সময় এখন রোমানার by কামরুজ্জামান

খবরটা শুনে চমকেই উঠেছিলেন রোমানা। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের বয়সটা তাঁর মাত্র চার বছরের। ২৬টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। এতেই যে দেশের সর্বোচ্চ সম্মান, অর্থাৎ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার মিলে যাবে, এটা কি কেউ ভাবতে পারে? সময় এখন রোমানার।


‘আমার কিন্তু একটু আশা ছিল। আসলে ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না ছবিটি এতটাই ভালো লেগেছিল যে আমি এই ছবি নিয়ে ভালো কিছু প্রত্যাশা করেছিলাম। ছবিটি ব্যবসাসফল হয়েছে, আবার এমন একটি প্রাপ্তিযোগ ঘটেছে, খবরটা শুনে আমি একটু চমকে উঠলাম। তারপর একটার পর একটা ফোন। আমি তো মহা খুশি।’ সহশিল্পী হিসেবে পুরস্কার পাওয়ার পরের কথাগুলো এভাবেই বলছিলেন রোমানা।
জাহিদ হাসানের পরিচালনায় সুইট মানে মিষ্টি নামের একটি ধারাবাহিক নাটকের শুটিং করতে রোমানা এখন সিরাজগঞ্জে আছেন। জানালেন, নাটকের শুটিং নিয়মিত করছেন না। গল্পটি ভালো লেগেছে বলেই তিনি এই একটি নাটকে কাজ করছেন।
চলচ্চিত্রের কারণেই কি নাটকে নিয়মিত কাজ বন্ধ করলেন?
রোমানা কিছুটা সময় ভেবে নিলেন। তারপর বললেন,
‘টিভি নাটকে এই সময়ে যারা কাজ করছে, তাদের অনেকেই সিনেমায় কাজ করেছে। দেখা গেছে, একটি-দুটি চলচ্চিত্রে কাজ করার পর আবার তারা নাটকেই ফিরে এসেছে। আমারও তেমন ইচ্ছে ছিল। আবার এটাও মনে মনে ভেবেছিলাম যে চেষ্টা করব চলচ্চিত্রকেই নিজের স্থায়ী ঠিকানা করে নিতে। আমি সেই জায়গাটি করে নিতে পেরেছি। তখন চলচ্চিত্রের ব্যস্ততার জন্যই আসলে নাটকে নিয়মিত কাজ করতে পারিনি। এভাবেই ক্যারিয়ারে ২৬টি ছবিতে কাজ করলাম। আমাকে কেউ বলেনি যে চলচ্চিত্রে কাজ করলে নাটকে কাজ করা যাবে না। এই ধারণাতে আমি বিশ্বাসীও নই।’
চলচ্চিত্রে রোমানার যাত্রা হয়েছিল এক টাকার বউ ছবি দিয়ে। প্রথম ছবিটিই ছিল ব্যবসাসফল। এরপর একে একে বিয়ে বাড়ি, ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় নার মতো ব্যবসাসফল ছবি উপহার দেন তিনি। ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না ছবিটি দিয়ে রোমানা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাচ্ছেন। জানতে চাইলাম, ‘আপনার কি মনে হয়নি যে পার্শ্ব কেন, সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কারটিও পেতে পারতাম?
‘না। যাঁরা বিচারক ছিলেন, তাঁরা নিশ্চয়ই সঠিক বিচারকাজ করেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আসলে এই ছবিতে আমি, অপু বিশ্বাস ও শাকিব খান—তিনজনই প্রধান তিনটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম। বিচারকেরা নিশ্চয়ই সবকিছু ভেবেচিন্তেই এমন সিদ্ধান্ত দিয়েছেন,’ বললেন রোমানা।
ছবিটিতে কাজ করার বেশ কিছু স্মৃতির আলোকপাত করলেন তিনি, ‘এ ছবির কিছু কাজ করার জন্য ব্যাংককে যেতে হয়েছিল। অবস্থাটা এমন হয়েছিল যে দেশে ফিরে আসার আগের দিন একটি গানে দৃশ্যায়ন করতে হবে। কাজ শুরু হয়েছে, এমন সময় মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলো। বৃষ্টি আর থামে না। দিনের আলো ফুরিয়ে যাবে কিছু সময় পরই। পরদিন ফ্লাইট। কী করা যায়? পরিচালক বেশ চিন্তিত। পরে সিদ্ধান্ত হলো, সেখানে একটি হোটেলের ভেতরেই গানটির শুটিং করা হবে। মজার ব্যাপার হলো, রাতে যখন আমাদের কাজ শেষ, তার পরই বৃষ্টি থেমে গেল।’
পুরস্কার মানুষকে আনন্দিত করে, উৎসাহ জোগায়। রোমানা সেই কথাটি মনে রেখেই বললেন, ‘এখন মনে হচ্ছে, যতই সীমাবদ্ধতা থাকুক না কেন, সিনেমায় ভালোভাবে কাজ করব। যে চরিত্রটিতে কাজ করব, সেটিকে বিশ্বাসযোগ্যভাবে ফুটিয়ে তুলব।’

No comments

Powered by Blogger.