নারী নির্যাতন-পথ শ্বাপদসংকুল কেন?
যশোর, কলাপাড়া, রাজশাহী, বরিশালে সংঘটিত নারী নির্যাতনের ঘটনা দেশে অব্যাহতভাবে ঘটে চলা নৃশংসতা-বর্বরতারই প্রকট রূপ। যশোরে গৃহবধূ খোশনূর জাহান পিংকি মাদকাসক্ত স্বামীর অমানুষিক নির্যাতনে শরীরে বীভৎস ক্ষত নিয়ে যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় যৌতুকের দাবিতে আরেক গৃহবধূকে পিটিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। রাজশাহীর পুঠিয়ায় দুর্বৃত্তদের নিক্ষিপ্ত এসিডে ঝলসে গেছে আরেক গৃহবধূর শরীর। যশোরের কেশবপুরে শরবতের সঙ্গে চেতনানাশক খাইয়ে বাড়ির সবাইকে অজ্ঞান করে এক কলেজছাত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে। প্রতিটি ঘটনায়ই সামাজিক অবক্ষয় আর ক্ষয়িষ্ণু মূল্যবোধের সাক্ষ্য মেলে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কালের কণ্ঠসহ সহযোগী দৈনিকগুলোত নারী নির্যাতনের এসব উদ্বেগজনক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। পাশাপাশি এও দেখা যাচ্ছে, ঘরে-বাইরে সমানতালে নারীরা নির্যাতনের শিকার হয়ে চলেছে এবং এসব অনাকাঙ্ক্ষিত, অনভিপ্রেত ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে।
দেশে নারী নির্যাতন রোধে কঠোর আইন বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও নারী নির্যাতনের মাত্রা হ্রাস পাচ্ছে না। এর পশ্চাতের কারণ বহুবিধ। প্রথমত, যথাযথ আইনি প্রতিকারের ক্ষেত্রটি খুব বিবর্ণ; দ্বিতীয়ত, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবনতির শিকার হচ্ছে নারী-শিশুরাও; তৃতীয়ত, পাশব শক্তিকে প্রতিহত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে সামাজিক শক্তির রুখে না দাঁড়ানো ইত্যাদি। পারিবারিক নির্যাতনের মূল কারণ যৌতুককেন্দ্রিক। এক শ্রেণীর লোভাতুর স্বামী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা যূথবদ্ধভাবে গৃহবধূর ওপর যৌতুকের জন্য চালাচ্ছে নির্যাতন। এর ফলে অনেক জীবনপ্রদীপ নিভে যাচ্ছে, কেউ কেউ বিপন্ন-বিপর্যস্ত জীবন কাটাচ্ছে। তা ছাড়া অপহরণ, খুন, ধর্ষণসহ সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ড নারীর ওপর ক্রমাগত কালো ছায়ার যে বিস্তার ঘটিয়ে চলেছে, তা সভ্যতা-মানবতার কলঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে। এর পাশাপাশি ঘটছে ইভ টিজিং এবং নারী পাচারের ঘটনাও। এ সব কিছু বিবেচনায় রেখে সরকার ও প্রশাসনের তরফে যে কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপের প্রত্যাশা জনমনে বিরাজমান, সে ক্ষেত্রে আশানুরূপ তেমন কিছু পরিলক্ষিত হচ্ছে না। অপশক্তি এর ফলে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে। পদে পদে যেন নারীর পথ শ্বাপদসংকুল।
নারী নির্যাতনের যে ক্রমবর্ধমান উন্মত্ততায় সমাজদেহ থরথর করে কাঁপছে, এর কঠোর প্রতিকার জরুরি। প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এ ব্যাপারে জবাবদিহির আওতায় আনাও জরুরি। একই সঙ্গে দরকার সম্মিলিতভাবে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা। মনে রাখা দরকার, সময় সমাজকে এগিয়ে দেয়। আর সমাজের হাত ধরেই এগিয়ে যায় দেশ। কিন্তু বহুমাত্রিক নারী নির্যাতনের মতো সামাজিক ব্যাধিতে আক্রান্ত এই সমাজ দিনের পর দিন যাচ্ছে অধঃপতনের