এখনো টিকে আছে বনকুকুর by আ ন ম আমিনুর রহমান
ফরেস্টার শফি ভাইয়ের কাছে বুনো প্রাণীটির কথা শুনেছিলাম ২০ বছর আগে। ১৯৯৮ সালে কানাডায় প্রাণিচিকিৎসায় উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেওয়ার সময় মেট্রো টরন্টো চিড়িয়াখানায় প্রথম ওকে দেখি। ওখানে প্রাকৃতিক পরিবেশ সৃষ্টি করে ওদের রাখা হয়েছিল। প্রাণীগুলোর চেহারা, আচরণ ও চলাফেরা শফি ভাইয়ের বর্ণনার সঙ্গে হুবহু মিলে গেল।
আমি এতটাই বিমোহিত হয়েছিলাম যে মনে হলো, পার্বত্য চট্টগ্রামের গহিন বনে গিয়েই এদের দেখছি। পটাপট কয়েকটি ছবি তুললাম। কিছুদিন আগে সিলেটে শফি ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হলে তিনি বললেন, এখনো এরা টিকে আছে। তিনি স্বচক্ষে দেখেছেন। তা ছাড়া বেশ কটি অঞ্চলে এদের পদচিহ্নও দেখেছেন।
এতক্ষণ যার কথা বললাম, সে হলো আমাদের বনকুকুর (Asiatic Wild Dog/Red Dog)। ‘লালকুকুর’, ‘রামকুত্তা’, ‘বনকুত্তা’ বা ‘ডোল’ (Dhole) নামেও পরিচিত। এরা শিয়াল, কুকুর ও নেকড়ের জাতভাই। তবে চেহারায় শিয়ালের সঙ্গেই মিল বেশি। বৈজ্ঞানিক নাম Cuon alpinus অর্থাৎ পাহাড়ি কুকুর। ১০টি জানা উপপ্রজাতির মধ্যে এ দেশে Cuon alpinus dukhunensis-এর দেখা মেলে।
বনকুকুর আকারে নেকড়ে ও শিয়ালের মাঝামাঝি। লম্বায় ৪৫-৬০ সেন্টিমিটার, লেজ ২০-২৭ সেন্টিমিটার। ওজন ১০-২০ কেজি। পা খাটো। লেজ ঝোপালো ও নাকের ওপরের অংশ খানিকটা উঁচু। মাথা ও দেহের ওপরের অংশের লোম বাদামি-লাল। ঋতুভেদে রং হালকা থেকে গাঢ় হতে পারে। কানের ভেতর, মুখের নিচ, গলা ও দেহের নিচের অংশের রং সাদা। ঝোপালো লেজের ডগা কালো।
বনকুকুর সামাজিক প্রাণী। দলবদ্ধভাবে থাকে; দিনের বেলা শিকার করে। দলে ২-৩০টি পর্যন্ত বনকুকুর থাকতে পারে। এরা সাধারণত মাঝারি আকারের প্রাণী, যেমন—হরিণ, শূকর, ছাগল এসবকে আক্রমণ করে। প্রয়োজনে বনগরু বা মহিষের মতো বড় পশুকেও আক্রমণ করতে পারে। বনকুকুরের দল কোনো প্রাণীকে সামনে ও পেছনে উভয় দিক থেকেই আক্রমণ করে এবং তাড়িয়ে নিয়ে যায়। তাড়াতে তাড়াতে ক্লান্ত করে ফেলে। তাড়ানো অবস্থাতেই জীবিত প্রাণীটিকে খুবলে খেতে থাকে। এভাবে ১০-১৫টি বনকুকুর মিলে অল্প সময়ের মধ্যেই যেকোনো প্রাণীকে সাবাড় করে ফেলতে পারে। এরা ভালুক, চিতাবাঘ বা বাঘকে এড়িয়ে চলে; তবে আক্রান্ত হলে তাদেরও রেহাই নেই। খাদ্যস্বল্পতার সময় ফল ও সরীসৃপ খেয়েও বাঁচতে পারে। এরা কুকুরের মতো ঘেউ ঘেউ করে না, বরং হুইসেল বা শিস দেওয়ার মতো করে শব্দ করে।
বনকুকুর মাটিতে গর্ত খুঁড়ে বা পাহাড়ের গুহায় বাস করে। সেপ্টেম্বর-ফেব্রুয়ারি প্রজননকাল। স্ত্রী বনকুকুর ৬০-৬৫ দিন গর্ভধারণের পর গর্তে বা গুহায় চার থেকে ছয়টি বাচ্চা দেয়। বাচ্চা পালনে দলের অন্য সদস্যরাও সাহায্য করে। বাচ্চারা এক বছরে পূর্ণবয়স্ক হয়। এরা ১০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে।
বনকুকুর এ দেশে বর্তমানে একটি অতিবিপন্ন (Critically Endangered) প্রাণী। মূলত চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেটের গহিন বনে বাস করলেও একসময় এ দেশে এদের অস্তিত্বের বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। তবে বিভিন্ন সূত্রমতে, এ দেশে এখনো এরা টিকে আছে। প্রাণী বিশেষজ্ঞ সুপ্রিয় চাকমা সম্প্রতি রাঙামাটির জুড়াছড়িতে মায়া হরিণকে ধাওয়ারত অবস্থায় বনকুকুর দেখেছেন।
এ ছাড়া কাসালং ও সাঙ্গু সংরক্ষিত বনে এদের পদচিহ্ন পাওয়া গেছে। তাঁর মতে, এরা বিলাইছড়িতেও আছে। তা ছাড়া কক্সবাজারের রামু, চট্টগ্রামের ধোপাছড়ি, সিলেটের সাগরনাল ও জুড়িতেও থাকতে পারে।
এতক্ষণ যার কথা বললাম, সে হলো আমাদের বনকুকুর (Asiatic Wild Dog/Red Dog)। ‘লালকুকুর’, ‘রামকুত্তা’, ‘বনকুত্তা’ বা ‘ডোল’ (Dhole) নামেও পরিচিত। এরা শিয়াল, কুকুর ও নেকড়ের জাতভাই। তবে চেহারায় শিয়ালের সঙ্গেই মিল বেশি। বৈজ্ঞানিক নাম Cuon alpinus অর্থাৎ পাহাড়ি কুকুর। ১০টি জানা উপপ্রজাতির মধ্যে এ দেশে Cuon alpinus dukhunensis-এর দেখা মেলে।
বনকুকুর আকারে নেকড়ে ও শিয়ালের মাঝামাঝি। লম্বায় ৪৫-৬০ সেন্টিমিটার, লেজ ২০-২৭ সেন্টিমিটার। ওজন ১০-২০ কেজি। পা খাটো। লেজ ঝোপালো ও নাকের ওপরের অংশ খানিকটা উঁচু। মাথা ও দেহের ওপরের অংশের লোম বাদামি-লাল। ঋতুভেদে রং হালকা থেকে গাঢ় হতে পারে। কানের ভেতর, মুখের নিচ, গলা ও দেহের নিচের অংশের রং সাদা। ঝোপালো লেজের ডগা কালো।
বনকুকুর সামাজিক প্রাণী। দলবদ্ধভাবে থাকে; দিনের বেলা শিকার করে। দলে ২-৩০টি পর্যন্ত বনকুকুর থাকতে পারে। এরা সাধারণত মাঝারি আকারের প্রাণী, যেমন—হরিণ, শূকর, ছাগল এসবকে আক্রমণ করে। প্রয়োজনে বনগরু বা মহিষের মতো বড় পশুকেও আক্রমণ করতে পারে। বনকুকুরের দল কোনো প্রাণীকে সামনে ও পেছনে উভয় দিক থেকেই আক্রমণ করে এবং তাড়িয়ে নিয়ে যায়। তাড়াতে তাড়াতে ক্লান্ত করে ফেলে। তাড়ানো অবস্থাতেই জীবিত প্রাণীটিকে খুবলে খেতে থাকে। এভাবে ১০-১৫টি বনকুকুর মিলে অল্প সময়ের মধ্যেই যেকোনো প্রাণীকে সাবাড় করে ফেলতে পারে। এরা ভালুক, চিতাবাঘ বা বাঘকে এড়িয়ে চলে; তবে আক্রান্ত হলে তাদেরও রেহাই নেই। খাদ্যস্বল্পতার সময় ফল ও সরীসৃপ খেয়েও বাঁচতে পারে। এরা কুকুরের মতো ঘেউ ঘেউ করে না, বরং হুইসেল বা শিস দেওয়ার মতো করে শব্দ করে।
বনকুকুর মাটিতে গর্ত খুঁড়ে বা পাহাড়ের গুহায় বাস করে। সেপ্টেম্বর-ফেব্রুয়ারি প্রজননকাল। স্ত্রী বনকুকুর ৬০-৬৫ দিন গর্ভধারণের পর গর্তে বা গুহায় চার থেকে ছয়টি বাচ্চা দেয়। বাচ্চা পালনে দলের অন্য সদস্যরাও সাহায্য করে। বাচ্চারা এক বছরে পূর্ণবয়স্ক হয়। এরা ১০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে।
বনকুকুর এ দেশে বর্তমানে একটি অতিবিপন্ন (Critically Endangered) প্রাণী। মূলত চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেটের গহিন বনে বাস করলেও একসময় এ দেশে এদের অস্তিত্বের বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। তবে বিভিন্ন সূত্রমতে, এ দেশে এখনো এরা টিকে আছে। প্রাণী বিশেষজ্ঞ সুপ্রিয় চাকমা সম্প্রতি রাঙামাটির জুড়াছড়িতে মায়া হরিণকে ধাওয়ারত অবস্থায় বনকুকুর দেখেছেন।
এ ছাড়া কাসালং ও সাঙ্গু সংরক্ষিত বনে এদের পদচিহ্ন পাওয়া গেছে। তাঁর মতে, এরা বিলাইছড়িতেও আছে। তা ছাড়া কক্সবাজারের রামু, চট্টগ্রামের ধোপাছড়ি, সিলেটের সাগরনাল ও জুড়িতেও থাকতে পারে।
No comments