স্ত্রী-শাশুড়িকে কুপিয়ে হত্যা

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার সদর আলী মাদবরকান্দি গ্রামে এক ব্যক্তি শুক্রবার দিবাগত রাতে তাঁর স্ত্রী ও শাশুড়িকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। গতকাল শনিবার ভোরে বাড়ির পাশের ফসলি জমিতে তাঁদের লাশ পাওয়া যায়। স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার ভোরে গ্রামের লোকজন এসকান্দার মাদবরের বাড়ির পাশে ফসলি জমিতে তাঁর স্ত্রী রাশিদা বেগম (৩৮)


ও শাশুড়ি ফুলজান বিবির (৭০) লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার এ কে এম শহিদুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবি আবদুল্লাহ, জাজিরার ইউএনও ভিকারুদ্দৌলাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
পুলিশ এসকান্দার মাদবরকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি মানসিক প্রতিবন্ধী বলে তাঁর পরিবার দাবি করে।
সূত্র জানায়, সকাল থেকে এসকান্দার নিখোঁজ ছিলেন। বেলা একটার দিকে তিনি বিকে নগর ইউপি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এসে হাজির হন। তখন পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
এসকান্দারের মেয়ে লিপি (১৫) বলেন, ‘সকালে লোকজনের চিৎকারে বাড়ির পাশে ছুটে গিয়ে দেখি মা ও নানির লাশ পড়ে রয়েছে।’
এসকান্দারের ছেলে রাসেল (১৮) বলেন, ‘বৃহস্পতিবার জমিজমার হিসাব নিয়ে আমার বাবার সঙ্গে তাঁর চাচা ও চাচাতো ভাইদের ঝগড়া হয়। ওই সময় তাঁরা আমাকে মারধর করেন। আমি মাথায় আঘাত পেয়ে জাজিরা হাসপাতালে ভর্তি হই। সকালে মুঠোফোনে জানতে পারি মা ও নানি খুন হয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘আমার বাবা পাগলপ্রকৃতির মানুষ।’
প্রতিবেশী খাদিজা বেগম ও কামরুল ইসলাম বলেন, ‘এসকান্দার মাঝেমধ্যেই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে উত্তেজিত হয়ে পড়েন।’
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন বলেন, এসকান্দার স্ত্রী ও শাশুড়িকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। ওসি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে এসকান্দার বলেছেন, তিনি প্রথমে স্ত্রীকে ঘর থেকে ডেকে বাইরে নিয়ে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। এরপর মেয়ে ডেকেছে—এ কথা বলে শাশুড়িকে ঘরের বাইরে নিয়ে তাঁকেও কুপিয়ে হত্যা করেন।
ওসি এনায়েত হোসেন জানান, ইসকান্দারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহূত রক্তমাখা দা উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি জানান, এসকান্দারের আরেক ছেলে রুবেল তাঁর বাবাকে একমাত্র আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন।

No comments

Powered by Blogger.