নতুন সূচক, দেশের কৃষিজীবী নারীরা ক্ষমতায়নে এগিয়ে
সাধারণত টাকা-কড়ি আর পড়াশোনার হালচাল দেখে ঠিক করা হয় কোনো সমাজে নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে কি-না। কিন্তু দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিশ্বের অন্যতম প্রধান একটি উন্নয়ন সংস্থার চালানো জরিপে দেখা যাচ্ছে, টাকা-কড়ি আর পড়াশোনা সমাজে নারীর ক্ষমতায়নের নিশ্চয়তা দেয় না।
দুটি আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে উন্নয়ন সংস্থা ইউএস-এইডের (দি ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট) এ জরিপটির ভিত্তিতে তৈরি করা একটি সূচক আমেরিকার স্থানীয় সময় সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে।
‘কৃষিতে নারীর ক্ষমতায়ন সূচক’-এ (উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট ইন এগ্রিকালচার ইনডেক্স-ডব্লিউএইএ) দেখা গেল, দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির তুলনায় কৃষিজীবী নারীদের ক্ষমতায়নের মাত্রা ও হার আশাব্যঞ্জক। বাংলাদেশ ছাড়াও গুয়াতেমালা ও রুয়ান্ডায় চালানো জরিপের ওপর ভিত্তি করে এ সূচকটি তৈরি করা হয়েছে।
ইউএস-এইডের সহকারি প্রশাসক নিশা দেশাই টেলিফোনে বার্তা২৪ ডটনেটকে বলেন, ‘‘বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমেরিকার ফিড দি ফিউচার কর্মসূচির আওতায় এ জরিপ ও সূচক প্রকাশ করা হয়েছে। নারীর ক্ষমতায়ন পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে এ সূচকটি বড় ধরনের অগ্রগতি। ফিড দি ফিউচার কর্মসূচিতে এ সূচকের ফলাফল কাজে লাগিয়ে নতুন নতুন উদ্যোগ নেয়া হবে নারীর ক্ষমতায়ন ও খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে।’’
ওয়াশিংটনে সূচকটি প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ফিড দি ফিউচার কর্মসূচির সমন্বয়ক জাডা ম্যাকেনা ব্যাখ্যা করেন, এ নতুন সূচকটি নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে এক বিশাল অগ্রগতি। ফিড দি ফিউচার কর্মসূচির ক্ষেত্রে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে এ সূচক কিভাবে কাজে লাগানো হবে; তার বিস্তারিত বর্ণনা দেন তিনি।
সূচক তৈরিতে অন্য দুই সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর জ্যেষ্ঠ গবেষণা কর্মকর্তা অ্যাগনেস কুইসামবিং এবং অক্সফোর্ড পভার্টি অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ-এর পরিচালক সাবিনা অ্যালকের সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন।
ইউএস-এইড প্রকাশিত সূচকে দেখা যাচ্ছে, সম্পূর্ণ ভিন্ন ভিন্ন আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির তিনটি দেশে সূচক তৈরি কাজ শুরু করা হয় ২০১১ সালের জুলাইয়ে। এর মধ্যে সে বছরের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাসে জরিপটি চালানো হয়। বাংলাদেশ, আফ্রিকার রুয়ান্ডা, ও দক্ষিণ আমেরিকার গুয়াতেমালায় চালানো জরিপটিতে নতুন একটি পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে।
যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, ফিড দি ফিউচার’র অধীনে বিভিন্ন কর্মসূচি চালানো হয়েছে এমন এলাকাগুলোতেই জরিপটি চালানো হয়। নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে এর আগের আন্তর্জাতিক জরিপগুলোতে হয় শুধু নারীর কাছ থেকেই তথ্য সংগ্রহ করা হতো, নয়তো ভিন্ন ভিন্ন পরিবারের নারী ও পুরুষের কাছ থেকে প্রশ্ন করা হতো। কিন্তু এ জরিপে একই পরিবারের নারী ও পুরুষের কাছ থেকে একই বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের বরগুনা, যশোর, খুলনা, মাদারীপুর ও পটুয়াখালীতে জরিপটি চালানো হয়েছে। এসব জেলায় ৩৫০টি পরিবারের ৬২৫ ব্যক্তির কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। মোট পাঁচটি বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। যেগুলো হচ্ছে কৃষির উৎপাদন, সম্পদ, আয়, নেতৃত্ব ও সময় ।
