পবিত্র কোরআনের আলো-শয়তান সেদিন থেকেই মানুষকে কুমন্ত্রণা দেওয়ার জন্য পিছু নিল
১২. ক্বা-লা মা মানাআ'কা আন লা তাছজুদা ইয্ আমরাতুকা; ক্বা-লা আনা খাইরুম্ মিনহু; খালাক্বতানী মিন্ না-রিন ওয়া খালাক্বতাহূ মিন ত্বীন। ১৩. ক্বা-লা ফাহ্বিত্ব মিনহা ফামা ইয়াকূনু লাকা আন তাতাকাব্বারা ফীহা ফাখরুজ ইন্নাকা মিনাস্ সা-গিরীন। ১৪. ক্বা-লা আনযিরনী ইলা ইয়াওমি ইউবআ'ছূন। ১৫. ক্বা-লা ইন্নাকা মিনাল মুনয্বারীন। ১৬. ক্বা-লা ফাবিমা আগ্ওয়াইতানী লাআক্বউ'দান্না লাহুম সিরা-ত্বাকাল মুছতাক্বীম।
[সুরা : আল-আ'রাফ, আয়াত: ১২-১৬] অনুবাদ : ১২. আল্লাহ বললেন, আমি যখন তোমাকে আদেশ করলাম তখন কিসে তোমাকে সিজদা করা থেকে বিরত রাখল? সে বলল, আমি তার চেয়ে উত্তম। তুমি আমাকে বানিয়েছ আগুন থেকে, আর তাকে বানিয়েছ মাটি থেকে।
১৩. আল্লাহ বললেন, তুমি এক্ষুনি এখান থেকে নেমে যাও। এখানে থেকে অহংকার করার কোনো অধিকার নেই। সুতরাং বেরিয়ে যাও, তুমি অপমানিতদের একজন।
১৪. সে বলল (হে প্রভু!), তুমি আমাকে সুযোগ দাও সেদিন পর্যন্ত যেদিন মানুষকে পুনরায় ওঠানো হবে।
১৫. আল্লাহ তায়ালা বললেন, তোমাকে সে সুযোগ দেওয়া হলো।
১৬. সে বলল, তুমি যেহেতু আমাকে পথভ্রষ্ট করেছ, সেহেতু আমিও তাদের জন্য তোমার সরল পথে ওত পেতে বসে থাকব।
ব্যাখ্যা
১২ নম্বর আয়াতে আল্লাহ ও শয়তানের মধ্যকার কিছু কথোপকথন উদ্ধৃত করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন সে কেন আদমকে সিজদা করা থেকে বিরত থেকে আল্লাহর অবাধ্য হলো। শয়তান এর জবাবে বলল, 'আমি আদমের চেয়ে উত্তম, কারণ আমাকে তুমি সৃষ্টি করেছ আগুন থেকে আর আদমকে সৃষ্টি করেছ মাটি থেকে।' এখানে শয়তানের অহংকারের কারণটা স্পষ্ট হয়েছে। সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর হুকুমের বিরুদ্ধে অহংকার করা স্পষ্টতই অবাধ্যতা, সেটা যে কারণেই হোক। উপর্যুপরি মাটি ও আগুন সম্পর্কে তার ধারণাও ভুল। আগুন মাটির চেয়ে উত্তম নয়। মাটি জীবন সহায়ক আর আগুন জীবনবিনাশী। শয়তান জানত না আগুনের সৃষ্টি বলে তার অহংকার করার কিছু নেই, কারণ মানুষকে মাটি থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে তার চেয়ে উত্তম ও সম্মানিত করে। ১৩ নম্বর আয়াতে অভিশপ্ত শয়তানকে যে নির্দেশে বেহেশত থেকে বিতাড়ন করা হয়েছে তা উল্লেখ করা হয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা শয়তানকে কেবল বিতাড়ন করেননি, তাকে অভিশপ্তও করেছেন।
১৪ ও ১৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ ও শয়তানের মধ্যকার সেই কথোপকথন বর্ণনা করা হয়েছে, যার মাধ্যমে শয়তান আল্লাহর কাছে তার অমরত্ব লাভের এক কুটিল আবদার জানায় এবং আল্লাহ তা মঞ্জুর করে নেন। শয়তান আবদার জানিয়েছিল, যে দিন মানুষকে কবর থেকে জীবিত করে ওঠানো হবে, সেই দিন পর্যন্ত যেন তাকে অবকাশ দেওয়া হয়। এখানে অবকাশ প্রদানের কথা মঞ্জুর করা হয়েছে; তবে অবকাশ কোন পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে তা এই আয়াতে স্পষ্ট করে বর্ণনা করা হয়নি। এ ঘটনা সুরা হিজর ২৬:৩৮ ও সুরা সোয়াদ (৩৮:৮১)-এও বর্ণিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, 'এক নির্দিষ্ট কাল' পর্যন্ত অবকাশ দেওয়া হয়েছে। এতে বোঝা যায়, তার আবদার মতো হাশরের দিন পর্যন্ত তাকে অবকাশ দেওয়া হয়নি, বরং একটা নির্দষ্ট সময় পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে, যা আল্লাহ তায়ালার জ্ঞানে আছে।
