শিশুদের যক্ষ্মা রোগ-সচেতনতা প্রতিরোধ সহজ করে
দেশে শিশুর যক্ষ্মা শনাক্ত ও চিকিৎসায় অগ্রগতি না হওয়ার বিষয়ে সমকাল-ব্র্যাক গোলটেবিলে যে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে, তা যথার্থ। যক্ষ্মা নির্ণয়কারীরা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করছে না বলে গোলটেবিলে যে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, তা আরও উদ্বেগজনক। নির্ণয়ের কাজটি নির্ভুল হলেই না নিরাময়ের সুযোগ থাকে।
এখন জাতির ভবিষ্যৎ যারা, সেই শিশুরাই যদি কাঙ্ক্ষিত ডায়াগনস্টিক সুবিধা ও চিকিৎসকের আন্তরিকতা না পায়, রোগটি নিয়ন্ত্রণে সরকারি-বেসরকারি কার্যক্রম সত্যিই প্রশ্নের মুখে পড়ে। গোলটেবিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা যথার্থই বলেছেন যে, শিশুর যক্ষ্মা শনাক্ত করা তুলনামূলক কঠিন হলেও তা অজুহাত হতে পারে না। আমরা আশা করি, এই বিষয়ে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ, উদ্বুদ্ধকরণ, আধুনিক প্রযুক্তি সরবরাহের ব্যাপারে সরকার উদ্যোগী হবে। সংশ্লিষ্টরাও স্বাস্থ্য উপদেষ্টার বক্তব্য গুরুত্বের সঙ্গে নেবেন বলে প্রত্যাশা। সর্বোপরি ভুল চিকিৎসা কিংবা দায়িত্বে অবহেলা শূন্যমাত্রায় নামিয়ে আনার বিকল্প নেই। এ প্রসঙ্গে সমকাল সম্পাদকের পর্যবেক্ষণ প্রণিধানযোগ্য_ শিশুর যক্ষ্মা বিষয়ে প্রচার খুব একটা চোখে পড়ে না। পূর্ণ বয়স্কদের নিয়ে অন্তত পোস্টার ও বিলবোর্ডসহ অন্যান্য প্রচারণা চোখে পড়লেও শিশুর যক্ষ্মা যেন কেবল বিশেষজ্ঞের বিষয়। সর্বস্তরের নাগরিক যাতে বিষয়টি সম্পর্কে সচেতন থাকেন, সে ব্যাপারে সরকারকে আরও উদ্যোগী হতে হবে। মনে রাখা জরুরি, নাগরিক সচেতনতাই এ ধরনের রোগ প্রতিরোধে মূল নিয়ামক শক্তি। এ নিয়ে সামাজিক পরিসরে আলাপ-আলোচনা যত বাড়বে, সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীলতা তত নিশ্চিত হবে। সমকাল-ব্র্যাক গোলটেবিল সেক্ষেত্রে অনেককে পথ দেখাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। সংবাদমাধ্যম ও উন্নয়ন সংস্থার পাশাপাশি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও শিশুর যক্ষ্মা বিষয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারে। এও ভুলে যাওয়া উচিত নয়, নিরোগ শৈশবই হচ্ছে রোগমুক্ত জীবনের অন্যতম পূর্বশর্ত। তাতে করে কেবল জাতির স্বাস্থ্যোজ্জ্বল হয় না, জাতীয়ভাবে অর্থের অপচয়ও কমে। সবাই আন্তরিক হলে শিশুর যক্ষ্মা নির্মূলের মাধ্যমে সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্নও আরও গাঢ় করা কঠিন নয়।
No comments