রুয়েটে ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষ প্রশাসন ভবনে ভাংচুর- সাংবাদিকসহ আহত ৫০, রামেকে ভর্তি ৩০
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিাথর্ীদের সঙ্গে শুক্রবার পুলিশের সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টাধাওয়ায় শিক, শিাথর্ী, পুলিশ, সাংবাদিকসহ অর্ধশত আহত হয়েছেন।
এদের মধ্যে ৩০ জনকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শিাথর্ীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি এবং প্রশাসন ভবনে ভাংচুর করেছেন। শিা সমাপনী উদ্যাপনকে কেন্দ্র করে পরিবহন শ্রমিকরা দুই ছাত্রকে মারপিটের ঘটনায় সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।জানা গেছে, রম্নয়েটের ইলেকট্রিক্যাল-০৫ ব্যাচের শিাথর্ীদের শুক্রবার র্যাগ ডে ছিল। র্যাগ ডে উদ্যাপন উপল েওই ব্যাচের শিাথর্ীরা বেলা ১২টার দিকে ক্যাম্পাস থেকে 'টমটম' র্যালি বের করেন। র্যালিটি রাজশাহী বাস স্টেশনের কাছে পেঁৗছলে শ্যামলী পরিবহনের একটি গাড়ি শিাথর্ীদের একটি ঘোড়াগাড়িকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এ সময় নুরম্নজ্জামান, জুয়েল, রবিন, রেজা ও রতন আহত হন। এ নিয়ে শ্যামলী পরিবহনের স্টাফদের সঙ্গে শিাথর্ীদের বাকবিত-া হয়। এক পর্যায়ে পরিবহন শ্রমিকরা লাটিসোটা নিয়ে শিাথর্ীদের ওপর অতর্কিতে হামলা করলে শিাথর্ীরা পালিয়ে ক্যাম্পাসে চলে আসেন। কিন্তু শ্রমিকরা আহত রেজা ও রতনকে আটক করে বেধড়ক মারপিট করে। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে যায়।
এদিকে পরিবহন শ্রমিকরা দু'জন শিাথর্ীকে আটকে রেখেছে_ এ খবর রম্নয়েট ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে বেলা ১টার দিকে শিাথর্ীরা রম্নয়েটের প্রধান গেটের সামনে মহাসড়ক অবরোধ করে বিােভ করেন। এ সময় পুলিশ রেজা ও রতনকে ক্যাম্পাসে নিয়ে এলে পরিস্থিতি শানত্ম হয়। কিন্তু জুমার নামাজ শেষে বিপুলসংখ্যক শিাথর্ী রম্নয়েটের প্রধান গেটের সামনে জড়ো হয়ে বিােভ মিছিল নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে তারা রম্নয়েটের পাশর্্ববতর্ী কাজলায় শ্যামলী এন্টারপ্রাইজের কাউন্টারে ভাংচুরের চেষ্টা চালান। এ সময় পুলিশ শিাথর্ীদের ওপর বেধড়ক লাঠিচার্জ করে। পুলিশের লাঠিচার্জে ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের শিক সেলিম হোসেন, শিাথর্ী কলেস্নাল, শহীদুলস্নাহসহ ৭/৮ শিাথর্ী গুরম্নতর আহত হন। শিাথর্ীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে এসে লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান নেন। বেলা দেড়টার দিকে শিাথর্ীরা প্রশাসন ভবনের সামনে পুনরায় সংগঠিত হয়ে বিােভ মিছিল নিয়ে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিপে করেন। পুলিশও শিাথর্ীদের ওপর ব্যাপক লাঠিচার্জ করে। সংঘর্ষে আহত হন ছাত্রলীগ নেতা আল আমিন, শিাথর্ী রবিন, ফিরোজ, সুইট, রেজা, নুরম্নজ্জামান, সুশানত্ম, প্রতীক, হিমেল, রিপন, ফটো সাংবাদিক আজাহার উদ্দিন, রম্নয়েটের ফিজিক্যাল ইনস্ট্রাকটর রোকনুজ্জামান, রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) সরদার নুরম্নল আমীন, মতিহার থানার ওসি তোফাজ্জল হোসেন, পরিদর্শক আব্দুল মান্নান, কনস্টেবল শহীদুল ইসলাম, তৌহিদুল, খায়রম্নজ্জামান, রম্নহুল আমীন, হাফিজুর রহমান, সুমনসহ ৪০/৪৫ জন। পরে পুলিশ ২৫/৩০ রাউন্ড টিয়ারশেল নিপে করে শিাথর্ীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পুলিশের ধাওয়া খেয়ে শিাথর্ীরা ক্যাম্পাসের ভেতরে দফায় দফায় বিােভ মিছিল এবং উপাচার্যের বাসভবনে ইটপাটকেল নিপে করেন। তারা প্রশাসন ভবনের দরজা-জানালার কাঁচ, নোটিস বোর্ড এবং একটি পিকআপ ভ্যান ভাংচুর করে বিােভ অব্যাহত রাখেন। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ ক্যাম্পাসের গেটে অবস্থান নেয়। দু'ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলাকালে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল মোমিন, সাধারণ সম্পাদক জেডু সরকার, রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন মুন, বর্তমান সভাপতি আউয়াল কবীর জয়, সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপু, ছাত্রলীগ নেতা আবু হুসাইন বিপুসহ ছাত্রলীগ কর্মীরা ক্যাম্পাসে এসে শিাথর্ীদের শানত্ম করেন। এ সময় বিুব্ধ শিাথর্ীরা উপাচার্য ও মতিহার থানার ওসির পদত্যাগ দাবিতে সেস্নাগান দেন। বিকেল ৪টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সিরাজুল করীম চৌধুরী ক্যাম্পাসে এসে শিাথর্ীদের সঙ্গে কথা বলেন। ছাত্রলীগ নেতা আল আমীন বলেন, শিাথর্ীদের সঙ্গে পুলিশের দু'ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ চললেও উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা কেউই ক্যাম্পাসে আসেননি। মতিহার থানার ওসি কোন কারণ ছাড়াই শিাথর্ীদের ওপর হামলা চালিয়েছে দাবি করে তিনি উপাচার্য ও ওসির পদত্যাগ দাবি করেন।
মতিহার থানার ওসি তোফাজ্জল হোসেন দাবি করেন, শিাথর্ীদের হামলায় তিনিসহ ৩৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশের উপ-কমিশনার সরদার নুরম্নল আমীন বলেন, শিাথর্ীরা সড়ক অবরোধ করে দোকানে ভাংচুরের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিপে করে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রম্নয়েট প্রশাসনের কর্মকর্তারা জরম্নরী সভা আহ্বান করেছেন। মতিহার থানার ওসি তোফাজ্জল হোসেন জানান, পুলিশ আইনী পদপে নেবে। শুক্রবার সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখার সময় থানায় কোন মামলা হয়নি।
No comments