১৬ নম্বর আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে, শয়তান কিভাবে তার পথভ্রষ্টতা ও শয়তানির অজুহাত দাঁড় করানোর চেষ্টা করল। সে নিজে কুচরিত্রের প্রতিভু হয়ে এর দায় আল্লাহর ওপরই চাপানোর চেষ্টা করল। সে শপথ করল, মানুষকে আল্লাহর নির্দেশিত সঠিক সরল পথ থেকে বিচ্যুত করার জন্য সে অনন্তকাল ধরে চেষ্টা করে যাবে। আসলে শয়তানকে আল্লাহ তায়ালা এ চরিত্রে এনেছেন মানুষের সৎপথ কণ্টকিত করার মাধ্যমে তার মর্যাদা উন্নীত করার উপায় করে দেওয়ার জন্য।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
১৩. আল্লাহ বললেন, তুমি এক্ষুনি এখান থেকে নেমে যাও। এখানে থেকে অহংকার করার কোনো অধিকার নেই। সুতরাং বেরিয়ে যাও, তুমি অপমানিতদের একজন।
১৪. সে বলল (হে প্রভু!), তুমি আমাকে সুযোগ দাও সেদিন পর্যন্ত যেদিন মানুষকে পুনরায় ওঠানো হবে।
১৫. আল্লাহ তায়ালা বললেন, তোমাকে সে সুযোগ দেওয়া হলো।
১৬. সে বলল, তুমি যেহেতু আমাকে পথভ্রষ্ট করেছ, সেহেতু আমিও তাদের জন্য তোমার সরল পথে ওত পেতে বসে থাকব।
ব্যাখ্যা
১২ নম্বর আয়াতে আল্লাহ ও শয়তানের মধ্যকার কিছু কথোপকথন উদ্ধৃত করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন সে কেন আদমকে সিজদা করা থেকে বিরত থেকে আল্লাহর অবাধ্য হলো। শয়তান এর জবাবে বলল, 'আমি আদমের চেয়ে উত্তম, কারণ আমাকে তুমি সৃষ্টি করেছ আগুন থেকে আর আদমকে সৃষ্টি করেছ মাটি থেকে।' এখানে শয়তানের অহংকারের কারণটা স্পষ্ট হয়েছে। সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর হুকুমের বিরুদ্ধে অহংকার করা স্পষ্টতই অবাধ্যতা, সেটা যে কারণেই হোক। উপর্যুপরি মাটি ও আগুন সম্পর্কে তার ধারণাও ভুল। আগুন মাটির চেয়ে উত্তম নয়। মাটি জীবন সহায়ক আর আগুন জীবনবিনাশী। শয়তান জানত না আগুনের সৃষ্টি বলে তার অহংকার করার কিছু নেই, কারণ মানুষকে মাটি থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে তার চেয়ে উত্তম ও সম্মানিত করে। ১৩ নম্বর আয়াতে অভিশপ্ত শয়তানকে যে নির্দেশে বেহেশত থেকে বিতাড়ন করা হয়েছে তা উল্লেখ করা হয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা শয়তানকে কেবল বিতাড়ন করেননি, তাকে অভিশপ্তও করেছেন।
১৪ ও ১৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ ও শয়তানের মধ্যকার সেই কথোপকথন বর্ণনা করা হয়েছে, যার মাধ্যমে শয়তান আল্লাহর কাছে তার অমরত্ব লাভের এক কুটিল আবদার জানায় এবং আল্লাহ তা মঞ্জুর করে নেন। শয়তান আবদার জানিয়েছিল, যে দিন মানুষকে কবর থেকে জীবিত করে ওঠানো হবে, সেই দিন পর্যন্ত যেন তাকে অবকাশ দেওয়া হয়। এখানে অবকাশ প্রদানের কথা মঞ্জুর করা হয়েছে; তবে অবকাশ কোন পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে তা এই আয়াতে স্পষ্ট করে বর্ণনা করা হয়নি। এ ঘটনা সুরা হিজর ২৬:৩৮ ও সুরা সোয়াদ (৩৮:৮১)-এও বর্ণিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, 'এক নির্দিষ্ট কাল' পর্যন্ত অবকাশ দেওয়া হয়েছে। এতে বোঝা যায়, তার আবদার মতো হাশরের দিন পর্যন্ত তাকে অবকাশ দেওয়া হয়নি, বরং একটা নির্দষ্ট সময় পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে, যা আল্লাহ তায়ালার জ্ঞানে আছে।
১৬ নম্বর আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে, শয়তান কিভাবে তার পথভ্রষ্টতা ও শয়তানির অজুহাত দাঁড় করানোর চেষ্টা করল। সে নিজে কুচরিত্রের প্রতিভু হয়ে এর দায় আল্লাহর ওপরই চাপানোর চেষ্টা করল। সে শপথ করল, মানুষকে আল্লাহর নির্দেশিত সঠিক সরল পথ থেকে বিচ্যুত করার জন্য সে অনন্তকাল ধরে চেষ্টা করে যাবে। আসলে শয়তানকে আল্লাহ তায়ালা এ চরিত্রে এনেছেন মানুষের সৎপথ কণ্টকিত করার মাধ্যমে তার মর্যাদা উন্নীত করার উপায় করে দেওয়ার জন্য।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments