কণ্ঠস্বর-ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন ও বাস্তবতা by রাহাত খান

ইংরেজি পাক্ষিক 'ইকোনমিস্ট' পত্রিকাটি অনেকের মতো আমারও খুব প্রিয় পত্রিকা। আগে পেতাম অফিস থেকে। চাকরি থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর কেনার সামর্থ্য নেই বলে কোনো না কোনো বিকেলে ঢাকা ক্লাবের লাইব্রেরিতে গিয়ে পত্রিকাটি পড়ি। পত্রিকাটির বিশ্বজুড়ে বিশাল পাঠকসমাজ গড়ে উঠেছে। এর গুড-উইল বা গ্রহণযোগ্যতা প্রায় প্রশ্নাতীত।


প্রায় শব্দটি কিছুদিন আগে হলেও উচ্চারণ করতাম না। এখন কেন প্রশ্ন তুলতে হলো প্রিয় পত্রিকা ইকোনমিস্টের বিপক্ষে, সেটা বলার জন্যই এই ক্ষুদ্র নিবন্ধের অবতারণা।
তবে নিজের বক্তব্যটি বলার আগে পত্রিকাটির বিশালত্ব এবং এর পরিপ্রেক্ষিত আগে একটু বলে নিতে চাই। ইংরেজি এই পাক্ষিক পত্রিকাটির রয়েছে প্রায় বিশ্বজুড়ে ইন্টেলিজেন্স ইউনিট এবং অবকাঠামো। রয়েছে নিজস্ব থিঙ্কট্যাঙ্ক; যেখানে কাজ করেন রাজনীতি ও অর্থনীতিতে গুরুতুল্য সব বিশেষজ্ঞ, গবেষক এবং বিশ্লেষক।
এতদিন থেকে পত্রিকাটি নিয়মিত পড়ে আসছি। বেশ জানি পত্রিকার প্রায় প্রতিটি প্রতিবেদনে থাকে বক্তব্যের প্রমাণসিদ্ধতার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য ও উপাত্ত।
এইবারের সংখ্যায় পত্রিকাটিতে একটি প্রতিবেদন বেরিয়েছে বাংলাদেশ সম্পর্কে। প্রতিবেদনটি নানা কারণে বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা রাখে না। 'প্রায়' শব্দটি এ জন্যই উচ্চারণ করা।
পত্রিকাটি মন্তব্য করেছে ২০০৮ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচন সম্পর্কে। বলেছে, ভারতের দেওয়া ব্যাগভর্তি কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার জোরেই নাকি আওয়ামী লীগ নির্বাচনে বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়লাভ করতে পেরেছে। বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল-ভুটান ট্রানজিট চুক্তির পর উপমহাদেশের কয়েকটি দেশের সঙ্গে, বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের মৈত্রী সম্পর্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। তবে এই ট্রানজিট চুক্তির কারণে ভারত নাকি বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে খুব সহজে, সুলভে এবং স্বল্প সময়ে তার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অংশের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনে অস্ত্র-গোলাবারুদ সরবরাহের সুযোগ নিতে পারে।
ইকোনমিস্ট তার আলোচ্য প্রতিবেদনে আরও বলেছে, দেশ শাসনে সরকার নানা সমস্যা ও সংকটের সম্মুখীন। ভুল রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশ সরকার অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নৈরাজ্যের মুখোমুখি হতে চলেছে।
বাংলাদেশ সম্পর্কে এবং যে কোনো বিষয়ে ইকোনমিস্ট অথবা যে কোনো পত্রিকা অবশ্যই মন্তব্য করার কিংবা প্রতিবেদন লেখার অধিকার রাখে। তবে দুঃখ হয়, বাংলাদেশ সম্পর্কে লেখা ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে শুধুই নেতিবাচক ঢালাও মন্তব্য। মন্তব্যগুলো তথ্য-উপাত্ত দিয়ে প্রমাণসিদ্ধ করার চেষ্টাই করেনি পত্রিকাটি। বরং পত্রিকাটি তার প্রতিবেদনে অসত্যকে প্রশ্রয় দিয়েছে। অনেক মিথ্যাকে সত্য বলে চালানোর চেষ্টা করেছে। ইকোনমিস্ট পত্রিকার মতো একটি পত্রিকায় এ ধরনের ভিত্তিহীন এবং উদ্দশ্যমূলক প্রতিবেদন ছাপা হওয়াটা নিঃসন্দেহে ইঙ্গিত দেয়, অর্থ ও প্রভাব পত্রিকার ভেতরকার শৃঙ্খলা ও সত্য-নিষ্ঠাকে ধ্বংস করতে উদ্যত।
