মেট্রো রেল প্রকল্প-পদ্মা সেতুর ছায়া যেন না পড়ে
প্রায় দেড় কোটি মানুষের বসতি ঢাকায় যানজটের কবলে হাজার হাজার শ্রমঘণ্টা নষ্ট হয়ে যায় প্রতিদিন। এই দুর্ভোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করার জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হিসেবে মেট্রো রেলের প্রয়োজনীয়তা দীর্ঘদিন ধরে অনুভূত হয়ে আসছিল। কিন্তু কার্যকর কোনো পদক্ষেপ আজ পর্যন্ত নেওয়া হয়নি।
বর্তমান সরকারের চার বছরের মাথায় এসে উদ্যোগটি চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে। সর্বশেষ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় মেট্রো রেল প্রকল্প অনুমোদিত হওয়ার মধ্য দিয়ে এর প্রাথমিক কাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সুতরাং দেরিতে হলেও সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাতে হবে। ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এলিভেটেড রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শেষ করার জন্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২২ সাল পর্যন্ত। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে কি না তা নিয়ে সংশয় আছে। কারণ আমাদের দেশে কোনো পরিকল্পনাই সময়মতো শেষ হয় না। প্রায় সব প্রকল্পের পেছনেই সরকারের অদূরদর্শিতা ও ক্ষেত্রবিশেষে অবহেলাই দায়ী হয়ে থাকে। তারপর আবার আমলাতান্ত্রিক জটিলতাও কাজ করে দেয়ালের মতো। এর আগে স্থান নির্ধারণেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। বিজয় সরণি হয়ে আসার যে পরিকল্পনা হয়েছিল, তা পরিবর্তন করতে হয়েছে বাধার মুখে। আবার সংসদ ভবনের সামনে দিয়ে করা যাবে না বলেও কিছু সংগঠন আপত্তি করে আরো কিছু সময় নষ্ট করেছে। ঘনবসতিপূর্ণ এই শহরে এলিভেটেড রেলওয়ে করতে গেলে এমন অসুবিধা ও আপত্তি আসতে পারে ভবিষ্যতেও, বিশেষ করে জায়গা হুকুমদখল করতে গেলে বড় বাধা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা আছে। সে ক্ষেত্রে মানুষের আস্থার অভাব বড় কারণ হিসেবে চিহ্নিত। কোনো জায়গা হুকুমদখল করার পর বাজারদরের চেয়ে কম মূল্য পরিশোধ করতে চাওয়া, তদুপরি জমির মালিককে টাকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সরকারি দপ্তরে হয়রানির শিকার হওয়াই এ আস্থাহীনতার কারণ। এসব বিষয় সরকারের জানা আছে। সুতরাং সময়মতো এ প্রকল্প শেষ করতে হলে এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করার উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকেই। আমাদের এখানে সরকার পরিবর্তন হলে পূর্বতন সরকারের অনেক প্রকল্পই ধামাচাপা পড়ে যায়। আগামী নির্বাচনে যদি মহাজোট ক্ষমতায় না আসে তাহলেও যেন প্রকল্পটি কোনো রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতার মুখে না পড়ে, সেটিও প্রত্যাশিত।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে কাজ শুরু হওয়ার আগেই দুর্নীতির কারণে যে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে তেমন কোনো নেতিবাচক আঘাত যাতে এ প্রকল্পে না লাগে সেদিকটি নিশ্চিত করতে হবে সরকারকেই। এ প্রকল্পের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে বৈদেশিক অর্থায়নে একক দাতা সংস্থার অংশগ্রহণ। ২২ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পে জাইকা দেবে ১৬ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা। বাকি অর্থ দেবে বাংলাদেশ সরকার।
যানজটে ঢাকা মহানগর ক্রমেই অচল হয়ে পড়ছে। প্রতিদিন ক্ষতি হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। ২০২২ সাল নাগাদ এ অচলাবস্থা আরো বাড়বে। সে ক্ষেত্রে মেট্রো রেল কিছুটা হলেও ঢাকাবাসীকে স্বস্তি দেবে। তাই আমরা চাই, প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে নেওয়া হোক। পাশাপাশি ঢাকাকে যানজটমুক্ত করার আরো স্থায়ী উদ্যোগ নেওয়া হোক।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে কাজ শুরু হওয়ার আগেই দুর্নীতির কারণে যে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে তেমন কোনো নেতিবাচক আঘাত যাতে এ প্রকল্পে না লাগে সেদিকটি নিশ্চিত করতে হবে সরকারকেই। এ প্রকল্পের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে বৈদেশিক অর্থায়নে একক দাতা সংস্থার অংশগ্রহণ। ২২ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পে জাইকা দেবে ১৬ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা। বাকি অর্থ দেবে বাংলাদেশ সরকার।
যানজটে ঢাকা মহানগর ক্রমেই অচল হয়ে পড়ছে। প্রতিদিন ক্ষতি হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। ২০২২ সাল নাগাদ এ অচলাবস্থা আরো বাড়বে। সে ক্ষেত্রে মেট্রো রেল কিছুটা হলেও ঢাকাবাসীকে স্বস্তি দেবে। তাই আমরা চাই, প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে নেওয়া হোক। পাশাপাশি ঢাকাকে যানজটমুক্ত করার আরো স্থায়ী উদ্যোগ নেওয়া হোক।
No comments