নিপীড়ক স্বামীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত-শিকলে বাঁধা গৃহবধূ

চার সন্তানের জননী আরজু আকতার লতা। পায়ে শিকল বেঁধে অন্ধকার ঘরে বন্দী করে রাখা হয়েছিল তাঁকে। এক দিন-দুই দিন নয়, দীর্ঘ ছয় মাস। সন্তানদেরও যেতে দেওয়া হতো না মায়ের কাছে। শুধু তা-ই নয়, তাঁকে অর্ধাহারে-অনাহারে রাখা হতো, নির্যাতন করা হতো।


কী তাঁর অপরাধ? তাঁর সঙ্গে এমন অমানবিক আচরণ করত কে? সোমবারের প্রথম আলোর শেষ পাতায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বলছে, নীলফামারীর ডোমার উপজেলার চিলাহাটির প্রগতিপাড়া গ্রামের কবিরাজ জামিল হোসেন হলেন নির্যাতনকারী। আরজু আকতার লতা তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের জননী। লতার অপরাধ, স্বামী জামিল হোসেনের দ্বিতীয় বিয়েতে তিনি সম্মতি দেননি। তাই তাঁকে অন্ধকার ঘরে শিকলে বেঁধে আটকে রেখে দিনের পর দিন নির্যাতন করেছেন স্বামী আর সতিন।
পুলিশ নির্যাতনকারী জামিল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে, কিন্তু গা ঢাকা দিয়েছেন আরেক নির্যাতনকারী তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী। পুলিশ আরজু আকতার লতাকে উদ্ধার করেছে শিকলে বাঁধা অবস্থায়। নির্যাতনে আর অর্ধাহারে-অনাহারে তাঁর শারীরিক ও মানসিক অবস্থা এতই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে যে তাঁকে স্থানীয় একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানকার চিকিৎ সকেরা বলেছেন, আরজু আকতার পুষ্টিহীনতায় ভুগছেন।
জামিল হোসেন বলার চেষ্টা করছেন, আরজু আকতারের মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটেছে। তাই তাঁকে শিকলে বেঁধে রাখতেন তিনি। কিন্তু চিকিৎ সকেরা আরজু আকতারের মধ্যে তেমন কোনো লক্ষণ দেখতে পাননি। জামিল হোসেন দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি দেওয়ার জন্য আরজু আকতারকে একটি কাগজে স্বাক্ষর দেওয়ার জন্য চাপ দিতেন বলে আরজু আকতার অভিযোগ করেছেন। তিনি স্বাক্ষর না করায় তাঁর ওপর নির্যাতন চালানো হতো। জামিলের অপরাধ দুই রকমের: এক. প্রথম স্ত্রী আরজু আকতারের সম্মতি ছাড়াই দ্বিতীয়বার বিয়ে করা। দুই. আরজু আকতারকে পশুর মতো শিকলে বেঁধে রেখে দিনের পর দিন নির্যাতন করা। জামিল হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা উচিত, যেন এ ধরনের বর্বর অপরাধ করার সাহস ভবিষ্যতে আর কেউ না পায়।

No comments

Powered by Blogger.