কত ব্যথা বুকে by মোহাম্মদ নুরাল হক
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সমকালে লবী রহমানের প্রাণস্পর্শী লেখা 'অনুভবে আছ' পড়লাম। নিষ্প্রাণ একজন মানুষের আবেগকেও স্পর্শ করবে এই লেখাটি। কারণ যিনি জীবনের সবচেয়ে প্রিয় সাথীকে অসহায় অবস্থায় অকালে হারিয়েছেন তিনিই বোঝেন হারানোর ব্যথা। বিডিআর বিদ্রোহ ও জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডে প্রাণপ্রিয়দের যারা হারিয়েছেন তাদেরই একজন লবী রহমান।
তারই হৃদয় নিঃশেষিত কথামালা 'অনুভবে আছ'। এ ক্ষেত্রে আমাদের সান্ত্বনার কোনো ভাষা নেই। সে মুখও আজ আমাদের নেই। এ অপরাধ বোধ চরম লজ্জাজনক হলেও সঙ্গত কারণেই শর্তহীনভাবে স্বীকার্য।
ঠিকই বলেছেন লবী রহমান। স্বাধীনতার চলি্লশ বছর পর বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি আজ বিষবাষ্পপূর্ণ সমাজ ছাড়া আর কিছুই নয়। বাংলাদেশের এই পচা সমাজে মানুষ নামের জীব গিজগিজ করে। কিন্তু মনুষ্যত্ব ও মানবাধিকার কোথায়? বাকস্বাধীনতা আর অসাম্প্রদায়িকতা কোথায়? প্রকৃতির নিয়মে ব্ল্যাকহোল সবই গিলে খাচ্ছে। কিন্তু লোমহর্ষক ঘটনার বিবেকবিবর্জিত নেপথ্য নায়কদের অবাধ বিচরণ তো থেমে নেই? ব্ল্যাকহোল ওদের কি দেখেও দেখে না বা চিনেও চেনে না? কী অদ্ভুত খেয়াল এই ব্ল্যাকহোলেরও।
আজ কী পরিমাণ লজ্জার বিষয় যে, বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির বিবেকের লাশ বিকৃত, গলিত ও দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। শুধু কথা আর কথা_ আশা আর আশা। প্রতি বছর ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি আসে। ফুলের ছড়াছড়ি। মিলাদ-দোয়া মাহফিলে উৎসবের আমেজ। সেমিনার-স্মরণসভাগুলো লোকে গিজগিজ করে। পথসভা-মানববন্ধনগুলো রাজপথের শোভাবর্ধন করে। চারদিকে কিসব লৌকিকতার ছড়াছড়ি। উৎসবমুখর আর কি। আর লবী রহমানের মতো যারা অতি আপনজনদের নির্মম ও অসহায় পরিণতি বুকে চেপে বেঁচে আছেন, তাদের হাহাকার চারদিকে_ দিনের পর দিন, মাসের পর মাস আর বছরের পর বছর। শুধু অপেক্ষা এখন, একটুখানি সুবিচারের। তারও দেখা নেই পুব আকাশে।
অবস্থাদৃষ্টে, পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজদ্দৌলার অসহায় আর লজ্জাজনক পরাজয়ের কথাই ভেসে ওঠে মানসপটে। মীরজাফরের নেতৃত্বে নবাবের শত শত, হাজার হাজার সৈন্য দাঁড়িয়ে রইল পুতুলের মতো। আর গুটিকয়েক ভিনদেশি ছিনিয়ে নিল বাংলার স্বাধীনতা। কোথায় যেন এর হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায় নাকি? তফাত হলো, স্বাধীনতা হারিয়ে দুইশ' বছরের গোলামির পর আবার স্বাধীনতা পাওয়া গেছে। কিন্তু লবী রহমানের কুদরত ইলাহীসহ সাতান্নটি তাজা প্রাণ কি আর কখনও ফিরে পাওয়া যাবে?
এদিকে ক্ষতি যার হয়েছে তার তো হয়েছেই। ওরা কি বুঝবে ক্ষতির পরিমাপ। পরিমাপের জন্য তো মনের দরকার। মানসিকতার দরকার। ওরা তো মন ও মানসিকতা বন্ধক দিয়ে রেখেছে ক্ষমতা আর ধনসম্পদের কাছে। চাই ক্ষমতা, চাই ধনসম্পদ। আরও, আরও এবং আরও। মন ও মানসিকতার বালাই কেন এবং কোথায়?
আলোচিত ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে লেখক, সুরকার ও গায়ক হায়দার হোসেনের মর্মস্পর্শী গানটির কয়েকটি লাইন এখানে না উল্লেখ করেই পারছি না :
'কতটুকু অশ্রু গড়ালে/হৃদয় জলে সিক্ত/কত প্রদীপ শিখা জ্বালালেই/জীবন আলোয় উদ্দীপ্ত/কত ব্যথা বুকে চাপালেই/তাকে বলি আমি ধৈর্য/নির্মমতা কতদূর হলে'
জাতি হবে নির্লজ্জ...
