অবশেষে সেঞ্চুরি.

বিরাট কোহলি প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি পেয়েছেন গত মাসে অ্যাডিলেড ওভালে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। ভারতীয় এই ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরি উদ্যাপনে নতুন কিছু ছিল না। মাথা থেকে হেলমেট খুলে চিৎকার করে ব্যাট-হেলমেট সমেত শূন্য উড়তে চাইলেন—বরাবর যা করেন আর কি! মানে ওয়ানডেতে সেঞ্চুরির পর যেভাবে তাঁকে দেখা যায়। ওয়ানডেতে আটবার একই ভঙ্গিতে সেঞ্চুরি উদ্যাপন করেছেন।


অ্যাডিলেডে আলাদা করে তাঁর সেঞ্চুরি উদ্যাপনের কী উপলক্ষ ছিল? ছিল, অবশ্যই ছিল। সফরে এটিই কোনো ভারতীয় ব্যাটসম্যানের একমাত্র সেঞ্চুরি। কোহলির প্রথম সেটা তো আগেই বলা হয়েছে। তবে আরেকটি কারণে কোহলির এই সেঞ্চুরিটি উল্লেখযোগ্য। টেস্ট সেঞ্চুরি পাওয়ার আগে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে সেঞ্চুরির রেকর্ড তো তাঁরই।
কোহলির আগে রেকর্ডটি ছিল পাকিস্তানের সাঈদ আনোয়ারের—ছয়টি ওয়ানডে সেঞ্চুরির। টেস্ট অভিষেকের আগেই ২৫টি ওয়ানডে খেলে ফেলেছিলেন আনোয়ার। এই সময়ে করেছিলেন দুটি সেঞ্চুরি। ১৯৯০ সালে ফয়সালাবাদে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকে জোড়া শূন্য তিন বছরের জন্য টেস্ট দলের বাইরে ঠেলে দেয় তাঁকে। তবে এই সময়ে ২০টি ওয়ানডে খেলে আরও চারটি সেঞ্চুরি করেন বাঁহাতি ওপেনার, যার তিনটি আবার টানা। শারজায় এই পারফরম্যান্স নিউজিল্যান্ড সফরে টেস্ট দলে ফিরিয়ে নেয় তাঁকে। প্রথম টেস্টে ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয় টেস্টে পেয়ে যান কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্কের দেখা। ওই ম্যাচে দুই ইনিংসে ১৬৯ ও ৬৯ রান করেছিলেন আনোয়ার। প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির সাঈদ আনোয়ার খেলেন ৪৫টি ওয়ানডে। আর কোহলি ওয়ানডে খেলেছেন ৭৪টি।
প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি পাওয়ার আগে পাঁচটি ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেছেন অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, শোয়েব মালিক ও অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস। চারটি সেঞ্চুরি আছে চারজনের, যাঁদের মধ্যে বাংলাদেশের সাকিব আল হাসানও আছেন। ২০১০ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যামিল্টনে টেস্টে সেঞ্চুরির আগেই ৮২ ওয়ানডেতে চার সেঞ্চুরি করেন বাংলাদেশের ১ নম্বর অলরাউন্ডার।
ভারতের অজয় জাদেজা ও অস্ট্রেলিয়ার মাইকেল বেভান ছয়টি করে ওয়ানডে সেঞ্চুরি করলেও টেস্টে করতে পারেননি একটিও। অবশ্য ২২২টি ওয়ানডে খেলা বেভান টেস্টে সুযোগ পেয়েছেন খুব কম। খেলেছেন মাত্র ১৮টি টেস্ট। আর ১৯২টি ওয়ানডে খেলা জাদেজা খেলেছেন ১৫ টেস্ট।
সুনীল গাভাস্কারের ব্যাপারটা ঠিক উল্টো। ‘লিটল মাস্টার’ তাঁর ৩৪টি টেস্ট সেঞ্চুরির সব কটিই করেছেন ওয়ানডে সেঞ্চুরি পাওয়ার আগে। অবশ্য টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম ১০ হাজার রান করা ব্যাটসম্যান ওয়ানডে সেঞ্চুরিই করেছেন একটি। সেটাও আবার শেষ ম্যাচের আগের ম্যাচে। ১৯৮৭ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে গাভাস্কার করেছিলেন ১০৩ রান। ওয়ানডেটি ছিল তাঁর ক্যারিয়ারের ১০৭তম। এই তালিকায় গাভাস্কারের পরই আছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক নাসের হুসেইন। ১৯৮৯ সালে ওয়ানডে অভিষেকের চার মাস পরই টেস্ট অভিষেক হয়েছিল তাঁর। ২০০২ সালের আগে ওয়ানডেতে তিনি সেঞ্চুরির দেখা না পেলেও এই সময়ে টেস্টে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন ১০ বার।
ক্রিকইনফো অবলম্বনে

No comments

Powered by Blogger.