ডাক বিভাগ-প্রতিযোগিতায় টিকবে তো?
ইন্টারনেট ও মোবাইলসহ যোগাযোগের অনেক আধুনিক প্রযুক্তি সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে চলে যাওয়ার কারণে ডাক বিভাগ মারফত চিঠি আদান-প্রদান অনেক কমে গেছে। ফলে ডাক বিভাগের এক সময়কার আয়ের অন্যতম উৎস ব্যক্তিগত চিঠির জন্য খাম বা পোস্টকার্ড বিক্রয়লব্ধ আয় নেই বললেই চলে।
এখন বিয়ের দাওয়াত বা সভা-সেমিনারের জন্যও অনেকে বেসরকারি কুরিয়ার সার্ভিসের ওপর ভরসা করেন। ডাক বিভাগ মারফত দেশে বা বিদেশে পার্সেল পাঠানোর হারও সেভাবে বৃদ্ধি পায়নি। অথচ তাদের পার্সেল বাবদ চার্জ বেসরকারি কুরিয়ার সার্ভিস থেকে কম হওয়ায় এ খাত সম্ভাবনাময় ছিল। গত বুধবার সমকালে প্রকাশিত এ সম্পর্কিত এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, বৈদেশিক পার্সেলের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ব্যাপক এবং বিষয়টি ওপেন সিক্রেট। এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি হলেও অভিযুক্তদের কারসাজিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না। ডাক বিভাগের সেবার মান উন্নত করার জন্য বিভিন্ন উপকরণ ক্রয়েও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এতে সেবা বাবদ খরচের বহর লম্বা হয়। কিন্তু এখনও যাদের ডাক বিভাগের ওপর আস্থা রয়েছে তাদের হতাশা বাড়ে। দুর্নীতি দূর এবং উন্নত সেবার মান ও আধুনিক উদ্ভাবনী কৌশল প্রয়োগ করে ডাক বিভাগের আয়কে বহুগুণ বৃদ্ধি করা যায়। সরকারের ডিজিটাল কর্মসূচি প্রসারের ক্ষেত্রে ডাক বিভাগও তাদের কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধি করে সম্পৃক্ত হতে পারে। বেসরকারি কুরিয়ার যদি ২৪ ঘণ্টায় চিঠি বা পার্সেল দেশের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পেঁৗছাতে পারে তাহলে ডাক বিভাগ কেন তা করতে পারবে না? তদুপরি ডাক বিভাগের মাশুল কম হওয়ার কারণে সাধারণ মানুষ তো এই বিভাগের সেবার ওপরই বেশি নির্ভর করার কথা। আমরা ডাক বিভাগ থেকে দুর্নীতির বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাই। এতে সরকারি ব্যয়ের খানিকটা রাশ টানা যাবে। একই সঙ্গে সেবাকে বহুমুখী করা এবং উন্নত সেবা দানের মতো দক্ষ কর্মী বাহিনীও ডাক বিভাগে যুক্ত করা উচিত। এতে লোকসানের বোঝা কমবে এবং এক সময় লাভের মুখও দেখা সম্ভব হবে।
No comments