন। সাক্ষী ডিজির গাড়িচালককে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, ডিজি মহোদয় হাওয়া ভবনে গিয়েছিলেন।
ইউসুফ হোসেন বলেন, ২১ আগস্ট দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সিএমএইচে তাঁর ডিউটি ছিল। ওই দিন বিকেল সাড়ে ৪টার পর ডিজি কেবিন থেকে বের হয়ে প্রথমে বারান্দায়, পরে লনে কিছুটা বিচলিত অবস্থায় পায়চারি করছিলেন। দোতলা থেকে নামার সময় হঠাৎ করে ডিজি তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, 'তোমার ওয়্যারলেস ঠিক আছে তো?' উত্তরে ইউসুফ বলেন, 'স্যার, ঠিক আছে।' লনে পায়চারি করার সময় হঠাৎ তিনি (সাক্ষী) শুনতে পান, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় বোমা হামলা হয়েছে এবং অনেক লোক মারা গেছে।
ইউসুফ হোসেন আদালতকে বলেন, তিনি তখন তাড়াতাড়ি ডিজি রহিমকে এ সংবাদ জানান। ডিজি তখন কে কে মারা গেছে জানতে চান। তিনি জানান, আইভি রহমান, শেখ সেলিমসহ অনেক নেতা মারা গেছেন। ডিজি তখন জানতে চান, আর কোনো লিডার মারা গেছেন কি? এ কথা বলেই তিনি ওয়্যারলেস সেট নিয়ে তাঁর কেবিনে চলে যান।
ডিজি কেবিনে যাওয়ার পর সাক্ষী ইউসুফ হোসেন কোনো খবর না পেয়ে মুঠোফোনে এনএসআইয়ের বরখাস্ত কর্মকর্তা মাসুদের কাছে বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার অবস্থা জানতে চান। মাসুদ জানান, শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন। তবে অনেক নেতা-কর্মী মারা গেছেন।
সাক্ষী আরো জানান, ওই দিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে দুজন সাংবাদিক ডিজির কক্ষে প্রবেশ করেন। ওই সময় সেখানে ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক রেজ্জাকুল হায়দার উপস্থিত ছিলেন। আনুমানিক ১৫ মিনিট পর ওই দুই সাংবাদিক ডিজির কক্ষ থেকে বের হয়ে নিচে নামার সময় বলছিলেন, শেখ হাসিনা ও শেখ সেলিমের দ্বন্দ্বের কারণে এই বোমা হামলা হয়েছে- এ ধরনের সংবাদ পাবলিক খাবে না। এ কথা বলতে বলতে তাঁরা চলে যান। ঘণ্টাখানেক পর রেজ্জাকুল হায়দারও চলে যান।
ইউসুফ হোসেন বলেন, ডিউটি শেষে তিনি ডিজির কাছে বিদায় নিতে গেলে তিনি ওয়্যারলেস সেটটি ফেরত দেন। এর পরও কয়েক দিন সিএমএইচে ডিজিকে দেখাশোনা করার জন্য যান তিনি।
জবানবন্দি দেওয়া শেষ হলে আসামিপক্ষ সাক্ষীকে জেরা করে। আজ সোমবার আবার এই সাক্ষীর জেরার জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। শেখ হাসিনাসহ আহত হন শতাধিক। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার বিচার চলছে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এ। মামলায় এ পর্যন্ত ৬৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
No comments