ব্রায়ান ওয়াল্শ-মোবাইল ফোন ও ব্রেইন টিউমার বিতর্ক
ক্যান্সারের সবচেয়ে ভয়ানক দিকটি হলো এর রহস্যময়তা। কয়েক হাজার বছর আগে দৃশ্যত এ রোগের কোনো আলামত বা ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি বিকাশমান চিকিৎসাশাস্ত্রে। আমরা এমনটি কোথাও দেখিনি, চিন্তাও করতে পারিনি আমাদের কোষই আমাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে উঠবে।
এমনকি এখন চিকিৎসাশাস্ত্র যখন কিছু কিছু ক্যান্সারের প্রকৃতি উপলব্ধি করতে শুরু করেছে, তখনো এ রোগ উৎপত্তির ধাঁধা থেকে বেরোনো সম্ভব হয়নি। আর এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে মৃত্যুঘাতী ব্রেইন টিউমারের (যা থেকে ক্যান্সারের উৎপত্তি) ব্যাপারটা একটু ভিন্ন। ফুসফুস বা অন্যান্য কিছু ক্যান্সারের সঙ্গে আমরা জীবনযাত্রা ও পরিবেশগত কিছু সমস্যার যোগসূত্র দেখতে পাই। কিন্তু ব্রেইন টিউমার সৃষ্টির রহস্য বেশ ধোঁয়াটে। একজন মানুষ কেনই বা ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত হয়, অন্যরাই বা কী করে তা থেকে রেহাই পায়_এর ব্যাখ্যা চিকিৎসাবিজ্ঞানে খুব সামান্যই আছে। তবে কোনো পদার্থ থেকে বিকিরণ ঘটলে সেটাকে ক্যান্সার সৃষ্টির সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র বলে মনে করা হয়। বেশির ভাগ চিকিৎসা-সংস্থা ও ক্যান্সার-বিশেষজ্ঞ মনে করেন, যখন কোনো পদার্থের অণু বা পরমাণু থেকে বেশ শক্তিশালী মাত্রায় বিকিরণ ঘটে তখন তা ক্যান্সার সৃষ্টিকারক হয়ে ওঠে। পারমাণবিক ক্ষয় এবং এঙ্-রে থেকে যে বিকিরণ ঘটে, তা পরমাণুর এমন একটি আয়নিক অবস্থা, যা অন্য অণু-পরমাণুর ভেতরকার পরিবর্তন সাধন করে। সে কারণে শক্তিশালী কোনো বিকিরণ ক্ষেত্রে মানুষ অবস্থান করলে তার কোষের জিনগত ক্ষতিসাধন হয়। ফলে শরীরে ক্যান্সারের সৃষ্টি হয়।
মোবাইল ফোনের ক্ষেত্রে বলা হয়ে থাকে, এ থেকে যে বিকিরণ ঘটে তা পরমাণুর আয়নিক অবস্থা থেকে উদ্ভূত নয় (নন-আয়োনাইজিং)। এবং যেহেতু এর বিকিরণ মাত্রা খুবই দুর্বল, তাই এটি মানবকোষের জিনগত ক্ষতিসাধন করতে পারে না। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশন (এফসিসি), ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট, ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) এবং আরো অসংখ্য সংস্থা এই ধারণায় একমত হয়েছে যে মোবাইল ফোন ব্যবহারে কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটেও বলা হয়েছে, 'মোবাইল ফোন ব্যবহারে আজ পর্যন্ত স্বাস্থ্যগত কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।' কিন্তু গত মে মাসের শেষদিনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার 'ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার' (আইএআরসি) নামের ক্যান্সার গবেষণা সংস্থা 'ক্যান্সার ও মোবাইল ফোনের বিকিরণ'-এর ওপর সর্বশেষ একটি গবেষণাপত্র পর্যালোচনা করে। গবেষণাপত্রের ওপর এক সপ্তাহের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তারা মোবাইল ফোনকে 'মানবদেহে সম্ভাবনাময় ক্যান্সার সৃষ্টিকারক' হিসেবে শ্রেণীভুক্ত করে। আইএআরসির প্যানেল বিজ্ঞানীরা মোবাইল ফোনকে ক্যান্সার সৃষ্টিকারক-এর '২বি' ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করেন। ধূমপান রয়েছে এ ক্যাটাগরির ওপরের স্কেলে। আর কীটনাশক ডিডিটি এবং গ্যাসোলিন-ইঞ্জিন নির্গত ধোঁয়া রয়েছে একই ক্যাটগরিতে। গবেষণাপত্র প্রকাশের দিন, অর্থাৎ গত ৩১ মে আইএআরসির চেয়ারম্যান ড. জোনাথন সামেট সংবাদিকদের বলেন, 'মানব শরীরের ওপর মহামারি-সংক্রান্ত গবেষণায় আমরা দেখতে পেয়েছি, গি্লওমা এবং ম্যালিগনান্ট প্রকৃতির ব্রেইন ক্যান্সার সৃষ্টির ঝুঁকিতে মোবাইল ফোনের যোগসূত্র রয়েছে।'
মোবাইল ফোনের ব্যাপারে যেসব গবেষক এর আগে বিশেষ সতর্কবার্তা পাঠিয়েছিলেন তাদের মধ্যে পরিবেশগত মহামারিবিদ্যায় পুরস্কার বিজেতা ডেভরা ডেভিসের নাম সর্বাগ্রে উচ্চারণ করা যেতে পারে। 'দ্য সিক্রেট হিস্ট্রি অব দ্য ওয়ার অন ক্যান্সার' (অর্থাৎ ক্যান্সার যুদ্ধের গোপন ইতিহাস) নামের গ্রন্থের লেখক ডেভরা যুক্তিসহকারে বলেছেন, ওয়্যারলেস বা সেলফোন ইন্ডাস্ট্রি খুব চমৎকারভাবে সেসব আলামত কৌশলে আড়াল করে, যা প্রমাণ করে দেয় যে সেলফোনের ভেতরে কোনো বিপদ লুকিয়ে আছে। কয়েক দশক আগে তামাক ইন্ডাস্ট্রিগুলো যেমনিভাবে তামাকের ক্ষতিকর দিক নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্র নিয়ন্ত্রণ ও সংকুচিত করার চেষ্টা করত, তেমনিভাবে মাল্টিমিলিয়ন ডলারের সেলফোন ইন্ডাস্ট্রিও এখন এর স্বাস্থ্যঝুঁকিসংক্রান্ত গবেষণার অর্থসংস্থান নিয়ন্ত্রণ ও সংকোচনের চেষ্টা করে। স্বাভাবিকভাবেই আইএআরসির গবেষণা প্রতিবেদনের সঙ্গে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি সহমত পোষণ করেনি। তারা বলেছে, আইএআরসির এই শ্রেণীকরণের অর্থ এই নয় যে সেলফোনে ক্যান্সার সৃষ্টি হয়। আইএআরসির সিদ্ধান্তে অসংখ্য এপিডেমিওলোজিস্ট (মহামারিবিশারদ) এবং বিকিরণ গবেষক হতবাক হয়েছেন বলে দাবি করেন মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্ট জন ওয়ালস। আইএআরসির গবেষণাপত্র অবশ্য কিছুক্ষেত্রে দ্ব্যর্থবোধক। বিশেষ করে, গবেষণায় যখন মোবাইল ফোনের ব্যবহারের সঙ্গে গি্লওমা ও অকুস্টিক (শ্রুতিগত) নিউরোমা রোগের 'সীমিত' আলামত খুঁজে পাওয়া যায়।
