আপীল ও হাইকোর্ট বিভাগে শীঘ্র বিচারপতি নিয়োগ- ফজলুল করিম হতে পারেন প্রধান বিচারপতি
প্রধান বিচারপতিসহ আপীল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে শীঘ্রই বিচারপতি নিয়োগ করা হচ্ছে। প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পর পরই আপীল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে নতুন বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হবে।
প্রধান বিচারপতি মোঃ তাফাজ্জাল ইসলাম ৭ ফেব্রম্নয়ারি অবসরে যাচ্ছেন। শীঘ্র আপীল বিভাগ থেকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হবে। প্রধান বিচারপতি নিয়োগে অতীতে নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটলেও এবার যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করা হবে। আপীল বিভাগে বর্তমান সাত বিচারপতি রয়েছেন সিনিয়রিটির দিক থেকে রয়েছেন বিচারপতি মোঃ ফজলুল করিম। তিনি অবসরে যাবেন চলতি বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর। নিয়ম অনুসরণ করলে তিনিই হবেন দেশের ১৮তম বিচারপতি। যদি আরও দু'এক জনের নাম শোনা যাচ্ছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সরকার শেষ পর্যনত্ম বিচারপতি মোঃ ফজলুল করিমকেই দেশের ১৮তম বিচারপতি নিয়োগ করতে পারেন। মোঃ ফজলুল করিম প্রধান বিচারপতি হলে সে ৰেত্রে বিচারপতি এমএ মতিন ও বিচারপতি বিজন কুমার দাস প্রধান বিচারপতি হতে পারবেন না। বিচারপতি এমএ মতিন অবসরে যাবেন চলতি বছরের ২৫ ডিসেম্বর। বিজন কুমার দাস অবসরে যাবেন ২০ এপ্রিল ২০১০। যদিও সিনিয়রিটির দিক থেকে বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান তৃতীয় স্থানে রয়েছেন।তিনি অবসরে যাবেন ১৪ নবেম্বর ২০১১ সালে। সম্ভবত তিনি প্রধান বিচারপতির তালিকায় তাঁর নাম নেই। পঞ্চম স্থানে অবস্থান করছেন বিচারপতি এবিএম খায়রম্নল হক। তিনি অবসরে যাবেন ২০১১ সালের ১৭ মে। প্রধান বিচারপতি কে হবেন, এমন নাম তাঁদের আসছে। তাঁদের মধ্যে বিচারপতি এবিএম খায়রম্নল হক অন্যতম। বর্তমান সরকার প্রধান বিচারপতি নিয়োগকে নিয়ম অনুসরণ মেনেই করতে চান। সে ৰেত্রে বিচারপতি মোঃ ফজলুল করিমকে প্রধান বিচারপতি করা হলে, পরবতর্ীতে বিচারপতি এবিএম খায়রম্নল হক এমনিতেই এসে যাবেন। যদিও বিচারপতি মোঃ ফজলুল করিমের শারীরিক অসুস্থতা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এদিকে আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহম্মেদ জনকণ্ঠকে বলেছেন, প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পরপরই সরকার আপীল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে নতুন বিচারপতি নিয়োগ করবেন। রাষ্ট্রপতি ৯৫(১) ধারা মোতাবেক এ সমসত্ম বিচারপতি নিয়োগ দেবেন।
বর্তমানে আপীল বিভাগ, হাইকোর্ট এবং রীট মামলা নিয়ে প্রায় সাড়ে চার লাখ মামলা নিষ্পত্তির অপেৰায় রয়েছে। আপীল বিভাগে ৪ হাজার সাড়ে সাত শ' মামলা নিষ্পত্তির অপেৰায় রয়েছে। এছাড়া হাইকোর্ট বিভাগে ৩ লাখ ১০ হাজারেরও বেশি মামলা নিষ্পত্তির অপেৰায় রয়েছে। রীট মামলা প্রায় ৪৯ হাজার ৫শ' রয়েছে। এগুলি নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্ট এবং আপীল বিভাগে নতুন বিচারপতি নিয়োগের প্রয়োজন।
আপীল বিভাগে ১০ বিচারপতির মধ্যে ৩ জন বিচারপতি অবসরে গেছেন। ৭ জন বিচারপতির মধ্য থেকে ১ জন প্রধান বিচারপতি হলে মাত্র থাকবে ৬ জন বিচারপতি। অন্যদিকে হাইকোর্ট বিভাগে ৭৮ জন বিচারপতির মধ্যে ইতোমধ্যে ২ জন বিচারপতি অবসরে গেছেন। এরা হলেন : বিচারপতি সিকদার মকবুল হক (১৮.১.২০১০) এবং বিচারপতি আবদুস সালাম (১১.১.২০১০)। আজ বিচারপতি মোঃ ওয়ারেসউদ্দিন অবসরে যাবেন (৩১.১.২০১০)।
আপীল বিভাগে ৭ বিচারপতির মধ্যে রয়েছেন বিচারপতি মোঃ ফজলুল করিম, বিচারপতি এমএ মতিন, বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, বিচারপতি বিজন কুমার দাস, বিচারপতি এবিএম খায়রম্নল হক, বিচারপতি মোঃ মোজাম্মেল হোসেন ও বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। অন্যদিকে হাইকোর্ট বিভাগে ৭৮ জন বিচারপতির মধ্যে ২ জন অবসরে গেছেন, আজ একজন অবসরে যাবেন। সে হিসেব মতে ৭৫ জন বিচারপতি থাকবেন। ৭৫ জন বিচারপতির মধ্য থেকে আপীল বিভাগে কয়েকজন নতুন বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হবে। সে ৰেত্রে ৩ থেকে ৪ জনকে নিয়োগ দেয়া হবে। হাইকোর্ট বিভাগে যাঁরা দৰ এবং তাঁদেরকেই আপীল বিভাগে নিয়োগ দেয়া হবে।
অন্যদিকে হাইকোর্ট বিভাগে মামলা জট কমাতে ২৪ থেকে ৩০ জন বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হবে। হাইকোর্ট বিভাগের সিনিয়র এ্যাডভোকেট, জেলা জজ থেকে শুরম্ন করে অতিরিক্ত এ্যাটর্নি জেনারেল, ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেলদের নাম শোনা যাচ্ছে। সুপ্রীমকোর্টের রেজিস্ট্রারের নামও শোনা যাচ্ছে। সে ৰেত্রে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পরেই আপীল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হবে।
No comments