পবিত্র কোরআনের আলো-আল্লাহ নবী-রাসুল পাঠিয়েছেন যেন মানুষ কোনো অজুহাত খুঁজে না পায়
১৬৪. ওয়া রুছুলান ক্বাদ ক্বাসাস্না-হুম 'আলাইকা মিন্ ক্বাবলু ওয়া রুছুলান লাম নাক্বসুসহুম 'আলাইকা; ওয়া কাল্লামাল্লাহু মূছা তাকলীমা। ১৬৫. রুছুলাম্ মুবাশ্শিরীনা ওয়া মুনযিরীনা লিআল্লা ইয়াকূনা লিন্নাছি 'আলাল্লাহি হুজ্জাতুম্ বা'দার্ রুছুলি; ওয়া কা-নাল্লা-হু 'আযীযান হাকীমা।
১৬৬. লা-কিনিল্লা-হু ইয়াশ্হাদু বিমা আন্যালা ইলাইকা আনযালাহূ বি'ইলমিহি; ওয়ালমালা-য়িকাতু ইয়াশ্হাদূনা; ওয়া কাফা বিল্লাহি শাহীদা।
১৬৭. ইন্নাল্লাযীনা কাফারূ ওয়া সাদ্দূ 'আন ছাবীলিল্লাহি ক্বাদ দ্বাল্লূ দ্বালা-লাম্ বায়ী'দা। [সুরা : আন নিসা, আয়াত : ১৬৪-১৬৭]
অনুবাদ : ১৬৪. রাসুলদের মধ্যে এমনও অনেকে আছেন যাদের কথা আমি ইতিপূর্বে আপনার কাছে বলেছি। কিন্তু তাদের মধ্যে আবার এমনও আছেন যাদের ব্যাপারে আমি কিছুই আপনাকে বলিনি। মুসার সঙ্গে তো আল্লাহ তায়ালা কথাও বলেছেন।
১৬৫. রাসুলদের আমি (ভালো কাজের ভালো পরিণতির) সুসংবাদ প্রদানকারী ও (মন্দ কাজের মন্দ পরিণতির) ভীতি প্রদর্শনকারী হিসেবে পাঠিয়েছি, যাতে মানব জাতির কোনো অজুহাত দাঁড় করানোর কোনো সুযোগ না থাকে রাসুলদের আগমনের পর। আল্লাহ তায়ালা মহাপরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।
১৬৬. কিন্তু আল্লাহ নিজে সাক্ষ্য, তিনি আপনার ওপর যা কিছু নাজিল করেছেন তা তাঁর জ্ঞান থেকেই করেছেন। ফেরেশতারাও এ ব্যাপারে সাক্ষ্য দেবে, যদিও আল্লাহ তায়ালা একাই সাক্ষ্য প্রদানের জন্য যথেষ্ট।
১৬৭. নিশ্চয়ই যারা (এই কোরআন ও ওহি) অস্বীকার করে এবং মানুষদের আল্লাহর পথ থেকে ফিরিয়ে রাখে, তারা আসলে বিপথগামী এবং বিপথগামিতায় অনেক দূর এগিয়ে গেছে।
ব্যাখ্যা : ১৬৪ নম্বর আয়াতে এ কথা স্পষ্ট হয়েছে যে আল্লাহ তায়ালা মানুষকে পথপ্রদর্শনের জন্য পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন অসংখ্য নবী-রাসুল, যাঁদের অনেকের কথা কোরআন মজিদে উল্লেখ করা হয়নি। অল্পসংখ্যক নবী-রাসুলের কথাই কোরআন মজিদে উল্লেখ করা হয়েছে। কোরআন মজিদে যেসব নবী-রাসুলের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাঁদের অধিকাংশই ইসরাইল বংশীয়। অর্থাৎ ইবরাহিম (আ.)-এর পুত্র ইসহাক (আ.)-এর বংশধর। অপর পুত্র ইসমাইল (আ.)-এর বংশধর হলেন শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। এই দুই বংশ ছাড়া অন্য জাতির মধ্যেও নবী-রাসুলের আবির্ভাব ঘটেছে।
