ঘোলা পানি-দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া
( ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সফরে প্রতিশ্রুত তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি না হওয়ায় কেবল বাংলাদেশে নয়, ভারতের গণমাধ্যমও ব্যাপক সমালোচনা করেছে। এখানে ভারতের ইংরেজি ও বাংলা ভাষার কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় পত্রিকার সম্পাদকীয় মন্তব্যের সারাংশ তুলে ধরা হলো )
ভারত যখন তার পূর্বদিকের প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ককে নতুন পর্যায়ে নেওয়ার চেষ্টারত, তখন মনমোহন সিংয়ের হাইপ্রোফাইল বাংলাদেশ সফরে এই অশোভন বিতর্কটা না হলে ভালো হতো। একেবারে শেষ মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সফর থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করলেন। বললেন, যে পরিমাণ পানি দিতে তিনি রাজি ছিলেন, তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি তার চেয়ে ঢের বেশি পানি দেবে। তাঁর ধারণা, এতে উত্তরবঙ্গের স্বার্থ ব্যাহত হবে। তৃণমূলের ১৯ জন সাংসদ। গুরুত্বপূর্ণ এই মিত্রকে সরকার দূরে ঠেলে দিতে চায় না। তাই পিছিয়ে এসেছে। সরকার বলেছে, সব পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য হলেই কেবল এ চুক্তি সম্পাদন করবে ভারত। মমতা হয়তো এতে শান্ত হবেন। কিন্তু সীমান্তের ওপারে এটা কেমনভাবে গৃহীত হবে?
এই বিবাদের ফলে এখন অন্তত পথভ্রষ্ট হয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি। এটাই মনমোহনের সফরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হওয়ার কথা ছিল। চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হলে এই অঞ্চলে আন্তসংযোগ ও সমৃদ্ধি জোরদার হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। পাশাপাশি দীর্ঘদিনের দ্বিপক্ষীয় একটি ইস্যুরও স্থায়ী সমাধান হতো। স্বাভাবিকভাবে তাই মনমোহনের কাছে আশ্বাস চাওয়া হয়েছে যে, এ বিলম্ব সাময়িক। এমনকি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মিজারুল কায়েস ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনারের কাছে চুক্তি স্থগিতের ব্যাখ্যা চেয়েছেন। শেষ মুহূর্তের বাগড়া শেখ হাসিনাকেই বিব্রত করেছে। তাঁর যুদ্ধংদেহী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সামনে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের মধ্য থেকে উল্লেখযোগ্য প্রাপ্তি তুলে ধরার প্রয়োজন রয়েছে।
মনমোহনের সফরের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত তাত্পর্য বিবেচনায় ইউপিএ সরকার ও তৃণমূল উভয়েরই উচিত ছিল কূটনৈতিক ঢেউ তোলার আশঙ্কা আছে এমন কোনো প্রকাশ্য বিভক্তি এড়ানোর চেষ্টা চালানো। অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল আলোচনার টেবিলে: উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ট্রানজিট-সুবিধা, মালামাল ও জনগণের আসা-যাওয়া সহজ করা, বাণিজ্যিক সংহতি ও বিনিয়োগ প্রবাহ। কিছু কিউসেক পানি নিয়ে বিবাদ করে মমতা বড় পরিসরকে আত্মস্থ করায় তাঁর সামর্থ্যকেই প্রশ্নের মুখে ফেললেন। তবে এ জন্য কেন্দ্রের দুর্বল যোগাযোগ-কৌশল পার পাবে না।
