আশা টাওয়ারে ভাংচুর-চাকরিদাতা ও প্রার্থীদের দায়িত্বশীলতা
রাজধানীর শ্যামলীতে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা 'আশা'য় চাকরিপ্রত্যাশী ও আশা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে শুক্রবারের সংঘর্ষের ঘটনাটি এড়ানোযোগ্য ছিল। সংঘর্ষে আশা টাওয়ারসহ আশপাশের কয়েকটি ভবন এবং রাস্তায় চলাচলকারী গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
অথচ আশার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে যারা রয়েছেন তারা একটু সতর্ক ও দক্ষ হলে দেশের একটি অন্যতম বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার আর্থিক ক্ষতি ছাড়াও এমন সুনামহানিকর ঘটনা ঘটতে পারত না। আশা কর্তৃপক্ষের বোঝা উচিত ছিল, একই দিনে একই স্থানে হাজার হাজার কর্মপ্রার্থীর পরীক্ষা নেওয়া বা সাক্ষাৎকার গ্রহণ মোটেই বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত নয়। তদুপরি কর্মপ্রার্থীদের ক্রমিক নম্বর প্রদান থেকে শুরু করে গোটা প্রক্রিয়াটিই ছিল আনাড়িসুলভ। অথচ তারা যদি কর্মপ্রার্থীদের পরীক্ষা বা সাক্ষাৎকার গ্রহণের জন্য কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নিতেন তাহলে গোটা প্রক্রিয়া নিয়ে সন্দেহ দেখা দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হতো না। আর এ নিয়ে কর্মপ্রার্থীরা মারমুখী হয়ে উঠতেন না এবং তাদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে আশা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তেন না। কিন্তু আশার ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতার কারণে এ অনভিপ্রেত ঘটনাটি ঘটে গেল। দেশে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে আশার সঞ্চার করে। বিশেষত আশার মতো বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো নতুন কর্মসংস্থানের মাধ্যমে আমাদের দেশের বেকার সমস্যা সমাধানে অবদান রেখে চলায় তা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নেও ইতিবাচক ফল দিচ্ছে। তাই এসব প্রতিষ্ঠান সুনামের সঙ্গে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারুক, এটা সবারই কাম্য হওয়া উচিত। কিন্তু ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারণে আশার মতো কোনো প্রতিষ্ঠান যখন সুনামহানির শিকার হয়, তখন সত্যিই আমরা হতবাক হয়ে যাই। আশায় হাজার হাজার কর্মপ্রত্যাশী ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘটিত সংঘর্ষ কোনোক্রমেই সমর্থনযোগ্য নয়। তবে আশা কর্তৃপক্ষও এর দায় এড়াতে পারে না। তাদের উচিত ছিল এত বড় একটি নতুন চাকরির আয়োজনে বিচক্ষণ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা। এ ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়টিকে কোনোভাবেই দৃষ্টির বাইরে রাখা উচিত হয়নি। ভবিষ্যতে যে কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির পরীক্ষা বা সাক্ষাৎকার গ্রহণে যেন উপযুক্ত কর্মপরিকল্পনা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়।
No comments