সমাজের অসমতার প্রতি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন-ব্রিটেনে অশান্তির আগুন
ভাঙচুর, লুটতরাজ আর আগুনে পুড়ছে লন্ডন ও আশপাশের কয়েকটি শহর। ব্রিটেনে এক প্রজন্মে এমন অরাজক পরিস্থিতি দেখা যায়নি। এই বিক্ষোভকে সামাজিক-রাজনৈতিক তাৎপর্যহীন উন্মত্ততা মনে করার কারণ নেই। একসময় যারা সারা দুনিয়ায় গণতন্ত্র রপ্তানি করেছে আর সুশাসনের কথা প্রচার করছে, তাদের প্রাণকেন্দ্রে এমন অরাজকতা ভাববার বিষয় বৈকি।
ঘটনার সূত্রপাত ৪ আগস্ট। উত্তর লন্ডনের টটেনহামে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় ২৯ বছর বয়সী ও চার সন্তানের জনক মার্ক ডুগান। দুই দিন পর পুলিশি সহিংসতার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে জড়ো হয়েছিল জনতা। সেই জমায়েত একসময় অশান্ত হয়ে ওঠে এবং ধীরে ধীরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে লন্ডনের বাইরে আরও কয়েকটি শহরে। গোলযোগের এমন বিস্তার কেন ঘটল? গণমাধ্যমে তিনটি কারণের কথা ঘুরেফিরে আসছে: জাতিগত উত্তেজনা, বেকারত্বের উচ্চ হার এবং বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সুযোগে লুটপাট চালিয়ে নগদ কিছু অর্জনের বাসনা। মনে রাখা দরকার, বিক্ষোভকারীদের সবার লক্ষ্য এক রকম নয়।
দাঙ্গাবাজেরা আইনশৃঙ্খলাকে তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে, সম্পদ ধ্বংস করছে আর মালামাল লুট করছে। এসব অবশ্যই নিন্দনীয়। তবে লক্ষণীয়, তরুণেরাই মূলত এবার রাজপথে নেমে এসেছেন। তা ছাড়া বর্ণ-পরিচয় ছাপিয়ে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর তরুণেরা রাস্তায় নেমেছেন। এ দাঙ্গাকে তাই শুধু কিছু মানুষের লোভের প্রকাশ হিসেবে দেখা ঠিক হবে না। এটা অনেকটাই হতাশ ও বঞ্চিত যুবসমাজের ক্ষোভ থেকে সৃষ্ট। বহু বছর ধরে জমতে থাকা ক্ষোভ বিক্ষোভে ফেটে পড়তে যে স্ফুলিঙ্গ দরকার ছিল, সেটাই জোগালো পুলিশের হাতে ডুগানের মৃত্যু।
এটা কিসের আলামত? বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করেন, এই অশান্তি পশ্চিমা সমাজের ভেতর গভীর চিড় ধরারই লক্ষণমাত্র। শ্রেণী ও অধিকারের অসমতা, তরুণ সমাজের সঙ্গে সম্পর্কিত সেবা খাতগুলোতে সরকারি বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া, বেকারত্ব—সবই এই আন্দোলনে ঘি ঢেলেছে। সারা ইউরোপেই বিগত কয়েক বছরে অভিবাসীবিরোধী বর্ণবাদী রাজনীতির উত্থান ঘটে চলেছে। এটা খুবই ভীতিকর। ব্রিটেনের দাঙ্গা একদিকে যেমন অভিবাসীবিরোধীদের উসকানি দিতে পারে, অন্যদিকে এ থেকে শিক্ষা নিয়ে সবাই মিলে সমতার সমাজ গড়ার পথের অনুসন্ধানও শুরু হতে পারে। এ দুটি পথের যেদিকে হাঁটবে ব্রিটেন, সে পথেই নির্মিত হবে দেশটির ভবিষ্যৎ।
ব্রিটেনের এই দাঙ্গা থেকে আমাদের অনেক শিক্ষা নেওয়ার আছে। যে রাজনৈতিক-সামাজিক ব্যবস্থায় সম্পদশালী ও রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা নিজেদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারে এবং এর ফলে সমাজে বৈষম্য টিকে থাকে, সে সমাজ যতই শিক্ষিত ও উন্নত হোক না কেন, সেখানে অশান্তি দূর করা যায় না। বছরের পর বছর ধরে মানুষের অর্জন আর স্বপ্ন-সম্ভাবনা কয়েক মুহূর্তে দুঃস্বপ্নে পরিণত হতে পারে। আমাদের সমাজও এ ধরনের পরিস্থিতির বাইরে নয়। তাই সমাজের গভীর অসমতাগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে আমাদের ব্যবস্থা দিতে হবে।
দাঙ্গাবাজেরা আইনশৃঙ্খলাকে তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে, সম্পদ ধ্বংস করছে আর মালামাল লুট করছে। এসব অবশ্যই নিন্দনীয়। তবে লক্ষণীয়, তরুণেরাই মূলত এবার রাজপথে নেমে এসেছেন। তা ছাড়া বর্ণ-পরিচয় ছাপিয়ে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর তরুণেরা রাস্তায় নেমেছেন। এ দাঙ্গাকে তাই শুধু কিছু মানুষের লোভের প্রকাশ হিসেবে দেখা ঠিক হবে না। এটা অনেকটাই হতাশ ও বঞ্চিত যুবসমাজের ক্ষোভ থেকে সৃষ্ট। বহু বছর ধরে জমতে থাকা ক্ষোভ বিক্ষোভে ফেটে পড়তে যে স্ফুলিঙ্গ দরকার ছিল, সেটাই জোগালো পুলিশের হাতে ডুগানের মৃত্যু।
এটা কিসের আলামত? বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করেন, এই অশান্তি পশ্চিমা সমাজের ভেতর গভীর চিড় ধরারই লক্ষণমাত্র। শ্রেণী ও অধিকারের অসমতা, তরুণ সমাজের সঙ্গে সম্পর্কিত সেবা খাতগুলোতে সরকারি বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া, বেকারত্ব—সবই এই আন্দোলনে ঘি ঢেলেছে। সারা ইউরোপেই বিগত কয়েক বছরে অভিবাসীবিরোধী বর্ণবাদী রাজনীতির উত্থান ঘটে চলেছে। এটা খুবই ভীতিকর। ব্রিটেনের দাঙ্গা একদিকে যেমন অভিবাসীবিরোধীদের উসকানি দিতে পারে, অন্যদিকে এ থেকে শিক্ষা নিয়ে সবাই মিলে সমতার সমাজ গড়ার পথের অনুসন্ধানও শুরু হতে পারে। এ দুটি পথের যেদিকে হাঁটবে ব্রিটেন, সে পথেই নির্মিত হবে দেশটির ভবিষ্যৎ।
ব্রিটেনের এই দাঙ্গা থেকে আমাদের অনেক শিক্ষা নেওয়ার আছে। যে রাজনৈতিক-সামাজিক ব্যবস্থায় সম্পদশালী ও রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা নিজেদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারে এবং এর ফলে সমাজে বৈষম্য টিকে থাকে, সে সমাজ যতই শিক্ষিত ও উন্নত হোক না কেন, সেখানে অশান্তি দূর করা যায় না। বছরের পর বছর ধরে মানুষের অর্জন আর স্বপ্ন-সম্ভাবনা কয়েক মুহূর্তে দুঃস্বপ্নে পরিণত হতে পারে। আমাদের সমাজও এ ধরনের পরিস্থিতির বাইরে নয়। তাই সমাজের গভীর অসমতাগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে আমাদের ব্যবস্থা দিতে হবে।
No comments