তিন দিনে দুই হাজার গাছ কর্তন-উজাড় হচ্ছে ইনানী সৈকত by আব্দুল কুদ্দুস
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার ইনানী সমুদ্রসৈকতসংলগ্ন ঝাউবাগানের গাছ কেটে নিচ্ছে দুর্বৃত্তরা। রাতে দল বেঁধে গাছ কেটে ভোরেই সেগুলো বাগান থেকে পাচার করা হচ্ছে। গত তিন দিনেই ইনানী সৈকতের সোনারপাড়া, পূর্ব রেজু ও রেজুখাল এলাকার দুই হাজারের বেশি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।
গতকাল শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত একদল সাংবাদিক ও পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতা সরেজমিনে এসব তথ্য পান। গতকাল বেলা ১১টার দিকে উখিয়ার সোনারপাড়া সৈকতে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি ঝাউবাগানের কেটে ফেলা গাছের গোড়া তুলছেন। এই ঝাউবাগানে প্রায় দেড় হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।
কাটা গাছের গোড়া তুলতে আসা স্থানীয় সোনারপাড়ার আবুল কাশেম (৪৫) জানান, তিনি গোড়া তুলে জ্বালানি হিসেবে বিক্রি করেন। একটি গোড়া তুলে গড়ে পাওয়া যায় ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। একটি গোড়ার বিনিময়ে বন বিভাগের কর্মীদের ৮০ টাকা করে দিতে হয়। প্রতিদিন ১৫ থেকে ১৬ জন এখানে গাছের গোড়া তোলেন।
সোনারপাড়ার প্রায় ৫০০ গজ উত্তরে ঝাউবাগানের ভেতরেও কেটে ফেলা শত শত গাছের গোড়া দেখা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন চিংড়িপোনা উত্পাদনকারী হ্যাচারির মালিক জানান, প্রতিদিন সন্ধ্যার পর ২০ থেকে ৩০ জন লোক ঝাউবাগানের ভেতরে ঢুকে গাছ কাটা শুরু করে। ভোরের দিকে ঠেলাগাড়িতে কিংবা খোলা জিপগাড়িতে করে কাটা গাছ নিয়ে যায়। গত তিন দিনেই দুই হাজারের বেশি ঝাউগাছ কেটে ফেলা হয়েছে। গাছ কাটার বিষয়টি বন বিভাগের ইনানী কার্যালয়ের রেঞ্জ কর্মকর্তাকে জানানো হলেও তিনি নীরব ভূমিকা পালন করছেন।
ঝাউগাছ কাটা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রেঞ্জ কর্মকর্তা সুনীল দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, লোকবলসংকটের কারণে এত বড় ঝাউবাগান রক্ষা করা যাচ্ছে না। প্রায় ১৫ একরের ঝাউবাগান রক্ষার দায়িত্ব পালন করেন মাত্র দুজন বনপ্রহরী। ২০০১ সালে বিশাল এই ঝাউবাগানে দুই লাখ গাছ লাগানো হলেও এখন অর্ধেকও নেই। বেশির ভাগ গাছ সমুদ্রের ঢেউয়ের আঘাতে উপড়ে পড়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
সোনারপাড়া সৈকতের এক কিলোমিটার বাগানের দুই হাজার ঝাউগাছ কেটে ফেলা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সুনীল দেবনাথ উল্টো প্রশ্ন করে বলেন, ‘এসব গাছ কখন কেটেছে? ঘটনাস্থলে গিয়ে অবস্থা দেখে পরে জানাব।’ বিকেলে এই প্রতিনিধির কাছে তিনি ফোন করে জানান, ‘শনিবার ভোরে কাটা হয়েছে তিনটি গাছ। বাকি কয়েক শ গাছ কয়েক দিন আগে কাটা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা করা হবে।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, সৈকতের হিমছড়ি, ইনানী, সোনারপাড়া, বড়ছড়াসহ বিভিন্ন স্থানে ঝাউবাগান দখল করে তৈরি করা হয়েছে পাঁচ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা ও ঝুপড়িঘর।
সোনারপাড়া ঝাউবাগানের ভেতরে ঝুপড়িঘর বেঁধে বসবাস করছেন উখিয়ার বালুখালীর দিনমজুর তৈয়ুম গোলাম (৫৬)। তাঁর ঘরের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে কাটা হয়েছে পাঁচ শতাধিক ঝাউগাছ। তৈয়ুম জানান, গত শুক্রবার রাতে ১০ থেকে ১৫ জন লোক বাগানে ঢুকে এসব ঝাউগাছ কেটে ফেলে। ভোরের দিকে ঠেলাগাড়িতে করে নিয়ে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন ব্যক্তি অভিযোগ করেন, ঝাউগাছ কাটার সময় বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেন সুনীল দেবনাথ।
পরিবেশবাদী সংগঠন কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল জানান, কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক থেকে টেকনাফ পর্যন্ত প্রায় ১০০ কিলোমিটার সৈকতসংলগ্ন ঝাউবাগান থেকে গত এক মাসে ১৫ হাজারের বেশি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ফলে সমুদ্রের জোয়ারের ধাক্কায় উপকূল বিলীন হচ্ছে। কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের কলাতলী, বড়ছড়া, আদর্শগ্রাম, হিমছড়িসহ আটটি স্থানে ভাঙন ধরেছে।
