সরকারকে ভর্তুকি দিতে হবে ১১০ কোটি টাকা-বাজারদরের চেয়ে বেশি দামে চিনি আমদানি! by ফখরুল ইসলাম
উচ্চমূল্য তো আছেই, পাশাপাশি আছে বৈদেশিক মুদ্রার তীব্র সংকট। অথচ দুষ্প্রাপ্য ডলার দিয়েই চিনি আমদানি করতে যাচ্ছে সরকার। দেশীয় পরিশোধন কারখানাগুলোর কাছে বর্তমানে পাঁচ লাখ টন চিনির মজুদ রয়েছে। তাদের কাছ থেকেও সংগ্রহ না করে সরকার বিদেশ থেকে চিনি আমদানির পথ বেছে নিয়েছে।
সূত্র জানায়, ২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর দুই লাখ টন চিনি আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এর মধ্যে দুই দফায় ৫০ হাজার টন চিনি আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। তা-ও আবার বর্তমান বাজারদরের তুলনায় অনেক বেশি দামে।
জানুয়ারিতে ২৫ হাজার টনের পর গত ১২ ফেব্রুয়ারি দেওয়া হয় আরও ২৫ হাজার টনের অনুমোদন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মে মাসে এই চিনি দেশে এসে পৌঁছাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বেশি দাম দিয়ে চিনি কেনায় এ পর্যায়ের ২৫ হাজার টনে সরকারকে ভর্তুকি দিতে হবে ১৪ কোটি টাকা। এ হিসাব বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (বিএসএফআইসি)। একই প্রক্রিয়ায় উচ্চ দাম দিয়ে দুই লাখ টন চিনি আমদানি করতে গেলে সরকারকে সব মিলিয়ে ভর্তুকি গুনতে হবে ১১০ কোটি টাকা।
ভর্তুকির কথা অস্বীকার করেননি শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া। এর প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে গত ক্রয় কমিটির বৈঠক শেষে প্রথম আলোর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কিছু ভর্তুকি দিতেই হবে। তবে আগামী রমজানে যাতে চিনির কোনো সংকট না হয়, সে জন্যই এই আয়োজন।’
বিএসএফআইসি সূত্রে জানা গেছে, দুই লাখ টন চিনি সংগ্রহের অংশ হিসেবে ২৫ হাজার টন করে তিন দফা দরপত্র আহ্বান করে বিএসএফআইসি। প্রথম দফায় আমদানি করা সম্ভব হয়নি। দ্বিতীয় দফায় ২৫ হাজার টনের দর প্রস্তাব গত ২৯ জানুয়ারি ক্রয় কমিটিতে অনুমোদিত হয়। কাজ পায় লন্ডনের ইডিঅ্যান্ডএফ ম্যান সুগার লিমিটেডের স্থানীয় প্রতিনিধি রিয়া ইন্টারন্যাশনাল। টনপ্রতি ৬৭০ দশমিক ৫৯ ডলার দরে এ চিনি আমদানির জন্য গত ২ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি করে সরকার।
তৃতীয় দফায় ২৫ হাজার টনের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয় গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর এবং খোলা হয় গত ১১ ফেব্রুয়ারি। এতে চার যোগ্য দরদাতা চিহ্নিত করে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি (টিইসি), যা পরে অনুমোদন করে বিএসএফআইসির পরিচালনা পর্ষদ।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের আগস্টে ভারত থেকে ১৭৮ মার্কিন ডলার দরে দুই হাজার ২২০ টন গম আমদানির কথা বলে রিয়া ইন্টারন্যাশনাল পরে তা ১২০ ডলার করে দেখায়। শুল্ক ফাঁকি দিতে প্রতিষ্ঠানটি এ কাজ করেছিল বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে উঠে আসে। তৃতীয় দফায়ও রিয়া ইন্টারন্যাশনাল দরপত্রে অংশ নেয়। কিন্তু দর বেশি দেওয়ায় কাজ পায়নি। কাজ পায় ৬৫৭ দশমিক ৯৫ ডলার দরে সিঙ্গাপুরের এগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল পিটিই লিমিটেডের স্থানীয় প্রতিনিধি গ্লোবো পিউ ইম্পোর্ট-এক্সপোর্ট লিমিটেড।
টিইসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্লোবো পিউ ইম্পোর্ট-এক্সপোর্ট থেকে আমদানি করা চিনি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছা পর্যন্ত (ল্যান্ডেড কস্ট) প্রতি টনের দর দাঁড়াবে ৫৯ হাজার ৯৯ টাকা। এর সঙ্গে বিএসএফআইসির খরচ টনপ্রতি আরও এক হাজার টাকা করে বাড়বে। অথচ করপোরেশনের উৎপাদিত চিনির দর টনপ্রতি ৫৫ হাজার টাকা থেকে এ দর পাঁচ হাজার ৯৯ টাকা বেশি। সে হিসাবে ২৭ হাজার ৫০০ টনে ভর্তুকি দিতে হবে ১৪ কোটি দুই লাখ টাকা।
বাজারে চিনির দাম এখন ৬০ টাকার নিচে। আমদানির পরিবর্তে পরিশোধন কারখানাগুলোর কাছ থেকে চিনি কিনলে ব্যয় আরও কম হতো। ক্রয় কমিটির বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব নূরুল করিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৈঠকে এ ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়নি। কেউ কোনো প্রশ্নও তুলেননি।
