বিশ্ববিদ্যালয়-চাকরির বয়সসীমা বাড়ানো কেন?
সরকার রীতিমতো সংসদে আইন করে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছরে উন্নীত করেছে। উল্লেখ্য, বর্তমান আইনটির আগে কেবল ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৬৫ বছর ছিল।
এবার সমতা এনে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য এটা নিশ্চিত করা হলো। আমরা তখনো এভাবে ঢালাও বয়স বৃদ্ধির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি। বর্তমান লেখায় আমাদের যুক্তিগুলো আরেকবার তুলে ধরতে চাই। ‘যাহা ৫২ তাহা ৫৩’—বাংলা প্রবচনের এই কথাটি মানা গেলেও, প্রিয় পাঠক, ‘যাহা ৬০ তাহাই ৬৫’—এ কথাটি আমরা আগেও মানতে পারিনি, এখনো ঠিক মানতে পারছি না। আমরা মনে করি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি আধুনিক ও নিয়ত পরিবর্তনশীল প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোয় শিক্ষকদের চাকরির বয়স ৬০ থেকে বাড়িয়ে ৬৫ বছর করার উদ্যোগ কোনো অবস্থাতেই সমর্থনযোগ্য হতে পারে না।
বছর চারেক আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সমীপে উপস্থাপনের জন্য একটি দরখাস্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান চালানো হয়েছিল। দরখাস্তের বিষয়: ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি’। ওই দরখাস্তে শিক্ষকদের চাকরির বয়সসীমা ৬৫ থেকে আরেক দফা বাড়িয়ে ৬৭ বছরে উন্নীত করার কথা বলা হয়েছিল। স্বাক্ষর সংগ্রহকারী তাঁদের ব্যক্তিগত লাভালাভের কথা মনে রেখেই এই উদ্যোগে শামিল হয়েছিলেন। দরখাস্তে বয়সসীমা বৃদ্ধির একমাত্র যুক্তি হিসেবে তাঁরা বলেছিলেন, ওই সময়ের সরকার সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্টের বিচারপতিদের চাকরির বয়সসীমা যেহেতু ৬৫ থেকে ৬৭ বছরে উন্নীত করা হয়েছে, সেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্যও সেই বয়স বরাদ্দ (বৃদ্ধি) করতে হবে। সারা দেশের মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ সরকারের ওই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তখন প্রশ্ন তুলেছিলেন; বলেছিলেন, নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে পছন্দনীয় ব্যক্তির মনোনয়ন পাওয়ার সুবিধার্থে তত্কালীন চারদলীয় সরকার বিচারপতিদের চাকরির বয়সসীমা ৬৫ থেকে ৬৭ বছর করেছিল। উল্লিখিত বয়সসীমা বৃদ্ধি নিয়ে যে ‘সন্দেহ ও প্রশ্ন’ তৈরি হয়েছিল সে সময়, তা একটি তিক্ত রাজনৈতিক বিষয়ে পরিণত হয়েছিল এবং এর ফলটা শেষ পর্যন্ত ভালো হয়নি। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বিতর্কিত ওই উদাহরণ টেনে এনে আবেদন-নিবেদনের চেষ্টাকে আমাদের কাছে সে সময়ই নিম্নরুচির মনে হয়েছিল এবং এর প্রতিবাদে প্রথম আলোতেই যৌথ নিবন্ধ লিখে এর প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম।
