স্মরণ-অন্বিতাকে খুব মনে পড়ে by বেগমজাদি মেহেরুন্নেসা সেলিম
নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন দম্পতির ও মা-বাবার কবোষ্ণ ওমে যে ছোট্ট তুলতুলে পুতুলটি দিন দিন বড় হচ্ছিল, যার আধো আধো বোলে কথার চারুতায় মুগ্ধ হয়ে নাট্যাচার্য তাকে বুকে জড়িয়ে ধরতেন, গভীর মমতায় আর স্নেহ চুম্বনে চুম্বনে যে মুখটি ভরিয়ে তুলতেন, তার নাম অন্বিতা। নাট্যাচার্য আদর করে ডাকতেন 'পুচুনী'।
সেই অতি লাবণ্যময়ী মেয়েটির দেহে ম্লানতার ছায়া পড়ল একদিন। কর্কট বাসা বাঁধল সে পেলব শরীরে। এক অজানা আশঙ্কায় চিৎকার করে উঠল সবাই। নাট্যাচার্য আর্ত হাহাকারে উচ্চারণ করলেন, 'হায় ঈশ্বর, ওর মৃত্যু যেন আমাকে দেখতে না হয়। ওর মৃতদেহ বহনের ক্ষমতা আমার নেই।' বিধাতার দরবারে সে আর্তি পেঁৗছল। নাট্যাচার্য চলে গেলেন মুমূর্ষু অন্বিতাকে রেখে। তাঁর চলে যাওয়ার ৪৭ দিন পর সব মায়া-মমতার বন্ধন ছিন্ন করে অন্বিতা চলে গেল তার আব্বুর কাছে। মন্দভাগ্য আমাদের। আজ ঊর্ধ্বমুখী তাকিয়ে আকাশের তারা খুঁজি- নিরীক্ষণ করি কোথায় অন্বিতা আর তার আব্বু? কোথায়? আমাদের আর্তি তাঁদের হৃদয় দ্বারে পৌঁছে কি? বসন্তকালীন প্রকৃতির পাতার মর্মরে হু হু করা বাতাসে সেই ছোট্ট মেয়েটির অশরীরি আত্মার কষ্টক্লান্ত ক্রন্দনধ্বনি শুনতে পাই যেন- আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ি। চোখ দুটি অশ্রুসজল হয়ে ওঠে কেবলই। ২৯ ফেব্রুয়ারি ছিল অন্বিতার চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। আসুন সেই খুদে শিশুটির জন্য প্রার্থনার হাত দুটি প্রসারিত করি বিশ্ববিধাতার কাছে।
বেগমজাদি মেহেরুন্নেসা সেলিম
বেগমজাদি মেহেরুন্নেসা সেলিম
No comments