গবেষণার তথ্যঃ মা নির্যাতনের শিকার হলে শিশুর ওজন ও উচ্চতা কম হয় by শেখ সাবিহা আলম
নারী নির্যাতন সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে শিশুর স্বাস্থ্যে। পৃথক তিনটি গবেষণায় দেখা গেছে, শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার মায়ের সন্তান অপুষ্টি, সর্দি-কাশি ও ডায়রিয়ায় বেশি ভোগে। এসব শিশুর ওজন ও উচ্চতা কম হয়।
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) প্রজনন স্বাস্থ্য ইউনিটের প্রধান রুচিরা তাবাসসুম নভেদ ও সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক কাইযা আসলিং মোনেমি ২০০৮ ও ২০০৯ সালে এসব গবেষণা করেন। তাঁরা বলছেন, নির্যাতনের শিকার মায়েদের সন্তান ঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারে না।
রুচিরা তাবাসসুম নভেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘অত্যাচারিত নারী শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকেন। অনেক ক্ষেত্রেই নিজের বা সন্তানের যত্ন নেওয়ার স্পৃহা তাঁদের থাকে না।’
ব্রেস্ট ফিডিং ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এস কে রায় প্রথম আলোকে বলেন, শিশুকে ছয় মাস পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ানো ও দুই বছর বয়স পর্যন্ত পরিপূরক খাবার খাওয়ানোর দায়িত্ব মায়ের। নির্যাতনের শিকার মা এই কাজ ঠিকভাবে করে উঠতে পারেন না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এ দেশের ৬৯ শতাংশ নারী জীবনে একবার হলেও স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। জীবনভর নির্যাতনের শিকার হন ৪২ শতাংশ নারী। আইসিডিডিআরবি, জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল, পার্টনারস ফর প্রিভেনশন এবং দি চেঞ্জ প্রজেক্টের গবেষণায় দেখা গেছে, শহরের ৬০ ও গ্রামের ৬২ শতাংশ পুরুষ মনে করেন, অনেক সময় নারীকে পেটানো অপরিহার্য হয়ে পড়ে।
শিশুর ওপর প্রভাব: ২০০৮ ও ২০০৯ সালে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনগুলো বলছে, শারীরিক নির্যাতনের শিকার মা শিশুর যথাযথ যত্ন নিতে পারেন না। মানসিক নির্যাতনের শিকার মা মানসিক চাপ ও বিষণ্নতায় ভোগেন, তাঁর আচরণে স্নেহ প্রকাশ পায় না। শিশুরা মানসম্পন্ন বাড়তি যত্ন পায় না।
‘ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট উইমেন ইনক্রিজেস দি রিস্ক অব ফিটাল অ্যান্ড আরলি চাইল্ডহুড ইমপেয়ারমেন্ট’ (২০০৮) শীর্ষক গবেষণায় দেখা গেছে, নির্যাতনের শিকার নারীর সন্তানদের মধ্যে ৪১ দশমিক ৯ শতাংশের বয়সের তুলনায় ওজন কম, ১৩ দশমিক ৩ শতাংশের উচ্চতার তুলনায় ওজন কম এবং ৫৫ দশমিক ৫ শতাংশ খর্বাকৃতির। অন্যদিকে নির্যাতনের শিকার হননি এমন মায়েদের শিশুর মধ্যে ৩৭ শতাংশের বয়সের তুলনায় ওজন কম, ১১ দশমিক ৩ শতাংশের উচ্চতার তুলনায় ওজন কম এবং ৪৯ দশমিক ৮ জন খর্বাকৃতির।
চাঁদপুর জেলার মতলবের তিন হাজার ১৬৪ জোড়া মা ও শিশুকে নিয়ে এ গবেষণা হয়। মায়েদের গড় বয়স ছিল ২৬ বছর। গর্ভধারণের পর থেকে শিশুর দুই বছর বয়স পর্যন্ত তথ্য নেওয়া হয়। এই শিশুদের একটি বড় অংশ তিন মাস মায়ের বুকের দুধ খেয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, নির্যাতনের শিকার নারীর শিশুরা গর্ভে থাকতেই ভুগতে শুরু করে। মায়ের পুষ্টি ও যত্ন নিশ্চিত করা হয় না। এর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ে ভ্রূণ ও নবজাতকের ওপর।
বিএসএমএমইউর সহকারী অধ্যাপক ও হেল্পিং বেবিজ ব্রিদ কর্মসূচির প্রধান প্রশিক্ষক সঞ্জয় কুমার দে বলেন, নির্যাতনের কারণে মায়ের বুকের দুধ আসতে দেরি হয় এবং পরবর্তী সময়ে এর প্রবাহও বিঘ্নিত হয়।
‘ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট উইমেন ইনক্রিজেস দি রিস্ক অব ডায়েরিয়াল ডিজিজ অ্যান্ড রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন’ (২০০৯) নামের অন্য গবেষণায় তিন হাজার ১৩২ জন মায়ের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যে মায়েরা নির্যাতনের শিকার হন না তাঁদের সন্তানদের তুলনায় নির্যাতনের শিকার মায়েদের সন্তানের মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের হার ২৬ থেকে ৩৭ শতাংশ বেশি, সর্দি-কাশি বা নিউমোনিয়ায় ভোগার হার শতকরা ১৬ শতাংশ।
