সময়ের প্রতিধ্বনি-জাওয়াহিরি, মোল্লা ওমর এখন কোথায়? by মোস্তফা কামাল
পাকিস্তানকে নিয়ে একটা প্রবাদ চালু আছে। প্রবাদটি এ রকম_পাকিস্তান চালায় তিন 'অ'। আল্লাহ, আমেরিকা ও আর্মি। সরকার থাকে নামমাত্র। তিন 'এ'র প্রয়োজনে কখনো পারভেজ মোশাররফ আবার কখনো আসিফ জারদারি প্রেসিডেন্ট কিংবা প্রধানমন্ত্রীর আসনে থাকেন। তাঁরা স্রেফ পুতুলের মতো। সুতার টানে তাঁরা মুভ করেন।
তাঁদের নিজেদের কিছু বলা কিংবা করার এখতিয়ার নেই। অতীতেও যেমন ছিল না জুলফিকার আলী ভুট্টো, জিয়াউল হক, বেনজির ভুট্টো অথবা নওয়াজ শরিফের। দেশের নাগরিক সমাজ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও এটা উপলব্ধি করে।
পাকিস্তানে তিন দফায় দীর্ঘদিন অবস্থান করে এবং চারটি প্রদেশে ঘুরে ঘুরে তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও সমাজব্যবস্থা সম্পর্কে কিছু ধারণা পেয়েছি। তাতে আমার মনে হয়েছে, একটি উন্নত গণতান্ত্রিক পাকিস্তান কোনোকালে আমরা দেখব কি না সন্দেহ। এখন পাকিস্তানের প্রধান শত্রু জঙ্গিবাদ। শুরুতে পাকিস্তান জঙ্গিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে এবং অর্থ সহায়তাও করেছে। সেই পাকিস্তান এখন নিজেদের তৈরি জঙ্গিদের হাতে আক্রান্ত হচ্ছে। আফগানিস্তানে তালেবান পতনের পর আল-কায়েদা ও তালেবান জঙ্গিদের টার্গেট হচ্ছে পাকিস্তান। জঙ্গিদের আক্রমণে বিগত এক দশকে পাকিস্তান হাজার হাজার সামরিক ও বেসামরিক লোককে হারিয়েছে। অনেক সম্পদ বিনষ্ট হয়েছে। সেনা সদস্যরা জঙ্গিদের বিভিন্ন আত্মঘাতী হামলার টার্গেট হওয়ায় সেনাবাহিনীতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সেনা পরিবারের চাপের কারণে পারভেজ মোশাররফ সরকার জঙ্গিদের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি পর্যন্ত করতে বাধ্য হয়েছিল।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, পাকিস্তানের উচ্চবিত্ত প্রায় প্রতিটি পরিবারের একজন করে সদস্য সেনাবাহিনীতে কর্মরত আছেন। তাঁরা জঙ্গিবিরোধী অভিযানে অংশ নিতে অনীহা প্রকাশ করে আসছিলেন। পাকিস্তানে গিয়ে অনেক পরিবারের সঙ্গে কথা বলারও সুযোগ হয়েছিল। তাঁরা অকপটে স্বীকার করেছেন, ইসলামাইজেশনের নামে পাকিস্তান জঙ্গিদের বেড়ে ওঠায় সহায়তা করেছে। আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদা ও তালেবানের শীর্ষ নেতারা পাকিস্তানে থেকেই তাঁদের জঙ্গি তৎপরতা চালিয়েছেন।
আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, আল-কায়েদার শীর্ষ নেতা ওসামা বিন লাদেন পরিবার-পরিজন নিয়ে প্রায় ছয় বছর ধরে পাকিস্তানে অবস্থান করছিলেন। ২০০৪ সালে আমি নিজেও লিখেছিলাম, বিন লাদেন বেশির ভাগ সময় আফগানিস্তানের কান্দাহারে এবং পাকিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে অবস্থান করছেন। তিনি পাকিস্তানের পাঠান-অধ্যুষিত এলাকা খাইবার এজেন্সিতে কিছুদিন অবস্থানও করেন। একটা সময় তোরাবোরা পাহাড়ে লুকিয়ে ছিলেন এবং এ খবর মার্কিন প্রশাসন জানতে পেরে সেখানে বৃষ্টির মতো বোমা হামলা চালিয়েছিল। সে হামলায় তিনি অল্পের জন্য বেঁচে যান। তারপর থেকে তিনি পাকিস্তানে অবস্থান করেন।