আমরা মনে করি, এখন যে আইন করে (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক অবসর গ্রহণ বিশেষ বিধান আইন-২০১২) সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য অবসরের বয়স ৬৫ বছরকেই বৈধতা দেওয়া হলো, আমরা নিশ্চিত, কয়েক বছরের মধ্যেই এটাকে ৬৭ বছরে উন্নীত করার তোড়জোড় শুরু হবে; এবং এর কিছু আলামত ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। বলা হয়ে থাকে, শিক্ষকদের চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি করলে তরুণ শিক্ষকদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা বা বাধা সৃষ্টি হবে না। কারণ, বর্তমানে প্রচলিত পদ-পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে শিক্ষকেরা পদোন্নতি পেয়ে শিক্ষকতায় সর্বোচ্চ পদ লাভ করতে/পৌঁছাতে পারেন। এখানে দ্বিতীয় বাক্যের বক্তব্য মিথ্যে না হলেও, প্রিয় পাঠক, প্রথম বাক্যের তথ্যাবলি একেবারেই ঠিক নয়। কেননা, প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক হতে বিজ্ঞাপিত পদে তিন বছর, পদ-পুনর্বিন্যাসে চার বছর; সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক হতে বিজ্ঞাপিত পদে সাত বছর, পদ-পুনর্বিন্যাসে ১৪ বছর; সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক হতে বিজ্ঞাপিত পদে ১২ বছর, পদ-পুনর্বিন্যাসে ২৫ বছর চাকরিতে থাকার বিধান আছে। অতএব, বোঝাই যাচ্ছে, পদ-পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে উচ্চতর পদে যেতে হলে একজন তরুণ শিক্ষককে বিজ্ঞাপিত পদের জন্য চাকরির তুলনায় অনেক বেশি বছর চাকরিতে থাকতে হবে। কিন্তু এহো বাহ্য।
ভেতরের খবর জানতে নির্মোহ ভঙ্গি নিয়ে আমাদের তদবির-তালাশ করতে হবে যে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরির বয়সসীমা ৬০ থেকে ৬৫ বছরে উন্নীত করার প্রয়োজনটা আসলে কী? বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উত্কর্ষ যখন সারা বিশ্বে, বিদেশ থেকে ডিগ্রি নিয়ে, আধুনিক জ্ঞানচর্চায় ধীমান হয়ে নতুন প্রজন্মের বিচরণ যখন চারদিকে, তখন একটি নির্দিষ্ট বয়সে তরুণদের জায়গা করে দেওয়ার মধ্যেই তো সুখ, ঔদার্যের প্রকাশ। বিজ্ঞান, মানবিক আর সমাজবিজ্ঞানে একের পর এক আসছে নতুন সব চ্যালেঞ্জ। জ্ঞানকাণ্ড এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে দ্রুত বিকশিত আর পরিবর্তিত হচ্ছে। যুগান্তরের এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মূল ভূমিকা রাখতে পারে কেবল তরুণেরাই। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞানমনস্ক অসাম্প্রদায়িক আর আধুনিক জ্ঞানসম্পন্ন তরুণদের প্রবেশ বাধামুক্ত রাখতে হবে।
যে কোন ক্ষেত্রে চাকরির বয়স সীমা বাড়ানোর ব্যাপারে চারটি বিষয় বিবেচনায় নেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি: এক. বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু; দুই. দেশে বিদ্যমান অসহনীয় বেকারত্ব, যেখানে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যাই বেশি; তিন. চরম আবাসন সংকট এবং চার. খরচ-উপযোগিতা। এই বিষয়গুলো বিবেচনায় আনতে বলছি, কারণ যেভাবে চাকরির বয়সসীমা ঢালাওভাবে বাড়ানো হচ্ছে, বলার অপেক্ষা রাখে না, দেশের সব পর্যায়ের কর্মচারী-কর্মকর্তাদের জন্য দফায় দফায় তা বাড়ানোর দাবি উঠবে। দেশের প্রাইমারি থেকে কলেজ পর্যন্ত সব শিক্ষক, সব কর্মচারী-কর্মকর্তা যদি এই দাবি করেন, তাহলে তাকে ঠেকানো যাবে কি? এতে সরকারি কোষাগারের বরাদ্দ কি কুলোবে? নাগরিক জীবন আর আবাসন সমস্যা কি আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠবে না?
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ক্ষেত্রে বলা যায়, যিনি সব ক্ষেত্রে স্মরণীয় অবদান রেখেছেন, ছাত্রদের কল্যাণে সময় ও মেধা দিতে প্রস্তুত এবং সুস্থ আছেন, তাঁকে বয়সের সময়সীমা উন্মুক্ত রেখে নির্দিষ্ট বিভাগে যুক্ত করা হোক। এ জন্য অবশ্যই দরকার প্রতিটি বিভাগে সুপারনিউমেরারি ও অনারারি প্রফেসরের পদ বৃদ্ধি করা। পদগুলো বাড়ানো গেলে প্রতিটি বিভাগের প্রজ্ঞাবান অধ্যাপকদের দীর্ঘদিন বিভাগে সংযুক্ত রাখা সহজ হবে। কিন্তু গণহারে সবার জন্য চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হলে, আমরা মনে করি, তা ধার না বাড়িয়ে কেবল ভারই বাড়াবে!
লেখকেরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।
বছর চারেক আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সমীপে উপস্থাপনের জন্য একটি দরখাস্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান চালানো হয়েছিল। দরখাস্তের বিষয়: ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি’। ওই দরখাস্তে শিক্ষকদের চাকরির বয়সসীমা ৬৫ থেকে আরেক দফা বাড়িয়ে ৬৭ বছরে উন্নীত করার কথা বলা হয়েছিল। স্বাক্ষর সংগ্রহকারী তাঁদের ব্যক্তিগত লাভালাভের কথা মনে রেখেই এই উদ্যোগে শামিল হয়েছিলেন। দরখাস্তে বয়সসীমা বৃদ্ধির একমাত্র যুক্তি হিসেবে তাঁরা বলেছিলেন, ওই সময়ের সরকার সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্টের বিচারপতিদের চাকরির বয়সসীমা যেহেতু ৬৫ থেকে ৬৭ বছরে উন্নীত করা হয়েছে, সেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্যও সেই বয়স বরাদ্দ (বৃদ্ধি) করতে হবে। সারা দেশের মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ সরকারের ওই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তখন প্রশ্ন তুলেছিলেন; বলেছিলেন, নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে পছন্দনীয় ব্যক্তির মনোনয়ন পাওয়ার সুবিধার্থে তত্কালীন চারদলীয় সরকার বিচারপতিদের চাকরির বয়সসীমা ৬৫ থেকে ৬৭ বছর করেছিল। উল্লিখিত বয়সসীমা বৃদ্ধি নিয়ে যে ‘সন্দেহ ও প্রশ্ন’ তৈরি হয়েছিল সে সময়, তা একটি তিক্ত রাজনৈতিক বিষয়ে পরিণত হয়েছিল এবং এর ফলটা শেষ পর্যন্ত ভালো হয়নি। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বিতর্কিত ওই উদাহরণ টেনে এনে আবেদন-নিবেদনের চেষ্টাকে আমাদের কাছে সে সময়ই নিম্নরুচির মনে হয়েছিল এবং এর প্রতিবাদে প্রথম আলোতেই যৌথ নিবন্ধ লিখে এর প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম।
আমরা মনে করি, এখন যে আইন করে (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক অবসর গ্রহণ বিশেষ বিধান আইন-২০১২) সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য অবসরের বয়স ৬৫ বছরকেই বৈধতা দেওয়া হলো, আমরা নিশ্চিত, কয়েক বছরের মধ্যেই এটাকে ৬৭ বছরে উন্নীত করার তোড়জোড় শুরু হবে; এবং এর কিছু আলামত ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। বলা হয়ে থাকে, শিক্ষকদের চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি করলে তরুণ শিক্ষকদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা বা বাধা সৃষ্টি হবে না। কারণ, বর্তমানে প্রচলিত পদ-পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে শিক্ষকেরা পদোন্নতি পেয়ে শিক্ষকতায় সর্বোচ্চ পদ লাভ করতে/পৌঁছাতে পারেন। এখানে দ্বিতীয় বাক্যের বক্তব্য মিথ্যে না হলেও, প্রিয় পাঠক, প্রথম বাক্যের তথ্যাবলি একেবারেই ঠিক নয়। কেননা, প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক হতে বিজ্ঞাপিত পদে তিন বছর, পদ-পুনর্বিন্যাসে চার বছর; সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক হতে বিজ্ঞাপিত পদে সাত বছর, পদ-পুনর্বিন্যাসে ১৪ বছর; সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক হতে বিজ্ঞাপিত পদে ১২ বছর, পদ-পুনর্বিন্যাসে ২৫ বছর চাকরিতে থাকার বিধান আছে। অতএব, বোঝাই যাচ্ছে, পদ-পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে উচ্চতর পদে যেতে হলে একজন তরুণ শিক্ষককে বিজ্ঞাপিত পদের জন্য চাকরির তুলনায় অনেক বেশি বছর চাকরিতে থাকতে হবে। কিন্তু এহো বাহ্য।
ভেতরের খবর জানতে নির্মোহ ভঙ্গি নিয়ে আমাদের তদবির-তালাশ করতে হবে যে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরির বয়সসীমা ৬০ থেকে ৬৫ বছরে উন্নীত করার প্রয়োজনটা আসলে কী? বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উত্কর্ষ যখন সারা বিশ্বে, বিদেশ থেকে ডিগ্রি নিয়ে, আধুনিক জ্ঞানচর্চায় ধীমান হয়ে নতুন প্রজন্মের বিচরণ যখন চারদিকে, তখন একটি নির্দিষ্ট বয়সে তরুণদের জায়গা করে দেওয়ার মধ্যেই তো সুখ, ঔদার্যের প্রকাশ। বিজ্ঞান, মানবিক আর সমাজবিজ্ঞানে একের পর এক আসছে নতুন সব চ্যালেঞ্জ। জ্ঞানকাণ্ড এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে দ্রুত বিকশিত আর পরিবর্তিত হচ্ছে। যুগান্তরের এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মূল ভূমিকা রাখতে পারে কেবল তরুণেরাই। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞানমনস্ক অসাম্প্রদায়িক আর আধুনিক জ্ঞানসম্পন্ন তরুণদের প্রবেশ বাধামুক্ত রাখতে হবে।
যে কোন ক্ষেত্রে চাকরির বয়স সীমা বাড়ানোর ব্যাপারে চারটি বিষয় বিবেচনায় নেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি: এক. বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু; দুই. দেশে বিদ্যমান অসহনীয় বেকারত্ব, যেখানে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যাই বেশি; তিন. চরম আবাসন সংকট এবং চার. খরচ-উপযোগিতা। এই বিষয়গুলো বিবেচনায় আনতে বলছি, কারণ যেভাবে চাকরির বয়সসীমা ঢালাওভাবে বাড়ানো হচ্ছে, বলার অপেক্ষা রাখে না, দেশের সব পর্যায়ের কর্মচারী-কর্মকর্তাদের জন্য দফায় দফায় তা বাড়ানোর দাবি উঠবে। দেশের প্রাইমারি থেকে কলেজ পর্যন্ত সব শিক্ষক, সব কর্মচারী-কর্মকর্তা যদি এই দাবি করেন, তাহলে তাকে ঠেকানো যাবে কি? এতে সরকারি কোষাগারের বরাদ্দ কি কুলোবে? নাগরিক জীবন আর আবাসন সমস্যা কি আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠবে না?
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ক্ষেত্রে বলা যায়, যিনি সব ক্ষেত্রে স্মরণীয় অবদান রেখেছেন, ছাত্রদের কল্যাণে সময় ও মেধা দিতে প্রস্তুত এবং সুস্থ আছেন, তাঁকে বয়সের সময়সীমা উন্মুক্ত রেখে নির্দিষ্ট বিভাগে যুক্ত করা হোক। এ জন্য অবশ্যই দরকার প্রতিটি বিভাগে সুপারনিউমেরারি ও অনারারি প্রফেসরের পদ বৃদ্ধি করা। পদগুলো বাড়ানো গেলে প্রতিটি বিভাগের প্রজ্ঞাবান অধ্যাপকদের দীর্ঘদিন বিভাগে সংযুক্ত রাখা সহজ হবে। কিন্তু গণহারে সবার জন্য চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হলে, আমরা মনে করি, তা ধার না বাড়িয়ে কেবল ভারই বাড়াবে!
লেখকেরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।
No comments