জরুরি প্রয়োজনে প্রতিশ্রুত অর্থের ৫ শতাংশ ছাড় করবে বিশ্বব্যাংক by জাফর আহমেদ
দেশে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিলে জরুরি ভিত্তিতে বিশ্বব্যাংকের কাছে আটকে থাকা প্রতিশ্রুত অর্থের ৫ শতাংশ ছাড় করা যাবে। বাংলাদেশ এ ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে মাত্র ২ সপ্তাহের মধ্যেই এ অর্থ ছাড় করতে পারবে। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কাছে এ বিষয়ে একটি চিঠিতে এ কথা জানিয়েছে। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশও বিশ্বব্যাংকের ওই প্রস্তাবে নীতিগত সম্মতি জানিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের ইমিডিয়েট রেসপন্ড ম্যাকানিজম (আইআরএম) নামে নতুন একটি পদ্ধতির মাধ্যমে সব দেশ এ সুবিধা পাবে বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, ২০১১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ৩৯৪ কোটি ২৩ লাখ ডলার বিশ্বব্যাংকের কাছে আটকে রয়েছে। বাংলাদেশি টাকায় এর পরিমাণ প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা। বিশ্বব্যাংকের নতুন এ প্রক্রিয়া সচল হলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা চরম অর্থনৈতিক মন্দাভাব দেখা দিলে জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশ বিদ্যমান পাইপলাইন থেকে প্রায় ২০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড় করতে পারবে। জানা গেছে, সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের এ ধরনের প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসে চিঠি দিয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। এর আগে বাংলাদেশের বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর অ্যালেন গোন্ডস্টেইন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বাংলাদেশকে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইআরডির অতিরিক্ত সচিব আরস্তু খান সমকালকে জানান, বিশ্বব্যাংকের কাছে এরই মধ্যে আইআরএম নামে এ পদ্ধতিতে সম্মতি জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, ওই পত্রে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক মন্দার কথাও বলা হয়েছে। তাই বাংলাদেশ অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়লেও সমপরিমাণ অর্থ ছাড় করা সম্ভব হতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। জানা যায়, কিছু নিয়মকানুন মেনে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ওই অর্থ তুলতে হবে। এর প্রস্তুতি হিসেবে আগে থেকেই এ বিষয়ে কিছু প্রকল্প তৈরি করতে হবে। ওই প্রকল্পগুলোতে টাকার বরাদ্দের পরিমাণ উল্লেখ না করলেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে রাখতে হবে। যখনই প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়বে তখন ওই প্রকল্পটিতে বরাদ্দের পরিমাণ উল্লেখ করে প্রকল্পটি সম্পূর্ণ করতে হবে। সূত্র জানায়, বাংলাদেশে জরুরি পরিস্থিতি বা দুর্যোগের সময় নতুন প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি, অনুমোদন প্রক্রিয়া, দরপত্র সংক্রান্ত জটিলতা, সর্বশেষ অর্থছাড় করতেই প্রচুর সময় ব্যয় হয়। এ কারণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ে। তাই দুর্যোগ মুহূর্তে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বিশ্বব্যাংক এ উদ্যোগ নিয়েছে।
No comments