অভিযোগ করেও কাজ হচ্ছে না-শতবর্ষী পুকুর ভরাট করছে প্রভাবশালীরা by প্রণব বল
চট্টগ্রামের চান্দগাঁও সমশেরপাড়া এলাকায় পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে শত বছরের পুরোনো একটি পুকুর ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে। এর আয়তন প্রায় এক একর। স্থানীয় প্রভাবশালী এক ব্যক্তি মাটি ও বালু ফেলে বড় পুকুর নামে পরিচিত এই জলাশয়ের একাংশ ভরাট করছেন।
এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ দিলেও মাটি ভরাট থামছে না।
অনুসন্ধান করে জানা গেছে, স্থানীয় বাসিন্দা মো. হাছান জলাশয়টি ভরাট করছেন। তাঁর হয়ে কাজ তদারক করছেন পুকুরসংলগ্ন মিল্লাত আলী মসজিদের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আজিম। এর আগে পশ্চিম পাড়ের পানির অংশ ঘেঁষে কয়েকটি পাকা দোকানও নির্মাণ করা হয়।
মো. হাছান পুকুরের একাংশ ভরাট করার কথা স্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এর আগে আমরা আমাদের অংশে দোকান নির্মাণ করেছিলাম। এখন পাড় ভেঙে দোকানগুলো পুকুরের ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে। তাই কিছু পানির অংশ ভরাট করছি।’ পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো অনুমতি তিনি নেননি বলেও স্বীকার করেন।
হাজি মিল্লাত আলী মসজিদের সামনে ৯৮ শতক আয়তনের পুকুরটির অবস্থান। স্থানীয় ১০-১২ জন বাসিন্দা পুকুরটির মালিকানা অংশীদার। পুকুরটি হাজার হাজার লোক ব্যবহার করে। মসজিদে আসা মুসল্লিদের ওজুর জন্যও এটি ব্যবহূত হয়। কিছুদিন ধরে পুকুরের পশ্চিম দিকে পানির অংশের প্রায় ১০ শতকজুড়ে বাঁশের ঘের দেওয়া হয়। এরপর ঘের দেওয়া অংশে মাটি ফেলা হয়।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ট্রাক ও ঠেলাগাড়িতে ভরে মাটি ও বালু এনে পুকুরের পানিতে ফেলা হচ্ছে। রাতে ও দিনে ভরাটের কাজ চলছে।
জানা গেছে, পুকুরের কয়েকজন অংশীদার ১১ ফেব্রুয়ারি ভরাটের কাজ বন্ধ রাখার জন্য পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন।
বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক গোলাম মোহাম্মদ ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি আমাদের এক পরিদর্শককে দায়িত্ব দিয়েছি তদন্ত করে দেখতে।’
নিজেকে পুকুরের অংশীদার দাবি করে মো. ফজলুল করিম নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, যাঁরা ভরাটকাজের ব্যাপারে অভিযোগপত্র দিয়েছেন, তিনিও তাঁদের একজন। তিনি বলেন, ‘স্থানীয় তিন-চারজন এই পুকুর ভরাটের সঙ্গে জড়িত। মো. আজিম নামে এখানকার মসজিদ কমিটির একজনও জড়িত। আমরা বাধা দিলেও তাঁরা আমাদের বাধা শুনছে না।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে হাজি মিল্লাত আলী মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. আজিম বলেন, ‘এটা মূলত ভরাট করছেন হাজি চান মিয়া সওদাগরের নাতি হাসান সওদাগর। ৪৮ গন্ডা আয়তনের পুকুরটিতে তাঁদের ১২ গন্ডা রয়েছে। তিনি আমাদের মসজিদে কিছু জায়গা দান করেছেন। তাই আমাকে মাটি ফেলার কাজটি একটু দেখাশোনা করতে বলেছেন।’ তিনি বলেন, এর আগে পুকুরের উত্তর ও দক্ষিণ অংশে ভরাট করে কয়েকজন ঘরবাড়ি তুলেছেন। সবাই যখন ভরাট করেছেন, তাই উনিও (হাসান) তাঁর কিছু অংশ ভরাট করছেন। এতে তিনি দোষের কিছু দেখছেন না।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুকুরটি শত বছরের পুরোনো। মসজিদের মুসল্লিদের অজুর একমাত্র ভরসা এই পুকুর। এ ছাড়া প্রতিদিন গোসল ও গৃহস্থালির পানিও এখান থেকে ব্যবহার করা হয়।
ভরাটকাজের ব্যাপারে অভিযোগ করার পর পুলিশ একবার গিয়ে কাজ বন্ধ রাখতে বললেও তারা ফিরে এলে পুনরায় ভরাট চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রউফ বলেন, ‘পুনরায় ভরাটের অভিযোগ এলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’
পরিবেশ আইনে যা রয়েছে: বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) আইন, ২০১০ সালের ৬-এর ঙ ধারায় বলা হয়েছে, ‘আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, জলাধার হিসাবে চিহ্নিত জায়গা ভরাট বা অন্য কোনভাবে শ্রেণী পরিবর্তন করা যাইবে না। তবে শর্ত থাকে যে, অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থে অধিদপ্তরের ছাড়পত্র গ্রহণক্রমে জলাধার-সম্পর্কিত বাধানিষেধ শিথিল করা যাইতে পারে।’
এই ধারার দণ্ডাদেশে বলা হয়েছে, ‘প্রথম অপরাধের ক্ষেত্রে অনধিক ২ (দুই) বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ২ (দুই) লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হইবে।’
অনুসন্ধান করে জানা গেছে, স্থানীয় বাসিন্দা মো. হাছান জলাশয়টি ভরাট করছেন। তাঁর হয়ে কাজ তদারক করছেন পুকুরসংলগ্ন মিল্লাত আলী মসজিদের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আজিম। এর আগে পশ্চিম পাড়ের পানির অংশ ঘেঁষে কয়েকটি পাকা দোকানও নির্মাণ করা হয়।
মো. হাছান পুকুরের একাংশ ভরাট করার কথা স্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এর আগে আমরা আমাদের অংশে দোকান নির্মাণ করেছিলাম। এখন পাড় ভেঙে দোকানগুলো পুকুরের ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে। তাই কিছু পানির অংশ ভরাট করছি।’ পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো অনুমতি তিনি নেননি বলেও স্বীকার করেন।
হাজি মিল্লাত আলী মসজিদের সামনে ৯৮ শতক আয়তনের পুকুরটির অবস্থান। স্থানীয় ১০-১২ জন বাসিন্দা পুকুরটির মালিকানা অংশীদার। পুকুরটি হাজার হাজার লোক ব্যবহার করে। মসজিদে আসা মুসল্লিদের ওজুর জন্যও এটি ব্যবহূত হয়। কিছুদিন ধরে পুকুরের পশ্চিম দিকে পানির অংশের প্রায় ১০ শতকজুড়ে বাঁশের ঘের দেওয়া হয়। এরপর ঘের দেওয়া অংশে মাটি ফেলা হয়।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ট্রাক ও ঠেলাগাড়িতে ভরে মাটি ও বালু এনে পুকুরের পানিতে ফেলা হচ্ছে। রাতে ও দিনে ভরাটের কাজ চলছে।
জানা গেছে, পুকুরের কয়েকজন অংশীদার ১১ ফেব্রুয়ারি ভরাটের কাজ বন্ধ রাখার জন্য পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন।
বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক গোলাম মোহাম্মদ ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি আমাদের এক পরিদর্শককে দায়িত্ব দিয়েছি তদন্ত করে দেখতে।’
নিজেকে পুকুরের অংশীদার দাবি করে মো. ফজলুল করিম নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, যাঁরা ভরাটকাজের ব্যাপারে অভিযোগপত্র দিয়েছেন, তিনিও তাঁদের একজন। তিনি বলেন, ‘স্থানীয় তিন-চারজন এই পুকুর ভরাটের সঙ্গে জড়িত। মো. আজিম নামে এখানকার মসজিদ কমিটির একজনও জড়িত। আমরা বাধা দিলেও তাঁরা আমাদের বাধা শুনছে না।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে হাজি মিল্লাত আলী মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. আজিম বলেন, ‘এটা মূলত ভরাট করছেন হাজি চান মিয়া সওদাগরের নাতি হাসান সওদাগর। ৪৮ গন্ডা আয়তনের পুকুরটিতে তাঁদের ১২ গন্ডা রয়েছে। তিনি আমাদের মসজিদে কিছু জায়গা দান করেছেন। তাই আমাকে মাটি ফেলার কাজটি একটু দেখাশোনা করতে বলেছেন।’ তিনি বলেন, এর আগে পুকুরের উত্তর ও দক্ষিণ অংশে ভরাট করে কয়েকজন ঘরবাড়ি তুলেছেন। সবাই যখন ভরাট করেছেন, তাই উনিও (হাসান) তাঁর কিছু অংশ ভরাট করছেন। এতে তিনি দোষের কিছু দেখছেন না।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুকুরটি শত বছরের পুরোনো। মসজিদের মুসল্লিদের অজুর একমাত্র ভরসা এই পুকুর। এ ছাড়া প্রতিদিন গোসল ও গৃহস্থালির পানিও এখান থেকে ব্যবহার করা হয়।
ভরাটকাজের ব্যাপারে অভিযোগ করার পর পুলিশ একবার গিয়ে কাজ বন্ধ রাখতে বললেও তারা ফিরে এলে পুনরায় ভরাট চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রউফ বলেন, ‘পুনরায় ভরাটের অভিযোগ এলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’
পরিবেশ আইনে যা রয়েছে: বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) আইন, ২০১০ সালের ৬-এর ঙ ধারায় বলা হয়েছে, ‘আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, জলাধার হিসাবে চিহ্নিত জায়গা ভরাট বা অন্য কোনভাবে শ্রেণী পরিবর্তন করা যাইবে না। তবে শর্ত থাকে যে, অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থে অধিদপ্তরের ছাড়পত্র গ্রহণক্রমে জলাধার-সম্পর্কিত বাধানিষেধ শিথিল করা যাইতে পারে।’
এই ধারার দণ্ডাদেশে বলা হয়েছে, ‘প্রথম অপরাধের ক্ষেত্রে অনধিক ২ (দুই) বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ২ (দুই) লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হইবে।’
No comments