তবে এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ যে এ-সংক্রান্ত গবেষণা নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে চালিয়ে যাওয়া অতিজরুরি, যাতে প্রকৃত ঘটনা খুব বেশিদিন আড়ালে না থাকে। যখন কম্পানির টাকায় তাদের পণ্যের ওপর গবেষণা চালানো হয় তখন তা পক্ষপাতদুষ্ট হওয়াটাই স্বাভাবিক। এসব গবেষণালব্ধ তথ্য জনমানসে কোনো আস্থাও আনে না, মানুষের নিরাপত্তারও আশ্বাস দিতে পারে না। ডেভিস এ বিষয়ে বেশ সুন্দর উপায় বাতলে দিয়েছেন। তাঁর মতে, বায়ো ইলেকট্রোম্যাগনেটিক্স-এর ওপর একটি ইন্টারডিসিপ্লিনারি গবেষণা কর্মসূচি হাতে নেওয়া দরকার। এ গবেষণাকাজের অর্থ জোগান হবে প্রতিটি মোবাইল ফোনসেট বিক্রির ওপর সামান্য পরিমাণ অতিরিক্ত অর্থঅঙ্ক সংযুক্তির মাধ্যমে। আপাতত মোবাইল ফোন বিকিরণ থেকে রক্ষা পেতে পাঁচটি সহজ উপায় মনে রাখা যেতে পারে। ১. সেলফোন ব্যবহারের সময় ফোনসেটটি সরাসরি কানে না লাগিয়ে হেড-ফোনের সাহায্যে ভয়েস কল আদান-প্রদান করা যেতে পারে। এতে ফোনের বিকিরণ থেকে মাথা বেশ খানিকটা দূরে থাকবে। ব্লুটুথ ডিভাইসের চেয়েও এটা অনেক নিরাপদ। ২. বার্তা পাঠাতে টেঙ্ট মেসেজের ওপর বেশি নির্ভর হওয়া যেতে পারে। উঠতি বয়সী ছেলেমেয়েরা এ কাজটি বেশ আনন্দের সঙ্গেই করে থাকে। এতেও ফোনের বিকিরণ থেকে মাথা বেশ খানিকটা দূরে থাকবে। ৩. মোবাইল ফোনকে কখনোই ঘুম জাগানিয়া অ্যালার্মের কাজে ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ এ যন্ত্রকে অ্যালার্মের কাজে ব্যবহার করলে ঘুমের সময় স্বাভাবিকভাবেই ফোনটি যতটা সম্ভব মাথার কাছে রাখতে হয়। ফলে ফোনের বিকিরণ থেকে মাথা কমবেশি অরক্ষিত থেকে যায়। ৪. খেয়াল রাখতে হবে আপনার ফোনের নেটওয়ার্ক সিগনাল যথেষ্ট দুর্বল কি না। গ্রামাঞ্চল বা বিরানভূমি ও উঁচু জায়গায় এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। ফোনের নেটওয়ার্ক দুর্বল থাকলে তা থেকে বেশি পরিমাণ বিকিরণ ঘটার আশঙ্কা থাকে। ৫. বিকিরণ প্রতিহতকারক মোবাইল খাপ ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ধরনের খাপ যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ থেকে ৫০ ডলারের ভেতরে পাওয়া যায়।
লেখক : টাইম ম্যাগাজিনের প্রতিবেদক
টাইম থেকে ভাষান্তর : অদ্বয় দত্ত
মোবাইল ফোনের ক্ষেত্রে বলা হয়ে থাকে, এ থেকে যে বিকিরণ ঘটে তা পরমাণুর আয়নিক অবস্থা থেকে উদ্ভূত নয় (নন-আয়োনাইজিং)। এবং যেহেতু এর বিকিরণ মাত্রা খুবই দুর্বল, তাই এটি মানবকোষের জিনগত ক্ষতিসাধন করতে পারে না। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশন (এফসিসি), ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট, ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) এবং আরো অসংখ্য সংস্থা এই ধারণায় একমত হয়েছে যে মোবাইল ফোন ব্যবহারে কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটেও বলা হয়েছে, 'মোবাইল ফোন ব্যবহারে আজ পর্যন্ত স্বাস্থ্যগত কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।' কিন্তু গত মে মাসের শেষদিনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার 'ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার' (আইএআরসি) নামের ক্যান্সার গবেষণা সংস্থা 'ক্যান্সার ও মোবাইল ফোনের বিকিরণ'-এর ওপর সর্বশেষ একটি গবেষণাপত্র পর্যালোচনা করে। গবেষণাপত্রের ওপর এক সপ্তাহের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তারা মোবাইল ফোনকে 'মানবদেহে সম্ভাবনাময় ক্যান্সার সৃষ্টিকারক' হিসেবে শ্রেণীভুক্ত করে। আইএআরসির প্যানেল বিজ্ঞানীরা মোবাইল ফোনকে ক্যান্সার সৃষ্টিকারক-এর '২বি' ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করেন। ধূমপান রয়েছে এ ক্যাটাগরির ওপরের স্কেলে। আর কীটনাশক ডিডিটি এবং গ্যাসোলিন-ইঞ্জিন নির্গত ধোঁয়া রয়েছে একই ক্যাটগরিতে। গবেষণাপত্র প্রকাশের দিন, অর্থাৎ গত ৩১ মে আইএআরসির চেয়ারম্যান ড. জোনাথন সামেট সংবাদিকদের বলেন, 'মানব শরীরের ওপর মহামারি-সংক্রান্ত গবেষণায় আমরা দেখতে পেয়েছি, গি্লওমা এবং ম্যালিগনান্ট প্রকৃতির ব্রেইন ক্যান্সার সৃষ্টির ঝুঁকিতে মোবাইল ফোনের যোগসূত্র রয়েছে।'
মোবাইল ফোনের ব্যাপারে যেসব গবেষক এর আগে বিশেষ সতর্কবার্তা পাঠিয়েছিলেন তাদের মধ্যে পরিবেশগত মহামারিবিদ্যায় পুরস্কার বিজেতা ডেভরা ডেভিসের নাম সর্বাগ্রে উচ্চারণ করা যেতে পারে। 'দ্য সিক্রেট হিস্ট্রি অব দ্য ওয়ার অন ক্যান্সার' (অর্থাৎ ক্যান্সার যুদ্ধের গোপন ইতিহাস) নামের গ্রন্থের লেখক ডেভরা যুক্তিসহকারে বলেছেন, ওয়্যারলেস বা সেলফোন ইন্ডাস্ট্রি খুব চমৎকারভাবে সেসব আলামত কৌশলে আড়াল করে, যা প্রমাণ করে দেয় যে সেলফোনের ভেতরে কোনো বিপদ লুকিয়ে আছে। কয়েক দশক আগে তামাক ইন্ডাস্ট্রিগুলো যেমনিভাবে তামাকের ক্ষতিকর দিক নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্র নিয়ন্ত্রণ ও সংকুচিত করার চেষ্টা করত, তেমনিভাবে মাল্টিমিলিয়ন ডলারের সেলফোন ইন্ডাস্ট্রিও এখন এর স্বাস্থ্যঝুঁকিসংক্রান্ত গবেষণার অর্থসংস্থান নিয়ন্ত্রণ ও সংকোচনের চেষ্টা করে। স্বাভাবিকভাবেই আইএআরসির গবেষণা প্রতিবেদনের সঙ্গে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি সহমত পোষণ করেনি। তারা বলেছে, আইএআরসির এই শ্রেণীকরণের অর্থ এই নয় যে সেলফোনে ক্যান্সার সৃষ্টি হয়। আইএআরসির সিদ্ধান্তে অসংখ্য এপিডেমিওলোজিস্ট (মহামারিবিশারদ) এবং বিকিরণ গবেষক হতবাক হয়েছেন বলে দাবি করেন মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্ট জন ওয়ালস। আইএআরসির গবেষণাপত্র অবশ্য কিছুক্ষেত্রে দ্ব্যর্থবোধক। বিশেষ করে, গবেষণায় যখন মোবাইল ফোনের ব্যবহারের সঙ্গে গি্লওমা ও অকুস্টিক (শ্রুতিগত) নিউরোমা রোগের 'সীমিত' আলামত খুঁজে পাওয়া যায়।
