প্রতারণার মামলায় প্রতারণার অভিযোগ! by কবির হোসেন
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার নাকোল গ্রামের গোলাম সরোয়ার শহরে এসে তো হকচকিত। তাঁর করা প্রতারণা মামলার সাজা পাওয়া আসামির ছবি-পোস্টার বিভিন্ন জায়গায়। পোস্টারে লেখা, আইনজীবী সমিতি আজ (৩১ ডিসেম্বর) তাঁকে গুণীজন হিসেবে সংবর্ধনা দিচ্ছে।
সংবর্ধনাস্থলে গিয়ে সরোয়ার দেখলেন, আসামি আলী আজম বাবলা সামনের কাতারে বসে আছেন।
গোলাম সরোয়ার ২০০৫ সালে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মাগুরা নালিশি আদালতে আলী আজমের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ২০০৬ সালের ৫ ডিসেম্বর বিচারক শিবানী ভট্টাচার্য আসামির অনুপস্থিতিতে তাঁকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেন।
স্থানীয় সূত্র ও বাদীপক্ষ জানায়, ২০০০ সালের শেষ দিকে আলী আজম বাবলা মাগুরায় পালাডা নামের একটি এনজিও খোলেন। অনেকের মতো গোলাম সরোয়ারও বেশি লাভের প্রলোভনে ওই এনজিওতে এক লাখ টাকা জমা রাখেন। একপর্যায়ে পালাডার কার্যক্রম গুটিয়ে আলী আজম বাবলা শহর ছেড়ে পালিয়ে যান।
পলাতক অবস্থায় সাজা হওয়ার পাঁচ বছর পর গত বছর ২০ সেপ্টেম্বর আসামি মাগুরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম কামরুন্নাহার বেগমের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন। আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠান। দুই দিন পর ২২ সেপ্টেম্বর আসামি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন। আদালত শুনানি শেষে ২৭ সেপ্টেম্বর তাঁকে জামিন দেন।
বাদীর আইনজীবী আবদুর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, আইন অনুযায়ী সাজা পাওয়া আসামি এত দিন পর আত্মসমর্পণ করলে জামিন পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু জজ আদালত আসামিকে জামিনে মুক্তি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো, আসামি ২২ সেপ্টেম্বর জামিনের আবেদন করেছেন, শুনানির পর ২৭ সেপ্টেম্বর জামিন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা বাদীর শুনানির নোটিশ পাই ৯ অক্টোবর। সব হয়েছে গোপনে।’
বাদীপক্ষ অভিযোগ করেছে, তারা খোঁজখবর করে জানতে পেরেছে, এই মামলায় যে ব্যক্তি কারাগারে ছিলেন, তিনি মূল আসামি আলী আজম বাবলা নন।
মাগুরা কেন্দ্রীয় কারাগারের কারাধ্যক্ষ (জেলার) মাসুদুর রহমান এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, গত ২০ সেপ্টেম্বর ২০১১ আলী আজম বাবলা, পিতা-শফীউদ্দিন (শফী দারোগা), গ্রাম-তারাউজিয়াল, শ্রীপুর, মাগুরা নামের একজন আসামি কারাগারে আসেন। আসামির নথির ক্রমিক নম্বর-১৮১৯/১১ এবং আসামি নম্বর-২৩৯৫/এ। মামলা নম্বর সিআর-১৩/২০০৫। কারাগারে আসার এক সপ্তাহ পর গত ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি কয়েদি হিসেবে জামিনে মুক্তি পেয়ে চলে যান। তাঁর দুই বছর তিন মাসের জেল হয়েছিল।
তথ্যানুসন্ধানে দেখা যায়, মামলার অভিযোগ, বাদী-আসামি, শাস্তি ও নাম-পরিচয় সবকিছুর মিল থাকলেও কারাগারে আটক ব্যক্তির চেহারার সঙ্গে আসামি আলী আজমের চেহারার মিল নেই। কারাগারের নথিতে আটক ব্যক্তির উচ্চতা লেখা পাঁচ ফুট সাড়ে আট ইঞ্চি। মুখাকৃতি লম্বাটে। পাতলা গড়ন, গোঁফ আছে।
আর প্রকৃত আসামি আলী আজম বাবলার উচ্চতা পাঁচ ফুট তিন অথবা চার ইঞ্চি। মুখমণ্ডল অনেকটা গোলাকার। গোঁফও নেই।
এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কারাধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আদালত পাঠালে আমরা শুধু আসামিকে নির্দেশনামতো কারাগারে রাখি। আসামি চিহ্নিত করার কোনো সুযোগ আমাদের নেই। তবে যেসব আসামি কারাগারে আসেন, তাঁদের প্রত্যেকের ছবি আমরা তুলে রাখি। ওই ছবিসহ আমরা তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং এ সংক্রান্ত কিছু তথ্য খাতায় সংরক্ষণ করি।’
গত ৩১ ডিসেম্বর আইনজীবী সমিতির সংবর্ধনার পর এ মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে আলী আজম বাবলা প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মাগুরায় ওই ধরনের কোনো মামলা নেই।’
তবে মামলার বাদী গোলাম সরোয়ার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাগুরা জেলা আইনজীবী সমিতি যাঁকে গুণীজন হিসেবে সংবর্ধনা দিয়েছে, তিনিই পালাডা এনজিওর পরিচালক আলী আজম বাবলা। আমি তাঁর বিরুদ্ধেই মামলা করেছিলাম।’
মামলার নথিতে দেখা যায়, আলী আজম বাবলার প্রধান আইনজীবী ছিলেন অজয় কুমার বিশ্বাস। তাঁকে সহযোগিতা করেন বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস। জামিননামায় স্বাক্ষর করেছেন বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস।
কিন্তু আলী আজম বাবলার পক্ষে আইনজীবী থাকার কথা অস্বীকার করেন অজয় কুমার। তিনি বলেন, ‘আমি আলী আজম বাবলাকে চিনিও না। ওই দিনই (সংবর্ধনার দিন) প্রথম দেখলাম।’
জামিননামায় স্বাক্ষরকারী আইনজীবী বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘আমি তাঁর আইনজীবী নই। সাধারণত কেউ জামিন ধরলে একজন আইনজীবীর সঙ্গে দু-তিনজন আইনজীবী থাকেন। মূলত আলী আজম বাবলার আইনজীবী অজয় কুমার বিশ্বাস। সাধারণত একজন আইনজীবী জামিন করালে তিনি উপস্থিত না থাকলে তাঁর মহুরি অন্যদের দিয়ে জামিননামায় সই করিয়ে নেন। আমিও তা-ই করেছি। কিন্তু জামিনসহ সবকিছু অজয়দা করেছেন।’
আলী আজম বাবলা ওশান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। গত ৩১ ডিসেম্বর তাঁকে গুণীজন হিসেবে সংবর্ধনা দেয় মাগুরা জেলা আইনজীবী সমিতি। আইনজীবী সমিতিকে তিনি ২০ লাখ টাকা দিয়েছেন।
গোলাম সরোয়ার ২০০৫ সালে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মাগুরা নালিশি আদালতে আলী আজমের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ২০০৬ সালের ৫ ডিসেম্বর বিচারক শিবানী ভট্টাচার্য আসামির অনুপস্থিতিতে তাঁকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেন।
স্থানীয় সূত্র ও বাদীপক্ষ জানায়, ২০০০ সালের শেষ দিকে আলী আজম বাবলা মাগুরায় পালাডা নামের একটি এনজিও খোলেন। অনেকের মতো গোলাম সরোয়ারও বেশি লাভের প্রলোভনে ওই এনজিওতে এক লাখ টাকা জমা রাখেন। একপর্যায়ে পালাডার কার্যক্রম গুটিয়ে আলী আজম বাবলা শহর ছেড়ে পালিয়ে যান।
পলাতক অবস্থায় সাজা হওয়ার পাঁচ বছর পর গত বছর ২০ সেপ্টেম্বর আসামি মাগুরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম কামরুন্নাহার বেগমের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন। আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠান। দুই দিন পর ২২ সেপ্টেম্বর আসামি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন। আদালত শুনানি শেষে ২৭ সেপ্টেম্বর তাঁকে জামিন দেন।
বাদীর আইনজীবী আবদুর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, আইন অনুযায়ী সাজা পাওয়া আসামি এত দিন পর আত্মসমর্পণ করলে জামিন পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু জজ আদালত আসামিকে জামিনে মুক্তি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো, আসামি ২২ সেপ্টেম্বর জামিনের আবেদন করেছেন, শুনানির পর ২৭ সেপ্টেম্বর জামিন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা বাদীর শুনানির নোটিশ পাই ৯ অক্টোবর। সব হয়েছে গোপনে।’
