পাঠকের প্রশ্ন-আইনি পরামর্শ

স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ কীভাবে পাব? আমি একজন সরকারি চাকরিজীবী। আমার বিয়ে হয়েছে ১৩ বছর হলো। আমার স্বামীও একজন সরকারি চাকরিজীবী। দুজনের কর্মস্থল ভিন্ন জায়গায়। ইচ্ছে ছিল বিয়ের পর স্বামীর চাকরিস্থলে বদলি হয়ে একসঙ্গে সংসার করব। কিন্তু সে কখনো এ ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়নি।


বিয়ের পর থেকে কিছু চাইলে সে কখনো কিছু দিত না।
আমি আমার টাকা দিয়ে সংসারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে আসছি। আমাদের একটি কন্যাসন্তান আছে এবং সে আমার সঙ্গেই আছে। আমার স্বামী বাচ্চাটার ওপর সর্বক্ষেত্রে নিজের মতামত জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার কারণে বাচ্চা বাবাকে ভয় পায়।
অনেক চাওয়ার পর মেয়েটিকে কিছু টাকা দিত, কিন্তু আমাদের দুজনের ভরণপোষণ কখনোই দিত না। আজ চার বছর যাবৎ মেয়েকে বা আমাকে টাকা-পয়সা কিছুই দেয় না। আমি অনেক কষ্ট করে নিজের জমানো টাকা এবং সে সঙ্গে ঋণ করে একটি বাড়ি করেছি। সে প্রায়ই এখানে আসে এবং ঝগড়া করে। নিষেধ করা সত্ত্বেও আসে, কিন্তু কোনো দায়িত্ব পালন করে না। বরং বিভিন্নভাবে বিরক্ত করে।
বর্তমানে ঋণ ও অন্যান্য কারণে সমস্ত দায়িত্ব পালনে অক্ষম হওয়ায় তাকে বলেছি মেয়ের ভরণপোষণের জন্য কিছু টাকা দিতে, কিন্তু সে বলে যে তার কোনো টাকা নেই। তাই সে দিতে পারবে না। আমি ও আমার মেয়ে কীভাবে তার কাছ থেকে ভরণপোষণ পেতে পারি? কোনো মামলা করার প্রয়োজন আছে কি?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।

পরামর্শ: আপনি কর্মক্ষম হলেও আপনার স্বামী আপনার ভরণপোষণ এবং আপনার সন্তানের ভরণপোষণ দিতে আপনার স্বামী বাধ্য। আপনার স্বামী আপনার ও আপনার মেয়েকে ভরণপোষণ না দিলে মুসলিম পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ অনুযায়ী পারিবারিক আদালতে প্রতিকার চাওয়ার সুযোগ আছে।
পারিবারিক আদালতে আপনার ও মেয়ের ভরণপোষণ চেয়ে পারিবারিক আদালতে মোকদ্দমা করতে পারেন। প্রথমে বিষয়টি পারিবারিকভাবে নিষ্পত্তির চেষ্টা করতে পারেন। এতে কাজ না হলে পারিবারিক আদালতের আশ্রয় নিতে পারেন।

বাবার প্রাপ্য কীভাবে পাব?
আমার বাবা ও কাকা মিলে তিন ভাই। আমার বাবা বড়। তিনি ২০০৭ সালে মারা যান। আমার বাবা আমাদের নিয়ে বাংলাদেশে থাকতেন আর অন্য দুই ভাই আমার দাদিসহ ভারতে থাকেন। তাঁরা অনেক আগেই ভারতের নাগরিকত্ব পেয়েছেন। ভারতে আমার দাদির নামে দুই কাঠা জায়গার ওপর একটি পাকা বাড়ি আছে।
প্রশ্ন হলো, আমি অথবা আমার মা বাংলাদেশে বসবাস করে ভারতের ওই বাড়ির ওপর আমার বাবার প্রাপ্য অংশের কি কোনো দাবি করতে পারব? যদি পারি, কীভাবে সম্ভব, তা জানাবেন। আমার দাদি এখনো জীবিত আছেন। উল্লেখ্য, ওই বাড়ি তৈরির খরচের অর্ধেক অংশ আমার বাবা বহন করেছিলেন।
কল্যাণ

পরামর্শ: আপনি ও আপনার বাবাকেউই ভারতের নাগরিক নন। তাই ভারতের আইন অনুযায়ী যদি অনুমতি না থাকে, তাহলে জমি দাবি করতে পারবেন না।
পরামর্শ দিয়েছেন
কাজী জাহেদ ইকবাল
আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

No comments

Powered by Blogger.