পবিত্র কোরআনের আলো-কুকর্ম মানুষের কাছে লুকাতে পারলেও আল্লাহর কাছে নয়
১০৮. ইয়াছতাখ্ফূনা মিনান্নাছি ওয়ালা-ইয়াছতাখ্ফূনা মিনাল্লাহি ওয়াহুয়া মাআ'হুম ইয্ ইউবায়্যিতূনা মা-লা ইয়ারদ্বা মিনাল ক্বাওলি ওয়া কানাল্লাহু বিমা ইয়া'মালূনা মুহ্বীত্বা। ১০৯. হা-আনতুম হা-উলা-য়ি জাদালতুম আ'নহুম ফিল হাইয়াতিদ্-দুনইয়া; ফামাইঁয়্যুজাদিলুল্লাহা আ'নহুম ইয়াওমাল কি্বইয়ামাতি আম্ম্মাইঁয়্যাকূনু আ'লাইহিম ওয়াকীলা।
১১০. ওয়ামাইঁয়্যা'মাল ছূআন আও ইয়ায্লিম্ নাফছাহূ ছুম্মা ইয়াছ্তাগফিরিল্লাহা ইয়াজিদিল্লাহা গাফূরার্ রাহীমা।
১১১. ওয়ামাইঁয়্যাকছিব ইছ্মান ফাইন্নামা ইয়াক্ছিবুহূ আ'লা- নাফছিহী; ওয়া কানাল্লাহু আ'লীমান হাকীমা। [সুরা : আন নিসা, আয়াত : ১০৮-১১১]
অনুবাদ
১০৮. এরা মানুষের কাছে নিজেদের কুকর্ম লুকাতে চায়, কিন্তু আল্লাহর কাছ থেকে কিছুই লুকাতে পারবে না। কারণ আল্লাহ তখনো তাদের সঙ্গেই থাকেন, যখন তারা আল্লাহর নাফরমানির বিষয়ে কথাবার্তা বলে অভিসন্ধি করতে থাকে। এরা যা কিছু করে তা সম্পূর্ণ আল্লাহর জ্ঞানের পরিধির আওতাধীন।
১০৯. হ্যাঁ, এরাই হচ্ছে সেসব লোক যারা তোমাদের সম্প্রদায়ভুক্ত হওয়ার কারণে দুনিয়ার জীবনে তোমরা তাদের পক্ষে কথা বলছ; কিন্তু রোজ কিয়ামতের দিন কে তাদের পক্ষে কথা বলবে কিংবা কে তাদের অভিভাবক হবে!
১১০. যে ব্যক্তি পাপ কাজ করল, অথবা নিজের ওপর অত্যাচার করল, অতঃপর অনুতপ্ত হয়ে সে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করল, সে অবশ্যই আল্লাহ তায়ালাকে পরম ক্ষমাশীল ও দয়ালু হিসেবেই পাবে।
১১১. যে ব্যক্তি পাপ কাজে লিপ্ত থাকল সে কিন্তু নিজেই নিজের ক্ষতিসাধন করল। আল্লাহ সব কিছু জানেন এবং তিনি প্রজ্ঞাবান।
ব্যাখ্যা
এ আয়াতগুলোও আগে উলি্লখিত চুরির ঘটনাকে প্রসঙ্গ করেই অবতীর্ণ। একটি ছোট ঘটনাকে কেন্দ্র করে হলেও এখানে মুসলমানদের বিশ্বাস ও মূল্যবোধের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা এসেছে। প্রথমেই বলা হয়েছে বিশ্বাসের কথা। কুকর্ম করে যারা গোপন করতে চায় তাদের মনে রাখা উচিত যে মানুষের কাছে এটা সাময়িকভাবে গোপন করা গেলেও আল্লাহ তায়ালার কাছে গোপন করা সম্ভব নয়। কারণ আল্লাহ তায়ালা সর্বত্র উপস্থিত। অপরাধ যারা করে তাদের মনে রাখা উচিত, তারা যখন রাতের অন্ধকারে বা সঙ্গোপনে আল্লাহর অপছন্দনীয় কাজ, যেমন চৌর্যবৃত্তির মতো কাজ করে বা এ ব্যাপারে শলাপরামর্শ ও কথাবার্তা বলে তখনো আল্লাহ তাদের সঙ্গেই আছেন। আল্লাহর দৃষ্টি ও জ্ঞানের আওতাধীন বিশ্বজগতের তাবৎ সব কিছু।