যত বড় পত্রিকা হোক, কোনো দেশ বা কোনো বিষয় সম্পর্কে ঢালাও মন্তব্য করা তো গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তথ্য-উপাত্ত ছাড়া এ ধরনের ঢালাও মন্তব্যসর্বস্ব প্রতিবেদনকে সৎ সাংবাদিকতার নিদর্শন বলেও মেনে নেওয়া যায় না।
জোর দিয়ে বলা যায়, ২০০৮ সালে বাংলাদেশে যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং যে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে জয়লাভ করেছিল, সেই জয় ভারতের ব্যাগভর্তি কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার জোরে হয়নি। সে জয় আওয়ামী লীগকে দিয়েছিল দেশের সর্বস্তরের মানুষ; যারা দেশে লাগামহীন দুর্নীতি, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উচ্চমূল্য, জঙ্গিবাদের প্রতিষ্ঠা, রাজনীতি ও রাজনীতিবিদদের হত্যাকাণ্ডের জন্য বিএনপি-জামায়াত জোটকে দায়ী করেছিল এবং ভোট দিয়েছিল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটকে।
পরিষ্কারই বোঝা যায়, ইকোনমিস্ট পত্রিকা তাদের আলোচ্য প্রতিবেদনে সাধারণ নির্বাচন, বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী, ট্রানজিট ইত্যাদি সম্পর্কে কোনো হোমওয়ার্কই করেনি। ইকোনমিস্টের আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে তথ্য-উপাত্তহীন ঢালাও বক্তব্যে কার বা কাদের প্রেতাত্মার ছায়া প্রতিফলিত হয়েছে, সে কথায় একটু পরই আসছি। প্রথমে বলে নিই ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিত বা ব্যাকগ্রাউন্ড।
সোয়া এক কোটি ভুয়া ভোটার ভোটার-লিস্টে ঢুকিয়ে ক্ষমতাসীন বিএনপি-জামায়াত জোট ২২ জানুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিয়েছিল। হ্যাঁ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটা তৈরি করা হয়েছিল বেশিরভাগ বিএনপির আশীর্বাদপুষ্ট লোকদের দিয়ে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ছিলেন অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ। তিনি আবার প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতিও। ইয়াজউদ্দিন সাহেব সরকার চালাতেন আর নেপথ্যে সুতো ধরে বাখতেন খালেদা জিয়া এবং তার পুত্র তারেক রহমান। এই দু'জনের কথায় 'হ্যাঁ' 'হ্যাঁ' করতেন বলে অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিনের নামই হয়ে গিয়েছিল অধ্যাপক ইয়েসউদ্দিন। এই ভদ্রলোক যুগে যুগে নিন্দিত হয়ে থাকবেন রাজনীতিতে নির্লজ্জ পক্ষপাতদুষ্টতা এবং দেশ শাসনে অযোগ্যতা ও অথর্বতার কারণে।
২২ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান তো বিএনপির ইয়েসউদ্দিন সাহেবই। নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়-কর্তব্য বর্তায় যার কাঁধে সেই বিচারপতি আবদুল আজিজও ছিলেন গৃহপালিত। একেবারে 'দুই কান কাটা' নির্লজ্জ একটা মানুষ। একটা ঘটনা এ প্রসঙ্গে উঠেই আসে। তখনও বিএনপি ক্ষমতায়। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদটি অত্যন্ত নিরপেক্ষ ও মর্যাদাপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও রোদ থেকে বাঁচানোর জন্য তিনি এক মন্ত্রীর মাথার ওপর ছাতা ধরে ছিলেন ভারি সন্তুষ্টচিত্তে। বলতেই হয়, ভয়াবহ চামচা চরিত্রের লোক ছিলেন নির্বাচন কমিশনের প্রধান এই বিচারপতি আবদুল আজিজ। নির্বাচন কমিশনে আর যে দু'জন সদস্য, তারাও মনেপ্রাণে 'জাতীয়তাবাদী'। ২২ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপিকে জেতানোর জন্যই যে নির্বাচন কমিশনে তাদের চাকরি হয়েছে এটা বিলক্ষণ বুঝতেন তারা। নির্বাচন কমিশনের সদস্য মাহফুজুর রহমান তো তার মোহাম্মদপুরের বাসায় অবৈধ অস্ত্র রাখার এবং সন্ত্রাসীকে আশ্রয়দানের দায়েও অভিযুক্ত ছিলেন।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে সবচেয়ে করুণ, সবচেয়ে মর্মন্তুদ অবস্থা ছিল দুর্নীতি দমন কমিশনের। এটি একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। সেখানে নিযুক্তি দেওয়া হয়েছিল বিএনপিরই গৃহপালিত তিন-চারবার করে অবসরে যাওয়া তিন বৃদ্ধকে। কারও বয়স আশির নিচে ছিল না। তবু তারা যে দুর্নীতি দমনে অন্তত কিছু উদ্যোগ নেবেন, তার কোনো উপায় ছিল না। দুর্নীতি দমন কমিশনকে প্রয়োজনীয় লোকবল দেওয়া হলো না, দেওয়া হলো না কাজ করার কোনো সুযোগ। এমন আইন ও নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বেঁধে ফেলা হলো দুর্নীতি দমন কমিশনকে যে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠন ও দুর্নীতির মাধ্যমে হাওয়া ভবনকে শক্তিশালী করার চেষ্টা প্রতিহত করার কোনো উপায়ই আর ছিল না। দু'একজন মন্ত্রী তো প্রকাশ্যে চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পাচার হয়ে বাইরে চলে যাচ্ছে, দুর্নীতি দমন কমিশনের তিন বৃদ্ধের কিছুই করার ছিল না।
২০০৮ সালে বাংলাদেশে নির্বাচন, বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী, ভারতসহ অন্য দুটি দেশের সঙ্গে ট্রানজিট চুক্তি ইত্যাদি সম্পর্কে পাকিস্তান যেভাবে কথা বলত, বিএনপি-জামায়াত জোট যেভাবে কথা বলে_ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে হালফিল সংখ্যার ইকোনমিস্টও ঠিক সেইভাবে কথা বলেছে। ঠিক সেই সুরে, ঠিক সেই ভারত-বৈরিতার বিষ-কণ্ঠে।
পাকিস্তান তার জন্মলগ্ন থেকেই ভারতের বৈরী। তিনটা যুদ্ধ করেছে পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে কাশ্মীর ইস্যুতে। তিনটাতেই পাকিস্তান হেরেছে। তবে ভারতের মতো পাকিস্তানও পরমাণু শক্তির অধিকারী। কাজেই যুদ্ধ করে ভারতের পাকিস্তান জয় কিংবা যুদ্ধ করে পাকিস্তানের ভারত জয়_ এর কোনোটাই বোধকরি সম্ভব নয়। বরং বৈরিতা ত্যাগ করে পাকিস্তান ও ভারতের উচিত আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে একটা শান্তিপূর্ণ ও কার্যকর সম্পর্ক তৈরি করা। হালে অবশ্যই দুই দেশের মধ্যে বিবদমান বিষয়গুলো মিটিয়ে ফেলার উদ্যোগ আয়োজন চলছে। তবে পাকিস্তানের সত্যিকার নিয়ন্ত্রণ এখন কতটা জারদারি-গিলানি সরকারের হাতে, কতটা তালোবানি ও আল কায়দার 'আদর্শে' উজ্জীবিত বা সন্ত্রাসীচক্রের হাতে_ তা সঠিক করে বলা সহজ নয়। অতীতে দেখা গেছে, যখনই ভারত ও পাকিস্তানের রাজনৈতিক সরকার দ্বিপক্ষীয় সমস্যা-সংকট নিরসনে অনেকদূর এগিয়ে গেছে, তখনই ঘটেছে ভারতের পার্লামেন্ট ভবন আক্রমণ কিংবা মুম্বাইয়ে তাজ হোটেল ও তার সংলগ্ন এলাকায় পাকিস্তানের জঙ্গি হামলার মতো সন্ত্রাসী ঘটনা।