আল-কায়েদার দ্বিতীয় প্রধান নেতা জাওয়াহিরি দীর্ঘদিন পাকিস্তানে অবস্থান করেছেন। তালেবান শীর্ষ নেতা মোল্লা মোহাম্মদ ওমরও পড়াশোনা করেছেন বেলুচিস্তানের কোয়েটায়। সেখানে তিনি কিছুকাল মাদ্রাসায় শিক্ষকতাও করেন। পরে তিনি মাদ্রাসার ৫০ ছাত্রকে নিয়ে সশস্ত্র তালেবান সংগঠন গড়ে তোলেন। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, মোল্লা ওমরও আর্থিক ও লজিস্টিক সাপোর্ট পেয়েছেন পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের কাছ থেকে।
প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণে দেখা যাচ্ছে, বিন লাদেন, জাওয়াহিরি ও মোল্লা ওমর বিভিন্নভাবে পাকিস্তানের সহায়তা ও আশ্রয়-প্রশ্রয় পেয়েছেন। এবার জাওয়াহিরি ও মোল্লা ওমরের অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে পর্যালোচনা করা যেতে পারে। আইমান আল জাওয়াহিরি ১৯৫১ সালে মিসরের কায়রোতে এক উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মেধাবী ছাত্র জাওয়াহিরি ডাক্তারি পড়াশোনা শেষ করে ওই পেশায়ই যোগ দেন। অল্প সময়ের মধ্যে তিনি সার্জন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং চাকরিসূত্রে জেদ্দায় চলে যান। ১৯৮৬ সালে জেদ্দায় বিন লাদেনের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। ডাক্তারি পেশার পাশাপাশি তিনি মিসরে জিহাদি আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। তিনি প্রথমে বিন লাদেনের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন। পরে ১৯৯৮ সালের জুনে বিন লাদেন ও তাঁর নেতৃত্বে আল-কায়েদা কংগ্রেস গঠিত হয়। এরপর চাকরি নিয়ে তিনি পাকিস্তানের পেশোয়ারে রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চলে আসেন। পাকিস্তানে থেকেই তিনি আল-কায়েদার জঙ্গি কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। ২০০১ সালে নাইন-ইলেভেনের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই ২২ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা প্রকাশ করে। এই তালিকায় দ্বিতীয় নম্বরে রয়েছে জাওয়াহিরির নাম। ২০০৮ সালে তাঁকে ধরার জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনী অভিযানও চালিয়েছিল। কিন্তু তাঁকে ধরা সম্ভব হয়নি।
এখন জাওয়াহিরি কোথায় আছেন? তিনি কি পাকিস্তানে, নাকি আফগানিস্তানে? অনেকের ধারণা, জাওয়াহিরি এখনো পাকিস্তানেই লুকিয়ে আছেন। তিনি এখনো গোপন স্থান থেকে জঙ্গি তৎপরতা চালাচ্ছেন। কাতারভিত্তিক টিভি চ্যানেল আল-জাজিরার মাধ্যমে বিভিন্ন সময় তাঁর কিছু বিবৃতি সম্প্রচারিত হয়েছে। সেগুলো কিভাবে আল-জাজিরার কাছে পেঁৗছানো হয়েছে, তার খোঁজখবর নিচ্ছে মার্কিন গোয়েন্দারা।
অবশ্য বিন লাদেন নিহত হওয়ার পর একটি খবর বেশ রটেছে। জাওয়াহিরি নাকি বিন লাদেনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। আল-কায়েদার প্রধান হওয়ার জন্যই তিনি বিন লাদেনের অবস্থান সম্পর্কে মার্কিন প্রশাসনকে তথ্য দিয়েছেন। সেই তথ্যের ভিত্তিতে বিন লাদেনের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয় মার্কিন প্রশাসন। এটা কতটুকু সত্য তা আমাদের জানা নেই, তবে দ্বিতীয় প্রধান হিসেবে জাওয়াহিরিই আল-কায়েদার হাল ধরেছেন বলে সবাই ধারণা করছেন। কিন্তু মার্কিন প্রশাসন কি জাওয়াহিরিকে ধরার ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেবে? নাকি বিন লাদেনকে মেরে তারা আত্মতুষ্টিতে ভুগছে?