অন্যদিকে এ ঘটনায় যে অপরাধী বা চোর সে একজন মুসলমান। আর যার ওপর দোষ চাপানো হচ্ছে সে একজন অমুসলিম ইহুদি। কয়েকজন মুসলমান একতাবদ্ধ হয়ে একজন ইহুদির ওপর অন্যায়ভাবে দোষ চাপানোর চেষ্টা করেছে। এটা ঘোরতর অন্যায় এবং মুসলমানের সমুচিত কাজ একেবারেই নয়। কয়েকজন মুসলমান জোটবদ্ধ হয়ে অন্যায়ভাবে দোষ চাপিয়ে সফল হওয়ার চেষ্টা করছে, কিন্তু রোজ কিয়ামতের দিন তো এই অন্যায় টিকবে না। রোজ কিয়ামতের দিন এ ধরনের মুসলমানদের অভিভাবক যে রাসুল হবেন না_এ কথা এখানে বলা হয়েছে। ১১০ নম্বর আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে, যারা কোনো অন্যায় বা পাপ কাজ করে ফেলার পর আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে তারা ক্ষমা লাভ করতে পারেন, তবে শর্ত হলো যার হক নষ্ট করা হয়েছে বা যার মাল চুরি করা হয়েছে তাকে যদি তা ফিরিয়ে দিয়ে ক্ষমা চাওয়া হয়।
অপরাধ করে আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চাওয়া এবং অপরাধে লিপ্ত থাকার মধ্যে বিস্তর ব্যবধান। যে ব্যক্তি পাপ কাজে লিপ্ত থাকল সে নিজেই নিজের ক্ষতি করল। ক্ষণিকের জন্য সে নিজেকে লাভবান দেখতে পারে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সে নিজেরই সর্বনাশ করল। এ আয়াতগুলোতে এ বিষয়গুলো বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে যেন মুসলমানদের মধ্যে অনুরূপ বিশ্বাস ও মূল্যবোধ গড়ে ওঠে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
১১১. ওয়ামাইঁয়্যাকছিব ইছ্মান ফাইন্নামা ইয়াক্ছিবুহূ আ'লা- নাফছিহী; ওয়া কানাল্লাহু আ'লীমান হাকীমা। [সুরা : আন নিসা, আয়াত : ১০৮-১১১]
অনুবাদ
১০৮. এরা মানুষের কাছে নিজেদের কুকর্ম লুকাতে চায়, কিন্তু আল্লাহর কাছ থেকে কিছুই লুকাতে পারবে না। কারণ আল্লাহ তখনো তাদের সঙ্গেই থাকেন, যখন তারা আল্লাহর নাফরমানির বিষয়ে কথাবার্তা বলে অভিসন্ধি করতে থাকে। এরা যা কিছু করে তা সম্পূর্ণ আল্লাহর জ্ঞানের পরিধির আওতাধীন।
১০৯. হ্যাঁ, এরাই হচ্ছে সেসব লোক যারা তোমাদের সম্প্রদায়ভুক্ত হওয়ার কারণে দুনিয়ার জীবনে তোমরা তাদের পক্ষে কথা বলছ; কিন্তু রোজ কিয়ামতের দিন কে তাদের পক্ষে কথা বলবে কিংবা কে তাদের অভিভাবক হবে!
