একক ভিসা সত্যায়নের বিধান মে পর্যন্ত স্থগিত by শরিফুল হাসান
বিদেশগামী কর্মীদের নিয়োগসংক্রান্ত সব কাগজপত্র সত্যায়নের নতুন বিধান শেষ পর্যন্ত চার মাসের জন্য স্থগিত করা হলো। জুনের আগে এ বিষয়ে পরবর্তী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রণালয়। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এই নিয়ম কার্যকর করার কথা ছিল। কিন্তু জনশক্তি রপ্তানিকারকদের আপত্তির মুখে এর আগে এক মাস পিছিয়ে আজ ১ মার্চ থেকে এই নিয়ম কার্যকর করার কথা
বলেছিল বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়। এখন আবার ৩১ মে পর্যন্ত এ সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের সচিব জাফর আহমেদ খান বলেন, ‘সত্যায়ন করার বিধান বাস্তবায়নের সময় ৩১ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। পরে আমরা এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।’
এত দিন পর্যন্ত দলগতভাবে বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রেই কেবল সত্যায়নের প্রয়োজন পড়ত। তবে জানুয়ারি মাসে বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় নতুন যে সিদ্ধান্ত নেয়, তাতে বলা হয়, এখন থেকে দূতাবাস বা হাইকমিশন থেকে নিয়োগসংক্রান্ত কাগজপত্র সত্যায়িত না করে কেউই আর বিদেশে যেতে পারবেন না। নতুন এই নিয়ম করার যুক্তি হিসেবে সরকার বলছে, বিদেশগামী প্রত্যেক কর্মীর চাকরির নিশ্চয়তা নিরূপণ, প্রতিশ্রুত মজুরি প্রাপ্তির নিশ্চয়তা বিধানের জন্যই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে জনশক্তি রপ্তানিকারকেরা বলছেন, তাঁদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা না করেই নতুন এ নিয়ম করা হয়েছে। এ কারণে দুর্নীতি ও অনিয়ম যেমন বাড়বে, তেমনি আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় জনশক্তি রপ্তানিতে ধস নেমে আসবে।
জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিত্রুদ্ধটিং এজেন্সিসের (বায়রা) সভাপতি আবুল বাশার বলেন, ‘এমনিতে জনশক্তি রপ্তানি খাতের অবস্থা ভালো নয়, এখন যদি একক ভিসায় সত্যায়নের প্রক্রিয়া চালু করা হয়, তাহলে এই খাত ভয়াবহ সমস্যায় পড়বে। বিদেশি মালিকেরা সত্যায়নের জন্য কখনোই দূতাবাসে যাবেন না। আর দূতাবাসেরও বিপুল পরিমাণ নিয়োগের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে সত্যায়ন করার মতো জনবল নেই। তাই আমরা এই প্রক্রিয়া বাতিল করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছিলাম। আমরা চাই, স্থায়ীভাবে এই নিয়ম বাতিল করা হোক।’
বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব হজরত আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা মনে করছি, একক ভিসায় সত্যায়ন করা গেলে বিদেশে গিয়ে শ্রমিকেরা প্রতারিত হবেন না। তবে এই নিয়ম চালু করার সময়সীমা আমরা ৩১ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছি। পরবর্তীকালে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ একক ভিসায় সত্যায়ন করার মতো জনবল দূতাবাসে আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দূতাবাসে আসলে জনবল বাড়ানো দরকার। বিষয়গুলো আমরা খেয়াল রাখব। দূতাবাসকে দ্রুততম সময়ে কাজ করতে বলা হবে। সত্যায়নের ফলে জনশক্তি রপ্তানি যেন কমে না যায়, সেটি আমরা মনে রাখব।’
No comments