কক্সবাজার নাগরিক সমাজের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, এভাবে ঝাউগাছ নিধন হলে উপকূল অরক্ষিত হয়ে পড়বে।
কক্সবাজার (দক্ষিণ) বনের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) বিপুলকৃষ্ণ দাশ বলেন, গাছ চুরি ঠেকাতে বন বিভাগের নিয়মিত টহল অব্যাহত রয়েছে। তার পরও কিছু স্থানে গাছ চুরি হচ্ছে।
কাটা গাছের গোড়া তুলতে আসা স্থানীয় সোনারপাড়ার আবুল কাশেম (৪৫) জানান, তিনি গোড়া তুলে জ্বালানি হিসেবে বিক্রি করেন। একটি গোড়া তুলে গড়ে পাওয়া যায় ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। একটি গোড়ার বিনিময়ে বন বিভাগের কর্মীদের ৮০ টাকা করে দিতে হয়। প্রতিদিন ১৫ থেকে ১৬ জন এখানে গাছের গোড়া তোলেন।
সোনারপাড়ার প্রায় ৫০০ গজ উত্তরে ঝাউবাগানের ভেতরেও কেটে ফেলা শত শত গাছের গোড়া দেখা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন চিংড়িপোনা উত্পাদনকারী হ্যাচারির মালিক জানান, প্রতিদিন সন্ধ্যার পর ২০ থেকে ৩০ জন লোক ঝাউবাগানের ভেতরে ঢুকে গাছ কাটা শুরু করে। ভোরের দিকে ঠেলাগাড়িতে কিংবা খোলা জিপগাড়িতে করে কাটা গাছ নিয়ে যায়। গত তিন দিনেই দুই হাজারের বেশি ঝাউগাছ কেটে ফেলা হয়েছে। গাছ কাটার বিষয়টি বন বিভাগের ইনানী কার্যালয়ের রেঞ্জ কর্মকর্তাকে জানানো হলেও তিনি নীরব ভূমিকা পালন করছেন।
ঝাউগাছ কাটা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রেঞ্জ কর্মকর্তা সুনীল দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, লোকবলসংকটের কারণে এত বড় ঝাউবাগান রক্ষা করা যাচ্ছে না। প্রায় ১৫ একরের ঝাউবাগান রক্ষার দায়িত্ব পালন করেন মাত্র দুজন বনপ্রহরী। ২০০১ সালে বিশাল এই ঝাউবাগানে দুই লাখ গাছ লাগানো হলেও এখন অর্ধেকও নেই। বেশির ভাগ গাছ সমুদ্রের ঢেউয়ের আঘাতে উপড়ে পড়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
সোনারপাড়া সৈকতের এক কিলোমিটার বাগানের দুই হাজার ঝাউগাছ কেটে ফেলা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সুনীল দেবনাথ উল্টো প্রশ্ন করে বলেন, ‘এসব গাছ কখন কেটেছে? ঘটনাস্থলে গিয়ে অবস্থা দেখে পরে জানাব।’ বিকেলে এই প্রতিনিধির কাছে তিনি ফোন করে জানান, ‘শনিবার ভোরে কাটা হয়েছে তিনটি গাছ। বাকি কয়েক শ গাছ কয়েক দিন আগে কাটা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা করা হবে।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, সৈকতের হিমছড়ি, ইনানী, সোনারপাড়া, বড়ছড়াসহ বিভিন্ন স্থানে ঝাউবাগান দখল করে তৈরি করা হয়েছে পাঁচ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা ও ঝুপড়িঘর।
সোনারপাড়া ঝাউবাগানের ভেতরে ঝুপড়িঘর বেঁধে বসবাস করছেন উখিয়ার বালুখালীর দিনমজুর তৈয়ুম গোলাম (৫৬)। তাঁর ঘরের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে কাটা হয়েছে পাঁচ শতাধিক ঝাউগাছ। তৈয়ুম জানান, গত শুক্রবার রাতে ১০ থেকে ১৫ জন লোক বাগানে ঢুকে এসব ঝাউগাছ কেটে ফেলে। ভোরের দিকে ঠেলাগাড়িতে করে নিয়ে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন ব্যক্তি অভিযোগ করেন, ঝাউগাছ কাটার সময় বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেন সুনীল দেবনাথ।
পরিবেশবাদী সংগঠন কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল জানান, কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক থেকে টেকনাফ পর্যন্ত প্রায় ১০০ কিলোমিটার সৈকতসংলগ্ন ঝাউবাগান থেকে গত এক মাসে ১৫ হাজারের বেশি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ফলে সমুদ্রের জোয়ারের ধাক্কায় উপকূল বিলীন হচ্ছে। কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের কলাতলী, বড়ছড়া, আদর্শগ্রাম, হিমছড়িসহ আটটি স্থানে ভাঙন ধরেছে।
কক্সবাজার নাগরিক সমাজের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, এভাবে ঝাউগাছ নিধন হলে উপকূল অরক্ষিত হয়ে পড়বে।
কক্সবাজার (দক্ষিণ) বনের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) বিপুলকৃষ্ণ দাশ বলেন, গাছ চুরি ঠেকাতে বন বিভাগের নিয়মিত টহল অব্যাহত রয়েছে। তার পরও কিছু স্থানে গাছ চুরি হচ্ছে।
No comments