১১০. যে ব্যক্তি পাপ কাজ করল, অথবা নিজের ওপর অত্যাচার করল, অতঃপর অনুতপ্ত হয়ে সে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করল, সে অবশ্যই আল্লাহ তায়ালাকে পরম ক্ষমাশীল ও দয়ালু হিসেবেই পাবে।
১১১. যে ব্যক্তি পাপ কাজে লিপ্ত থাকল সে কিন্তু নিজেই নিজের ক্ষতিসাধন করল। আল্লাহ সব কিছু জানেন এবং তিনি প্রজ্ঞাবান।
ব্যাখ্যা
এ আয়াতগুলোও আগে উলি্লখিত চুরির ঘটনাকে প্রসঙ্গ করেই অবতীর্ণ। একটি ছোট ঘটনাকে কেন্দ্র করে হলেও এখানে মুসলমানদের বিশ্বাস ও মূল্যবোধের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা এসেছে। প্রথমেই বলা হয়েছে বিশ্বাসের কথা। কুকর্ম করে যারা গোপন করতে চায় তাদের মনে রাখা উচিত যে মানুষের কাছে এটা সাময়িকভাবে গোপন করা গেলেও আল্লাহ তায়ালার কাছে গোপন করা সম্ভব নয়। কারণ আল্লাহ তায়ালা সর্বত্র উপস্থিত। অপরাধ যারা করে তাদের মনে রাখা উচিত, তারা যখন রাতের অন্ধকারে বা সঙ্গোপনে আল্লাহর অপছন্দনীয় কাজ, যেমন চৌর্যবৃত্তির মতো কাজ করে বা এ ব্যাপারে শলাপরামর্শ ও কথাবার্তা বলে তখনো আল্লাহ তাদের সঙ্গেই আছেন। আল্লাহর দৃষ্টি ও জ্ঞানের আওতাধীন বিশ্বজগতের তাবৎ সব কিছু।
অন্যদিকে এ ঘটনায় যে অপরাধী বা চোর সে একজন মুসলমান। আর যার ওপর দোষ চাপানো হচ্ছে সে একজন অমুসলিম ইহুদি। কয়েকজন মুসলমান একতাবদ্ধ হয়ে একজন ইহুদির ওপর অন্যায়ভাবে দোষ চাপানোর চেষ্টা করেছে। এটা ঘোরতর অন্যায় এবং মুসলমানের সমুচিত কাজ একেবারেই নয়। কয়েকজন মুসলমান জোটবদ্ধ হয়ে অন্যায়ভাবে দোষ চাপিয়ে সফল হওয়ার চেষ্টা করছে, কিন্তু রোজ কিয়ামতের দিন তো এই অন্যায় টিকবে না। রোজ কিয়ামতের দিন এ ধরনের মুসলমানদের অভিভাবক যে রাসুল হবেন না_এ কথা এখানে বলা হয়েছে। ১১০ নম্বর আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে, যারা কোনো অন্যায় বা পাপ কাজ করে ফেলার পর আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে তারা ক্ষমা লাভ করতে পারেন, তবে শর্ত হলো যার হক নষ্ট করা হয়েছে বা যার মাল চুরি করা হয়েছে তাকে যদি তা ফিরিয়ে দিয়ে ক্ষমা চাওয়া হয়।
অপরাধ করে আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চাওয়া এবং অপরাধে লিপ্ত থাকার মধ্যে বিস্তর ব্যবধান। যে ব্যক্তি পাপ কাজে লিপ্ত থাকল সে নিজেই নিজের ক্ষতি করল। ক্ষণিকের জন্য সে নিজেকে লাভবান দেখতে পারে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সে নিজেরই সর্বনাশ করল। এ আয়াতগুলোতে এ বিষয়গুলো বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে যেন মুসলমানদের মধ্যে অনুরূপ বিশ্বাস ও মূল্যবোধ গড়ে ওঠে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments