ছাত্ররাজনীতির নামে বাণিজ্য-রুখতে হবে এ অবক্ষয়
স্বাধীনতার চার দশকে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বিস্তার লাভ করেছে অবক্ষয়। সব ক্ষেত্রে অবক্ষয়ের সর্বগ্রাসী বিস্তৃতি আমাদের সামাজিক মূল্যবোধ নষ্ট করে দিয়েছে। দুর্বল করে দিয়েছে সামাজিক বন্ধন। দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে বড় ধরনের ক্ষত সৃষ্টি করেছে অবক্ষয়।
দেশের রাজনীতিও কলুষিত করেছে এই অবক্ষয়। বাংলাদেশের সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থায় যে অবক্ষয়, তা ছাত্ররাজনীতিকেও গ্রাস করেছে। এক সময়ের সোনালি অধ্যায় পেরিয়ে আসা ছাত্ররাজনীতি এখন বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হওয়ার একটি প্রকৃষ্ট মাধ্যম হিসেবেই পরিচিতি পেয়েছে।
এ কথা মানতে হবে, আমাদের ছাত্ররাজনীতির সোনালি অতীত ছিল। এ দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেছিল। সেই চলি্লশের দশক থেকে শুরু করে দেশের ছাত্রসমাজ দেশের ইতিবাচক পরিবর্তনে সব সময় বড় ভূমিকা রেখে এসেছে। উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা রুখে দেওয়া ছাত্রসমাজ স্বাধিকার আন্দোলনকে স্বাধীনতা সংগ্রামে পরিণত করতে উজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেছে। ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক আন্দোলনে আমাদের দেশের ছাত্রসমাজ সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু আজ ছাত্ররাজনীতির যে চেহারা আমরা দেখতে পাচ্ছি, তা কোনোভাবেই কাঙ্ক্ষিত নয়। একটা সময় ছিল যখন মেধাবীরা আসতেন ছাত্ররাজনীতিতে। আজকের দিনে মেধার জায়গাটি নিয়ে নিয়েছে পেশি। আগের দিনে ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িতরা ছিলেন চিত্তের দিক থেকে বিত্তবান। আজকের দিনের ছাত্ররাজনীতি বিত্তের দাসত্বকেই বেছে নিয়েছে। ছাত্ররাজনীতি এখন লাভজনক বেসাতি। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আজকের দিনের ছাত্রনেতাদের যে বিত্ত ও বৈভবের পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে, তাতে রাজনীতির বাণিজ্যিকীকরণের দিকটিই প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। মূলত প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ছাত্রসংগঠনের বর্তমান ও সাবেক কিছু নেতার বিলাসী জীবনযাপনও সাক্ষ্য দেয়, ছাত্ররাজনীতি এখন দ্রুত লাভবান হওয়ার মতো একটি মোক্ষম বাণিজ্যিক মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। সাবেক ছাত্রনেতা, যাঁরা এখন জাতীয় পর্যায়ে রাজনীতিতে সক্রিয়, তাঁরাও ছাত্ররাজনীতির বর্তমান নিয়ে কথা বলতে চান না। তাঁদের এই অনীহার কারণটিও স্পষ্ট। আজকের দিনে জাতীয় রাজনীতিতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছেন, ছাত্রলীগের এক সময়ের এমন শীর্ষ নেতাও কালের কণ্ঠকে বলেছেন, 'ছাত্রলীগের আগের রাজনীতির সঙ্গে এখনকার রাজনীতি ও নেতাদের অনেক ফারাক।' 'ছাত্রলীগের বর্তমান নেতাদের কোনো নীতি-আদর্শ নেই'- এমন কথাও বলেছেন তিনি। একইভাবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক এক শীর্ষ নেতা বলেছেন, তাঁদের সময়ে ছাত্রদলের যে নীতি-আদর্শ ছিল, তা থেকে এখনকার নেতারা অনেক সরে গেছেন। এই ছাত্রনেতার মতে, সমাজের সব জায়গায় পচন ধরেছে, ছাত্ররাজনীতিও এর বাইরে নয়।
ছাত্ররাজনীতির সোনালি দিন এখন আর নেই। সামরিকতন্ত্রের কবলে পড়ে ছাত্ররাজনীতির যে অধঃপতনের শুরু, আজকের ছাত্ররাজনীতি সেই উত্তরাধিকার বহন করছে। দেশে বারবার বিপন্ন হয়েছে গণতন্ত্র। এসেছে সামরিক শাসন। জান্তার আড়ালে গণতন্ত্রের নামে সমাজকে কলুষিত করার যে চেষ্টা অতীতে হয়েছে, তা থেকে ছাত্ররাজনীতিও মুক্ত থাকতে পারেনি। ছাত্ররাজনীতিকে লোভের বড়শিতে গাঁথা হয়েছে। তার ধারাবাহিকতাই যেন চলছে এখনো। আর ধর্মাশ্রয়ী জামায়াত-শিবিরের আগ্রাসন ও রগ কাটার রাজনীতিও ছাত্ররাজনীতিকে ব্যাপকভাবে কলুষিত করেছে। আজকের ছাত্ররাজনীতি অতীতের সব অর্জনকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে।
এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তা না হলে দেশের সামনে অন্ধকার ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে বলে আমরা মনে করি। তাই বেসাতিমুক্ত করতে হবে ছাত্ররাজনীতিকে।
এ কথা মানতে হবে, আমাদের ছাত্ররাজনীতির সোনালি অতীত ছিল। এ দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেছিল। সেই চলি্লশের দশক থেকে শুরু করে দেশের ছাত্রসমাজ দেশের ইতিবাচক পরিবর্তনে সব সময় বড় ভূমিকা রেখে এসেছে। উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা রুখে দেওয়া ছাত্রসমাজ স্বাধিকার আন্দোলনকে স্বাধীনতা সংগ্রামে পরিণত করতে উজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেছে। ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক আন্দোলনে আমাদের দেশের ছাত্রসমাজ সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু আজ ছাত্ররাজনীতির যে চেহারা আমরা দেখতে পাচ্ছি, তা কোনোভাবেই কাঙ্ক্ষিত নয়। একটা সময় ছিল যখন মেধাবীরা আসতেন ছাত্ররাজনীতিতে। আজকের দিনে মেধার জায়গাটি নিয়ে নিয়েছে পেশি। আগের দিনে ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িতরা ছিলেন চিত্তের দিক থেকে বিত্তবান। আজকের দিনের ছাত্ররাজনীতি বিত্তের দাসত্বকেই বেছে নিয়েছে। ছাত্ররাজনীতি এখন লাভজনক বেসাতি। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আজকের দিনের ছাত্রনেতাদের যে বিত্ত ও বৈভবের পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে, তাতে রাজনীতির বাণিজ্যিকীকরণের দিকটিই প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। মূলত প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ছাত্রসংগঠনের বর্তমান ও সাবেক কিছু নেতার বিলাসী জীবনযাপনও সাক্ষ্য দেয়, ছাত্ররাজনীতি এখন দ্রুত লাভবান হওয়ার মতো একটি মোক্ষম বাণিজ্যিক মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। সাবেক ছাত্রনেতা, যাঁরা এখন জাতীয় পর্যায়ে রাজনীতিতে সক্রিয়, তাঁরাও ছাত্ররাজনীতির বর্তমান নিয়ে কথা বলতে চান না। তাঁদের এই অনীহার কারণটিও স্পষ্ট। আজকের দিনে জাতীয় রাজনীতিতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছেন, ছাত্রলীগের এক সময়ের এমন শীর্ষ নেতাও কালের কণ্ঠকে বলেছেন, 'ছাত্রলীগের আগের রাজনীতির সঙ্গে এখনকার রাজনীতি ও নেতাদের অনেক ফারাক।' 'ছাত্রলীগের বর্তমান নেতাদের কোনো নীতি-আদর্শ নেই'- এমন কথাও বলেছেন তিনি। একইভাবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক এক শীর্ষ নেতা বলেছেন, তাঁদের সময়ে ছাত্রদলের যে নীতি-আদর্শ ছিল, তা থেকে এখনকার নেতারা অনেক সরে গেছেন। এই ছাত্রনেতার মতে, সমাজের সব জায়গায় পচন ধরেছে, ছাত্ররাজনীতিও এর বাইরে নয়।
ছাত্ররাজনীতির সোনালি দিন এখন আর নেই। সামরিকতন্ত্রের কবলে পড়ে ছাত্ররাজনীতির যে অধঃপতনের শুরু, আজকের ছাত্ররাজনীতি সেই উত্তরাধিকার বহন করছে। দেশে বারবার বিপন্ন হয়েছে গণতন্ত্র। এসেছে সামরিক শাসন। জান্তার আড়ালে গণতন্ত্রের নামে সমাজকে কলুষিত করার যে চেষ্টা অতীতে হয়েছে, তা থেকে ছাত্ররাজনীতিও মুক্ত থাকতে পারেনি। ছাত্ররাজনীতিকে লোভের বড়শিতে গাঁথা হয়েছে। তার ধারাবাহিকতাই যেন চলছে এখনো। আর ধর্মাশ্রয়ী জামায়াত-শিবিরের আগ্রাসন ও রগ কাটার রাজনীতিও ছাত্ররাজনীতিকে ব্যাপকভাবে কলুষিত করেছে। আজকের ছাত্ররাজনীতি অতীতের সব অর্জনকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে।
এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তা না হলে দেশের সামনে অন্ধকার ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে বলে আমরা মনে করি। তাই বেসাতিমুক্ত করতে হবে ছাত্ররাজনীতিকে।
No comments