অদ্যাবধি বাংলাদেশের এই বিষবাষ্পপূর্ণ সমাজে জাতি হিসেবে নির্লজ্জ হওয়া ছাড়া আর কোনো পথ আমাদের জন্য খোলা আছে কি?
ঠিকই বলেছেন লবী রহমান। স্বাধীনতার চলি্লশ বছর পর বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি আজ বিষবাষ্পপূর্ণ সমাজ ছাড়া আর কিছুই নয়। বাংলাদেশের এই পচা সমাজে মানুষ নামের জীব গিজগিজ করে। কিন্তু মনুষ্যত্ব ও মানবাধিকার কোথায়? বাকস্বাধীনতা আর অসাম্প্রদায়িকতা কোথায়? প্রকৃতির নিয়মে ব্ল্যাকহোল সবই গিলে খাচ্ছে। কিন্তু লোমহর্ষক ঘটনার বিবেকবিবর্জিত নেপথ্য নায়কদের অবাধ বিচরণ তো থেমে নেই? ব্ল্যাকহোল ওদের কি দেখেও দেখে না বা চিনেও চেনে না? কী অদ্ভুত খেয়াল এই ব্ল্যাকহোলেরও।
আজ কী পরিমাণ লজ্জার বিষয় যে, বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির বিবেকের লাশ বিকৃত, গলিত ও দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। শুধু কথা আর কথা_ আশা আর আশা। প্রতি বছর ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি আসে। ফুলের ছড়াছড়ি। মিলাদ-দোয়া মাহফিলে উৎসবের আমেজ। সেমিনার-স্মরণসভাগুলো লোকে গিজগিজ করে। পথসভা-মানববন্ধনগুলো রাজপথের শোভাবর্ধন করে। চারদিকে কিসব লৌকিকতার ছড়াছড়ি। উৎসবমুখর আর কি। আর লবী রহমানের মতো যারা অতি আপনজনদের নির্মম ও অসহায় পরিণতি বুকে চেপে বেঁচে আছেন, তাদের হাহাকার চারদিকে_ দিনের পর দিন, মাসের পর মাস আর বছরের পর বছর। শুধু অপেক্ষা এখন, একটুখানি সুবিচারের। তারও দেখা নেই পুব আকাশে।
অবস্থাদৃষ্টে, পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজদ্দৌলার অসহায় আর লজ্জাজনক পরাজয়ের কথাই ভেসে ওঠে মানসপটে। মীরজাফরের নেতৃত্বে নবাবের শত শত, হাজার হাজার সৈন্য দাঁড়িয়ে রইল পুতুলের মতো। আর গুটিকয়েক ভিনদেশি ছিনিয়ে নিল বাংলার স্বাধীনতা। কোথায় যেন এর হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায় নাকি? তফাত হলো, স্বাধীনতা হারিয়ে দুইশ' বছরের গোলামির পর আবার স্বাধীনতা পাওয়া গেছে। কিন্তু লবী রহমানের কুদরত ইলাহীসহ সাতান্নটি তাজা প্রাণ কি আর কখনও ফিরে পাওয়া যাবে?
এদিকে ক্ষতি যার হয়েছে তার তো হয়েছেই। ওরা কি বুঝবে ক্ষতির পরিমাপ। পরিমাপের জন্য তো মনের দরকার। মানসিকতার দরকার। ওরা তো মন ও মানসিকতা বন্ধক দিয়ে রেখেছে ক্ষমতা আর ধনসম্পদের কাছে। চাই ক্ষমতা, চাই ধনসম্পদ। আরও, আরও এবং আরও। মন ও মানসিকতার বালাই কেন এবং কোথায়?
আলোচিত ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে লেখক, সুরকার ও গায়ক হায়দার হোসেনের মর্মস্পর্শী গানটির কয়েকটি লাইন এখানে না উল্লেখ করেই পারছি না :
'কতটুকু অশ্রু গড়ালে/হৃদয় জলে সিক্ত/কত প্রদীপ শিখা জ্বালালেই/জীবন আলোয় উদ্দীপ্ত/কত ব্যথা বুকে চাপালেই/তাকে বলি আমি ধৈর্য/নির্মমতা কতদূর হলে'
জাতি হবে নির্লজ্জ...
অদ্যাবধি বাংলাদেশের এই বিষবাষ্পপূর্ণ সমাজে জাতি হিসেবে নির্লজ্জ হওয়া ছাড়া আর কোনো পথ আমাদের জন্য খোলা আছে কি?
No comments