সমালোচনা নয়, নিজের স্ট্যাটাস বাড়ান-ইয়াহু!! দাম বাড়ছে!

আহ! নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। ভাবতে ভালোই লাগছে যে এখন থেকে আমরাও আর কম দামি জিনিস খাব না। বিশ্বের অন্য ধনী নাগরিকদের মতো আমরাও এখন দামি দামি খাবার খাব। আহা, কী আনন্দ আকাশে বাতাসে! আসলে আবহমানকাল থেকেই দামি জিনিসের প্রতি বাঙালির দুর্বলতা ছিল।


কোরবানির সময় এলাকার সবচেয়ে দামি গরু ও গরুর মালিক দুজনকেই বুক ফুলিয়ে হাঁটতে দেখা যায়। আশপাশের মানুষও জুলজুল চোখে তাকিয়ে থাকে প্রকৃত গরুর দিকে। কম দামি গাড়ি কিনলে অধিকাংশ মানুষই অকারণে জোরে হর্ন বাজায় না। পাত্তা দেয় না প্রতিবেশীরাও। ঈদের সময় কে কত দামি পোশাক পরল, তা নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলে। দামি মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে ঘোরাও একটা সৌভাগ্যের ব্যাপার। এরই ধারাবাহিকতায় তেল, চিনি, ছোলা, পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে দামি জিনিসের প্রতি মানুষের এই ঐতিহাসিক আগ্রহটাকে আরও বেগবান করেছে। কী সৌভাগ্য আমাদের! আমরা এখন আর ১০-২০ টাকার কম দামি চিনি খাই না। আমরা এখন ৭৫ টাকা দামের চিনি খাই। কয়জন পারে? শুধু চিনি নয়, আমরা বেশ দামি তেলও খাই। মোটকথা, আমরা কম দামি কোনো জিনিস খাই না। চাল, ডাল, তেল, চিনি থেকে শুরু করে ললিপপ—আমাদের সব খাবারই দামি। আর তা ছাড়া ভালো জিনিসের দাম তো একটু বেশি হবেই। তবে ভালো কাজে বাধা আসবেই। এখানেও এসেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করছে। কোনো মানে হয়? আরে ভাই, ব্যাপারটা একটু বোঝার চেষ্টা করেন। নিয়মিত দামি খাবার খেলে সমাজে আপনাদের স্ট্যাটাসটা কত উঁচুতে উঠে যাবে, তা কেন ভাবছেন না? আর কিছু লোক আছে, যারা শুধু শুধু সরকারকে দোষ দিচ্ছে। অথচ সরকারের সফলতাটা ধরতেই পারছে না। নীরবতায় ব্যবসায়ীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কী সুন্দর দাম বাড়িয়ে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর করছে! একটা দেশের ভাবমূর্তি যে কতটা উজ্জ্বল হতে পারে, তা আমরা দারুণভাবে বুঝতে পারছি। অথচ তাদের শুনতে হচ্ছে সমালোচনা। খুবই আফসোসের ব্যাপার। তাই, আসুন, আমরা সরকারের সমালোচনা না করে দামি দামি জিনিস খাই। তারপর দেখি, কোন ব্যাটা বলে আমরা গরিব দেশ!

No comments

Powered by Blogger.