১৬৫ নম্বর আয়াতে নবী-রাসুলদের কেন পাঠানো হয়েছে এর একটা যুক্তি উপস্থাপন করা হয়েছে। যুক্তিটা হলো, পয়গম্বরদের পাঠানো না হলে মানুষ তো শেষ বিচারের দিন বলতে পারত যে কোনটা সরলপথ আর কোনটা বিপথগামিতা, তা তো আমরা বুঝতে পারিনি। তারা বলতে পারত, হে প্রভু! কোনটা তোমার পছন্দের পথ আর কোনটা অপছন্দের পথ, তা আমরা বুঝতে পারিনি, আমরা আরো বুঝতে পারিনি সত্য ও ন্যায়ের পথ কোনটি আর অসত্য ও অন্যায় কোনটি। মানুষকে যেন এমন অজুহাত নিয়ে আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে না হয়। সে জন্যই পয়গম্বরদের আবির্ভাব আর বাস্তব অবস্থাও এই যে নবী-রাসুলরা এসে মানবজাতিকে পথ না দেখালে সত্য ও ন্যায়ের পথ খুঁজে পাওয়া এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির পথ খুঁজে বের করা কঠিন হতো। সুতরাং নবী-রাসুলরা মানবজাতির সৌভাগ্য হিসেবে এসেছেন।
১৬৬ ও ৬৭ নম্বর আয়াতের শানেনুজুল এ রকম : কিছু কোরাইশ সর্দার রাসুল (সা.)-এর কাছে উপস্থিত হয়ে বলল, আমরা ইহুদি আলেমদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম মুহাম্মদের নবুয়ত সম্পর্কে তাদের তাওরাত কিতাবে কোনো কথা আছে কি না, তারা জানালো এ রকম কোনো কথা নেই। এ সময় কয়েকজন ইহুদি আলেমও সেখানে উপস্থিত ছিল। রাসুল (সা.) তাঁদের প্রশ্ন করলেন, আপনাদের তাওরাত কিতাবে কি শেষ নবী সম্পর্কে কোনো কথা আছে? তারা বলল, আপনার বিষয়ে তাওরাতে কোনো উল্লেখ নেই। তখন এ আয়াতটি নাজিল হয়। এ আয়াতে কোরআন যে আল্লাহর কাছ থেকে এসেছে এবং এর জ্ঞান যে আল্লাহর জ্ঞান তা স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
১৬৭. ইন্নাল্লাযীনা কাফারূ ওয়া সাদ্দূ 'আন ছাবীলিল্লাহি ক্বাদ দ্বাল্লূ দ্বালা-লাম্ বায়ী'দা। [সুরা : আন নিসা, আয়াত : ১৬৪-১৬৭]
অনুবাদ : ১৬৪. রাসুলদের মধ্যে এমনও অনেকে আছেন যাদের কথা আমি ইতিপূর্বে আপনার কাছে বলেছি। কিন্তু তাদের মধ্যে আবার এমনও আছেন যাদের ব্যাপারে আমি কিছুই আপনাকে বলিনি। মুসার সঙ্গে তো আল্লাহ তায়ালা কথাও বলেছেন।
১৬৫. রাসুলদের আমি (ভালো কাজের ভালো পরিণতির) সুসংবাদ প্রদানকারী ও (মন্দ কাজের মন্দ পরিণতির) ভীতি প্রদর্শনকারী হিসেবে পাঠিয়েছি, যাতে মানব জাতির কোনো অজুহাত দাঁড় করানোর কোনো সুযোগ না থাকে রাসুলদের আগমনের পর। আল্লাহ তায়ালা মহাপরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।
১৬৬. কিন্তু আল্লাহ নিজে সাক্ষ্য, তিনি আপনার ওপর যা কিছু নাজিল করেছেন তা তাঁর জ্ঞান থেকেই করেছেন। ফেরেশতারাও এ ব্যাপারে সাক্ষ্য দেবে, যদিও আল্লাহ তায়ালা একাই সাক্ষ্য প্রদানের জন্য যথেষ্ট।
১৬৭. নিশ্চয়ই যারা (এই কোরআন ও ওহি) অস্বীকার করে এবং মানুষদের আল্লাহর পথ থেকে ফিরিয়ে রাখে, তারা আসলে বিপথগামী এবং বিপথগামিতায় অনেক দূর এগিয়ে গেছে।
ব্যাখ্যা : ১৬৪ নম্বর আয়াতে এ কথা স্পষ্ট হয়েছে যে আল্লাহ তায়ালা মানুষকে পথপ্রদর্শনের জন্য পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন অসংখ্য নবী-রাসুল, যাঁদের অনেকের কথা কোরআন মজিদে উল্লেখ করা হয়নি। অল্পসংখ্যক নবী-রাসুলের কথাই কোরআন মজিদে উল্লেখ করা হয়েছে। কোরআন মজিদে যেসব নবী-রাসুলের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাঁদের অধিকাংশই ইসরাইল বংশীয়। অর্থাৎ ইবরাহিম (আ.)-এর পুত্র ইসহাক (আ.)-এর বংশধর। অপর পুত্র ইসমাইল (আ.)-এর বংশধর হলেন শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। এই দুই বংশ ছাড়া অন্য জাতির মধ্যেও নবী-রাসুলের আবির্ভাব ঘটেছে।
১৬৫ নম্বর আয়াতে নবী-রাসুলদের কেন পাঠানো হয়েছে এর একটা যুক্তি উপস্থাপন করা হয়েছে। যুক্তিটা হলো, পয়গম্বরদের পাঠানো না হলে মানুষ তো শেষ বিচারের দিন বলতে পারত যে কোনটা সরলপথ আর কোনটা বিপথগামিতা, তা তো আমরা বুঝতে পারিনি। তারা বলতে পারত, হে প্রভু! কোনটা তোমার পছন্দের পথ আর কোনটা অপছন্দের পথ, তা আমরা বুঝতে পারিনি, আমরা আরো বুঝতে পারিনি সত্য ও ন্যায়ের পথ কোনটি আর অসত্য ও অন্যায় কোনটি। মানুষকে যেন এমন অজুহাত নিয়ে আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে না হয়। সে জন্যই পয়গম্বরদের আবির্ভাব আর বাস্তব অবস্থাও এই যে নবী-রাসুলরা এসে মানবজাতিকে পথ না দেখালে সত্য ও ন্যায়ের পথ খুঁজে পাওয়া এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির পথ খুঁজে বের করা কঠিন হতো। সুতরাং নবী-রাসুলরা মানবজাতির সৌভাগ্য হিসেবে এসেছেন।
১৬৬ ও ৬৭ নম্বর আয়াতের শানেনুজুল এ রকম : কিছু কোরাইশ সর্দার রাসুল (সা.)-এর কাছে উপস্থিত হয়ে বলল, আমরা ইহুদি আলেমদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম মুহাম্মদের নবুয়ত সম্পর্কে তাদের তাওরাত কিতাবে কোনো কথা আছে কি না, তারা জানালো এ রকম কোনো কথা নেই। এ সময় কয়েকজন ইহুদি আলেমও সেখানে উপস্থিত ছিল। রাসুল (সা.) তাঁদের প্রশ্ন করলেন, আপনাদের তাওরাত কিতাবে কি শেষ নবী সম্পর্কে কোনো কথা আছে? তারা বলল, আপনার বিষয়ে তাওরাতে কোনো উল্লেখ নেই। তখন এ আয়াতটি নাজিল হয়। এ আয়াতে কোরআন যে আল্লাহর কাছ থেকে এসেছে এবং এর জ্ঞান যে আল্লাহর জ্ঞান তা স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments