ফারুকের স্বর্ণপদক আরো একবার কাঁদাল সবাইকে by আসাদুর রহমান,
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ্ মখ্দুম হলের অডিটরিয়াম। ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক অনেকেই উপস্থিত। হলের সেরা ছাত্রদের স্বর্ণপদক প্রদানের অনুষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের মেধাবী ৪৪ ছাত্রকে স্বর্ণপদক ও সনদ দেওয়া হবে। তাঁদের মধ্যে ৪৩ জন উপস্থিত। বাকি একজন আসতে পারেননি। আসতেও পারবেন না কোনো দিন। কারণ, ওই ছাত্রের নাম ফারুক হোসেন। গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি শিবির-কর্মীদের হামলায় তিনি নিহত হন।
গতকাল শনিবার এ অনুষ্ঠানে সব ছাত্রদের সঙ্গে তাঁদের মা-বাবা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ফারুকের বাবা ফজলুর রহমানও এসেছিলেন। মাঝে মাঝে তাকাচ্ছিলেন কোট-টাই পরে সম্মাননা নিতে আসা ছাত্রদের দিকে, যেন কাউকে খুঁজছেন, পাচ্ছেন না। তাঁর চোখ হয়তো খুঁজে ফিরছিল ফারুককে। ফারুক থাকলে অনুষ্ঠানটি হতে পারত অন্যরকম। কিন্তু আনন্দের, কৃতিত্বের স্বর্ণপদক আরো একবার কাঁদাল সবাইকে।
গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি শিবির-কর্মীদের তাড়া খেয়ে এ অডিটরিয়ামেই আশ্রয় নিয়েছিলেন ছাত্রলীগকর্মীরা। তাঁদের সঙ্গে ফারুক হোসেনও ছিলেন। ওই সময় শিবির-কর্মীদের হামলায় ফারুক নিহত হন।
ছেলে কৃতিত্বের পুরস্কার পাওয়ায় বাবা ফজলুর রহমানের খুশিই হওয়ার কথা ছিল। তবে ছেলের মৃত্যুভূমির ওপর দাঁড়িয়েই সম্মাননা নিতে হলো তাঁকে। তাই অনুভূতি প্রকাশের ভাষাটাও হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। অনুষ্ঠান শুরুর আগে বাবা ফজলুর রহমানের কাছে অনুভূতি জানতে চাওয়া হয়েছিল। কথা বা কান্না কোনোটিই ছিল না তাঁর মুখে। চাপা দুঃখে তাঁর চোখ দুটো রক্তবর্ণ ধারণ করেছিল।
নিহত ফারুকের সহপাঠী ও রুমমেট ছিলেন শফিউল্লাহ। তিনি বলেন, 'আসলে এই অনুভূতি আমার পক্ষে ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ফারুক আমার চেয়েও মেধাবী ছিল। আমরা তাঁর জন্য তেমন কিছুই করতে পারছি না। তাই নিজেদেরও দোষী মনে হচ্ছে।' তিনি বলেন, যারা তাঁকে হত্যা করেছে, তাদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ফারুকের আত্মা শান্তি পাবে না।
নিহত ফারুকের বোন আসমা কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমাদের সব স্বপ্ন ফারুককে ঘিরে ছিল। বাবা শারীরিকভাবে কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন। তাই ভরণ-পোষণের দেওয়ার মতো আমাদের কেউ নেই।' তিনি বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আহমদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক আবু হুসাইন বিপু বলেন, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয়ভাবে সারা দেশে প্রতিবছর ফারুকের মৃত্যুদিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী বছর থেকেই তা পালন করা হবে। এ ছাড়া নিহত ফারুকের পরিবারকে সার্বিক সহযোগিতা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে করা হবে বলে তাঁরা জানান।
শাহ্ মখ্দুম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র রায় বলেন, 'ফারুক দরিদ্র ঘরের সন্তান ছিল। আমরা তাঁর পরিবারের জন্য তেমন কিছু করতে পারিনি।' হলের পক্ষে ফারুকের পরিবারকে কোনো সহায়তা করা হয়েছে কি না_এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কিছু অর্থ অনুদান দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ফারুকের বোন আসমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রায় দুই বছর হলেও ফারুক হত্যা মামলার তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। তদন্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন জানান, মামলার তদন্তকাজ শেষ হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।
গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি শিবির-কর্মীদের তাড়া খেয়ে এ অডিটরিয়ামেই আশ্রয় নিয়েছিলেন ছাত্রলীগকর্মীরা। তাঁদের সঙ্গে ফারুক হোসেনও ছিলেন। ওই সময় শিবির-কর্মীদের হামলায় ফারুক নিহত হন।
ছেলে কৃতিত্বের পুরস্কার পাওয়ায় বাবা ফজলুর রহমানের খুশিই হওয়ার কথা ছিল। তবে ছেলের মৃত্যুভূমির ওপর দাঁড়িয়েই সম্মাননা নিতে হলো তাঁকে। তাই অনুভূতি প্রকাশের ভাষাটাও হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। অনুষ্ঠান শুরুর আগে বাবা ফজলুর রহমানের কাছে অনুভূতি জানতে চাওয়া হয়েছিল। কথা বা কান্না কোনোটিই ছিল না তাঁর মুখে। চাপা দুঃখে তাঁর চোখ দুটো রক্তবর্ণ ধারণ করেছিল।
নিহত ফারুকের সহপাঠী ও রুমমেট ছিলেন শফিউল্লাহ। তিনি বলেন, 'আসলে এই অনুভূতি আমার পক্ষে ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ফারুক আমার চেয়েও মেধাবী ছিল। আমরা তাঁর জন্য তেমন কিছুই করতে পারছি না। তাই নিজেদেরও দোষী মনে হচ্ছে।' তিনি বলেন, যারা তাঁকে হত্যা করেছে, তাদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ফারুকের আত্মা শান্তি পাবে না।
নিহত ফারুকের বোন আসমা কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমাদের সব স্বপ্ন ফারুককে ঘিরে ছিল। বাবা শারীরিকভাবে কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন। তাই ভরণ-পোষণের দেওয়ার মতো আমাদের কেউ নেই।' তিনি বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আহমদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক আবু হুসাইন বিপু বলেন, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয়ভাবে সারা দেশে প্রতিবছর ফারুকের মৃত্যুদিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী বছর থেকেই তা পালন করা হবে। এ ছাড়া নিহত ফারুকের পরিবারকে সার্বিক সহযোগিতা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে করা হবে বলে তাঁরা জানান।
শাহ্ মখ্দুম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র রায় বলেন, 'ফারুক দরিদ্র ঘরের সন্তান ছিল। আমরা তাঁর পরিবারের জন্য তেমন কিছু করতে পারিনি।' হলের পক্ষে ফারুকের পরিবারকে কোনো সহায়তা করা হয়েছে কি না_এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কিছু অর্থ অনুদান দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ফারুকের বোন আসমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রায় দুই বছর হলেও ফারুক হত্যা মামলার তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। তদন্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন জানান, মামলার তদন্তকাজ শেষ হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।
No comments