এবার মোল্লা ওমর প্রসঙ্গে আসি। আফগানিস্তানের কান্দাহারে অতিদরিদ্র পশতুন পরিবারে ১৯৫৯ সালে মোল্লা ওমরের জন্ম। তিনি বেলুচিস্তানের কোয়েটায় মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন। পরে তিনি মাদ্রাসায় কিছুকাল শিক্ষকতাও করেন। তিনি ১৯৮৯ থেকে '৯২ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে সোভিয়েতবিরোধী আন্দোলনে গেরিলা বাহিনীতে ছিলেন। পরে ১৯৯৪ সালে মাত্র ৫০ জন মাদ্রাসা ছাত্রকে নিয়ে জঙ্গি সংগঠন তালেবান প্রতিষ্ঠা করেন এবং দুর্নীতিবিরোধী সশস্ত্র আন্দোলন শুরু করেন। দ্রুত বাড়তে থাকে তাঁর সাংগঠনিক শক্তি। মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি কান্দাহার প্রদেশ দখল করে নেন। পরের বছর (১৯৯৫) সেপ্টেম্বরে হেরাত প্রদেশও দখল করেন তিনি। ১৯৯৬ সালে সশস্ত্র তালেবান জঙ্গিরা বোরহানউদ্দিন রাব্বানি সরকারকে হটিয়ে কাবুল দখল করে নেয়। প্রতিষ্ঠিত হয় তালেবান সরকার। টানা পাঁচ বছর তালেবান শাসন চলে দেশটিতে। ২০০১ সালে আল-কায়েদা নেতা বিন লাদেনকে প্রশ্রয় দেওয়ায় তালেবান সরকার উৎখাতে যৌথ অভিযান চালায় মার্কিন ও ব্রিটিশ সেনারা। এরপর আত্মগোপনে থেকেই তালেবান জঙ্গিদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মোল্লা ওমর। তিনিও পাকিস্তানে আত্মগোপন করে আছেন বলে গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে।
২০০৯ সালের নভেম্বরে ওয়াশিংটন পোস্টের এক রিপোর্টে বলা হয়, অক্টোবরে মোল্লা ওমর আইএসআইয়ের সহায়তায় করাচিতে আত্মগোপন করেন। পত্রিকাটি ২০১১ সালের জানুয়ারিতে আরেকটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, মোল্লা ওমর ৭ জানুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং আইএসআইয়ের সহায়তায় করাচির কাছে একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে অনেক দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে সুস্থ হয়ে তিনি হাসপাতাল ছাড়েন।
এটা স্পষ্ট, আল-কায়েদা ও তালেবানের তিন শীর্ষস্থানীয় নেতাই পাকিস্তানের কাছ থেকে সাহায্য-সহযোগিতা পেয়েছেন। জঙ্গিদের মদদ দেওয়া, সাহায্য-সহযোগিতা করার ব্যাপারে আগে পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করা হতো। বিন লাদেন পাকিস্তানে নিহত হওয়ার পর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেল। এ সত্যকে মিথ্যা প্রমাণ করতে পাকিস্তানের কাছে জোরালো কোনো তথ্য-উপাত্ত আছে কি না তা আমরা জানি না। তবে এ ঘটনার পর পাকিস্তান যে গভীর সংকটে পড়েছে, তা তো আমরা দেখতেই পাচ্ছি।
ওসামা বিন লাদেন পাকিস্তানে মার্কিন সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হওয়ায় অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চাপের পাশাপাশি জঙ্গিদের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানকে। দেশটির বিভিন্ন স্থানে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের জঙ্গি হামলা হতে পারে। বিভিন্ন দেশে মার্কিন স্থাপনাগুলোতেও হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিন লাদেনকে প্রশ্রয় দেওয়াকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের ওপর সবচেয়ে বড় চাপ এসেছে দেশটির দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে। পাকিস্তানকে এখন আর মোটেই বিশ্বাস করছে না যুক্তরাষ্ট্র। এই অবিশ্বাস থেকেই পাকিস্তানের রাডার সিস্টেম অচল করে দিয়ে মার্কিন সেনারা হেলিকপ্টার নিয়ে পাকিস্তানে ঢুকেছে। বিন লাদেন নিহত হওয়ার পরও টের পায়নি যে তাঁর ভূখণ্ড তো বটেই; খোদ রাজধানীর কাছে কত বড় ঘটনা ঘটে গেছে। বিন লাদেন নিহত হওয়ার পরপরই পাকিস্তানিদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। একই সঙ্গে বিন লাদেনকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। আইএসআই প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ সুজা পাশাকে ডেকে পাঠানো হয়েছে ওয়াশিংটন ডিসিতে।
এদিকে বিন লাদেন নিহত হওয়ার পর পাকিস্তানে হামলা চালাতে এক মুহূর্তও দেরি করেনি যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির সেনাপ্রধান কিয়ানির হুঁশিয়ারি উচ্চারণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মনুষ্যবিহীন বিমান হামলা (প্রথমবারের মতো) চালানো হয়েছে। এ হামলা চালানোর আগে পাকিস্তানের অনুমতি নেওয়া হয়নি। পারভেজ মোশাররফ ও আসিফ আলী জারদারি সরকারের আমলেও অনেকবার বিমান হামলা হয়েছে। তবে এসব হামলা চালানোর ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নাকি এক দশক আগেই পারভেজ মোশাররফ গোপনে চুক্তি করেছিলেন বলে গতকাল সোমবার লন্ডন থেকে প্রকাশিত গার্ডিয়ান রিপোর্ট ছেপেছে। ২০০১ সালে সম্পাদিত বুশ-মোশাররফ চুক্তিতে বলা হয়, ওসামাসহ আল-কায়েদা নেতাদের যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই অভিযান চালাবে মার্কিন সেনারা।
ধারণা করা হচ্ছে, আল-কায়েদা ও তালেবান জঙ্গিদের দমন করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানে আরো বড় ধরনের হামলা চালাবে। গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, মোল্লা ওমর ও জাওয়াহিরি পাকিস্তানে লুকিয়ে থাকতে পারে বলে মার্কিন প্রশাসনের কাছে তথ্য রয়েছে। এই দুই শীর্ষ জঙ্গির ব্যাপারে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে হয়তো পাকিস্তান কিছুটা রক্ষা পেতে পারে। অন্যথায় পাকিস্তানের ওপর আরো বড় ধরনের চাপ আসবে। তাতে পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব বলতে কিছু থাকবে কি না তা নিয়ে শঙ্কিত দেশটির জনগণ।
ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ জারদারি, প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি এবং সেনাপ্রধান জেনারেল আশফাক কিয়ানির পদত্যাগ দাবি করেছে সে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন, নাগরিক সমাজ ও সাধারণ মানুষ। তারা বলছে, এই প্রশাসনের হাতে পাকিস্তান আর নিরাপদ নয়। এ পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের বর্তমান প্রশাসনের জঙ্গিবিরোধী একটা সুস্পষ্ট অবস্থান নেওয়া উচিত। জঙ্গিদের সঙ্গে গাঁটছড়া ভাব ছিন্ন করে প্রতিবেশী দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় মনোযোগ দেওয়া উচিত। তা না হলে পাকিস্তান পুরোপুরি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে।
লেখক : কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক
mkamalbd@hotmail.com
পাকিস্তানে তিন দফায় দীর্ঘদিন অবস্থান করে এবং চারটি প্রদেশে ঘুরে ঘুরে তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও সমাজব্যবস্থা সম্পর্কে কিছু ধারণা পেয়েছি। তাতে আমার মনে হয়েছে, একটি উন্নত গণতান্ত্রিক পাকিস্তান কোনোকালে আমরা দেখব কি না সন্দেহ। এখন পাকিস্তানের প্রধান শত্রু জঙ্গিবাদ। শুরুতে পাকিস্তান জঙ্গিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে এবং অর্থ সহায়তাও করেছে। সেই পাকিস্তান এখন নিজেদের তৈরি জঙ্গিদের হাতে আক্রান্ত হচ্ছে। আফগানিস্তানে তালেবান পতনের পর আল-কায়েদা ও তালেবান জঙ্গিদের টার্গেট হচ্ছে পাকিস্তান। জঙ্গিদের আক্রমণে বিগত এক দশকে পাকিস্তান হাজার হাজার সামরিক ও বেসামরিক লোককে হারিয়েছে। অনেক সম্পদ বিনষ্ট হয়েছে। সেনা সদস্যরা জঙ্গিদের বিভিন্ন আত্মঘাতী হামলার টার্গেট হওয়ায় সেনাবাহিনীতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সেনা পরিবারের চাপের কারণে পারভেজ মোশাররফ সরকার জঙ্গিদের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি পর্যন্ত করতে বাধ্য হয়েছিল।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, পাকিস্তানের উচ্চবিত্ত প্রায় প্রতিটি পরিবারের একজন করে সদস্য সেনাবাহিনীতে কর্মরত আছেন। তাঁরা জঙ্গিবিরোধী অভিযানে অংশ নিতে অনীহা প্রকাশ করে আসছিলেন। পাকিস্তানে গিয়ে অনেক পরিবারের সঙ্গে কথা বলারও সুযোগ হয়েছিল। তাঁরা অকপটে স্বীকার করেছেন, ইসলামাইজেশনের নামে পাকিস্তান জঙ্গিদের বেড়ে ওঠায় সহায়তা করেছে। আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদা ও তালেবানের শীর্ষ নেতারা পাকিস্তানে থেকেই তাঁদের জঙ্গি তৎপরতা চালিয়েছেন।
আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, আল-কায়েদার শীর্ষ নেতা ওসামা বিন লাদেন পরিবার-পরিজন নিয়ে প্রায় ছয় বছর ধরে পাকিস্তানে অবস্থান করছিলেন। ২০০৪ সালে আমি নিজেও লিখেছিলাম, বিন লাদেন বেশির ভাগ সময় আফগানিস্তানের কান্দাহারে এবং পাকিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে অবস্থান করছেন। তিনি পাকিস্তানের পাঠান-অধ্যুষিত এলাকা খাইবার এজেন্সিতে কিছুদিন অবস্থানও করেন। একটা সময় তোরাবোরা পাহাড়ে লুকিয়ে ছিলেন এবং এ খবর মার্কিন প্রশাসন জানতে পেরে সেখানে বৃষ্টির মতো বোমা হামলা চালিয়েছিল। সে হামলায় তিনি অল্পের জন্য বেঁচে যান। তারপর থেকে তিনি পাকিস্তানে অবস্থান করেন।
আল-কায়েদার দ্বিতীয় প্রধান নেতা জাওয়াহিরি দীর্ঘদিন পাকিস্তানে অবস্থান করেছেন। তালেবান শীর্ষ নেতা মোল্লা মোহাম্মদ ওমরও পড়াশোনা করেছেন বেলুচিস্তানের কোয়েটায়। সেখানে তিনি কিছুকাল মাদ্রাসায় শিক্ষকতাও করেন। পরে তিনি মাদ্রাসার ৫০ ছাত্রকে নিয়ে সশস্ত্র তালেবান সংগঠন গড়ে তোলেন। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, মোল্লা ওমরও আর্থিক ও লজিস্টিক সাপোর্ট পেয়েছেন পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের কাছ থেকে।
প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণে দেখা যাচ্ছে, বিন লাদেন, জাওয়াহিরি ও মোল্লা ওমর বিভিন্নভাবে পাকিস্তানের সহায়তা ও আশ্রয়-প্রশ্রয় পেয়েছেন। এবার জাওয়াহিরি ও মোল্লা ওমরের অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে পর্যালোচনা করা যেতে পারে। আইমান আল জাওয়াহিরি ১৯৫১ সালে মিসরের কায়রোতে এক উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মেধাবী ছাত্র জাওয়াহিরি ডাক্তারি পড়াশোনা শেষ করে ওই পেশায়ই যোগ দেন। অল্প সময়ের মধ্যে তিনি সার্জন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং চাকরিসূত্রে জেদ্দায় চলে যান। ১৯৮৬ সালে জেদ্দায় বিন লাদেনের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। ডাক্তারি পেশার পাশাপাশি তিনি মিসরে জিহাদি আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। তিনি প্রথমে বিন লাদেনের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন। পরে ১৯৯৮ সালের জুনে বিন লাদেন ও তাঁর নেতৃত্বে আল-কায়েদা কংগ্রেস গঠিত হয়। এরপর চাকরি নিয়ে তিনি পাকিস্তানের পেশোয়ারে রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চলে আসেন। পাকিস্তানে থেকেই তিনি আল-কায়েদার জঙ্গি কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। ২০০১ সালে নাইন-ইলেভেনের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই ২২ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা প্রকাশ করে। এই তালিকায় দ্বিতীয় নম্বরে রয়েছে জাওয়াহিরির নাম। ২০০৮ সালে তাঁকে ধরার জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনী অভিযানও চালিয়েছিল। কিন্তু তাঁকে ধরা সম্ভব হয়নি।
এখন জাওয়াহিরি কোথায় আছেন? তিনি কি পাকিস্তানে, নাকি আফগানিস্তানে? অনেকের ধারণা, জাওয়াহিরি এখনো পাকিস্তানেই লুকিয়ে আছেন। তিনি এখনো গোপন স্থান থেকে জঙ্গি তৎপরতা চালাচ্ছেন। কাতারভিত্তিক টিভি চ্যানেল আল-জাজিরার মাধ্যমে বিভিন্ন সময় তাঁর কিছু বিবৃতি সম্প্রচারিত হয়েছে। সেগুলো কিভাবে আল-জাজিরার কাছে পেঁৗছানো হয়েছে, তার খোঁজখবর নিচ্ছে মার্কিন গোয়েন্দারা।
অবশ্য বিন লাদেন নিহত হওয়ার পর একটি খবর বেশ রটেছে। জাওয়াহিরি নাকি বিন লাদেনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। আল-কায়েদার প্রধান হওয়ার জন্যই তিনি বিন লাদেনের অবস্থান সম্পর্কে মার্কিন প্রশাসনকে তথ্য দিয়েছেন। সেই তথ্যের ভিত্তিতে বিন লাদেনের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয় মার্কিন প্রশাসন। এটা কতটুকু সত্য তা আমাদের জানা নেই, তবে দ্বিতীয় প্রধান হিসেবে জাওয়াহিরিই আল-কায়েদার হাল ধরেছেন বলে সবাই ধারণা করছেন। কিন্তু মার্কিন প্রশাসন কি জাওয়াহিরিকে ধরার ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেবে? নাকি বিন লাদেনকে মেরে তারা আত্মতুষ্টিতে ভুগছে?
এবার মোল্লা ওমর প্রসঙ্গে আসি। আফগানিস্তানের কান্দাহারে অতিদরিদ্র পশতুন পরিবারে ১৯৫৯ সালে মোল্লা ওমরের জন্ম। তিনি বেলুচিস্তানের কোয়েটায় মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন। পরে তিনি মাদ্রাসায় কিছুকাল শিক্ষকতাও করেন। তিনি ১৯৮৯ থেকে '৯২ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে সোভিয়েতবিরোধী আন্দোলনে গেরিলা বাহিনীতে ছিলেন। পরে ১৯৯৪ সালে মাত্র ৫০ জন মাদ্রাসা ছাত্রকে নিয়ে জঙ্গি সংগঠন তালেবান প্রতিষ্ঠা করেন এবং দুর্নীতিবিরোধী সশস্ত্র আন্দোলন শুরু করেন। দ্রুত বাড়তে থাকে তাঁর সাংগঠনিক শক্তি। মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি কান্দাহার প্রদেশ দখল করে নেন। পরের বছর (১৯৯৫) সেপ্টেম্বরে হেরাত প্রদেশও দখল করেন তিনি। ১৯৯৬ সালে সশস্ত্র তালেবান জঙ্গিরা বোরহানউদ্দিন রাব্বানি সরকারকে হটিয়ে কাবুল দখল করে নেয়। প্রতিষ্ঠিত হয় তালেবান সরকার। টানা পাঁচ বছর তালেবান শাসন চলে দেশটিতে। ২০০১ সালে আল-কায়েদা নেতা বিন লাদেনকে প্রশ্রয় দেওয়ায় তালেবান সরকার উৎখাতে যৌথ অভিযান চালায় মার্কিন ও ব্রিটিশ সেনারা। এরপর আত্মগোপনে থেকেই তালেবান জঙ্গিদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মোল্লা ওমর। তিনিও পাকিস্তানে আত্মগোপন করে আছেন বলে গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে।
২০০৯ সালের নভেম্বরে ওয়াশিংটন পোস্টের এক রিপোর্টে বলা হয়, অক্টোবরে মোল্লা ওমর আইএসআইয়ের সহায়তায় করাচিতে আত্মগোপন করেন। পত্রিকাটি ২০১১ সালের জানুয়ারিতে আরেকটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, মোল্লা ওমর ৭ জানুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং আইএসআইয়ের সহায়তায় করাচির কাছে একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে অনেক দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে সুস্থ হয়ে তিনি হাসপাতাল ছাড়েন।
এটা স্পষ্ট, আল-কায়েদা ও তালেবানের তিন শীর্ষস্থানীয় নেতাই পাকিস্তানের কাছ থেকে সাহায্য-সহযোগিতা পেয়েছেন। জঙ্গিদের মদদ দেওয়া, সাহায্য-সহযোগিতা করার ব্যাপারে আগে পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করা হতো। বিন লাদেন পাকিস্তানে নিহত হওয়ার পর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেল। এ সত্যকে মিথ্যা প্রমাণ করতে পাকিস্তানের কাছে জোরালো কোনো তথ্য-উপাত্ত আছে কি না তা আমরা জানি না। তবে এ ঘটনার পর পাকিস্তান যে গভীর সংকটে পড়েছে, তা তো আমরা দেখতেই পাচ্ছি।
ওসামা বিন লাদেন পাকিস্তানে মার্কিন সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হওয়ায় অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চাপের পাশাপাশি জঙ্গিদের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানকে। দেশটির বিভিন্ন স্থানে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের জঙ্গি হামলা হতে পারে। বিভিন্ন দেশে মার্কিন স্থাপনাগুলোতেও হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিন লাদেনকে প্রশ্রয় দেওয়াকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের ওপর সবচেয়ে বড় চাপ এসেছে দেশটির দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে। পাকিস্তানকে এখন আর মোটেই বিশ্বাস করছে না যুক্তরাষ্ট্র। এই অবিশ্বাস থেকেই পাকিস্তানের রাডার সিস্টেম অচল করে দিয়ে মার্কিন সেনারা হেলিকপ্টার নিয়ে পাকিস্তানে ঢুকেছে। বিন লাদেন নিহত হওয়ার পরও টের পায়নি যে তাঁর ভূখণ্ড তো বটেই; খোদ রাজধানীর কাছে কত বড় ঘটনা ঘটে গেছে। বিন লাদেন নিহত হওয়ার পরপরই পাকিস্তানিদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। একই সঙ্গে বিন লাদেনকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। আইএসআই প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ সুজা পাশাকে ডেকে পাঠানো হয়েছে ওয়াশিংটন ডিসিতে।
এদিকে বিন লাদেন নিহত হওয়ার পর পাকিস্তানে হামলা চালাতে এক মুহূর্তও দেরি করেনি যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির সেনাপ্রধান কিয়ানির হুঁশিয়ারি উচ্চারণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মনুষ্যবিহীন বিমান হামলা (প্রথমবারের মতো) চালানো হয়েছে। এ হামলা চালানোর আগে পাকিস্তানের অনুমতি নেওয়া হয়নি। পারভেজ মোশাররফ ও আসিফ আলী জারদারি সরকারের আমলেও অনেকবার বিমান হামলা হয়েছে। তবে এসব হামলা চালানোর ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নাকি এক দশক আগেই পারভেজ মোশাররফ গোপনে চুক্তি করেছিলেন বলে গতকাল সোমবার লন্ডন থেকে প্রকাশিত গার্ডিয়ান রিপোর্ট ছেপেছে। ২০০১ সালে সম্পাদিত বুশ-মোশাররফ চুক্তিতে বলা হয়, ওসামাসহ আল-কায়েদা নেতাদের যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই অভিযান চালাবে মার্কিন সেনারা।
ধারণা করা হচ্ছে, আল-কায়েদা ও তালেবান জঙ্গিদের দমন করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানে আরো বড় ধরনের হামলা চালাবে। গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, মোল্লা ওমর ও জাওয়াহিরি পাকিস্তানে লুকিয়ে থাকতে পারে বলে মার্কিন প্রশাসনের কাছে তথ্য রয়েছে। এই দুই শীর্ষ জঙ্গির ব্যাপারে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে হয়তো পাকিস্তান কিছুটা রক্ষা পেতে পারে। অন্যথায় পাকিস্তানের ওপর আরো বড় ধরনের চাপ আসবে। তাতে পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব বলতে কিছু থাকবে কি না তা নিয়ে শঙ্কিত দেশটির জনগণ।
ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ জারদারি, প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি এবং সেনাপ্রধান জেনারেল আশফাক কিয়ানির পদত্যাগ দাবি করেছে সে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন, নাগরিক সমাজ ও সাধারণ মানুষ। তারা বলছে, এই প্রশাসনের হাতে পাকিস্তান আর নিরাপদ নয়। এ পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের বর্তমান প্রশাসনের জঙ্গিবিরোধী একটা সুস্পষ্ট অবস্থান নেওয়া উচিত। জঙ্গিদের সঙ্গে গাঁটছড়া ভাব ছিন্ন করে প্রতিবেশী দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় মনোযোগ দেওয়া উচিত। তা না হলে পাকিস্তান পুরোপুরি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে।
লেখক : কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক
mkamalbd@hotmail.com
No comments