‘ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট উইমেন অ্যান্ড দি রিস্ক অব আন্ডার ফাইভ মরটালিটি: অ্যানালিসিস অব কমিউনিটি বেজড ডাটা ফ্রম রুরাল বাংলাদেশ’ নামের তৃতীয় গবেষণায় নারী নির্যাতনকে বাংলাদেশের জন্য একটি বিরাট জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি বলে মন্তব্য করা হয়েছে।
রুচিরা তাবাসসুম নভেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘অত্যাচারিত নারী শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকেন। অনেক ক্ষেত্রেই নিজের বা সন্তানের যত্ন নেওয়ার স্পৃহা তাঁদের থাকে না।’
ব্রেস্ট ফিডিং ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এস কে রায় প্রথম আলোকে বলেন, শিশুকে ছয় মাস পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ানো ও দুই বছর বয়স পর্যন্ত পরিপূরক খাবার খাওয়ানোর দায়িত্ব মায়ের। নির্যাতনের শিকার মা এই কাজ ঠিকভাবে করে উঠতে পারেন না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এ দেশের ৬৯ শতাংশ নারী জীবনে একবার হলেও স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। জীবনভর নির্যাতনের শিকার হন ৪২ শতাংশ নারী। আইসিডিডিআরবি, জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল, পার্টনারস ফর প্রিভেনশন এবং দি চেঞ্জ প্রজেক্টের গবেষণায় দেখা গেছে, শহরের ৬০ ও গ্রামের ৬২ শতাংশ পুরুষ মনে করেন, অনেক সময় নারীকে পেটানো অপরিহার্য হয়ে পড়ে।
শিশুর ওপর প্রভাব: ২০০৮ ও ২০০৯ সালে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনগুলো বলছে, শারীরিক নির্যাতনের শিকার মা শিশুর যথাযথ যত্ন নিতে পারেন না। মানসিক নির্যাতনের শিকার মা মানসিক চাপ ও বিষণ্নতায় ভোগেন, তাঁর আচরণে স্নেহ প্রকাশ পায় না। শিশুরা মানসম্পন্ন বাড়তি যত্ন পায় না।
‘ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট উইমেন ইনক্রিজেস দি রিস্ক অব ফিটাল অ্যান্ড আরলি চাইল্ডহুড ইমপেয়ারমেন্ট’ (২০০৮) শীর্ষক গবেষণায় দেখা গেছে, নির্যাতনের শিকার নারীর সন্তানদের মধ্যে ৪১ দশমিক ৯ শতাংশের বয়সের তুলনায় ওজন কম, ১৩ দশমিক ৩ শতাংশের উচ্চতার তুলনায় ওজন কম এবং ৫৫ দশমিক ৫ শতাংশ খর্বাকৃতির। অন্যদিকে নির্যাতনের শিকার হননি এমন মায়েদের শিশুর মধ্যে ৩৭ শতাংশের বয়সের তুলনায় ওজন কম, ১১ দশমিক ৩ শতাংশের উচ্চতার তুলনায় ওজন কম এবং ৪৯ দশমিক ৮ জন খর্বাকৃতির।
চাঁদপুর জেলার মতলবের তিন হাজার ১৬৪ জোড়া মা ও শিশুকে নিয়ে এ গবেষণা হয়। মায়েদের গড় বয়স ছিল ২৬ বছর। গর্ভধারণের পর থেকে শিশুর দুই বছর বয়স পর্যন্ত তথ্য নেওয়া হয়। এই শিশুদের একটি বড় অংশ তিন মাস মায়ের বুকের দুধ খেয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, নির্যাতনের শিকার নারীর শিশুরা গর্ভে থাকতেই ভুগতে শুরু করে। মায়ের পুষ্টি ও যত্ন নিশ্চিত করা হয় না। এর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ে ভ্রূণ ও নবজাতকের ওপর।
বিএসএমএমইউর সহকারী অধ্যাপক ও হেল্পিং বেবিজ ব্রিদ কর্মসূচির প্রধান প্রশিক্ষক সঞ্জয় কুমার দে বলেন, নির্যাতনের কারণে মায়ের বুকের দুধ আসতে দেরি হয় এবং পরবর্তী সময়ে এর প্রবাহও বিঘ্নিত হয়।
‘ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট উইমেন ইনক্রিজেস দি রিস্ক অব ডায়েরিয়াল ডিজিজ অ্যান্ড রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন’ (২০০৯) নামের অন্য গবেষণায় তিন হাজার ১৩২ জন মায়ের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যে মায়েরা নির্যাতনের শিকার হন না তাঁদের সন্তানদের তুলনায় নির্যাতনের শিকার মায়েদের সন্তানের মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের হার ২৬ থেকে ৩৭ শতাংশ বেশি, সর্দি-কাশি বা নিউমোনিয়ায় ভোগার হার শতকরা ১৬ শতাংশ।
‘ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট উইমেন অ্যান্ড দি রিস্ক অব আন্ডার ফাইভ মরটালিটি: অ্যানালিসিস অব কমিউনিটি বেজড ডাটা ফ্রম রুরাল বাংলাদেশ’ নামের তৃতীয় গবেষণায় নারী নির্যাতনকে বাংলাদেশের জন্য একটি বিরাট জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি বলে মন্তব্য করা হয়েছে।
No comments