সব অপরাধীর বিচার হোক
২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর বাংলাদেশে যেন নরক নেমে এসেছিল। নির্বাচনে বিজয়ী চারদলীয় জোটের সমর্থকরা সারা দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও আওয়ামী লীগ সমর্থকদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। লুট, খুন, ধর্ষণ, বাড়িতে অগি্নসংযোগ করা হয়েছিল। সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হতে হয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে।
তখন তাদের পাশে যাঁরা দাঁড়িয়েছিলেন, তাঁদেরও জীবনের ঝুঁকি নিতে হয়েছিল। ওই সময়ে কয়েকটি ঘটনা সারা দেশকে নাড়িয়ে দেয়। এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার পূর্ব দেলুয়া গ্রামে। সেখানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক কিশোরী স্কুলছাত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করা হয়। আহত হয় ওই কিশোরীর বাড়ির লোকজনও। ঘটনার ১০ বছর পর সেই মামলার রায় হয়েছে। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বজুড়ে আলোচিত হয়েছিল ২০০১ সালের নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার ঘটনা। উল্লাপাড়ার সেই কিশোরী স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণ ও নির্যাতনের মামলায় ১১ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ৮ অক্টোবর পূর্ব দেলুয়া গ্রামের সংখ্যালঘু পরিবারের অষ্টম শ্রেণীর ওই ছাত্রীকে আসামিরা বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং তাকে গণধর্ষণের শিকার হতে হয়। ১০ অক্টোবর মেয়েটির বাবা উল্লাপাড়া থানায় ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করেন। পরে ২৪ অক্টোবর ওই কিশোরী নিজে বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জের আদালতে আরো একটি মামলা করে। পুলিশ মামলার তদন্ত শেষে ২০০২ সালের ৯ মে আদালতে ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। কিন্তু তৎকালীন ক্ষমতাসীন জোট এই মামলার বিষয়ে নানা বাধার সৃষ্টি করে। শুনানি চলাকালে তৎকালীন জোট সরকারের সংসদ সদস্য এম আকবর আলী মামলার পুনঃতদন্ত চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। মন্ত্রণালয় গোয়েন্দা সংস্থাকে পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেয়। পরে সিরাজগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওই মামলার সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন। এতে মূল আসামিদের সঙ্গে উল্লাপাড়ার সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত আবদুল লতিফ মির্জাসহ আওয়ামী লীগের ছয় নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ধর্ষিত কিশোরীর বাবা এ সম্পূরক অভিযোগপত্রের বিষয়ে আদালতে নারাজি পিটিশন দাখিল করেন। পরে বিভিন্ন পর্যায়ে শুনানির সময় ঢাকার উচ্চ আদালতের বিশিষ্ট আইনজীবীরা সিরাজগঞ্জে এসে বাদীর পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৭ সালের নভেম্বরে সম্পূরক অভিযোগপত্র বাতিল করা হলে মামলাটি মূলধারায় ফিরে আসে। কিন্তু এর মধ্যে মূল আসামিরা আদালত থেকে জামিন নিয়ে পালিয়ে যায়। অভিযোগ রয়েছে, বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে মামলাটির বিভিন্ন আলামত ও কাগজপত্র ফাইল থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। পরে বাদী পক্ষকে অনেক কষ্টে আবার মামলার নথি সংগ্রহ করতে হয়।
২০০১ সালের নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা নিয়ে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছিল। বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন তদন্তে ওই সময়ে ক্ষমতাসীন চারদলীয় জোটের অনেক বড় নেতার সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে। বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের তদন্ত রিপোর্ট আমলে এনে ২০০১ সালের নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার বিচার হওয়া উচিত। একই সঙ্গে এটাও লক্ষ রাখতে হবে যে এমন একটি বিচারের জন্য যেন কাউকে ১০ বছর অপেক্ষা করতে না হয়। শুধু উল্লাপাড়ায় নয়, সারা দেশে যে অপরাধ হয়েছে ২০০১ সালের নির্বাচনের পর, সেই অপরাধের সঙ্গে জড়িত সব অপরাধীর বিচার হওয়া উচিত।
২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ৮ অক্টোবর পূর্ব দেলুয়া গ্রামের সংখ্যালঘু পরিবারের অষ্টম শ্রেণীর ওই ছাত্রীকে আসামিরা বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং তাকে গণধর্ষণের শিকার হতে হয়। ১০ অক্টোবর মেয়েটির বাবা উল্লাপাড়া থানায় ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করেন। পরে ২৪ অক্টোবর ওই কিশোরী নিজে বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জের আদালতে আরো একটি মামলা করে। পুলিশ মামলার তদন্ত শেষে ২০০২ সালের ৯ মে আদালতে ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। কিন্তু তৎকালীন ক্ষমতাসীন জোট এই মামলার বিষয়ে নানা বাধার সৃষ্টি করে। শুনানি চলাকালে তৎকালীন জোট সরকারের সংসদ সদস্য এম আকবর আলী মামলার পুনঃতদন্ত চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। মন্ত্রণালয় গোয়েন্দা সংস্থাকে পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেয়। পরে সিরাজগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওই মামলার সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন। এতে মূল আসামিদের সঙ্গে উল্লাপাড়ার সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত আবদুল লতিফ মির্জাসহ আওয়ামী লীগের ছয় নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ধর্ষিত কিশোরীর বাবা এ সম্পূরক অভিযোগপত্রের বিষয়ে আদালতে নারাজি পিটিশন দাখিল করেন। পরে বিভিন্ন পর্যায়ে শুনানির সময় ঢাকার উচ্চ আদালতের বিশিষ্ট আইনজীবীরা সিরাজগঞ্জে এসে বাদীর পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৭ সালের নভেম্বরে সম্পূরক অভিযোগপত্র বাতিল করা হলে মামলাটি মূলধারায় ফিরে আসে। কিন্তু এর মধ্যে মূল আসামিরা আদালত থেকে জামিন নিয়ে পালিয়ে যায়। অভিযোগ রয়েছে, বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে মামলাটির বিভিন্ন আলামত ও কাগজপত্র ফাইল থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। পরে বাদী পক্ষকে অনেক কষ্টে আবার মামলার নথি সংগ্রহ করতে হয়।
২০০১ সালের নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা নিয়ে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছিল। বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন তদন্তে ওই সময়ে ক্ষমতাসীন চারদলীয় জোটের অনেক বড় নেতার সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে। বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের তদন্ত রিপোর্ট আমলে এনে ২০০১ সালের নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার বিচার হওয়া উচিত। একই সঙ্গে এটাও লক্ষ রাখতে হবে যে এমন একটি বিচারের জন্য যেন কাউকে ১০ বছর অপেক্ষা করতে না হয়। শুধু উল্লাপাড়ায় নয়, সারা দেশে যে অপরাধ হয়েছে ২০০১ সালের নির্বাচনের পর, সেই অপরাধের সঙ্গে জড়িত সব অপরাধীর বিচার হওয়া উচিত।
No comments