পাকিস্তানের এই ভারত-বৈরিতা তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে যেমন রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে বহাল ছিল, বাংলাদেশ হওয়ার পরও সেই ভারত-বৈরিতার নিশান বর্তমানে লুপ্তপ্রায় মুসলিম লীগ বিএনপির বদৌলতে কবর থেকে উঠে এসে অর্থ ও প্রভাব-বৈভবে বলীয়ান হওয়া জামায়াতে ইসলামী এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতপ্রাপ্তির পর সৃষ্টি হওয়া স্বৈরতান্ত্রিক রাজনীতির ধারক-বাহক দল বিএনপির হাতে। ভারত-বৈরিতা ওদের রক্তে। ভারতের সঙ্গে মৈত্রী স্থাপনে বাংলাদেশ ভারতের অংশ হয়ে যাবে, বাংলাদেশ ভারতকে ট্রানজিট দিলে তাতে শুধু উপকৃত হবে ভারত, ট্রানজিটের সুবিধা করে দিলে পূর্ব-উত্তরাঞ্চলে ভারত সৈন্য ও অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহের সুযোগ নেবে_ এই হলো বিএনপির কথিত-অকথিত রাজনৈতিক অবস্থান। ২০০৮ সালে বাংলাদেশের নির্বাচন, বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী চুক্তি, ট্রানজিট চুক্তির বিষয়ে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের পাকিস্তানপন্থি জামায়াত-বিএনপির কথাগুলো ইকোনমিস্ট পত্রিকা তাদের বর্তমান সংখ্যার প্রতিবেদনে প্রায় হুবহু তুলে ধরেছে। এটা ইকোনমিস্ট পত্রিকার মতো মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠান যত তাড়াতাড়ি বুঝতে পারে, ততই মঙ্গল।
লন্ডনে হাওয়া ভবনের সাবেক মালিক-মোকতার আছেন। আছে বিএনপি ও জামায়াতের অর্থের বিশাল মজুদ_ অবশ্যই গোপনে। আর সাবেক পূর্ব পাকিস্তানে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ঠেঙানি খাওয়া, বাংলাদেশকে এখনও মনেপ্রাণে মেনে নিতে না পারা পাকিস্তান তো আছেই। এসব কিছুর প্রেতাত্মার ছায়াই যেন প্রতিফলিত হয়েছে ইকোনমিস্টের আলোচ্য প্রতিবেদনে; যা অত্যন্ত দুঃখজনক, খুবই দুর্ভাগ্যজনক।
ভারত-জুজুর কল্পিত ভয় দেখিয়ে পাকিস্তানের মিলিটারি সরকারগুলো পাকিস্তানকে বিশ্ব সন্ত্রাসের রাজধানীতে পরিণত করেছে। পাকিস্তানের অর্থনীতিকে করে তুলেছে দুর্বল ও ভঙ্গুর। সামাজিক শান্তিকে করেছে নির্বাসিতপ্রায়। বাংলাদেশ কেন ভারত-জুজুর ভয়জনিত সর্বনাশ ও দুর্ভাগ্যের উত্তরাধিকার নেবে? বাংলাদেশ তো পাকিস্তান নয়। গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতে পাকিস্তানের পুরনো দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা।
বাংলাদেশের ভৌগোলিক যে অবস্থান, তাতে ভারত-বৈরিতা তার পক্ষে বিপজ্জনক। প্রায় তিন দিক দিয়ে ভারতবেষ্টিত_ এক দিক শুধু খোলা_ বাংলাদেশের, সেটা বঙ্গোপসাগর।
স্বাধীন রাষ্ট্রীয় সত্তা বজায় রেখে ভারতের সঙ্গে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে, চীনের সঙ্গে মৈত্রী সম্পর্ক স্থাপন করেই শুধু আর্থ-সামাজিকভাবে লাভবান হতে পারে বাংলাদেশ। ভারতের সঙ্গে বৈরিতা পাকিস্তানের মতো বাংলাদেশকেও ভঙ্গুর, দুর্বল, সন্ত্রাসকবলিত রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারে। সেই সর্বনাশা পথে বাংলাদেশ হাঁটবে কেন? বাংলাদেশ সম্পর্কে এক মনগড়া প্রতিবেদন লিখতে গিয়ে, মনে হয়_ এই সত্যই বিস্মৃত হয়েছে ইকোনমিস্ট।

রাহাত খান : কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক
 

No comments

Powered by Blogger.