বাদীপক্ষ অভিযোগ করেছে, তারা খোঁজখবর করে জানতে পেরেছে, এই মামলায় যে ব্যক্তি কারাগারে ছিলেন, তিনি মূল আসামি আলী আজম বাবলা নন।
মাগুরা কেন্দ্রীয় কারাগারের কারাধ্যক্ষ (জেলার) মাসুদুর রহমান এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, গত ২০ সেপ্টেম্বর ২০১১ আলী আজম বাবলা, পিতা-শফীউদ্দিন (শফী দারোগা), গ্রাম-তারাউজিয়াল, শ্রীপুর, মাগুরা নামের একজন আসামি কারাগারে আসেন। আসামির নথির ক্রমিক নম্বর-১৮১৯/১১ এবং আসামি নম্বর-২৩৯৫/এ। মামলা নম্বর সিআর-১৩/২০০৫। কারাগারে আসার এক সপ্তাহ পর গত ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি কয়েদি হিসেবে জামিনে মুক্তি পেয়ে চলে যান। তাঁর দুই বছর তিন মাসের জেল হয়েছিল।
তথ্যানুসন্ধানে দেখা যায়, মামলার অভিযোগ, বাদী-আসামি, শাস্তি ও নাম-পরিচয় সবকিছুর মিল থাকলেও কারাগারে আটক ব্যক্তির চেহারার সঙ্গে আসামি আলী আজমের চেহারার মিল নেই। কারাগারের নথিতে আটক ব্যক্তির উচ্চতা লেখা পাঁচ ফুট সাড়ে আট ইঞ্চি। মুখাকৃতি লম্বাটে। পাতলা গড়ন, গোঁফ আছে।
আর প্রকৃত আসামি আলী আজম বাবলার উচ্চতা পাঁচ ফুট তিন অথবা চার ইঞ্চি। মুখমণ্ডল অনেকটা গোলাকার। গোঁফও নেই।
এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কারাধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আদালত পাঠালে আমরা শুধু আসামিকে নির্দেশনামতো কারাগারে রাখি। আসামি চিহ্নিত করার কোনো সুযোগ আমাদের নেই। তবে যেসব আসামি কারাগারে আসেন, তাঁদের প্রত্যেকের ছবি আমরা তুলে রাখি। ওই ছবিসহ আমরা তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং এ সংক্রান্ত কিছু তথ্য খাতায় সংরক্ষণ করি।’
গত ৩১ ডিসেম্বর আইনজীবী সমিতির সংবর্ধনার পর এ মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে আলী আজম বাবলা প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মাগুরায় ওই ধরনের কোনো মামলা নেই।’
তবে মামলার বাদী গোলাম সরোয়ার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাগুরা জেলা আইনজীবী সমিতি যাঁকে গুণীজন হিসেবে সংবর্ধনা দিয়েছে, তিনিই পালাডা এনজিওর পরিচালক আলী আজম বাবলা। আমি তাঁর বিরুদ্ধেই মামলা করেছিলাম।’
মামলার নথিতে দেখা যায়, আলী আজম বাবলার প্রধান আইনজীবী ছিলেন অজয় কুমার বিশ্বাস। তাঁকে সহযোগিতা করেন বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস। জামিননামায় স্বাক্ষর করেছেন বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস।
কিন্তু আলী আজম বাবলার পক্ষে আইনজীবী থাকার কথা অস্বীকার করেন অজয় কুমার। তিনি বলেন, ‘আমি আলী আজম বাবলাকে চিনিও না। ওই দিনই (সংবর্ধনার দিন) প্রথম দেখলাম।’
জামিননামায় স্বাক্ষরকারী আইনজীবী বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘আমি তাঁর আইনজীবী নই। সাধারণত কেউ জামিন ধরলে একজন আইনজীবীর সঙ্গে দু-তিনজন আইনজীবী থাকেন। মূলত আলী আজম বাবলার আইনজীবী অজয় কুমার বিশ্বাস। সাধারণত একজন আইনজীবী জামিন করালে তিনি উপস্থিত না থাকলে তাঁর মহুরি অন্যদের দিয়ে জামিননামায় সই করিয়ে নেন। আমিও তা-ই করেছি। কিন্তু জামিনসহ সবকিছু অজয়দা করেছেন।’
আলী আজম বাবলা ওশান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। গত ৩১ ডিসেম্বর তাঁকে গুণীজন হিসেবে সংবর্ধনা দেয় মাগুরা জেলা আইনজীবী সমিতি। আইনজীবী সমিতিকে তিনি ২০ লাখ টাকা দিয়েছেন।
No comments