গুণী ব্যক্তিদের সঙ্গে আড্ডা, আবৃত্তি গানে প্রধানমন্ত্রীর অন্য রকম বিকেল
দেশাত্মবোধক গান গাইলেন দেশের বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পীরা। এতে কণ্ঠ মেলালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গানে যোগ দিলেন দুজন মন্ত্রীও। দর্শকসারিতে তখন দেশের বিভিন্ন অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। গতকাল শনিবার এই আনন্দময় ব্যতিক্রমী ঘটনাটি ঘটে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে।
লেখক, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও সংস্কৃতিজীবীদের আগমনে বসেছিল এই মিলনমেলা। জমজমাট আড্ডা, আবৃত্তি আর গানে গণভবনের সবুজ চত্বরে অন্য রকম আবহের সৃষ্টি হয়েছিল। সেখানে ছিল না কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য, কঠোর নিরাপত্তাবলয় বা রাষ্ট্রীয় প্রটোকল। বিকেল সাড়ে চারটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠান ও আড্ডা। বাংলার লোকজ আবহ ফুটিয়ে তোলা হয় পিঠা-পায়েস, মুড়ি-মুড়কি, মোয়া, মিষ্টি, চটপটিসহ উপাদেয় নানা খাবারের আয়োজন। দীর্ঘদিন পর হলেও রাজনৈতিক নৈকট্য বা মতপার্থক্য ভুলে দেশের প্রথিতযশা বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, লেখক, শিল্পী, সাহিত্যিক ও সাংবাদিকদের মাঝে প্রাণখোলা আড্ডায় মেতে ওঠেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
একপর্যায়ে বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী মুস্তাফা জামান আব্বাসীর অনুরোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি, শিল্পী ফেরদৌসী রহমান, আবদুল জব্বার, ফকির আলমগীর, মিতা হক কোরাস কণ্ঠে ‘ধনধান্য পুষ্পভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা’ গানটি পরিবেশন করেন। তাঁরা যখন গানটি গাইছিলেন, দর্শকসারিতে তখন দেশের স্বনামধন্য ব্যক্তিরা।
প্রধানমন্ত্রী মাঠে ঘুরে ঘুরে অতিথিদের সঙ্গে কথা বলেন ও কুশলাদি জিজ্ঞেস করেন। প্রধানমন্ত্রীকে এমনভাবে আড্ডায় পেয়ে অতিথিদের অনেকে আবেগাপ্লুত হন।
সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনায় সবার সহযোগিতা, দোয়া ও উপদেশ চান। অতিথিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘গণভবন জনগণের ভবন। এখানে যাঁরা আসবেন, নিজের বাড়ি মনে করে অবস্থান করবেন। এটা আমার কিছু নয়।’ তিনি বলেন, ‘বহু দিন পর অনেকের সঙ্গে দেখা হলো। কাকে বাদ দিয়ে কার নাম বলব।’ তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলে থাকলে যথেষ্ট স্বাধীনতা থাকে। সরকারে থাকায় কাজের চাপ। ভাবলাম বসন্তের রেশ থাকতেই সবাই একত্র হই।’
এর আগে কাঙ্গালিনী সুফিয়া, বারী সিদ্দিকী, খায়রুল আনাম শাকিল, মিতা হক ও কিরণ চন্দ্র রায় সংগীত পরিবেশন করেন। কবিতা আবৃত্তি করেন হাসান আরিফ ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান নূর।
প্রীতি সম্মিলন ও আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, মুস্তাফা মনোয়ার, জাতীয় অধ্যাপক এম আর খান, অধ্যাপক মুস্তাফা নূরউল ইসলাম, এ কে আজাদ চৌধুরী, আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, হারুন-অর-রশিদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান, অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু, শামসুজ্জামান খান, সম্পাদক ও সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে মাহবুবুল হক, গোলাম সারওয়ার, ইকবাল সোবহান চৌধুরী, আবেদ খান, ইমদাদুল হক মিলন, সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, ফরিদুর রেজা সাগর, আনিসুল হক প্রমুখ।
No comments