নিজ রাজ্যের স্বার্থ সবার ওপর স্থান দেওয়ার ক্ষেত্রে মমতার অবস্থান অন্য মুখ্যমন্ত্রীদের থেকে আলাদা নয়। ভারতের ফেডারেল বৈশিষ্ট্যের কারণে সম্পদ বণ্টন-সম্পর্কিত চুক্তির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের বড় মতৈক্য প্রয়োজন। মমতা যদি অভিযোগ করেন, তিস্তা চুক্তি চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার সময় তাঁকে দেখানো হয়নি, তাহলে এর ব্যাখ্যা কেন্দ্রকে দিতে হবে। এ হাঙ্গামার ছাপ কংগ্রেসের ওপর খুব খারাপ হবে। কেন্দ্রীয় সরকার থেকে রাজ্যের সঙ্গে এবং ক্ষুদ্রতর জোটগত মিত্রদের সঙ্গে লেনদেনে কংগ্রেসের রেকর্ড নিয়ে সন্দেহ আছে। উভয় পক্ষকে এখন মতভিন্নতা পাশে সরিয়ে রাখতে হবে, যাতে যত দ্রুত সম্ভব এ চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে। মমতার রাজ্যের কৌশলগত অবস্থানের কারণে তিনি এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতাকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ককে পশ্চিমবঙ্গের জন্য লাভজনক বানিয়ে নিতে পারেন।
এই বিবাদের ফলে এখন অন্তত পথভ্রষ্ট হয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি। এটাই মনমোহনের সফরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হওয়ার কথা ছিল। চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হলে এই অঞ্চলে আন্তসংযোগ ও সমৃদ্ধি জোরদার হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। পাশাপাশি দীর্ঘদিনের দ্বিপক্ষীয় একটি ইস্যুরও স্থায়ী সমাধান হতো। স্বাভাবিকভাবে তাই মনমোহনের কাছে আশ্বাস চাওয়া হয়েছে যে, এ বিলম্ব সাময়িক। এমনকি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মিজারুল কায়েস ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনারের কাছে চুক্তি স্থগিতের ব্যাখ্যা চেয়েছেন। শেষ মুহূর্তের বাগড়া শেখ হাসিনাকেই বিব্রত করেছে। তাঁর যুদ্ধংদেহী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সামনে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের মধ্য থেকে উল্লেখযোগ্য প্রাপ্তি তুলে ধরার প্রয়োজন রয়েছে।
মনমোহনের সফরের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত তাত্পর্য বিবেচনায় ইউপিএ সরকার ও তৃণমূল উভয়েরই উচিত ছিল কূটনৈতিক ঢেউ তোলার আশঙ্কা আছে এমন কোনো প্রকাশ্য বিভক্তি এড়ানোর চেষ্টা চালানো। অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল আলোচনার টেবিলে: উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ট্রানজিট-সুবিধা, মালামাল ও জনগণের আসা-যাওয়া সহজ করা, বাণিজ্যিক সংহতি ও বিনিয়োগ প্রবাহ। কিছু কিউসেক পানি নিয়ে বিবাদ করে মমতা বড় পরিসরকে আত্মস্থ করায় তাঁর সামর্থ্যকেই প্রশ্নের মুখে ফেললেন। তবে এ জন্য কেন্দ্রের দুর্বল যোগাযোগ-কৌশল পার পাবে না।
নিজ রাজ্যের স্বার্থ সবার ওপর স্থান দেওয়ার ক্ষেত্রে মমতার অবস্থান অন্য মুখ্যমন্ত্রীদের থেকে আলাদা নয়। ভারতের ফেডারেল বৈশিষ্ট্যের কারণে সম্পদ বণ্টন-সম্পর্কিত চুক্তির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের বড় মতৈক্য প্রয়োজন। মমতা যদি অভিযোগ করেন, তিস্তা চুক্তি চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার সময় তাঁকে দেখানো হয়নি, তাহলে এর ব্যাখ্যা কেন্দ্রকে দিতে হবে। এ হাঙ্গামার ছাপ কংগ্রেসের ওপর খুব খারাপ হবে। কেন্দ্রীয় সরকার থেকে রাজ্যের সঙ্গে এবং ক্ষুদ্রতর জোটগত মিত্রদের সঙ্গে লেনদেনে কংগ্রেসের রেকর্ড নিয়ে সন্দেহ আছে। উভয় পক্ষকে এখন মতভিন্নতা পাশে সরিয়ে রাখতে হবে, যাতে যত দ্রুত সম্ভব এ চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে। মমতার রাজ্যের কৌশলগত অবস্থানের কারণে তিনি এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতাকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ককে পশ্চিমবঙ্গের জন্য লাভজনক বানিয়ে নিতে পারেন।
No comments