দিকে। একটি ব্যাধির সংক্রমণ কেমন করে সমাজের মূল্যবোধ থেকে শুরু করে সব ধরনের বন্ধন নষ্ট করে দিতে পারে, নারী নির্যাতন এর অন্যতম প্রমাণ। সমাজে ব্যক্তির অবস্থান, পারিবারিক সুন্দর স্থিতিশীলতা এবং সখ্য বন্ধনের তন্ত্রীগুলো যাদের কারণে ছিঁড়ে যাচ্ছে, তাদের প্রতি কোনো রকম অনুকম্পা আর নয়, আমরা চাই তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক দণ্ড নিশ্চিত করা হোক। লিঙ্গ পরিচয় বড় নয়; নারীও মানুষ_এটাই সবচেয়ে বড় কথা। মানুষের পথ শ্বাপদসংকুল থাকলে চলবে না। এটি নিশ্চিত করার দায় রাষ্ট্রশক্তির।
দেশে নারী নির্যাতন রোধে কঠোর আইন বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও নারী নির্যাতনের মাত্রা হ্রাস পাচ্ছে না। এর পশ্চাতের কারণ বহুবিধ। প্রথমত, যথাযথ আইনি প্রতিকারের ক্ষেত্রটি খুব বিবর্ণ; দ্বিতীয়ত, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবনতির শিকার হচ্ছে নারী-শিশুরাও; তৃতীয়ত, পাশব শক্তিকে প্রতিহত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে সামাজিক শক্তির রুখে না দাঁড়ানো ইত্যাদি। পারিবারিক নির্যাতনের মূল কারণ যৌতুককেন্দ্রিক। এক শ্রেণীর লোভাতুর স্বামী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা যূথবদ্ধভাবে গৃহবধূর ওপর যৌতুকের জন্য চালাচ্ছে নির্যাতন। এর ফলে অনেক জীবনপ্রদীপ নিভে যাচ্ছে, কেউ কেউ বিপন্ন-বিপর্যস্ত জীবন কাটাচ্ছে। তা ছাড়া অপহরণ, খুন, ধর্ষণসহ সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ড নারীর ওপর ক্রমাগত কালো ছায়ার যে বিস্তার ঘটিয়ে চলেছে, তা সভ্যতা-মানবতার কলঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে। এর পাশাপাশি ঘটছে ইভ টিজিং এবং নারী পাচারের ঘটনাও। এ সব কিছু বিবেচনায় রেখে সরকার ও প্রশাসনের তরফে যে কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপের প্রত্যাশা জনমনে বিরাজমান, সে ক্ষেত্রে আশানুরূপ তেমন কিছু পরিলক্ষিত হচ্ছে না। অপশক্তি এর ফলে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে। পদে পদে যেন নারীর পথ শ্বাপদসংকুল।
নারী নির্যাতনের যে ক্রমবর্ধমান উন্মত্ততায় সমাজদেহ থরথর করে কাঁপছে, এর কঠোর প্রতিকার জরুরি। প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এ ব্যাপারে জবাবদিহির আওতায় আনাও জরুরি। একই সঙ্গে দরকার সম্মিলিতভাবে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা। মনে রাখা দরকার, সময় সমাজকে এগিয়ে দেয়। আর সমাজের হাত ধরেই এগিয়ে যায় দেশ। কিন্তু বহুমাত্রিক নারী নির্যাতনের মতো সামাজিক ব্যাধিতে আক্রান্ত এই সমাজ দিনের পর দিন যাচ্ছে অধঃপতনের দিকে। একটি ব্যাধির সংক্রমণ কেমন করে সমাজের মূল্যবোধ থেকে শুরু করে সব ধরনের বন্ধন নষ্ট করে দিতে পারে, নারী নির্যাতন এর অন্যতম প্রমাণ। সমাজে ব্যক্তির অবস্থান, পারিবারিক সুন্দর স্থিতিশীলতা এবং সখ্য বন্ধনের তন্ত্রীগুলো যাদের কারণে ছিঁড়ে যাচ্ছে, তাদের প্রতি কোনো রকম অনুকম্পা আর নয়, আমরা চাই তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক দণ্ড নিশ্চিত করা হোক। লিঙ্গ পরিচয় বড় নয়; নারীও মানুষ_এটাই সবচেয়ে বড় কথা। মানুষের পথ শ্বাপদসংকুল থাকলে চলবে না। এটি নিশ্চিত করার দায় রাষ্ট্রশক্তির।
No comments