তিন খুনের কূলকিনারা হয়নি by একরামুল হক
নগরে এক নারীসহ পৃথক তিনটি খুনের ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেছে! তিনটি হত্যা মামলাই আবার তদন্ত করে দোষীদের বের করার নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মোহাম্মদ মাহাবুবুর রহমান। ২০১০ সালে এই তিন হত্যাকাণ্ড ঘটে।
আদালত সূত্র জানায়, হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটে দুটি কোতোয়ালি ও একটি বাকলিয়া থানা এলাকায়। আর মামলাগুলোর বাদী হলেন ফেরদৌস বেগম, রশিদা বেগম ও অন্যজন কোতোয়ালি থানার উপপুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মো. গোলাম মোস্তফা।
ফেরদৌস বেগমের করা মামলার আরজিতে বলা হয়, তাঁর স্বামী মো. জোবায়ের হোসেন চৌধুরী জামালখানের সারফেইজ বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কাজ করতেন। ২০১০ সালের ১০ অক্টোবর তিনি স্বামী জোবায়েরের মৃত্যুর খবর পান। মোমিন রোডের ফিউচার ইমেজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের দ্বিতীয় তলার কার্যালয়ের মেঝেতে জোবায়েরের লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। হত্যাকাণ্ডের সময় খুনিরা প্লাস্টিকের রশি ও বিছানার চাদর দিয়ে তাঁর দুই পা এবং পরনের লুঙ্গি দিয়ে দুই হাত বেঁধে ফেলে। মুখে শার্ট গুঁজে দিয়ে শ্বাসরোধে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করে।
রশিদা বেগমের করা মামলার আরজিতে বলা হয়, তাঁর ছোট ভাই আবু বক্কর ‘পাইপ ফিটারের মিস্ত্রি’ ছিলেন। ২০১০ সালের ১৭ নভেম্বর বিকেলে বের হয়ে আবু বক্কর আর বাসায় ফেরেননি। দুই দিন পর ১৯ নভেম্বর তাঁর ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পান। বাকলিয়ার বড়মিয়া মসজিদের পুকুরে আবু বক্করের লাশ ভেসে ওঠার পর জনৈক মানিক রশিদাকে এই মৃত্যুর সংবাদ দেন। আবু বক্করের শরীরে জখমের চিহ্ন ছিল।
উপপরিদর্শক গোলাম মোস্তফার করা মামলার আরজিতে বলা হয়, ২০১০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি টহল দেওয়ার সময় ইস্পাহানি মোড় থেকে আনুমানিক ২০০ গজ দূরে বর্ণা নার্সারির সামনে ২০-২২ বছর বয়সী একজন মহিলার লাশ পাওয়া যায়। মৃত মহিলার শরীর রক্তাক্ত ছিল। আগের রাতে কে বা কারা খুন করে মহিলার লাশ নার্সারির পাশে ফেলে চলে যায়।
উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) আমেনা বেগম এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, কূলকিনারা নেই এমন মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হচ্ছে। তবে ভবিষ্যতে কোনো রহস্য উদ্ঘাটন হলে মামলাটি আবার পুনরুজ্জীবিত করা হবে বলে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ থাকে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর তদন্ত একেবারেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এমন ধারণা করা উচিত নয়।
নগর পুলিশের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, কূলকিনারা নেই—মামলা তদন্তাধীন থাকলে তদন্ত কর্মকর্তাদের বাণিজ্যের সুবিধা হয়। যেকোনো নিরীহ ব্যক্তিকে এসব মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেন তাঁরা।
আদেশ: এদিকে, এই তিনটি মামলা আবার তদন্তের আদেশ দিয়েছেন আদালত। নগর গোয়েন্দা পুলিশকে মামলাগুলো তদন্ত করে প্রকৃত আসামিকে খুঁজে বের করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
ফেরদৌস বেগমের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে আদেশে বলা হয়, এই প্রতিবেদন গ্রহণযোগ্য নয়। নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনার গভীরে যেতে পারেননি।
রশিদা বেগমের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনও গ্রহণযোগ্য নয় বলে আদালত আদেশ দেন। এতে বলা হয়, হত্যা অত্যন্ত জঘন্য অপরাধ। এই অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিচারের আওতায় আনার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা প্রয়োগ করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্ব। খুন হয়ে যাওয়া ব্যক্তি জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত রেখে যায় বিচারের আকুতি। প্রতিটি হূদয়বান ব্যক্তি সেই বেদনাময় আবেদন শুনতে পায়। নথি পর্যালোচনায় মনে হয়েছে, তদন্ত আরও নিবিড়ভাবে হওয়া উচিত ছিল।
