সন্তানের অপেক্ষায় মা, স্বামীর পথ চেয়ে স্ত্রী

পরিবারের পুরুষ সদস্যরা প্রবাসী হয়েছেন। সংসারে সচ্ছলতা এসেছে, পাল্টে গেছে জীবনযাত্রা। কিন্তু এর মধ্যেও শূন্যতার হাহাকার। ছেলেকে কাছে পেতে মায়ের আকুতি—‘অনেক তো হলো এবার দেশে আয়।’ কিংবা প্রিয়তমা স্ত্রী পথ চেয়ে থাকেন কখন ফিরবেন স্বামী। স্ত্রীর চাওয়া সন্তান পৃথিবীর আলো দেখার মুহূর্তে তাঁর পাশে থাকুক মানুষটি।


পূর্ব সরফভাটার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব ফাতেমা বেগম নয় সন্তানের জননী। তাঁর চতুর্থ সন্তান মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান চৌধুরী থাকেন ওমানে। অন্য সন্তানেরা সব দেশে থাকলেও ফাতেমা বেগম চান তাঁর এ ছেলেটিও দেশে ফিরে আসুক। তিনি বলেন, ‘১৯৮৩ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে ছেলেটা বিদেশ গেল। তখন প্রতি সপ্তাহে চিঠি পাঠাত। কখনো পাঠাতো রেকর্ড করা অডিও ক্যাসেট। ক্যাসেটে সারাদিনের সব কথা আমাকে বলত। প্রথম নয় বছর একবারও দেশে আসেনি। অনেক বছর তো হলো। এবার ও পাকাপাকি চলে আসুক, এটাই চাই।’
মধ্যম সরফভাটার আবুল মনসুর সংযুক্ত আরব আমিরাতে থাকেন। এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক তিনি। তাঁর স্ত্রী রেবেকা সুলতানা বলেন, মেয়ে নওশীনের (৯) জন্মের সময় তিনি ছিলেন বিদেশে। মেয়েটার মুখ দেখেন অনেক দিন পর। তখনকার অনুভূতি বলে বোঝাতে পারব না। কিন্তু বিদেশেই তো তাঁর চাকরি। পরিবারের সব কিছু নির্ভরশীল এই চাকরির উপর। মেয়ের জন্মের সময় থাকতে না পেরে তিনিও কষ্ট পেয়েছিলেন।
আক্ষেপ আছেন ফরিদা বেগমেরও। চার ছেলেই প্রবাসী। তিনি বলেন, বড় ছেলেটা ১৭ বছরে একবারও দেশে আসেনি। শুধু পরিবারের কিভাবে ভালোভাবে চলবে তা নিয়ে ব্যস্ত। তিন ভাইকে নিজের কাছে নিয়ে গেছে। আমাকেও বেড়াতে নিতে চায়। কিন্তু ছেলেটা দেশে আসে না।

No comments

Powered by Blogger.