কৃষি উৎপাদনের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত ও সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে স্বাধীকার, সম্পত্তির মালিকানা ও সম্পত্তি কেনা-বেচা-স্থানান্তরের ক্ষমতা এবং ঋণ পাওয়ার সুযোগ ও নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা, উপার্জিত অর্থকড়ি ব্যবহারের ওপর নিয়ন্ত্রণ, ঘরের বাইরে জনপরিসরে কথা বলা ও বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক সভা-সমিতিতে যাবার ক্ষমতা, কী পরিমাণ কাজের চাপ নিতে হয় ও কতটুকু সময় অবসর কাটানোর সুযোগ পাওয়া যায়; এসব বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা সূচকে দেখা যাচ্ছে, কৃষিজীবীদের মধ্যে ৩১.৯ ভাগ নারীর প্রকৃত অর্থেই শতভাগ ক্ষমতায়ন হয়েছে। শতকরা ৬৮.১ ভাগ নারীর পুরোপুরি ক্ষমতায়ন না হলেও প্রাসঙ্গিক পাঁচটি বিষয়ে শতকরা ৬০.১ ভাগ ক্ষমতা রাখেন। এছাড়া অন্য একটি দিকে দেখা যায়, কৃষিজীবী নারীদের মধ্যে ৫৯.৮ ভাগই তাদের পরিবারের পুরুষ সদস্যদের সঙ্গে সমান অধিকার ভোগ করেন।
ইউএস-এইড মনে করে, দেশের অন্যান্য শ্রেণী-পেশার নারীদের সামগ্রিক ক্ষমতায়নের চিত্রের সঙ্গে তুলনায় কৃষিজীবী নারীদের এ ক্ষমতায়ন পরিস্থিতি যথেষ্ট না হলেও আশাব্যঞ্জক।
সূচকে দেখা যাচ্ছে জরিপে অংশ নারীদের অধিকাংশেরই প্রাথমিক পর্যায়ের বেশি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। মাত্র ছয়জনের উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা আছে, একজনের আছে উচ্চ শিক্ষা।
প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষা নেই, এমন নারীরও ৩১ ভাগও ইউএস-এইডের এ সূচক অনুযায়ী প্রকৃত অর্থে ক্ষমতায়ন হয়েছে। অন্যদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আছে এমন আটজন নারীর মধ্যে মাত্র দু’জনের ক্ষমতায়ন হয়েছে।
বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী ইউএস-এইড এখন থেকে এ সূচকের ফলাফল ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগাবে খাদ্য নিরাপত্তা ও নারী উন্নয়নসহ অন্যান্য কর্মসূচিতে।
‘কৃষিতে নারীর ক্ষমতায়ন সূচক’-এ (উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট ইন এগ্রিকালচার ইনডেক্স-ডব্লিউএইএ) দেখা গেল, দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির তুলনায় কৃষিজীবী নারীদের ক্ষমতায়নের মাত্রা ও হার আশাব্যঞ্জক। বাংলাদেশ ছাড়াও গুয়াতেমালা ও রুয়ান্ডায় চালানো জরিপের ওপর ভিত্তি করে এ সূচকটি তৈরি করা হয়েছে।
ইউএস-এইডের সহকারি প্রশাসক নিশা দেশাই টেলিফোনে বার্তা২৪ ডটনেটকে বলেন, ‘‘বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমেরিকার ফিড দি ফিউচার কর্মসূচির আওতায় এ জরিপ ও সূচক প্রকাশ করা হয়েছে। নারীর ক্ষমতায়ন পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে এ সূচকটি বড় ধরনের অগ্রগতি। ফিড দি ফিউচার কর্মসূচিতে এ সূচকের ফলাফল কাজে লাগিয়ে নতুন নতুন উদ্যোগ নেয়া হবে নারীর ক্ষমতায়ন ও খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে।’’
ওয়াশিংটনে সূচকটি প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ফিড দি ফিউচার কর্মসূচির সমন্বয়ক জাডা ম্যাকেনা ব্যাখ্যা করেন, এ নতুন সূচকটি নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে এক বিশাল অগ্রগতি। ফিড দি ফিউচার কর্মসূচির ক্ষেত্রে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে এ সূচক কিভাবে কাজে লাগানো হবে; তার বিস্তারিত বর্ণনা দেন তিনি।
সূচক তৈরিতে অন্য দুই সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর জ্যেষ্ঠ গবেষণা কর্মকর্তা অ্যাগনেস কুইসামবিং এবং অক্সফোর্ড পভার্টি অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ-এর পরিচালক সাবিনা অ্যালকের সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন।
ইউএস-এইড প্রকাশিত সূচকে দেখা যাচ্ছে, সম্পূর্ণ ভিন্ন ভিন্ন আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির তিনটি দেশে সূচক তৈরি কাজ শুরু করা হয় ২০১১ সালের জুলাইয়ে। এর মধ্যে সে বছরের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাসে জরিপটি চালানো হয়। বাংলাদেশ, আফ্রিকার রুয়ান্ডা, ও দক্ষিণ আমেরিকার গুয়াতেমালায় চালানো জরিপটিতে নতুন একটি পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে।
যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, ফিড দি ফিউচার’র অধীনে বিভিন্ন কর্মসূচি চালানো হয়েছে এমন এলাকাগুলোতেই জরিপটি চালানো হয়। নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে এর আগের আন্তর্জাতিক জরিপগুলোতে হয় শুধু নারীর কাছ থেকেই তথ্য সংগ্রহ করা হতো, নয়তো ভিন্ন ভিন্ন পরিবারের নারী ও পুরুষের কাছ থেকে প্রশ্ন করা হতো। কিন্তু এ জরিপে একই পরিবারের নারী ও পুরুষের কাছ থেকে একই বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের বরগুনা, যশোর, খুলনা, মাদারীপুর ও পটুয়াখালীতে জরিপটি চালানো হয়েছে। এসব জেলায় ৩৫০টি পরিবারের ৬২৫ ব্যক্তির কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। মোট পাঁচটি বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। যেগুলো হচ্ছে কৃষির উৎপাদন, সম্পদ, আয়, নেতৃত্ব ও সময় ।
কৃষি উৎপাদনের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত ও সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে স্বাধীকার, সম্পত্তির মালিকানা ও সম্পত্তি কেনা-বেচা-স্থানান্তরের ক্ষমতা এবং ঋণ পাওয়ার সুযোগ ও নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা, উপার্জিত অর্থকড়ি ব্যবহারের ওপর নিয়ন্ত্রণ, ঘরের বাইরে জনপরিসরে কথা বলা ও বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক সভা-সমিতিতে যাবার ক্ষমতা, কী পরিমাণ কাজের চাপ নিতে হয় ও কতটুকু সময় অবসর কাটানোর সুযোগ পাওয়া যায়; এসব বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা সূচকে দেখা যাচ্ছে, কৃষিজীবীদের মধ্যে ৩১.৯ ভাগ নারীর প্রকৃত অর্থেই শতভাগ ক্ষমতায়ন হয়েছে। শতকরা ৬৮.১ ভাগ নারীর পুরোপুরি ক্ষমতায়ন না হলেও প্রাসঙ্গিক পাঁচটি বিষয়ে শতকরা ৬০.১ ভাগ ক্ষমতা রাখেন। এছাড়া অন্য একটি দিকে দেখা যায়, কৃষিজীবী নারীদের মধ্যে ৫৯.৮ ভাগই তাদের পরিবারের পুরুষ সদস্যদের সঙ্গে সমান অধিকার ভোগ করেন।
ইউএস-এইড মনে করে, দেশের অন্যান্য শ্রেণী-পেশার নারীদের সামগ্রিক ক্ষমতায়নের চিত্রের সঙ্গে তুলনায় কৃষিজীবী নারীদের এ ক্ষমতায়ন পরিস্থিতি যথেষ্ট না হলেও আশাব্যঞ্জক।
সূচকে দেখা যাচ্ছে জরিপে অংশ নারীদের অধিকাংশেরই প্রাথমিক পর্যায়ের বেশি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। মাত্র ছয়জনের উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা আছে, একজনের আছে উচ্চ শিক্ষা।
প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষা নেই, এমন নারীরও ৩১ ভাগও ইউএস-এইডের এ সূচক অনুযায়ী প্রকৃত অর্থে ক্ষমতায়ন হয়েছে। অন্যদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আছে এমন আটজন নারীর মধ্যে মাত্র দু’জনের ক্ষমতায়ন হয়েছে।
বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী ইউএস-এইড এখন থেকে এ সূচকের ফলাফল ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগাবে খাদ্য নিরাপত্তা ও নারী উন্নয়নসহ অন্যান্য কর্মসূচিতে।
No comments