নিশ্চিহ্ন হচ্ছে ঐতিহাসিক স্থাপনা-অবিলম্বে ঐতিহ্য রক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হোক
কবি জীবনানন্দ দাশ, সুকান্ত ভট্টাচার্য, বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, জ্যোতিঃপদার্থবিদ মেঘনাদ সাহা, বিপ্লবী সূর্য সেন, প্রীতিলতা ওয়াদ্দাদার, কালজয়ী সংগীতজ্ঞ ওস্তাদ আলাউদ্দিন খান, শচীনদেব বর্মণসহ আরো অনেক সূর্যসন্তানের জন্ম দিয়েছে বাংলাদেশের মাটি। তাঁদের নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি।
আমাদের পরিচয় ও ঐতিহ্যকে শানিত করতে পারি। তাঁদের স্মৃতিগুলো সংরক্ষণের মাধ্যমে আমরা বিদেশিদের দেখাতে পারি যে আমরা ঐতিহ্যহীন জাতি নই। আমাদের নতুন প্রজন্মও সেগুলো দেখে উজ্জীবিত হতে পারে। কিন্তু আমাদের সীমাহীন দুর্ভাগ্য, ইতিমধ্যে আমরা তাঁদের ভিটেমাটি, স্মৃতিচিহ্ন সব প্রায় মুছে ফেলেছি। শুধু তা-ই নয়, ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোও ধ্বংস করে দিচ্ছি। যেমন_কিছুদিন আগে মহাস্থানগড়ের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থাপনায়ও দখলদাররা হামলে পড়েছিল। উপযুক্ত সংরক্ষণ প্রচেষ্টা না থাকায় অনেক নিদর্শন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ঐতিহাসিক নিদর্শন দিনাজপুরের মাতাসাগর সরকারিভাবে লিজ দেওয়া হয়েছিল এবং সে লিজ সম্পত্তি পরে আবার বিক্রিও করে দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে ঐতিহ্য ধ্বংসের এ ধরনের তৎপরতা ক্ষমাহীন অপরাধের সমতুল্য।
অবশ্য, পাশাপাশি জনসচেতনতা থাকলে যে ঐতিহ্য সংরক্ষণ সম্ভব, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে সত্যজিৎ রায় ও তাঁর পূর্বপুরুষদের ভিটাবাড়ি, সহায়-সম্পদ সংরক্ষণ ও সেখানে পর্যটনকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ তার সাক্ষ্য বহন করছে। জনসাধারণের চাপেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ উদ্যোগ গ্রহণ করছে।
বাংলাদেশে ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্তি্বক গুরুত্বসম্পন্ন যে কয়টি স্থান আছে, তার মধ্যে বগুড়ার মহাস্থানগড় অন্যতম। খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে এখানে গড়ে উঠেছিল পুণ্ড্র নগরী। পরবর্তীকালে অনেক সামন্ত রাজা এটিকে তাঁদের রাজধানী হিসেবে ব্যবহার করেছেন। আজ থেকে ৫০০ বছর আগেও এই নগরীর অস্তিত্বের বিবরণ পাওয়া যায়। কালক্রমে এর অধিকাংশ নিদর্শনই মাটির নিচে চাপা পড়ে যায়। যথাযথ খননের মাধ্যমে পুণ্ড্র নগরীর অনেক নিদর্শনই উদ্ধার করা সম্ভব। আর তাই দেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রত্নতাত্তি্বক কার্যক্রম ছাড়া সেখানে সব ধরনের খননকাজ নিষিদ্ধ করেছেন। কিন্তু একটি মহল রাতের আঁধারে খননকাজ চালিয়ে সেখানকার মূল্যবান নিদর্শন ধ্বংস ও পাচারের কাজে নিয়োজিত বলে পত্রপত্রিকার খবরে জানা যায়। জাতি হিসেবে এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার ও দুঃখজনক।
আমরা কেমন জাতি? একের পর এক আমরা আমাদের ঐতিহাসিক নিদর্শন ও পুরাকীর্তিগুলোকে ধ্বংস করে চলেছি! রাষ্ট্রও এ ক্ষেত্রে চরম উদাসীনতার পরিচয় দিয়ে এসেছে। নামমাত্র একটা প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ থাকলেও তাদের লোকবল ও কাজ করার ক্ষমতা প্রায় নেই বললেই চলে। ঐতিহ্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের এ ধরনের উদাসীনতার মূলে রয়েছে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ব্যক্তিদের অজ্ঞতা ও চিত্তের দৈন্য। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। পাশাপাশি দেশের ঐতিহ্য সংরক্ষণে সচেতন জনগোষ্ঠীরও রয়েছে বিরাট ভূমিকা। চোখের সামনে প্রাচীন নিদর্শনের ক্ষতি করতে দেখলেও আমরা অনেক সময়ই চোখ ফিরিয়ে নিই। যথাযথ সংরক্ষণের উদ্যোগ না থাকায় স্বার্থান্বেষী মহল পাহাড়পুর, মহাস্থানগড়, কীর্তিমানদের বসতভিটা, প্রাচীন মসজিদ-মন্দির বা ঐতিহাসিক স্থাপনার জায়গা দখল করে স্থাপনা তৈরি করছে, অথচ কোনো সামাজিক প্রতিরোধ নেই। আমরা আশা করি, বর্তমান সরকার এ ব্যাপারে যথাযথ উদ্যোগ নেবে এবং অবৈধ দখলকারীদের বিচারের মুখোমুখি করবে।
অবশ্য, পাশাপাশি জনসচেতনতা থাকলে যে ঐতিহ্য সংরক্ষণ সম্ভব, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে সত্যজিৎ রায় ও তাঁর পূর্বপুরুষদের ভিটাবাড়ি, সহায়-সম্পদ সংরক্ষণ ও সেখানে পর্যটনকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ তার সাক্ষ্য বহন করছে। জনসাধারণের চাপেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ উদ্যোগ গ্রহণ করছে।
বাংলাদেশে ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্তি্বক গুরুত্বসম্পন্ন যে কয়টি স্থান আছে, তার মধ্যে বগুড়ার মহাস্থানগড় অন্যতম। খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে এখানে গড়ে উঠেছিল পুণ্ড্র নগরী। পরবর্তীকালে অনেক সামন্ত রাজা এটিকে তাঁদের রাজধানী হিসেবে ব্যবহার করেছেন। আজ থেকে ৫০০ বছর আগেও এই নগরীর অস্তিত্বের বিবরণ পাওয়া যায়। কালক্রমে এর অধিকাংশ নিদর্শনই মাটির নিচে চাপা পড়ে যায়। যথাযথ খননের মাধ্যমে পুণ্ড্র নগরীর অনেক নিদর্শনই উদ্ধার করা সম্ভব। আর তাই দেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রত্নতাত্তি্বক কার্যক্রম ছাড়া সেখানে সব ধরনের খননকাজ নিষিদ্ধ করেছেন। কিন্তু একটি মহল রাতের আঁধারে খননকাজ চালিয়ে সেখানকার মূল্যবান নিদর্শন ধ্বংস ও পাচারের কাজে নিয়োজিত বলে পত্রপত্রিকার খবরে জানা যায়। জাতি হিসেবে এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার ও দুঃখজনক।
আমরা কেমন জাতি? একের পর এক আমরা আমাদের ঐতিহাসিক নিদর্শন ও পুরাকীর্তিগুলোকে ধ্বংস করে চলেছি! রাষ্ট্রও এ ক্ষেত্রে চরম উদাসীনতার পরিচয় দিয়ে এসেছে। নামমাত্র একটা প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ থাকলেও তাদের লোকবল ও কাজ করার ক্ষমতা প্রায় নেই বললেই চলে। ঐতিহ্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের এ ধরনের উদাসীনতার মূলে রয়েছে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ব্যক্তিদের অজ্ঞতা ও চিত্তের দৈন্য। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। পাশাপাশি দেশের ঐতিহ্য সংরক্ষণে সচেতন জনগোষ্ঠীরও রয়েছে বিরাট ভূমিকা। চোখের সামনে প্রাচীন নিদর্শনের ক্ষতি করতে দেখলেও আমরা অনেক সময়ই চোখ ফিরিয়ে নিই। যথাযথ সংরক্ষণের উদ্যোগ না থাকায় স্বার্থান্বেষী মহল পাহাড়পুর, মহাস্থানগড়, কীর্তিমানদের বসতভিটা, প্রাচীন মসজিদ-মন্দির বা ঐতিহাসিক স্থাপনার জায়গা দখল করে স্থাপনা তৈরি করছে, অথচ কোনো সামাজিক প্রতিরোধ নেই। আমরা আশা করি, বর্তমান সরকার এ ব্যাপারে যথাযথ উদ্যোগ নেবে এবং অবৈধ দখলকারীদের বিচারের মুখোমুখি করবে।
No comments