তবে এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ যে এ-সংক্রান্ত গবেষণা নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে চালিয়ে যাওয়া অতিজরুরি, যাতে প্রকৃত ঘটনা খুব বেশিদিন আড়ালে না থাকে। যখন কম্পানির টাকায় তাদের পণ্যের ওপর গবেষণা চালানো হয় তখন তা পক্ষপাতদুষ্ট হওয়াটাই স্বাভাবিক। এসব গবেষণালব্ধ তথ্য জনমানসে কোনো আস্থাও আনে না, মানুষের নিরাপত্তারও আশ্বাস দিতে পারে না। ডেভিস এ বিষয়ে বেশ সুন্দর উপায় বাতলে দিয়েছেন। তাঁর মতে, বায়ো ইলেকট্রোম্যাগনেটিক্স-এর ওপর একটি ইন্টারডিসিপ্লিনারি গবেষণা কর্মসূচি হাতে নেওয়া দরকার। এ গবেষণাকাজের অর্থ জোগান হবে প্রতিটি মোবাইল ফোনসেট বিক্রির ওপর সামান্য পরিমাণ অতিরিক্ত অর্থঅঙ্ক সংযুক্তির মাধ্যমে। আপাতত মোবাইল ফোন বিকিরণ থেকে রক্ষা পেতে পাঁচটি সহজ উপায় মনে রাখা যেতে পারে। ১. সেলফোন ব্যবহারের সময় ফোনসেটটি সরাসরি কানে না লাগিয়ে হেড-ফোনের সাহায্যে ভয়েস কল আদান-প্রদান করা যেতে পারে। এতে ফোনের বিকিরণ থেকে মাথা বেশ খানিকটা দূরে থাকবে। ব্লুটুথ ডিভাইসের চেয়েও এটা অনেক নিরাপদ। ২. বার্তা পাঠাতে টেঙ্ট মেসেজের ওপর বেশি নির্ভর হওয়া যেতে পারে। উঠতি বয়সী ছেলেমেয়েরা এ কাজটি বেশ আনন্দের সঙ্গেই করে থাকে। এতেও ফোনের বিকিরণ থেকে মাথা বেশ খানিকটা দূরে থাকবে। ৩. মোবাইল ফোনকে কখনোই ঘুম জাগানিয়া অ্যালার্মের কাজে ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ এ যন্ত্রকে অ্যালার্মের কাজে ব্যবহার করলে ঘুমের সময় স্বাভাবিকভাবেই ফোনটি যতটা সম্ভব মাথার কাছে রাখতে হয়। ফলে ফোনের বিকিরণ থেকে মাথা কমবেশি অরক্ষিত থেকে যায়। ৪. খেয়াল রাখতে হবে আপনার ফোনের নেটওয়ার্ক সিগনাল যথেষ্ট দুর্বল কি না। গ্রামাঞ্চল বা বিরানভূমি ও উঁচু জায়গায় এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। ফোনের নেটওয়ার্ক দুর্বল থাকলে তা থেকে বেশি পরিমাণ বিকিরণ ঘটার আশঙ্কা থাকে। ৫. বিকিরণ প্রতিহতকারক মোবাইল খাপ ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ধরনের খাপ যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ থেকে ৫০ ডলারের ভেতরে পাওয়া যায়।
লেখক : টাইম ম্যাগাজিনের প্রতিবেদক
টাইম থেকে ভাষান্তর : অদ্বয় দত্ত
No comments