ম্যালেরিয়া-এখনও স্বাস্থ্য ও মৃত্যুঝুঁকি কেন?
ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ প্রতি বছরই একটু একটু করে উন্নতি করছে। কিন্তু দেশে নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় এই ঘাতক ব্যাধিতে আক্রান্তের সংখ্যা বছরওয়ারি হিসাবে কম নয়।
ম্যালেরিয়ার হাত থেকে মানুষকে রক্ষার জন্য এবং এর বিস্তার রোধ করার জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থা পরিচালিত স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি বাস্তবায়ন চললেও এখনও এই রোগে মানুষ মারা যাচ্ছে। গতকাল সমকালের তৃতীয় পৃষ্ঠায় প্রকাশিত এ সম্পর্কিত রিপোর্টে দেখা যায়, বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও সিলেটের বিস্তীর্ণ এলাকাসহ ১৩ জেলার কয়েক কোটি লোক এখনও ম্যালেরিয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। সর্বশেষ ২০১০ সালের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দেশে ওই বছর ৫৬ হাজার মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয় এবং মারা যায় ৩৭ জন। মৃত্যুহার বিবেচনায় এটা অত্যন্ত কম হলেও ঝুঁকির হার বিবেচনা করতে গেলে তা এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়েই রয়ে গেছে। আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থার সম্প্রসারণ এবং ম্যালেরিয়ার ওষুধ ও প্রতিষেধক গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত পেঁৗছে দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা অগ্রগতি হওয়ায় এখন আর আগের মতো ম্যালেরিয়ায় যখন তখন বিপুলসংখ্যক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে না। তবে ঝুঁকি এখনও থেকে যাওয়ায় এবং প্রতি বছর অর্ধলক্ষাধিক লোক এই ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়া অব্যাহত থাকায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। প্রকাশিত রিপোর্টটিতে দেখা যাচ্ছে, সাধারণত তিন পার্বত্য জেলাতেই ৮০ শতাংশ ম্যালেরিয়া রোগী শনাক্ত হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, আক্রান্ত এলাকাগুলোয় ম্যালেরিয়া প্রতিরোধক বিশেষ মশারি ব্যবহার কম হওয়ার কারণে এসব জেলায় এর বিস্তার সহজ হয়েছে। তারা বিশেষ মশারি পর্যাপ্ত সংখ্যায় না পাওয়াকে এ জন্য দায়ী করেন। একই সঙ্গে ম্যালেরিয়াপ্রবণ এলাকাগুলোয় এ রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকানোর জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষ তৎপরতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। কিন্তু সমন্বিতভাবে এসব কার্যক্রম কতটা বাস্তবায়িত হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
আমরা দেশ থেকে ম্যালেরিয়া নির্মূলের জন্য আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগ এবং আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থাকে যৌথ ও সমন্বিতভাবে জোরদার কার্যক্রম গ্রহণের আহ্বান জানাই। সচেতনতামূলক কর্মসূচির পাশাপাশি ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ ও নির্মূলের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচিগুলো আরও বাস্তবানুগ ও কার্যকর করার আহ্বান জানাই। দেশের মানুষকে ম্যালেরিয়া ঝুঁকি থেকে পুরোপুরি মুক্ত করা কঠিন হলেও অসাধ্য নয়। তবে এ জন্য চাই সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক প্রচেষ্টা।
আমরা দেশ থেকে ম্যালেরিয়া নির্মূলের জন্য আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগ এবং আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থাকে যৌথ ও সমন্বিতভাবে জোরদার কার্যক্রম গ্রহণের আহ্বান জানাই। সচেতনতামূলক কর্মসূচির পাশাপাশি ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ ও নির্মূলের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচিগুলো আরও বাস্তবানুগ ও কার্যকর করার আহ্বান জানাই। দেশের মানুষকে ম্যালেরিয়া ঝুঁকি থেকে পুরোপুরি মুক্ত করা কঠিন হলেও অসাধ্য নয়। তবে এ জন্য চাই সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক প্রচেষ্টা।
No comments