এস আই গোলাম মোস্তফার করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনও প্রত্যাখান করেছেন আদালত। পুনঃতদন্তের আদেশ দিয়ে মহানগর হাকিম বলেন, নথিতে সংরক্ষিত মৃত মহিলার ছবি যে কোনো বিবেকবান মানুষকে নাড়া দেবে। খুনের শিকার মহিলা—তাই এটি অন্যান্য হত্যাকাণ্ডের চেয়ে আরও বেশি স্পর্শকাতর। এক্ষেত্রে তদন্ত কর্মকর্তাকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। এই মামলা দুই বার তদন্ত হয়েছে। অথচ মৃত মহিলার পরিচয় উদ্ঘাটন করতে পারেনি।
ফেরদৌস বেগমের করা মামলার আরজিতে বলা হয়, তাঁর স্বামী মো. জোবায়ের হোসেন চৌধুরী জামালখানের সারফেইজ বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কাজ করতেন। ২০১০ সালের ১০ অক্টোবর তিনি স্বামী জোবায়েরের মৃত্যুর খবর পান। মোমিন রোডের ফিউচার ইমেজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের দ্বিতীয় তলার কার্যালয়ের মেঝেতে জোবায়েরের লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। হত্যাকাণ্ডের সময় খুনিরা প্লাস্টিকের রশি ও বিছানার চাদর দিয়ে তাঁর দুই পা এবং পরনের লুঙ্গি দিয়ে দুই হাত বেঁধে ফেলে। মুখে শার্ট গুঁজে দিয়ে শ্বাসরোধে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করে।
রশিদা বেগমের করা মামলার আরজিতে বলা হয়, তাঁর ছোট ভাই আবু বক্কর ‘পাইপ ফিটারের মিস্ত্রি’ ছিলেন। ২০১০ সালের ১৭ নভেম্বর বিকেলে বের হয়ে আবু বক্কর আর বাসায় ফেরেননি। দুই দিন পর ১৯ নভেম্বর তাঁর ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পান। বাকলিয়ার বড়মিয়া মসজিদের পুকুরে আবু বক্করের লাশ ভেসে ওঠার পর জনৈক মানিক রশিদাকে এই মৃত্যুর সংবাদ দেন। আবু বক্করের শরীরে জখমের চিহ্ন ছিল।
উপপরিদর্শক গোলাম মোস্তফার করা মামলার আরজিতে বলা হয়, ২০১০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি টহল দেওয়ার সময় ইস্পাহানি মোড় থেকে আনুমানিক ২০০ গজ দূরে বর্ণা নার্সারির সামনে ২০-২২ বছর বয়সী একজন মহিলার লাশ পাওয়া যায়। মৃত মহিলার শরীর রক্তাক্ত ছিল। আগের রাতে কে বা কারা খুন করে মহিলার লাশ নার্সারির পাশে ফেলে চলে যায়।
উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) আমেনা বেগম এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, কূলকিনারা নেই এমন মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হচ্ছে। তবে ভবিষ্যতে কোনো রহস্য উদ্ঘাটন হলে মামলাটি আবার পুনরুজ্জীবিত করা হবে বলে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ থাকে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর তদন্ত একেবারেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এমন ধারণা করা উচিত নয়।
নগর পুলিশের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, কূলকিনারা নেই—মামলা তদন্তাধীন থাকলে তদন্ত কর্মকর্তাদের বাণিজ্যের সুবিধা হয়। যেকোনো নিরীহ ব্যক্তিকে এসব মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেন তাঁরা।
আদেশ: এদিকে, এই তিনটি মামলা আবার তদন্তের আদেশ দিয়েছেন আদালত। নগর গোয়েন্দা পুলিশকে মামলাগুলো তদন্ত করে প্রকৃত আসামিকে খুঁজে বের করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
ফেরদৌস বেগমের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে আদেশে বলা হয়, এই প্রতিবেদন গ্রহণযোগ্য নয়। নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনার গভীরে যেতে পারেননি।
রশিদা বেগমের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনও গ্রহণযোগ্য নয় বলে আদালত আদেশ দেন। এতে বলা হয়, হত্যা অত্যন্ত জঘন্য অপরাধ। এই অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিচারের আওতায় আনার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা প্রয়োগ করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্ব। খুন হয়ে যাওয়া ব্যক্তি জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত রেখে যায় বিচারের আকুতি। প্রতিটি হূদয়বান ব্যক্তি সেই বেদনাময় আবেদন শুনতে পায়। নথি পর্যালোচনায় মনে হয়েছে, তদন্ত আরও নিবিড়ভাবে হওয়া উচিত ছিল।
এস আই গোলাম মোস্তফার করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনও প্রত্যাখান করেছেন আদালত। পুনঃতদন্তের আদেশ দিয়ে মহানগর হাকিম বলেন, নথিতে সংরক্ষিত মৃত মহিলার ছবি যে কোনো বিবেকবান মানুষকে নাড়া দেবে। খুনের শিকার মহিলা—তাই এটি অন্যান্য হত্যাকাণ্ডের চেয়ে আরও বেশি স্পর্শকাতর। এক্ষেত্রে তদন্ত কর্মকর্তাকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। এই মামলা দুই বার তদন্ত হয়েছে। অথচ মৃত মহিলার পরিচয় উদ্ঘাটন করতে পারেনি।
No comments