দেশের চাহিদা মিটিয়েও পরিশোধন কারখানাগুলো যেখানে চিনি রপ্তানি করতেও সক্ষম, সেখানে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে কেন চিনি আমদানির উদ্যোগ—এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি বেসরকারি কোম্পানিগুলোর কেউই। তবে একটি পরিশোধন কোম্পানির চেয়ারম্যান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখানে কী খেলা কাজ করে, তা বলে বিএসএফআইসির বিরাগভাজন হতে চাই না।’ চিনি পরিশোধন কারখানা সমিতি সূত্র জানায়, তারা বর্তমানে ৫৩ থেকে ৫৪ হাজার টাকা টন দরে চিনি বিক্রি করছে।
জানুয়ারিতে ২৫ হাজার টনের পর গত ১২ ফেব্রুয়ারি দেওয়া হয় আরও ২৫ হাজার টনের অনুমোদন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মে মাসে এই চিনি দেশে এসে পৌঁছাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বেশি দাম দিয়ে চিনি কেনায় এ পর্যায়ের ২৫ হাজার টনে সরকারকে ভর্তুকি দিতে হবে ১৪ কোটি টাকা। এ হিসাব বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (বিএসএফআইসি)। একই প্রক্রিয়ায় উচ্চ দাম দিয়ে দুই লাখ টন চিনি আমদানি করতে গেলে সরকারকে সব মিলিয়ে ভর্তুকি গুনতে হবে ১১০ কোটি টাকা।
ভর্তুকির কথা অস্বীকার করেননি শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া। এর প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে গত ক্রয় কমিটির বৈঠক শেষে প্রথম আলোর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কিছু ভর্তুকি দিতেই হবে। তবে আগামী রমজানে যাতে চিনির কোনো সংকট না হয়, সে জন্যই এই আয়োজন।’
বিএসএফআইসি সূত্রে জানা গেছে, দুই লাখ টন চিনি সংগ্রহের অংশ হিসেবে ২৫ হাজার টন করে তিন দফা দরপত্র আহ্বান করে বিএসএফআইসি। প্রথম দফায় আমদানি করা সম্ভব হয়নি। দ্বিতীয় দফায় ২৫ হাজার টনের দর প্রস্তাব গত ২৯ জানুয়ারি ক্রয় কমিটিতে অনুমোদিত হয়। কাজ পায় লন্ডনের ইডিঅ্যান্ডএফ ম্যান সুগার লিমিটেডের স্থানীয় প্রতিনিধি রিয়া ইন্টারন্যাশনাল। টনপ্রতি ৬৭০ দশমিক ৫৯ ডলার দরে এ চিনি আমদানির জন্য গত ২ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি করে সরকার।
তৃতীয় দফায় ২৫ হাজার টনের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয় গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর এবং খোলা হয় গত ১১ ফেব্রুয়ারি। এতে চার যোগ্য দরদাতা চিহ্নিত করে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি (টিইসি), যা পরে অনুমোদন করে বিএসএফআইসির পরিচালনা পর্ষদ।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের আগস্টে ভারত থেকে ১৭৮ মার্কিন ডলার দরে দুই হাজার ২২০ টন গম আমদানির কথা বলে রিয়া ইন্টারন্যাশনাল পরে তা ১২০ ডলার করে দেখায়। শুল্ক ফাঁকি দিতে প্রতিষ্ঠানটি এ কাজ করেছিল বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে উঠে আসে। তৃতীয় দফায়ও রিয়া ইন্টারন্যাশনাল দরপত্রে অংশ নেয়। কিন্তু দর বেশি দেওয়ায় কাজ পায়নি। কাজ পায় ৬৫৭ দশমিক ৯৫ ডলার দরে সিঙ্গাপুরের এগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল পিটিই লিমিটেডের স্থানীয় প্রতিনিধি গ্লোবো পিউ ইম্পোর্ট-এক্সপোর্ট লিমিটেড।
টিইসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্লোবো পিউ ইম্পোর্ট-এক্সপোর্ট থেকে আমদানি করা চিনি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছা পর্যন্ত (ল্যান্ডেড কস্ট) প্রতি টনের দর দাঁড়াবে ৫৯ হাজার ৯৯ টাকা। এর সঙ্গে বিএসএফআইসির খরচ টনপ্রতি আরও এক হাজার টাকা করে বাড়বে। অথচ করপোরেশনের উৎপাদিত চিনির দর টনপ্রতি ৫৫ হাজার টাকা থেকে এ দর পাঁচ হাজার ৯৯ টাকা বেশি। সে হিসাবে ২৭ হাজার ৫০০ টনে ভর্তুকি দিতে হবে ১৪ কোটি দুই লাখ টাকা।
বাজারে চিনির দাম এখন ৬০ টাকার নিচে। আমদানির পরিবর্তে পরিশোধন কারখানাগুলোর কাছ থেকে চিনি কিনলে ব্যয় আরও কম হতো। ক্রয় কমিটির বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব নূরুল করিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৈঠকে এ ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়নি। কেউ কোনো প্রশ্নও তুলেননি।
দেশের চাহিদা মিটিয়েও পরিশোধন কারখানাগুলো যেখানে চিনি রপ্তানি করতেও সক্ষম, সেখানে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে কেন চিনি আমদানির উদ্যোগ—এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি বেসরকারি কোম্পানিগুলোর কেউই। তবে একটি পরিশোধন কোম্পানির চেয়ারম্যান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখানে কী খেলা কাজ করে, তা বলে বিএসএফআইসির বিরাগভাজন হতে চাই না।’ চিনি পরিশোধন কারখানা সমিতি সূত্র জানায়, তারা বর্তমানে ৫৩ থেকে ৫৪ হাজার টাকা টন দরে চিনি বিক্রি করছে।
No comments